৩৭৮৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

জিহাদের আভিধানিক অর্থ : ’জিহাদ’ শব্দটি ’আরবী ’জাহাদা’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ ’দুই পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া’। ’আরবদের কাছে শাব্দিকভাবে ’জিহাদ’-এর অর্থ হলো ’কোনো কাজ বা মত প্রকাশ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা বা কঠোর সাধনা করা’। তাছাড়াও ’জিহাদ’ শব্দটি আভিধানিক দিক থেকে আরো অন্যান্য অর্থেও ব্যবহৃত হয়। যেমন :

اَلْجَدُّ ’’আল জাদ্দু’’ বা প্রচেষ্টা ব্যয় করা।

২. اَلطَّاقَةُ ’’আত্ব ত্বা-কাতু’’ বা কঠোর সাধনা করা।

৩. اَلسَّعْىُ ’’আস্ সা’ইউ’’ বা চেষ্টা করা।

৪. اَلْمُشَقَّةُ ’’আল মুশাক্কাতু’’ বা কষ্ট বহন করা।

৫. بَذْلُ القُوَّةِ ’’বাযলুল ক্যুওয়াহ্’’ বা শক্তি ব্যয় করা।

৬. اَلنِّهايَةُ والغَايَةُ ’’আন্ নিহায়াতু ওয়াল গায়াহ’’ বা শেষ পর্যায়ে পৌঁছা।

৭. اَلْاَرْضُ الصُّلْبَةْ ’’আল আরদুস্ সুলবাহ্’’ বা শক্তভূমি।

৮. اَلْكِفَاحْ ’’আল কিফা-হ’’ বা সংগ্রাম করা।

মোটকথা, শাব্দিক অর্থে ’জিহাদ’-এর সংজ্ঞা হলো, অন্তত দু’টি পক্ষের মধ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা ও সক্ষমতার প্রকাশ ঘটানো।

শাব্দিক অর্থ মোতাবেক, এই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সশস্ত্র কিংবা নিরস্ত্র উভয়ই হতে পারে; অর্থ ব্যয় করেও হতে পারে, ব্যয় না করেও হতে পারে। একইভাবে, দু’টো পরস্পরবিরোধী প্রবৃত্তির মধ্যেও পরস্পরকে দমানোর জিহাদ (সর্বাত্মক প্রচেষ্টা) হতে পারে। এই জিহাদ (সর্বাত্মক প্রচেষ্টা) কেবল কথার মাধ্যমেও হতে পারে, অথবা কোনো একটি কাজ না করা বা কোনো একটি বিশেষ কথা না বলার মাধ্যমেও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, কোনো ব্যক্তিকে যদি তার পিতামাতা আদেশ করে আল্লাহকে অমান্য করার জন্য আর সেই ব্যক্তি যদি পিতামাতার নির্দেশ অমান্য করে ও সবর অবলম্বন করে, তবে তা-ও জিহাদ। আবার কোনো ব্যক্তি যদি প্রবৃত্তির তাড়নাকে অগ্রাহ্য করে হারাম কাজ থেকে বিরত থাকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তবে তা-ও জিহাদ।

’জিহাদ’ শব্দের এই শাব্দিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী মুসলিমদের জিহাদের প্রতিপক্ষ হতে পারে নিজের প্রবৃত্তি, শায়ত্বন, দখলদার কিংবা কাফির শক্তি। পাশাপাশি, এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী জিহাদ হতে পারে আল্লাহর পথেও (জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ)। তাই এই জিহাদ হতে পারে আল্লাহকে খুশি করার জন্য, আবার হতে পারে শায়ত্বনকে খুশি করার জন্যও। যেমন : কাফিরদের জিহাদ হলো শায়ত্বনকে খুশি করার জন্য। কাফির পিতারা তাদের মু’মিন সন্তানদের সত্য বিশ্বাসকে পরিত্যাগ করানোর জন্য যেসব কাজ করতো, সেগুলোকে কুরআনে জিহাদ বলা হয়েছে :

﴿وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلٰى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِه عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾

