১৭৪৪

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা

১৭৪৪-[২৩] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (আমার প্রথম স্বামী) আবূ সালামাহ্ মৃত্যুবরণ করলে আমি বললাম, আবূ সালামাহ্ মুসাফির ছিলেন, মুসাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলেন। অর্থাৎ মক্কার লোক মদীনায় মৃত্যুবরণ করলেন। আমি তাঁর জন্য এমনভাবে কাঁদব যে, আমার কান্নাকাটি সম্পর্কে লোকেরা আলোচনা করবে। আমি কান্নাকাটি করার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ একজন মহিলা এসে আমার সাথে কাঁদতে চাইল। এমন সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন। তিনি বললেন, এই ঘর হতে আল্লাহ দু’বার শায়ত্বন (শয়তান) কে বহিষ্কার করেছেন। তোমরা তাকে পুনরায় এখানে আনতে চাও? উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, তাঁর এ হুঁশিয়ারী শুনে আমি (কান্নাকাটি) করা হতে চুপ হয়ে গেলাম। অতঃপর আমি আর কাঁদিনি। (মুসলিম)[1]

وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: لَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ قُلْتُ غَرِيبٌ وَفِي أَرْضِ غُرْبَةٍ لَأَبْكِيَنَّهُ بُكَاءً يُتَحَدَّثُ عَنْهُ فَكُنْتُ قَدْ تَهَيَّأْتُ لِلْبُكَاءِ عَلَيْهِ إِذْ أَقْبَلَتِ امْرَأَةٌ تُرِيدُ أَنْ تُسْعِدَنِي فَاسْتَقْبَلَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَتُرِيدِينَ أَنْ تُدْخُلِي الشَّيْطَانَ بَيْتًا أَخْرَجَهُ اللَّهُ مِنْهُ؟» مَرَّتَيْنِ وَكَفَفْتُ عَنِ الْبُكَاءِ فَلَمْ أبك. رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে মৃত ব্যক্তির জন্য ক্রন্দন করাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিষেধ করা হয়েছে। হাদীসে আবূ সালামাহ্ বলতে উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-এর প্রথম স্বামীর কথা বলা হয়েছে।

আবূ সালামার ক্ষেত্রে غريبغريب শব্দ প্রয়োগের কারণ হল, তিনি ছিলেন মক্কার লোক। কিন্তু তিনি মৃত্যুবরণ করেন মদীনাতে।

হাদীসের ভাষ্য মতে দেখা যাচ্ছে যে, উম্মু সালামার প্রথম স্বামী মারা গেলে তিনি অত্যধিক ক্রন্দন করতে ইচ্ছা করেছিলেন এবং একজন নারী তাকে কান্নার ব্যাপারে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত মহিলার কাছে আসলেন এবং বললেন, তুমি কি ঘরের মধ্যে শায়ত্বন (শয়তান)কে প্রবেশ করাতে চাও। আল্লাহ তা‘আলা তাকে তো ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। এ কথা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’বার বললেন। এ কথার দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে যে ঘরে বিলাপ করে কান্না করা হয়, সে ঘরে শায়ত্বন (শয়তান) প্রবেশ করে।

আল্লাহ শায়ত্বনকে বের করে দিয়েছেন এর অর্থ হল, এ ঘরের অধিবাসীকে শায়ত্বনের কুমন্ত্রণা থেকে হিফাযাত করেছেন এবং শায়ত্বনকে এ ঘর থেকে দূর করে দিয়েছেন।

এরপর উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) কান্না বন্ধ করে দিলেন। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, কোন বিষয়ে পূর্ব জ্ঞান থাকলে সে বিষয়ে শারী‘আতের কোন বিধান অবগত হলে সাথে সাথে তা মেনে নিতে হবে।

একজন নারী উম্মু সালামাকে কান্নার সময় সাহায্য করতে চাইল। অর্থাৎ উম্মু সালামাহ্ উক্ত নারীকে কাঁদাতে চাইলেন। যে কারণে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে শায়ত্বনের (শয়তানের) প্রবেশ করার কথা বললেন। সুতরাং এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে কান্নার সময় ক্রন্দনকারীকে সহযোগিতা করা যাবে না। বরং তাকে না কাঁদার জন্য উপদেশ দিতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