৫২৭৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - আশা আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বেগ প্রসঙ্গ

৫২৭৩-[৬] ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আদম সন্তানকে ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ দুটি উপত্যকাও যদি দেয়া হয়, সে তৃতীয়টির আকাঙ্ক্ষা করবে। মূলত আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া অন্য কিছুই পরিপূর্ণ করতে পারবে না, আর যে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে আল্লাহ তার তাওবাহ্ কুকূল করেন। (বুখারী ও মুসলিম)।

الفصل الاول ( بَاب الأمل والحرص)

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ كَانَ لِابْنِ آدَمَ وَادِيَانِ مِنْ مَالٍ لَابْتَغَى ثَالِثًا وَلَا يَمْلَأُ جَوْفَ ابْنِ آدَمَ إِلَّا التُّرَابُ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَى مَنْ تَابَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (6436) و مسلم (118 / 1049)، (2418) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

ব্যাখ্যা : অত্র হাদীসে ধন-সম্পদের দুটি উপত্যকার কথা বলা হয়েছে। অন্য একটি বর্ণনায় স্বর্ণের দুটি উপত্যকার কথা বলা হয়েছে। অপর বর্ণনায়, স্বর্ণের দুটি উপত্যকার কথা উল্লেখ রয়েছে। (لَابْتَغَى ثَالِثًا) সে তৃতীয় আরেকটির আকাঙ্ক্ষা করবে’ অর্থাৎ আরেকটি বড় এবং বিশাল উপত্যকা সে কামনা করবে। এভাবে তাকে যদি সেটাও দেয়া যায় তাহলে চতুর্থ বা পঞ্চমটির আকাঙ্ক্ষা সে করবে। আর এভাবে তার আশা ও আকাঙ্ক্ষা চলতে থাকবে। সম্পদ দিয়ে তার চোখও আকাঙ্ক্ষায় পূর্ণ হবে না, হবে একমাত্র মাটি দ্বারা। অর্থাৎ কবরের মাটিই কেবল তার অসীম আকাঙ্ক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটাবে। এতে নাবী (সা.)-এর সতর্ক সংকেত যে বখীলের বুখালতিটা হলো লোভের উত্তরাধিকারী এবং তা মানুষের সৃষ্টিগত স্বভাবের নিগঢ়ে প্রোথিত। আল্লাহ তা'আলা কুরআন মাজীদে বলেছেন যা প্রচলিত প্রবাদ ও হাদীসের চেয়ে অধিক স্পষ্ট। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (قُلۡ لَّوۡ اَنۡتُمۡ تَمۡلِکُوۡنَ خَزَآئِنَ رَحۡمَۃِ رَبِّیۡۤ اِذًا لَّاَمۡسَکۡتُمۡ خَشۡیَۃَ الۡاِنۡفَاقِ ؕ وَ کَانَ الۡاِنۡسَانُ قَتُوۡرًا) “বলুন : যদি আমার পালনকর্তার রহমতের ভাণ্ডার তোমাদের হাতে থাকত, তবে খরচের ভয়ে তা অবশ্যই ধরে রাখতে, মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।” (সূরা বানী ইসরাঈল ১৭ : ১০০)

মানুষের সম্পদের লোভ এবং দরিদ্রতাভীতি হলো বুখালতি বা কৃপণতার মূল কারণ। এমনকি নিজের ব্যাপারেও সে কৃপণতা করে থাকে। এর দৃষ্টান্ত ঐ পিপাসিত পাখির চেয়েও অধিক যে সাগরের উপরে পিপাসা নিয়ে উড়ে বেড়ায় কিন্তু সাগরের পানি শেষ হয়ে যাওয়ার ভয়ে না খেয়ে মারা যায়।
উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা তাওবাহ করবে আল্লাহ তাদের তাওবাহ্ কবুল করবেন। অর্থাৎ যে আল্লাহর রহমতের দিকে ফিরে আসবে এবং তার রহমত কামনা করবে আল্লাহ তাকে তার রহমতের আশ্রয়ে গ্রহণ করবেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; আল লুম'আহ্ ৮ম খণ্ড, ৪৮৯ পৃ)