৫৩৫১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৫১-[১৩] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাত্রের দুই-তৃতীয়াংশ যখন অতিবাহিত হয়, তখন নবী (সা.) উঠে (সাহাবীগণকে লক্ষ্য করে) বললেন, হে লোকসকল! আল্লাহকে স্মরণ কর। আল্লাহকে স্মরণ কর। প্রলয়ঙ্কারী কম্পন আগত। তার পিছনে আসছে আর এক কম্পন (কিয়ামতপূর্ব প্রথম ও দ্বিতীয় শিঙ্গার ফুৎকার) মৃত্যু তার সাথে জড়িত বিষয়সমূহ নিয়ে আগত হবে, মৃত্যু তার সাথে জড়িত (তার পূর্ব-পশ্চাতের বিপদসহ) বিষয়সমূহ নিয়ে আগত হবে। (তিরমিযী)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2457 وقال : حسن) * سفیان الثوری مدلس ولم اجد تصریح سماعہ فی ھذا الحدیث ۔

ব্যাখ্যা : (يَا أَيُّهَا النَّاسُ) হে লোক সকল! নবী (সা.) এখানে ‘লোক বলতে’ ঐ সমস্ত সাহাবীদেরকে উদ্দেশ্য করেছেন যারা আল্লাহ তা'আলার যিকর করা ও তাহাজ্জুদ ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকত। এখান থেকে এ কথা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে জেগে উঠে তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্।
(جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ) নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে, (رَاجِفَة) হলো শিঙ্গার প্রথম ফুঁৎকার, যার দরুন সমস্ত প্রাণী মৃত্যুবরণ করবে। আর (رَادِفَة) হলো দ্বিতীয় ফুৎকার, যার ফলে কিয়ামতের দিন সকল প্রাণী জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। মূলত (رجف) শব্দের অর্থ প্রকম্পিত হওয়া, নড়াচড়া করা। আর পবিত্র কুরআনে এ কথার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছেন, (یَوۡمَ تَرۡجُفُ الرَّاجِفَۃُ ۙ﴿۶﴾ تَتۡبَعُهَا الرَّادِفَۃُ ؕ﴿۷﴾) “সেদিন ভূকম্পন প্রকম্পিত করবে, তারপর আসবে আরেকটি ভূকম্পন”- (সূরাহ্ আন্ নাযি'আত ৭৯ : ৬-৭)। হাদীসে অতীতকালীন সীগা ব্যবহার করা হয়েছে এ কথা বুঝনোর জন্য যে, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। অতএব (جاءت) (আগত) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। অতএব তোমরা এর ভীতিকর বিষয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও।
(جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ) মৃত্যু তার সাথে যা আছে তা নিয়ে এসে গেছে। অর্থাৎ মৃত্যুকালীন সময়ে ও কবরে যে কষ্ট রয়েছে এবং তৎপরবর্তীকালে।
এখানে এ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যার মৃত্যু হয়েছে তার উপর কিয়ামত তথা ছোট কিয়ামত ঘটে গেছে যা মূলত বড় কিয়ামতের প্রমাণ বহনকারী। হাদীসে প্রথম (جَاءَ الْمَوْتُ) বলে আমাদের
পূর্বে ঘটে যাওয়া মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে। আর দ্বিতীয়বার (بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ) দ্বারা যারা বেঁচে আছে তাদের ক্ষেত্রেও এটা অবশ্যই ঘটবে- এ কথার ইঙ্গিত করা হয়েছে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/২৪৫৭, মিরকাতুল মাফাতীহ)