’’তোমার পিতামাতা যদি জিহাদ (সর্বাত্মক প্রচেষ্টা) করে যে, তুমি আমার সাথে এমন কিছু শরীক কর যে সম্বন্ধে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তবে তাদেরকে অমান্য কর।’’ (সূরা লুকমান ৩১ : ১৫)

জিহাদের পারিভাষিক সংজ্ঞা : হানাফী মাযহাবের আইন গ্রন্থ ’বাদাউস্ সানায়ী’-হতে জানা যায়, জিহাদের শাব্দিক অর্থ চেষ্টা করা। শার’ঈ অর্থে জিহাদ হলো নফস্, অর্থ ইত্যাদি সবকিছু দিয়ে যুদ্ধের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও শক্তি খাটানো।’ অপর হানাফী গ্রন্থ شرح الوقاية-এর গ্রন্থকার বলেনঃ

اَلْجِهَادُ هُوَ الدُّعَاءُ إِلَى الدِّيْنِ الْحَقِ وَالْقِتَالُ مَنْ لَمْ يَقْبَلْهُ.

অর্থাৎ جِهَاد হচ্ছে সত্য দ্বীনের প্রতি আহবান করা এবং তা অগ্রাহ্যকারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা।

শাফি’ঈ মাযহাবের আইনগ্রন্থ ’আল ইকনা’-তে বলা হয়েছে, ’জিহাদ হলো আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করা।’ আল-শিরাজী তাঁর ’আল মুহাজাব’-এ বলেন, ’জিহাদ হলো ক্বিতাল (যুদ্ধ)’।

সহীহুল বুখারীর ব্যাখ্যাকার ইমাম ইবন হাজার (রহঃ) ’ফাতহুল বারী’-তে বলেন, জিহাদ এর শার্’ঈ অর্থ হলো: وَشَرْعًا بَذْل الْجَهْد فِي قِتَال الْكُفَّار অর্থাৎ- ’’কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা-সংগ্রাম করা’’।

মালিকী মাযহাবের আইনগ্রন্থ ’মানহুল জালীল’-এ জিহাদকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে -

قِتَالُ مُسْلِمٍ كَافِرًا غَيْرَ ذِي عَهْدٍ لِإِعْلَاءِ كَلِمَةِ اللّٰهِ

’আল্লাহর কালিমাকে সর্বোচ্চে করার জন্য কাফিরদের (যাদের সঙ্গে মুসলিমদের চুক্তি নেই) সঙ্গে মুসলিমদের লড়াই .....।’

হাম্বালী মাযহাবের আইনগ্রন্থ ’আল মুগনী’-তে ইবনু কুদামাহ্ও ভিন্ন কোনো সংজ্ঞা দেননি। ’কিতাবুল জিহাদ’ অধ্যায়ে তিনি বলেন, যা কিছুই যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেটা ফরযই ’আইন বা ফরযই কিফায়াহ্ যা-ই হোক না কেন, অথবা এটা মু’মিনদেরকে শত্রু থেকে রক্ষা করা হোক বা সীমান্ত রক্ষা হোক- সবকিছুই জিহাদের অন্তর্ভুক্ত। তিনি আরো বলেন, ’শত্রুরা এলে সীমান্তরক্ষীদের ওপর জিহাদ করা ফরযই ’আইন হয়ে যায়। যদি শত্রুদের আগমন স্পষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আমীরের নির্দেশ ছাড়া সীমান্তরক্ষীরা তাদেরকে মোকাবেলা না করে আসতে পারবে না। কারণ একমাত্র আমীরই যুদ্ধের ব্যাপারে নির্দেশ দিতে পারেন।’

এছাড়া সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাতসহ সকল হাদীস গ্রন্থে ’কিতাবুল জিহাদ’ অধ্যায়ে কেবল সশস্ত্র যুদ্ধ বিষয়ক হাদীসই স্থান পেয়েছে।

