লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৯৫-[৩০] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সা.) -এর নিকটে আবেদন করলাম, কিয়ামতের দিন আপনি অনুগ্রহপূর্বক আমার জন্য বিশেষভাবে শাফা’আত করবেন। তিনি (সা.) বললেন, আচ্ছা আমি তা করব। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনাকে কোথায় অনুসন্ধান করব? তিনি (সা.) বললেন, সর্বপ্রথম তুমি আমাকে পুলসিরাতের উপর অনুসন্ধান করবে। বললাম, যদি আমি আপনাকে পুলসিরাতের সাক্ষাৎ না পাই? তিনি (সা.) বললেন, তখন তুমি আমাকে মীযানের (’আমলনামা ওযনের) কাছে খোঁজ করে বললাম, যদি আমি আপনাকে মীযানের কাছেও সাক্ষাৎ না পাই? তিনি (সা.) বললেন, তখন তুমি আমাকে হাওযে কাওসারের কাছে অনুসন্ধান করব। স্মরণ রাখ, আমি এ তিন জায়গা থেকে অনুপস্থিত থাকব না। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব।]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْحَوْض والشفاعة )
وَعَن أنس قا ل سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَشْفَعَ لِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَقَالَ: «أَنَا فَاعِلٌ» . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَيْنَ أَطْلُبُكَ؟ قَالَ اطْلُبْنِي أَوَّلَ مَا تَطْلُبُنِي عَلَى الصِّرَاطِ . قُلْتُ فَإِنْ لَمْ أَلْقَكَ عَلَى الصِّرَاطِ؟ قَالَ: «فَاطْلُبْنِي عِنْدَ الْمِيزَانِ» قُلْتُ فَإِنْ لَمْ أَلْقَكَ عِنْدَ الْمِيزَانِ؟ قَالَ: «فَاطْلُبْنِي عِنْدَ الْحَوْضِ فَإِنِّي لَا أُخطىءُ هَذِه الثلاثَ المواطن» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وقا لهَذَا حَدِيث غَرِيب اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2433) ۔ (إِسْنَاده جيد)
ব্যাখ্যা: কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর শাফা'আত হবে দু’ প্রকার। ১) শাফা'আতে আম্মাহ্ বা সাধারণ শাফা'আত। ২) শাফা'আতে খসসাহ বা বিশেষ শাফা'আত।
আনাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নিকট শাফা'আতে খসসাহ বা বিশেষ শাফা'আতের আবেদন করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে শাফা'আতের স্বীকৃতি দিলে তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেদিন আমি আপনাকে কোথায় সন্ধান করব?
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর অর্থ হলো যে সকল স্থানে আপনার শাফা'আতের মুখাপেক্ষী হব আর সেই সকল ঘাঁটি পাড়ি দিতে আপনার শাফা'আত তলব করব, সে সময় আপনাকে কোথায় খুঁজে পাব? রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে তিনটি স্থানে সন্ধান করার কথা বললেন।
হিসাব-নিকাশের পর্বের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে ‘আয়িশাহ্ এ কর্তৃক বর্ণিত হাদীস, “(হে আল্লাহর রাসূল!) কিয়ামতের দিন আপনি আপনার পরিবার-পরিজনকে স্মরণ করবেন কি? জবাবে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, জেনে রেখ (হে ‘আয়িশাহ!) তিনটি জায়গা এমন হবে যেখানে কেউ কাউকে স্মরণ করবে না...।” উভয় হাদীসের মধ্যে বিরোধ পরিলক্ষিত হচ্ছে, এর সমন্বয় কিভাবে হবে?
‘আল্লামাহ্ মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ‘আয়িশার প্রশ্নের জওয়াবে যা বলেছিলেন তা এজন্য যে, সে যেন রসূলের স্ত্রী হওয়ার উপর ভরসা করে বসে না থাকেন। আর আনাস-কে রাসূলুল্লাহ (সা.) যে উত্তর দিয়েছিলেন তা এজন্য যে, সে যেন নিরাশ হয়ে না যায়।
প্রশ্ন হতে পারে যে, রসূলের খাদিম হওয়ার কারণে আনাস (রাঃ) -ও তো ভরসা করে বসে থাকতে পারে? অনুরূপভাবে নিরাশ না হওয়ার বিষয়টি আয়িশার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে? উত্তরে বলা যায় যে, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর হাদীসটি অনুপস্থিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আর আনাস (রাঃ)-এর হাদীসটি উপস্থিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ কোন অনুপস্থিত ব্যক্তিকে কেউ স্মরণ করবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৩৩৪ পৃ., হা. ২৪৩৩)