লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৪৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত
(بَاب الْخُطْبَة وَالصَّلَاة) জুমু’আর খুতবাহ্ ও সালাত এবং উভয়ের গুণাবলীর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়। যেমন- উভয়ের পূর্ণতা ও ওয়াক্তের বিবরণ। الْخُطْبَة শব্দটি মাসদার خَطَبَ يَخْطُبُ خِطَابَهً وَخُطْبَةً শাব্দিক অর্থঃ ওয়াজ করা বা নাসীহাত করা। পরিভাষায় খুতবাহ্ এমন একটি ইবারত বা বক্তব্য যা যিকর, তাশাহুদ, দরূদ ও নাসীহাতের উপর সম্পৃক্ত। ’উলামাগণের মাঝে এ মর্মে মতপার্থক্য রয়েছে যে, খুতবাহ্ জুমু’আর সালাত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত নাকি সেটা জুমু’আর রুকনগুলোর কোন একটি রুকন? জমহূর ’উলামাগণ বলেছেন যে, নিশ্চয় সেটা (খুতবাহ্) শর্ত ও রুকন।
কতকগুলো বিদ্বানগণ বলেন যে, খুতবাহ্ ফরয নয়। ইমাম মালিক (রহঃ) জমহূর অনুসারীগণ বলেনঃ সেটা ফরয, কিন্তু তা অগ্নিপূজকদের ওপর নয়। মির্’আত প্রণেতা বলেনঃ আমি বলব যে, দাঊদ আয যাহিরী, ইবনু হাযম, হাসান আল বসরী এবং জাওবাসী (রহঃ) মত ব্যক্ত করেছেন যে, জুমু’আর খুতবাহ্ ফরয নয় বরং মুস্তাহাব এবং সেটাই সঠিক। কেননা জুমু’আর দিনের খুতবার আবশ্যকতার উপর কুরআন-সুন্নাহ থেকে কোন দলীল প্রমাণিত হয়নি এবং আল্লাহ তা’আলার কথাঃ فَاسْعَوْا إِلى ذِكْرِ اللّهِ ’’তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও’’- (সূরাহ্ আল জুমু’আহ্ ৬২: ৯)। এখানে সেটার উপর কোন দলীল নেই। কেননা আদিষ্টিত ’’যিকর’’ দ্বারা সালাতের দিকে দ্রুত যাওয়া উদ্দেশ্য।
১৪০১-[১] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে পড়লে জুমু’আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। (বুখারী)[1]
بَابُ الْخُطْبَةِ وَالصَّلَاةِ
عَنْ أَنَسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي الْجُمُعَةَ حِينَ تَمِيلُ الشَّمْسُ. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে জমহূর ‘উলামাগণ যে মত ব্যক্ত করেছেন তার দলীল রয়েছে, নিশ্চয় জুমু‘আর সালাতের প্রথম ওয়াক্ত হলোঃ যখন সূর্য ঢলে পড়বে, যেমন যুহরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) এবং সূর্য ঢলা সালাত হবে না এবং সহীহ মুসলিম-এর বর্ণনায় সালামাহ্ ইবনু আকওয়াহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসও এটার উপর প্রমাণ করে।
তিনি বলেনঃ (كُنَّا نَجْمَعُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ - ﷺ - إِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ نَرْجِعُ نَتَتَبَّعُ الْفَيْءَ)
অর্থাৎ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে জুমু‘আর সালাত আদায় করতাম, যখন সূর্য হেলে যেত। অতঃপর আমরা ছায়ার পিছে পিছে ফিরতাম।
আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ ইমাম মালিক, আবূ হানীফাহ্, শাফি‘ঈ এবং সাহাবী ও তাবি‘ঈনদের মধ্য হতে জমহূর ‘উলামাগণ এবং তাদের পরবর্তী মুহাক্কিকগণ বলেছেন যে, সূর্য না ঢলা পর্যন্ত জুমু‘আর সালাত বৈধ হবে না। এ বিষয়ে ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল ও ইসহাক্ব (রহঃ) ব্যতীত কেউ দ্বিমত পোষণ করেননি, তারা জুমু‘আর সালাত সূর্য ঢলার পূর্বে আদায় করা বৈধ বলেছেন। তবে ইবনুল কুদামাহ্ (রহঃ) আল মুগনীর ২য় খন্ডর ৩৫৭ পৃষ্ঠায় বলেছেন যে, প্রথম মত উত্তম ও বিশুদ্ধ এবং তাদের মতে সূর্য ঢলা ব্যতীত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হবে না।