কুরআন ও হাদীসে জিহাদ শব্দের ব্যবহার : মক্কায় সশস্ত্র যুদ্ধের অনুমতি ছিল না, তাই মাক্কী সূরাহ্সমূহে ’জিহাদ’ শব্দটি শার্’ঈ অর্থে ব্যবহৃত হয়নি; বরং শাব্দিক অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন: সূরা লুকমানের ১৫নং আয়াত, যা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। এরূপ আরো উদাহরণ হলো:

﴿وَمَنْ جَاهَدَ فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِه إِنَّ اللّٰهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ﴾

’’আর যে ব্যক্তি সাধনা (জিহাদ) করে, সে তো নিজেরই জন্য সাধনা করে। আল্লাহ্ তো বিশ্বজগত থেকে অমুখাপেক্ষী।’’ (সূরা আল ’আনকাবূত ২৯ : ৬)

﴿وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا وَإِنْ جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾

’’আমি মানুষকে স্বীয় মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করতে আদেশ দিয়েছি, তবে তারা যদি তোমার ওপর চাপ (জিহাদ) দেয়, আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে যে সম্বন্ধে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, এক্ষেত্রে তুমি তাদের আনুগত্য করবে না।’’ (সূরা আল ’আন্কাবুত ২৯ : ৮)

﴿وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ﴾

’’আর যারা আমার উদ্দেশে কষ্ট সহ্য (জিহাদ) করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ নেককারদের সাথে আছেন।’’ (সূরা আল ’আন্কাবূত ২৯ : ৬৯)

﴿فَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَجَاهِدْهُمْ بِه جِهَادًا كَبِيرًا﴾

’’অতএব আপনি কাফিরদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের সঙ্গে কুরআনের সাহায্যে কঠোর সংগ্রাম (জিহাদ) চালিয়ে যান।’’ (সূরা আল ফুরকান ২৫ : ৫২)

মদীনায় অবতীর্ণ ২৬টি আয়াতে জিহাদের বিষয়টি এসেছে এবং এগুলোর অধিকাংশই সুস্পষ্টভাবে ’যুদ্ধ’ (ক্বিতাল) অর্থ বহন করে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ

﴿لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فَضَّلَ اللهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُلًّا وَعَدَ اللهُ الْحُسْنٰى وَفَضَّلَ اللهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا﴾

’’সমান নয় সেসব মু’মিন যারা বিনা ওযরে ঘরে বসে থাকে এবং ওই সব মু’মিন যারা আল্লাহর পথে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে। যারা স্বীয় জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের ওপর যারা ঘরে বসে থাকে। আর প্রত্যেককেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়া’দা করেছেন। আল্লাহ মুজাহিদীনদের মহান পুরস্কারের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন যারা ঘরে বসে থাকে তাদের ওপর।’’

(সূরা আন্ নিসা ৪ : ৯৫)

এই আয়াতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, জিহাদ মানে যুদ্ধের জন্য বের হওয়া এবং ঘরে থাকার চেয়ে সেটা উত্তম।

﴿انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللهِ ذٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ﴾

’’তোমরা অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অথবা ভারী অবস্থায়; এবং জিহাদ করো আল্লাহর পথে নিজেদের মাল দিয়ে এবং নিজেদের জান দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা জানতে।’’

(সূরা আত্ তওবা্ ৯ : ৪১)

ঐতিহাসিক তাবূক যুদ্ধের সময় প্রেক্ষাপটে এই আয়াত নাযিল হয়। তাবূক যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল খেজুর কাটার মৌসুমে। তখন গরমও ছিল খুব বেশি। তাই কেউ কেউ ক্ষেত-খামার, ধন-সম্পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অজুহাতে, কেউ পারিবারিক কাজের অজুহাতে, কেউ বা অসুস্থতার বাহানা তুলে যুদ্ধে না যাওয়ার অনুমতি চাইলো। আল্লাহ তখন এই আয়াত নাযিল করে তাদের প্রার্থনা বাতিল করে দিলেন এবং ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক, খুশি-অখুশি, সশস্ত্র-নিরস্ত্র, ধনী-গরিব সবার জন্য যে কোনো অবস্থায় যুদ্ধে যাওয়া ফরয করে দিলেন। এখানে ’জিহাদ’ শব্দটি পরিষ্কারভাবে ’যুদ্ধ’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

