৩৩০৫

পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - লি‘আন

৩৩০৫-[২] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তি ও তার স্ত্রীর মাঝে লি’আনের বিধান কার্যকর করে দিলেন, কারণ সন্তানকে পুরুষলোকটি স্বীয় সন্তান বলে অস্বীকৃতি জানাল। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটিয়ে সন্তানটি স্ত্রীলোকটির কাছে অর্পণ তথা মায়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

অত্র হাদীসে আরও উল্লেখ আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষটিকে উপদেশ ও ভীতিপ্রদর্শন করে বললেন, জেনে রাখ, দুনিয়ার শাস্তির তুলনায় আখিরাতের ’আযাব অতি কঠিন। অতঃপর স্ত্রীলোকটিকে ডেকে অনুরূপভাবে উপদেশ ও ভীতিপ্রদর্শন করে বললেন, জেনে রাখ, দুনিয়ার শাস্তির তুলনায় আখিরাতের ’আযাব অতি সামান্য। কিন্তু তারা উভয়ে তাদের নিজ নিজ রায় ও জিদের উপর অবিচল থাকল, ফলে লি’আন কার্যকরী করতে হলো।

بَابُ اللِّعَانِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَاعن بَين رجل وَامْرَأَته فانتقى مِنْ وَلَدِهَا فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا وَأَلْحَقَ الْوَلَدَ بِالْمَرْأَةِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي حَدِيثِهِ لَهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَظَهُ وَذَكَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الْآخِرَةِ ثُمَّ دَعَاهَا فَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا وَأَخْبَرَهَا أَنَّ عَذَاب الدُّنْيَا أَهْون من عَذَاب الْآخِرَة

وعن ابن عمر رضي الله عنهما ان النبي صلى الله عليه وسلم لاعن بين رجل وامراته فانتقى من ولدها ففرق بينهما والحق الولد بالمراة. متفق عليه. وفي حديثه لهما ان رسول الله صلى الله عليه وسلم وعظه وذكره واخبره ان عذاب الدنيا اهون من عذاب الاخرة ثم دعاها فوعظها وذكرها واخبرها ان عذاب الدنيا اهون من عذاب الاخرة

ব্যাখ্যা: (فَانْتَفٰى مِنْ وَلَدِهَا) হাদীসের এই অংশ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, এখানে লি‘আনের ঘটনাটি ঘটেছিল বাচ্চাকে অস্বীকার করা নিয়ে। অর্থাৎ লোকটি সরাসরি স্ত্রীর ওপর যিনার অভিযোগ আরোপ করেনি, বরং নিজ স্ত্রীর সন্তানটিকে তার নয় বলে দাবী করার ভিত্তিতে লি‘আনের ঘটনা ঘটে। অতএব এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, নিজ বাচ্চাকে অস্বীকার করার ক্ষেত্রে লি‘আন বৈধ।
 

(فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا) অর্থাৎ অতএব রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন। হাদীসের এই অংশ দিয়ে ইমাম আবূ হানীফাহ্ দলীল দেন যেন কেবল লি‘আন দ্বারা বিচ্ছেদ ঘটবে না। (এ সংক্রান্ত আলোচনা আমরা ইতোপূর্বে করে এসেছি।)

(وَأَلْحَقَ الْوَلَدَ بِالْمَرْأَةِ) সন্তানটিকে মায়ের সাথে সম্পৃক্ত করে দেন। অর্থাৎ সন্তানের সম্পর্ক পিতার দিকে না থেকে নাকচ করে মায়ের দিকে করে দেন এবং একক মায়ের জন্য বানিয়ে দেন। এ ধরনের সন্তানকে মায়ের দিকে সম্পৃক্ত করে ডাকা হবে এবং মা ও সন্তানের মাঝে মীরাসের বিধান কার্যকর হবে। সহীহ মুসলিমে সাহল (রাঃ)-এর বিবরণে রয়েছে, فَكَانَ ابْنُهَا يُدْعٰى إِلٰى أُمِّه ثُمَّ جَرَتْ السُّنَّةُ أَنَّه يَرِثُهَا وَتَرِثُ مِنْهُ مَا فَرَضَ اللّٰهُ لَهَا

‘‘অতএব তার ছেলেকে মায়ের দিকে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো। এরপর সুন্নাহ চালু হয় যে, সে মায়ের ওয়ারিস হয় এবং মা তার ওয়ারিস হয়, আল্লাহ মায়ের জন্য যা নির্ধারণ করেছেন।’’ (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩১৫; সহীহ মুসলিম- অধ্যায় : লি‘আন, হাঃ ২৭৪১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)