লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা
৪০৬২-[৮] উক্ত রাবী (মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (’আলী ও ’আব্বাস (রাঃ)-এর মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর [মীরাস] পরিত্যক্ত সম্পদ নিয়ে বিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ’উমার -এর নিকট তার মীমাংসা জানতে চাইলে) ’উমার এভাবে দলীল পেশ করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাঁর ব্যক্তিগত তিনটি ভূখণ্ড ছিল, তা হলো- বানী নাযীর (হতে প্রাপ্ত ভূমি), খায়বার ও ফাদাক। তবে বানী নাযীর-এর ভূমির আয় হতে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যয়-নির্বাহ করতেন। আর ’ফাদাক’ ভূমির আয় মেহমান মুসাফিরদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু খায়বারের আয়কে তিনভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন- দু’ভাগ মুসলিম জনসাধারণের জন্য এবং একভাগ নিজের পরিবার-পরিজনের খোরপোষে খরচ করতেন। এরপরও পরিবারের খরচ মিটিয়ে যদি কিছু অবশিষ্ট থাকত তা দরিদ্র মুহাজিরীনদের মাঝে বিতরণ করে দিতেন। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعنهُ قَالَ: كانَ فِيمَا احتجَّ فيهِ عُمَرُ أَنْ قَالَ: كَانَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثُ صَفَايَا بَنُو النَّضِيرِ وخيبرُ وفَدَكُ فَأَمَّا بَنُو النَّضِيرِ فَكَانَتْ حَبْسًا لِنَوَائِبِهِ وَأَمَّا فَدَكُ فَكَانَتْ حَبْسًا لِأَبْنَاءِ السَّبِيلِ وَأَمَّا خَيْبَرُ فَجَزَّأَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةٌ أَجزَاء: جزأين بينَ المسلمينَ وجزءً نَفَقَةً لِأَهْلِهِ فَمَا فَضُلَ عَنْ نَفَقَةِ أَهْلِهِ جَعَلَهُ بَيْنَ فُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: (كَانَتْ لِرَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ ثَلَاثُ صَفَايَا) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য তিনটি বস্তু নির্ধারিত ছিল।
খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ الصَّفِيُّ সেই বস্তু, গনীমাতের মাল বণ্টন করার পূর্বে ইমাম তা থেকে যা নিজের জন্য নিয়ে থাকে যেমন দাস-দাসী, ঘোড়া, তরবারি ইত্যাদি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গনীমাতের মাল এক-পঞ্চমাংশত নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও তা বণ্টনের পূর্বে তিনি তা থেকে তার ইচ্ছানুযায়ী কোনো কিছু নির্বাচন করতে পারতেন তার নিজের জন্য। এটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস ছিল। তার পরবর্তীতে কোনো ইমামের জন্য তা বৈধ নয়।
(فَأَمَّا بَنُو النَّضِيْرِ فَكَانَتْ حَبْسًا لِنَوَائِبِه) বানূ নাযীর থেকে অর্জিত মাল তার প্রয়োজন মিটানোর জন্য নির্দিষ্টভাবে আবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ মেহমান, প্রতিনিধি দল অস্ত্র ও পশু ক্রয়ের নিমিত্তে তা আবদ্ধ ছিল।
(وَأَمَّا فَدَكُ فَكَانَتْ حَبْسًا لِأَبْنَاءِ السَّبِيْلِ) ফাদাকের মাল ছিল পথিকদের জন্য। অর্থাৎ ফাদাক থেকে অর্জিত মাল পথিকদের প্রয়োজন মিটানোর জন্য নির্দিষ্টভাবে গচ্ছিত ছিল।
(جُزْئَيْنِ بَيْنَ الْمُسْلِمِيْنَ وَجُزْءً نَفَقَةً لِأَهْلِه) খায়বারের মালের দু’ অংশ ছিল মুসলিমদের জন্য আর এক অংশ ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিবারের খরচ মিটানোর জন্য। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের মালকে তিন ভাগে ভাগ করার কারণ এই যে, খায়বার অঞ্চলে অনেক গ্রাম ছিল, তার কিছু অংশ বলপূর্বক অর্থাৎ যুদ্ধ করে বিজয় করা হয়। যাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য ছিল এক-পঞ্চমাংশত। আর কিছু বিনাযুদ্ধে সন্ধির মাধ্যমে বিজিত ছিল। আর তা ছিল ফাই যা রসূলের জন্য খাস। অতএব ন্যায়সঙ্গত বণ্টনের দাবী অনুযায়ী তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সমস্ত মালকে তিন ভাগ করেন। এক ভাগ তাঁর নিজের জন্য। আর দু’ ভাগ মুসলিম বাহিনীর জন্য। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৯৬৫)