একই অর্থ রয়েছে এই সূরার ৮৮ নম্বর আয়াতে, ’’কিন্তু রসূল ও যারা তাঁর সঙ্গে ঈমান এনেছে, তারা জিহাদ করেছে নিজেদের মাল ও নিজেদের জান দিয়ে, তাদেরই জন্য রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ এবং তারাই প্রকৃত সফলকাম।’’ (সূরা আত্ তওবা্ ৯ : ৮৮)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শত শত হাদীসে ’জিহাদ’-কে শার’ঈ অর্থে অর্থাৎ যুদ্ধ ও যুদ্ধের উপায়-উপকরণ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন : আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

مَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ الْقَانِتِ بِآيَاتِ اللّٰهِ لَا يَفْتُرُ مِنْ صِيَامٍ وَلَا صَلَاةٍ حَتّٰى يَرْجِعَ الْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ تَعَالٰى.

আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের তুলনা ওইরূপ সায়িম (রোযাদার), যে সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহর আয়াত তিলাওয়াত করে যাচ্ছে, যে তার সওম ও সালাত আদায়ে বিন্দুমাত্র ক্লান্তি প্রকাশ করে না; (সে এরূপ সাওয়াব পেতেই থাকবে) যতক্ষণ না আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় মুজাহিদ ফিরে আসে।

(বুখারী হাঃ ২৭৮৭, মুসলিম হাঃ ৪৯৭৭)

এ হাদীসে পরিষ্কারভাবেই ’মুজাহিদ’ বলতে যোদ্ধাকে বোঝানো হয়েছে- যে যোদ্ধা ’যতক্ষণ না ফিরে আসে’ ততক্ষণ পর্যন্ত হাদীসে বর্ণিত সাওয়াবসমূহ পেতেই থাকে। অন্য হাদীসে ’আবদুল্লাহ বিন হুবশী বলেন,

قِيلَ فَأَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ قَالَ مَنْ جَاهَدَ الْمُشْرِكِينَ بِمَالِه وَنَفْسِه قِيلَ فَأَيُّ الْقَتْلِ أَشْرَفُ قَالَ مَنْ أُهَرِيقَ دَمُه وَعُقِرَ جَوَادُه

লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলো, ’কোনো জিহাদ উত্তম?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবাব দেন, জীবন ও সম্পদ দিয়ে মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, কী ধরনের মৃত্যুবরণ করা উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবাব দিলেন, ওই ব্যক্তি যার রক্ত প্রবাহিত করা হয় এবং সাথে তার সওয়ারী ঘোড়ার পাও কেটে ফেলা হয়। (আবূ দাঊদ, হাঃ ১৪৫১; নাসিরুদ্দীন আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)

আরেক হাদীসে ইবনু ’আব্বাস বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

لَمَّا أُصِيبَ إِخْوَانُكُمْ بِأُحُدٍ جَعَلَ اللَّهُ أَرْوَاحَهُمْ فِي جَوْفِ طَيْرٍ خُضْرٍ تَرِدُ أَنْهَارَ الْجَنَّةِ تَأْكُلُ مِنْ ثِمَارِهَا وَتَأْوِي إِلٰى قَنَادِيلَ مِنْ ذَهَبٍ مُعَلَّقَةٍ فِي ظِلِّ الْعَرْشِ فَلَمَّا وَجَدُوا طِيبَ مَأْكَلِهِمْ وَمَشْرَبِهِمْ وَمَقِيلِهِمْ قَالُوا مَنْ يُبَلِّغُ إِخْوَانَنَا عَنَّا أَنَّا أَحْيَاءٌ فِي الْجَنَّةِ نُرْزَقُ لِئَلَّا يَزْهَدُوا فِي الْجِهَادِ وَلَا يَنْكُلُوا عِنْدَ الْحَرْبِ فَقَالَ اللَّهُ سُبْحَانَه أَنَا أُبَلِّغُهُمْ عَنْكُمْ

