লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - লি‘আন
৩৩০৬-[৩] উক্ত রাবী [ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লি’আনকারী স্বামী-স্ত্রী উভয়কে বলেছেনঃ তোমাদের প্রকৃত বিচার (কিয়ামত দিবসে) আল্লাহই করবেন, নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে একজন মিথ্যাবাদী (কিন্তু তোমরা তা স্বীকার করছ না)। তোমার সাথে তার আর কোনো সম্পর্ক থাকল না। এটা শুনে স্বামী বলে উঠল, হে আল্লাহর রসূল! (মোহরে প্রদত্ত) আমার ধন-সম্পদের কি হবে? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাতে তোমার কোনো অধিকার থাকবে না। কেননা তুমি যদি (ব্যভিচারের দাবিতে) সত্য বলে থাক, তবে ইতঃপূর্বে যে স্ত্রীর স্বাদ গ্রহণ করেছ তার বিনিময় প্রদান হয়ে গেছে। আর যদি মিথ্যারোপ করে থাক, তবে সে ধন-সম্পদ তোমার নিকট ফেরতের কথাই আসবে না, কাজেই এর দাবী তো করতেই পার না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ اللِّعَانِ
وَعَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِلْمُتَلَاعِنَيْنِ: «حِسَابُكُمَا عَلَى اللَّهِ أَحَدُكُمَا كَاذِبٌ لَا سَبِيلَ لَكَ عَلَيْهَا» قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَالِي قَالَ: «لَا مَالَ لَكَ إِنْ كُنْتَ صَدَقْتَ عَلَيْهَا فَهُوَ بِمَا اسْتَحْلَلْتَ مِنْ فَرْجِهَا وَإِنْ كُنْتَ كَذَبْتَ عَلَيْهَا فَذَاكَ أَبْعَدُ وَأبْعد لَك مِنْهَا»
ব্যাখ্যা: (حِسَابُكُمَا عَلَى اللّٰهِ أَحَدُكُمَا كَاذِبٌ) অর্থাৎ তোমাদের দু’জনের প্রকৃত হিসাব, মূল বিষয় উদঘাটন এবং এর প্রতিফল দেয়া আল্লাহ তা‘আলার ওপর। কেননা দু’জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। নিজ স্বীকারোক্তি ছাড়া তা জানার আমাদের ব্যবস্থা নেই। তা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা জানেন এবং তিনি প্রকৃত হিসাব নিতে পারেন। এই হাদীস থেকে আমরা এও বুঝতে পারি যে, গায়ব বা অদৃশ্যের জ্ঞানের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অদৃশ্য জ্ঞানের ক্ষমতা রাখেন না। তার সম্মুখে উপস্থিত দুই ব্যক্তির মাঝে কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যাবাদী এইটুকু যেখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জ্ঞানের ক্ষমতা দিয়ে বলতে পারছেন না সেখানে তিনি সার্বিক গায়বের জ্ঞানের অধিকারী কিভাবে হতে পারেন? আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কেউই গায়বের জ্ঞানের অধিকারী নন, এর প্রমাণে কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য বক্তব্য রয়েছে।
(لَا سَبِيلَ لَكَ عَلَيْهَا) অর্থাৎ তাকে পাওয়ার তোমার আর কোনো রাস্তা নেই। হাদীসের এই অংশটুকু তাদের দলীল যারা বলেন, লি‘আন সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়। পৃথক তালাক দেয়া বা বিচারকের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এ সম্পর্কে ইতোপূর্বে আলোচনা হয়েছে।
(يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! مَالِىْ) হে আল্লাহর রসূল! আমার সম্পদ। অর্থাৎ তার অনৈতিক আচরণে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে গেল। এখন আমি তাকে বিবাহ করতে যে খরচ করেছি, মহর ব্যয় করেছি তার কি হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কথার উত্তরে বললেন, তুমি সত্যবাদী হলে তোমার সম্পদ তাকে এতদিন ভোগ করার পিছনে খরচ হয়েছে। তাই তুমি কোনো সম্পদ পাবে না। বিয়ে করে ভোগের বিনিময়ে তা কেটে গেছে। আর তুমি মিথ্যাবাদী হলে তা পাওয়া তো অনেক দূরের কথা অর্থাৎ তা পাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)