৪৯২১

পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - অনুগ্রহ ও স্বজনে সদাচার

৪৯২১-[১১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’রহিম’’ তথা আত্মীয়তা আল্লাহ তা’আলার ’আরশের সাথে ঝুলন্ত আছে এবং বলছে, যে ব্যক্তি আমাকে সংযোজন করবে তথা আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে, আল্লাহ তা’আলা তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করবেন এবং যে ব্যক্তি আমাকে ছিন্ন করবে আল্লাহ তা’আলা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْبِرِّ وَالصِّلَةِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الرَّحِمُ مُعَلَّقَةٌ بِالْعَرْشِ تَقُولُ: مَنْ وَصَلَنِي وَصَلَهُ اللَّهُ وَمَنْ قَطَعَنِي قَطَعَهُ الله . مُتَّفق عَلَيْهِ

ব্যাখ্যাঃ রহিম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক কিয়ামতের দিন আল্লাহ রহমানের ‘আরশ চেপে ধরে বলবে যে, আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবেন, আর যে আমার সম্পর্ক ছিন্ন করবে আল্লাহ তার সম্পর্ক ছিন্ন করবেন।

পূর্বে ৪৯২০ নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ রহিম তথা আত্মীয়তা-কে লক্ষ্য করে বলেছেন, ‘‘যে তোমার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করবে আমি তার সাথে (আমার রহমাতের) সম্পর্ক রক্ষা করব। যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমি তার সাথে (আমার রহমাতের) সম্পর্ক ছিন্ন করব।’’

‘রহিম’ এ কথা শুনে উৎসাহিত এবং উদ্বৃদ্ধ হয়েই আল্লাহর ‘আরশ ধারণ করে বলেবেন, ‘যে আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবেন....।’

‘রহিম’-এর এ কথাটি দু‘আ অর্থেও হতে পারে, অর্থাৎ হে আল্লাহ! যে আমার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করবে তুমি তার সাথে (তোমার রহমাতের) সম্পর্ক রক্ষা কর।

আল্লাহর সম্পর্ক রক্ষার অর্থ যেমন তার রহমত দ্বারা আবৃত্ত করে নেয়া, ঠিক তেমনি তার প্রতি উত্তম সাহায্যের ব্যবস্থা করা। এমনকি তার গুনাহখাতা ক্ষমা করা।

পক্ষান্তরে আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারীর সাথে আল্লাহর সম্পর্ক ছিন্ন করার অর্থ হলো তাকে আল্লাহর খাস রহমত থেকে দূরে রাখা, তার প্রতি দয়াপ্রদর্শন না করা, তাকে সাহায্য না করা, এমনকি ক্ষমা না করা। আল্লাহ তা‘আলার বান্দার সাথে সম্পর্ক রক্ষার আরেক অর্থ হলো তার দিকে এগিয়ে আসা এবং তাকে কবুল বা গ্রহণ করা। আর সম্পর্ক ছিন্নের অর্থ হলো তার থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা এবং তার প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়া।

ইমাম ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘রহিম’ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক যা রক্ষা করা ওয়াজিব, তার সীমা নিয়ে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

কেউ কেউ বলেন, রহিম-এর সম্পর্ক তাদের মধ্যে বিদ্যমান যাদের দু’জনের মধ্যে যে কোন একজনকে পুরুষ ধরলে তাদের একে অপরের সাথে বিবাহ হারাম হয়ে যায়। এই সূত্রের ভিত্তিতে চাচার এবং মামার সন্তানেরা রহিম বা আত্মীয় সম্পর্ক সীমার আওতাভুক্ত নয়। তবে কোন নারী তার চাচা এবং মামাকে বিবাহ করতে পারবে না, কিন্তু এদের সন্তানদের সাথে বিবাহ বৈধ।

কেউ কেউ বলেছেন, রহিম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক মীরাসের ক্ষেত্রে যারা যবীলে আরহাম (মায়ের আত্মীয়তার সম্পর্কীয়) তাদের বেলায় প্রযোজ্য, চাই সে মুহরিম হোক, চাই গাইরি মুহরিম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)