যখন উহুদ যুদ্ধে তোমাদের ভাইয়েরা নিহত হলো, আল্লাহ তাদের রূহগুলোকে সবুজ পাখির পেটের ভিতরে ভিতরে স্থাপন করে মুক্ত করে দেন। তাঁরা জান্নাতের ঝরণা ও উদ্যানসমূহ থেকে নিজেদের রিযক আহরণ করেন, অতঃপর তাঁরা সেই আলোকধারায় ফিরে আসেন, যা তাঁদের জন্য আল্লাহর ’আরশের নিচে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। যখন তাঁরা নিজেদের আনন্দ ও শান্তিময় জীবন প্রত্যক্ষ করলেন, তখন বললেন, ’আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা পৃথিবীতে আমাদের মৃত্যুতে শোকার্ত; আমাদের অবস্থা সম্পর্কে কি কেউ তাদের জানিয়ে দিতে পারে, যাতে তারা আমাদের জন্য দুঃখ না করে এবং তারাও যাতে জিহাদে (অংশগ্রহণের) চেষ্টা করে।’ তখন আল্লাহ তা’আলা বললেন, ’তোমাদের এ সংবাদ তাদেরকে পৌঁছে দিচ্ছি।’ এরই প্রেক্ষিতে সূরা আ-লি ’ইমরান-এ নাযিল হয় :

﴿وَلَا تَحْسَبَنَّ ٱلَّذِينَ قُتِلُواْ فِى سَبِيلِ ٱللّٰهِ أَمْوَاتاً بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ﴾

’’আর যারা আল্লার পথে শহীদ হয়, তাদেরকে তুমি মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত’’- (সূরা আ-লি ’ইমরন ৩ : ১৬৯)। (আবূ দাঊদ, হাঃ ২৫২২)

প্রকৃতপক্ষে সশস্ত্র যুদ্ধে অর্থাৎ জিহাদে মৃত্যুবরণ করা খোদ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরই একান্ত বাসনা ছিল :

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِه لَوْلَا أَنَّ رِجَالًا مِنْ الْمُؤْمِنِينَ لَا تَطِيبُ أَنْفُسُهُمْ أَنْ يَتَخَلَّفُوا عَنِّي وَلَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُهُمْ عَلَيْهِ مَا تَخَلَّفْتُ عَنْ سَرِيَّةٍ تَغْزُو فِي سَبِيلِ اللّٰهِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِه لَوَدِدْتُ أَنِّي أُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ.

সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, যদি কিছু মু’মিন এমন না হতো যারা আমার সাথে জিহাদে অংশগ্রহণ না করাকে আদৌ পছন্দ করবে না, অথচ তাদের সবাইকে আমি সওয়ারী দিতে পারছি না, এই অবস্থা না হলে আল্লাহর পথে যুদ্ধরত কোনো ক্ষুদ্র সেনাদল হতেও দূরে থাকতাম না। সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, আমার কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় হলো, আমি আল্লাহর পথে নিহত হই, অতঃপর জীবন লাভ করি। আবার নিহত হই আবার জীবন লাভ করি এবং আবার নিহত হই তারপর আবার জীবন লাভ করি। আবার নিহত হই। (বুখারী হাঃ ২৭৯৭, মুসলিম হাঃ ৪৯৬৭)


