১৭৬৪

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবর যিয়ারত

১৭৬৪-[৩] বুরায়দাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরস্থানে গেলে এ দু’আ পড়তে শিখিয়েছেনঃ ’’আস্‌সালা-মু ’আলায়কুম আহলাদ দিয়া-রি মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুসলিমীনা ওয়া ইন্না- ইনশা-আল্ল-হু বিকুম লালা-হিকূনা নাসআলুল্ল-হা লানা- ওয়ালাকুমুল ’আ-ফিয়াহ্’’ (অর্থাৎ হে কবরবাসী মু’মিন ও মুসলিমগণ! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ অবশ্যই আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হচ্ছি। আমরা আমাদের ও তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি।)। (মুসলিম)[1]

بَابُ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ

وَعَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُهُمْ إِذَا خَرَجُوا إِلَى الْمَقَابِرِ: «السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَلَاحِقُونَ نَسْأَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের মধ্যে কবর যিয়ারতের নিয়ম-কানুন জানা যায়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন কবরস্থানের উদ্দেশে বের হতেন, তখন তিনি সাহাবীদেরকে শিক্ষা দিতেন অর্থাৎ কবরস্থানে পৌঁছে কি বলতে হবে তা শিক্ষা দিতেন। আর তা হল

 اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ اَهْلَ الدِّيَارِ... وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ

আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে শিক্ষা দিতেন যে, কিভাবে কবরবাসীকে সালাম দিতে হবে। আর এটা এজন্য যে, জাহিলী যুগের লোকেরা আগে নাম বলত এবং পরে নাম বলত।

আল্লামা খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, মৃতের ওপর সালাম দিতে হবে সেভাবে, যেভাবে জীবিত ব্যক্তির ওপর সালাম দেয়া হয়। এ সালাম দু‘আ পাঠের পূর্বে। অর্থাৎ কবর যিয়ারত শুরু হবে সালাম দিয়ে। সালামের ক্ষেত্রে নাম পরে আসবে, সালাম আগে হবে। অর্থাৎ عَلَيْكَ سَّلَامُ اللهِ না হয়ে اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ হবে।

এ ব্যাপারে কুরআন মাজীদে একাধিক স্থানে দলীল পাওয়া যায়। সূরাহ্ হূদ-এর ৭৩ নং আয়াতে রয়েছে যে, رَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكتُهٗ عَلَيْكُمْ اَهْلَ الْبَيْتِ সূরাহ্ আস্ সা-ফ্ফা-ত এর ১৩০ নং আয়াতে রয়েছে سَلَامٌ عَلى اِلْ يَاسِيْنَ

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরবাসীকে اهل الديار বলার কারণ হল যে, আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবিত ব্যক্তি সাথে তুলনা করে তাদেরকে اهل الديار বলেছেন। অর্থাৎ জীবিতরা যেমন এক সাথে বাস করে, ঠিক তেমনি মৃতরাও কবরস্থানে একত্রে বসবাস করে।

এ হাদীসের মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে যে, কবরবাসীদের মধ্যে মু’মিন ও মুসলিমের জন্য সালাম প্রযোজ্য। যদি এর মধ্যে কোন মুনাফিক্ব থাকে তাহলে তাকে সালাম দেয়া যাবে না।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আল্লাহ চান তাহলে আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হব অর্থাৎ ইন্তিকালের মাধ্যমে তোমাদের সাথে কবর জগতে মিলিত হব। এখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শর্ত যুক্ত করার কারণ হল, এর দ্বারা বারাকাত লাভ করা ও নিজেকে সোপর্দ করা। আর আল্লাহ তা‘আলা انشاء الله (ইনশা-আল্ল-হ) ছাড়া কোন কথা বলতে নিষেধ করেছেন।

আমরা আমাদের জন্য এবং তোমাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব। এর দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় যে, কবরবাসীকে সালাম দেয়া এবং তাদের জন্য দু‘আ করা উভয়ই মুস্তাহাব কাজ। এ হাদীসটি মুসলিম ছাড়াও মুসনাদে আহমাদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ কিতাবে বর্ণিত আছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