৩৮৬০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮৬০-[৭৩] ইবনু ’আয়িয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তির জানাযায় শরীক হলেন। যখন সালাত আদায়ের উদ্দেশে লাশ রাখা হলো, তখন ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এ ব্যক্তির জানাযার সালাত আদায় করাবেন না, কেননা লোকটি খারাপ ছিল। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কি এ ব্যক্তিকে কোনো ইসলামী ’আমল করতে দেখেছ? জনৈক ব্যক্তি উঠে বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! সে আল্লাহর পথে এক রাত (সীমান্ত) পাহাড়া দিয়েছিল। এটা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সালাত আদায় করলেন এবং তাকে কবরে নিজ হাতে তার উপর মাটি দিলেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উক্ত ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেন, সঙ্গী-সাথীদের ধারণা তুমি জাহান্নামের অধিবাসী। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি জান্নাতের অধিবাসী। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন, হে ’উমার! মানুষের ’আমলের ব্যাপারে তোমাকে জিজ্ঞেস করা হবে না। তোমাকে তো ফিত্বরাতের (স্বভাব-ধর্ম ইসলামের কর্মের) ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হবে। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن ابْن عائذٍ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جِنَازَةِ رَجُلٍ فَلَمَّا وُضِعَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: لَا تُصَلِّ عَلَيْهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَإِنَّهُ رَجُلٌ فَاجِرٌ فَالْتَفَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى النَّاسِ فَقَالَ: «هَلْ رَآهُ أَحَدٌ مِنْكُمْ عَلَى عَمَلِ الْإِسْلَامِ؟» فَقَالَ رَجُلٌ: نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ حَرَسَ لَيْلَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَثَا عَلَيْهِ التُّرَابَ وَقَالَ: «أَصْحَابُكَ يَظُنُّونَ أَنَّكَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ وَأَنَا أَشْهَدُ أَنَّكَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ» وَقَالَ: «يَا عُمَرُ إِنَّكَ لَا تُسْأَلُ عَنْ أَعْمَالِ النَّاسِ وَلَكِنْ تُسْأَلُ عَنِ الْفِطْرَةِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ»

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে পরোক্ষভাবে আল্লাহর রাস্তায় মুসলিমদের পাহাড়া দেয়ার ‘আমলটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়েছে এবং যে ব্যক্তির ব্যাপারে ‘উমার খারাপ ধারণা রাখতেন কেবলমাত্র একরাত এই পাহাড়াদানের কাজে নিয়োজিত থাকায় আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযা আদায় করলেন এবং তাকে জান্নাতী বলে ঘোষণা দিলেন।

‘উমার -এর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উক্ত পাপী ব্যক্তির জানাযার সালাত আদায় করতে নিষেধ করার কারণ ছিল, যাতে সকল মুনাফিক ও পাপিষ্ঠরা তাদের কৃতকর্মের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে যায় এবং এটা যেন তাদের জন্য ধমকস্বরূপ হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

(وَحَثَا عَلَيْهِ التُّرَابَ) এ বাক্যের ভাবার্থ হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পবিত্র হাত দিয়ে ঐ ব্যক্তির কবরে এক বা দু’বার মাটি দিলেন, যাতে লোকেরা তার সৎকাজটির প্রতি উৎসাহিত হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

(وَلٰكِنْ تُسْأَلُ عَنِ الْفِطْرَةِ) এ বাক্যটি প্রমাণ করে যে, উল্লেখিত ব্যক্তিটি ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের উপরই অধিষ্ঠিত ছিল। এখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমার -কে মানুষের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করতে নির্দেশনা দিয়েছেন, কারণ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি অতি দয়ালু ও মেহেরবান।

‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ ফিত্বরাহ্ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইসলাম ও সৎ ‘আমল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِه أَوْ يُنَصِّرَانِه أَوْ يُمَجِّسَانِه

অর্থাৎ- ‘‘প্রত্যেক নবজাতক শিশুই ফিত্বরাহ্-এর উপর জন্মলাভ করে, অতঃপর তার বাবা-মা- ই তাকে ইয়াহূদী, নাসারা কিংবা অগ্নিপূজক বানায়’’। (সহীহুল বুখারী, হাঃ ১৩৮৫)

হাদীসের উক্তিটির ভাবার্থ হলো, হে ‘উমার! তুমি এ অবস্থায় মৃত ব্যক্তির খারাপ ‘আমল সম্পর্কে আলোচনা করবে না; বরং তার ভালো কাজগুলো আলোচনা করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেনঃ ‘‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো দিকগুলো স্মরণ কর’’। সুতরাং মৃতদের ভালো গুণাবলীসমূহ বর্ণনা করার প্রতি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমার -কে উৎসাহিত করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