৩৭৮৭-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তার রসূলের প্রতি ঈমান আনে, সালাত কায়িম করবে, রমাযানের সিয়াম পালন করবে, আল্লাহর পথে জিহাদ করবে বা স্বীয় জন্মভূমিতে অবস্থান করে- তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর ওপর হক ও দায়িত্ব হয়ে যায়। অতঃপর লোকেরা (সাহাবায়ে কিরাম) বললেন, আমরা কি জনগণের মাঝে এ সুসংবাদ জানিয়ে দিব না? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে একশ’ মর্যাদা প্রস্তুত করে রেখেছে। প্রতি দু’ শ্রেণীর মর্যাদার মাঝে দূরত্বের পরিমাণ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী দূরত্বের সমান। সুতরাং তোমরা যখন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করবে, তখন তার নিকট (জান্নাতুল) ফিরদাওস প্রার্থনা করবে। কেননা তা জান্নাতের মধ্যম ও সর্বোত্তম জান্নাত। তার উপরিভাগে আল্লাহর ’আরশ এবং সেখান থেকে জান্নাতের ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত হয়। (বুখারী)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَصَامَ رَمَضَانَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ جَاهَدَ فِي سهل اللَّهِ أَوْ جَلَسَ فِي أَرْضِهِ الَّتِي وُلِدَ فِيهَا» . قَالُوا: أفَلا نُبشِّرُ النَّاسَ؟ قَالَ: «إِنَّ فِي الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ أَعَدَّهَا اللَّهُ لِلْمُجَاهِدِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا بَيْنَ الدَّرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ الْفِرْدَوْسَ فَإِنَّهُ أَوْسَطُ الْجَنَّةِ وَأَعْلَى الْجَنَّةِ وَفَوْقَهُ عَرْشُ الرَّحْمَنِ وَمِنْهُ تُفَجَّرُ أنهارُ الجنَّةِ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনবে, সালাত কায়িম করবে এবং সিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন’’ এ বাক্যে ইসলামের রুকন ও সালাত এবং সিয়ামের মতো বাহ্যিক ‘আমল হওয়া সত্ত্বেও হজ্জ/হজ ও যাকাতের কথা আলোচনা না করার কারণ :

ইবনু বাত্ত্বল বলেনঃ ‘‘যাকাত ও হজে/হজ্জের আলোচনা না করার কারণ হচ্ছে তা তখনও ফরয হয়নি’’। ইমাম ইবনু হাজার আল ‘আস্ক্বালানী বলেনঃ বরং বর্ণনাকারীদের কোনো একজনের কাছ থেকে এর উল্লেখ বাদ পড়ে গেছে। কেননা তিরমিযীতে মু‘আয বিন জাবাল -এর হাদীসে হজে/হজ্জের কথা উল্লেখ রয়েছে এবং তিনি উক্ত হাদীসে বলেছেনঃ ‘‘আমি জানি না (আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যাকাতের উল্লেখ করেছেন কিনা’’। তাছাড়া উক্ত হাদীসটি ইসলামের রুকনসমূহ বর্ণনা প্রসঙ্গে নয়। সুতরাং যদি তা সংরক্ষিত হয়ে থাকে তাহলে হাদীসে যা উল্লেখ রয়েছে (সালাত ও সিয়াম) তাতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত, যেহেতু এ ‘আমল অধিকাংশ সময় বার বার করা হয়ে থাকে। আর যাকাত তো কেবল তার ওপরই ফরয, যে শর্তানুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক। আর হজ্জ/হজ তো বিলম্ব করার অবকাশের সাথে জীবনে মাত্র একবার আদায় করা ওয়াজিব।

(ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

(جَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ أَوْ جَلَسَ فِي أَرْضِهِ الَّتِي وُلِدَ فِيهَا) ‘‘(আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন) চাই সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করুক কিংবা তার মাতৃভূমিতে বসে থাকুক, যেখানে সে জন্মলাভ করেছে’’ এ বাক্যে ঐ ব্যক্তির জন্য সান্তনা ও আশার বাণী রয়েছে যে জিহাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এই মর্মে যে, সে তার ‘আমলের প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবে না। বরং তার ঈমান ও অন্যান্য আবশ্যকীয় ফরযসমূহ দৃঢ়ভাবে পালনের সাওয়াব তাকে জান্নাতে পৌঁছে দিবে, যদিও জান্নাতে মুজাহিদদের মর্যাদার তুলনায় তার মর্যাদা কম হবে। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

‘‘তারা বললঃ আমরা কি মানুষকে সুসংবাদ দিব না?’’ তিরমিযীর বর্ণনামতে মু‘আয বিন জাবাল এবং ত্ববারানীর বর্ণনামতে আবুদ্ দারদা এ কথা বলেছিলেন। তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে, মু‘আয বিন জাবাল বলেন, আমি বললামঃ

