পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবর যিয়ারত
১৭৬৩-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার নিজের মায়ের কবরে গেলেন। সেখানে তিনি নিজেও কাঁদলেন এবং তাঁর আশেপাশের লোকদেরকেও কাঁদালেন। তারপর বললেন, আমি আমার মায়ের জন্য মাগফিরাত কামনা করতে আল্লাহর কাছে অনুমতি চাইলাম। কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হলো না। তারপর আমি আমার মায়ের কবরের কাছে যাওয়ার অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেয়া হলো। তাই তোমরা কবরের কাছে যাবে। কারণ কবর মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দেয়। (মুসলিম)[1]
بَابُ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: زَارَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْرَ أُمِّهِ فَبَكَى وَأَبْكَى مَنْ حَوْلَهَ فَقَالَ: «اسْتَأْذَنْتُ رَبِّي فِي أَن أسْتَغْفر لَهَا فَلم يُؤذن لي ن وَاسْتَأْذَنْتُهُ فِي أَنْ أَزُورَ قَبْرَهَا فَأُذِنَ لِي فَزُورُوا الْقُبُورَ فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الْمَوْتَ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
ব্যাখ্যা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত আব্ওয়া নামক স্থানে স্বীয় মায়ের কবর যিয়ারত করেন। এটা ছিল মক্কা বিজয় সময়কার ঘটনা। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক মায়ের ক্ববরের পাশে কান্নার কারণ হল যে, তার মায়ের ওপর ‘আযাব হচ্ছিল। এ হাদীসটি কবরস্থানে কান্না করা জায়িযের ব্যাপারে দলীল। অর্থাৎ কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে কান্না করা জায়িয।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মায়ের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুমতি চাইলেন, কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাকে এ ব্যাপারে অনুমতি দিলেন না। এ অনুমতি না দেয়ার কারণ সম্পর্কে ‘উলামায়ে কিরাম বিভিন্ন মত পেশ করেছেন।
ইবনু মালিক (রহঃ) বলেন, কেননা তাঁর মা ছিলেন কাফির। আর কাফিরের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাজায়িয। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কখনো তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।
আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস এ ব্যাপারে দলীল যে, যারা ইসলামী আদর্শের বাইরে ইন্তিকাল করবে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা অবৈধ তথা নাজায়িয।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, এর দ্বারা কাফিরদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করাকে নিষেধ করা হয়েছে।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছে স্বীয় মায়ের কবর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে আল্লাহ তাকে এ ব্যাপারে অনুমতি দিলেন।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, মুশরিকদের সাথে তাদের জীবদ্দশায় সাক্ষাত করা জায়িয এবং মৃত্যুর পর কবর যিয়ারত করা জায়িয। কেননা যখন মৃত্যুর পর জায়িয তাহলে জীবিত অবস্থায় সাক্ষাত করাতো আরো উত্তম।
আল্লাহ তা‘আলা মাতা-পিতা সম্পর্কে বলেন, ‘‘দুনিয়াতে তারা দু’জন সন্তানের জন্য উত্তম সাথী।’’ (সূরাহ্ লুক্বমান ৩১ : ১৫)
গ্রন্থকার বলেন, আমি বলবঃ এ হাদীস এ কথা নির্দেশ করছে যে, তাঁর মা ইসলামের উপর মারা যাননি।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) ও ইবনু মাজাহ স্ব স্ব কিতাবে এ হাদীসকে যে অধ্যায়ের মধ্যে উল্লেখ করেছেন তার নাম করেছেন باب زيارة قبر المشرك অর্থাৎ মুশরিকের কবর যিয়ারত সংক্রান্ত অধ্যায়।