লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা
৫২৮৪-[১] সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা পরহেজগার, সম্পদশালী, নির্জনে “ইবাদাতকারী বান্দাকে ভালোবাসেন (মুসলিম)।
ইবনু উমার (রাঃ)-এর হাদীস, “দু’টি বস্তু ছাড়া অন্য কিছুতেই ঈর্ষা নেই” কুরআনের ফাযীলাত’ অধ্যায়ে উল্লেখিত হয়েছে।
الفصل الاول (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)
عَن سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعَبْدَ التَّقِيَّ الْغَنِيَّ الْخَفِيَّ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَذُكِرَ حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ: «لَا حَسَدَ إِلَّا فِي اثْنَيْنِ» فِي «بَاب فَضَائِل الْقُرْآن» رواہ مسلم (11 / 2965)، (7432) 0 حدیث ابن عمر تقدم 2113) ۔ (صَحِيح)
ব্যাখ্যা : (إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعَبْدَ التَّقِيَّ) নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা পরহেজগার বান্দাকে ভালোবাসেন। অর্থাৎ যে, আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয় থেকে দূরে থাকে অথবা যে তার সম্পদকে বিনোদনমূলক কাজে ব্যয় করা থেকে দূরে থাকে। অথবা এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যে ব্যক্তি হারাম ও সন্দেহমূলক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকে এবং সাদৃশ্যপূর্ণ ও বৈধ বিষয়সমূহে পরহেজগারিতা অবলম্বন করে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
(الْغَنِيَّ) আল্লামাহ্ নববী (রহিমাহুল্লাহ)-এর ব্যাখ্যায় বলেন, সম্পদশালী দ্বারা উদ্দেশ্য অন্তরের অভাবমুক্ততা। আর এ প্রকার ধনীই পছন্দনীয় যেহেতু রসূল (সা.) - বলেন, (وَلٰكِنَّ الْغِنٰى غِنَى النَّفْسِ) এবং কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) সম্পদশালী দ্বারা সম্পদের দিক দিয়ে ধনী হওয়া উদ্দেশ্য করেছেন।
(শারহুন নববী ১৮/১৯৬৫)।
অতএব সম্পদশালী দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃতজ্ঞতা আদায়কারী সম্পদশালী বান্দা।
(الْخَفِىَّ) ‘খা অক্ষরের নুকতা সহকারে- এর অর্থ দুই ধরনের হতে পারে। এক: যে অলস তার রবের ‘ইবাদাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিজের ইচ্ছামত কর্মে ব্যস্ত থাকে। দুই: লুকিয়ে ভালো কাজ করা। তথা যে ব্যক্তি এমনভাবে কোন কাজ বা দান-খয়রাত করে, কেউ তা অনুধাবন করতে পারে না। যেমন- হাদীসে এসেছে, (حَتَّى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ) (এমনভাবে দান করে যে, তার বাম হাত জানতে পারে না যা তার ডান হাত খরচ করেছে)। আর হাদীসের মর্ম এটাই অধিক স্পষ্ট।
আর যদি নুকতাবিহীন তথা (حفى) পড়া হয় তখন তার অর্থ হবে অত্যন্ত দয়ালু। অর্থাৎ যে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তার প্রতি ও অন্যান্য গরীব দুর্বলদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে। তবে প্রথমটি হচ্ছে সঠিক।
ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (الْخَفِىَّ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো নফল ‘ইবাদাতগুলো মানুষের দৃষ্টির আড়ালে সম্পাদন করা যাতে অন্তরে রিয়া বা লৌকিকতা প্রবেশ না করে। অথবা, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যে ধন-সম্পদের কারণে মানুষের নিকট অহংকার ও গৌরব প্রকাশ পায় না বরং নিজেকে সর্বদা নমনীয় করে রাখে। অথবা, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হাট বাজারে কম গমন করে তথা অপ্রকাশ্য থাকা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)