 ألا أخبر بهذا الناس ؟ فقال رسول الله ﷺ ذر الناس يعملون فإن الجنة مائة درجة

‘‘অর্থাৎ- আমি কি মানুষকে এ সংবাদ দিব না? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মানুষকে (চলমান গতিতে) ‘আমল করতে দাও। কেননা জান্নাতে রয়েছে একশত মর্যাদার স্তর।’’ (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

(مَا بَيْنَ الدَّرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ) ‘‘দু’টি স্তরের মাঝে ব্যবধান আকাশ ও জমিনের মাঝের ব্যবধানের ন্যায়’’। একটি হাদীসের বর্ণনায় আছে, আকাশ ও জমিনের মাঝে দূরত্ব পাঁচশত বছরের রাস্তা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

‘আল্লামা ইবনু হাজার আল ‘আসক্বালানী তার ফাতহুল বারীতে উল্লেখ করেন যে, ইমাম তিরমিযী মুহাম্মাদ বিন জুহাদাহ এর সূত্রে বর্ণনা করেন: ‘‘প্রত্যেক দুই স্তরের মাঝে একশত বছরের ব্যবধান’’। আর একই সূত্রে ত্ববারানী বর্ণনা করেন যে, উভয়ের মাঝে পাঁচশত বছরের ব্যবধান। আর উভয় বর্ণনা যদি বিশুদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে দূরত্বের পরিমাণে বছর সংখ্যার ভিন্নতা ভ্রমণের গতির ভিন্নতার কারণে। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

‘‘কেননা তা (জান্নাতুল ফিরদাওস) হচ্ছে জান্নাতসমূহের মধ্যে সবচাইতে মধ্যম এবং সর্বোচ্চ জান্নাত’’ বাক্যে ‘আওসাতুল জান্নাহ্’ তথা ‘মধ্যম জান্নাত’ এর অর্থ হলো সর্বোত্তম জান্নাত। যেমন : আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে ইরশাদ করেন : ‘‘আর অনুরূপভাবে আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি উত্তম জাতি হিসেবে। (সূরা আল বাকারা ২ : ১৪৩)

আর ‘‘ওয়া আ‘লাহা’’ তথা ‘সর্বোচ্চ জান্নাত’ এ অংশকে পূর্বের অংশের সাথে (আতফ) মিলানো হয়েছে তাকীদ বা অর্থকে শক্তিশালী করার জন্য। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

ইমাম ইবনু হিব্বান বলেনঃ ‘‘আওসাত বলতে (জান্নাতুল ফিরদাওসের) প্রশস্ততা এবং আ‘লা বলতে তার উপরে অবস্থিত হওয়া বুঝানো হয়েছে।’’ (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

‘‘আর সেখান থেকে জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হয়’’, অর্থাৎ- জান্নাতুল ফিরদাওস থেকে জান্নাতের চারটি নহর প্রবাহিত হয়। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)

জান্নাতের চারটি নহর হচ্ছে পানি, দুধ, শরাব (মদ) ও মধুর নহর। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

জান্নাতুল ফিরদাওস এমন এক বাগান যেখানে সকল প্রকার নি‘আমাতের সমাহার ঘটেছে। আলোচ্য হাদীসে মুজাহিদীনদের মর্যাদা বা ফাযীলাতের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীসটিতে জান্নাতের বড়ত্ব এবং তন্মধ্যে বিশেষভাবে জান্নাতুল ফিরদাওসের মহত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। উক্ত হাদীসে এ বিষয়েও ইঙ্গিত রয়েছে যে, মুজাহিদের মর্যাদা মুজাহিদ ব্যতীত অন্যরাও তাদের একনিষ্ঠ নিয়্যাত কিংবা নেক ‘আমল দ্বারা কখনো কখনো লাভ করতে সক্ষম হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘‘জান্নাতুল ফিরদাওস মুজাহিদীনদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে’’ এ কথার ঘোষণা দেয়ার পরও সকলকেই জান্নাতুল ফিরদাওস লাভের জন্য প্রার্থনা করতে বলেছেন। (আল্লাহই সর্বাপেক্ষা অধিক জানেন)। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৭৯০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