১১২৩

পরিচ্ছেদঃ ২৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমামতির বর্ণনা

১১২৩-[৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তিন লোকের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কবূল হয় না। ঐ লোক যে কোন জাতির ইমাম অথচ সে জাতি তার ওপর অসন্তুষ্ট। দ্বিতীয় ঐ লোক যে সালাতে বিলম্ব করে উত্তম সময় চলে যাওয়ার পর আসে। আদায় করে আসা মর্ম হলো সালাতের মুস্তাহাব সময় চলে যাওয়ার শেষে আসে। তৃতীয় ঐ লোক যে স্বাধীন লোককে দাস বা দাসীথৈ পরিণত করে মনে করে। (আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثَلَاثَةٌ لَا تُقْبَلُ مِنْهُمْ صَلَاتُهُمْ: مَنْ تَقَدَّمَ قَوْمًا وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ وَرَجُلٌ أَتَى الصَّلَاةَ دِبَارًا وَالدِّبَارُ: أَنْ يَأْتِيَهَا بَعْدَ أَنْ تَفُوتَهُ وَرَجُلٌ اعْتَبَدَ مُحَرَّرَةً . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

ব্যাখ্যা: (لَا تُقْبَلُ مِنْهُمْ صَلَاتُهُمْ) আবূ দাঊদে আছে (لَا يَقْبَلُ اللهُ مِنْهُمْ صَلَاةً) ইবনু মাজাহতে আছে (لَا يُقْبَلُ مِنْهُمْ صَلَاةٌ) বাক্যটি দ্বারা যা বুঝা যাচ্ছে তাহল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) গ্রহণ হবে না বলতে সাওয়াব অর্জন হবে না। সালাত বা সালাতের অংশ বিশুদ্ধ হবে না তা উদ্দেশ্য নয়।

(وَهُمْ لَه كَارِهُوْنَ) শারহুস সুন্নাতে একমতে বলা হয়েছে, হাদীসে ইমাম দ্বারা অত্যাচারী ইমাম উদ্দেশ্য। পক্ষান্তরে যে ইমাম সুন্নাত প্রতিষ্ঠা করবে, অতঃপর যে ব্যক্তি তাকে অপছন্দ করবে তার উপর তিরস্কার বর্তাবে। খাত্ত্বাবী মা‘আলিম গ্রন্থে ১ম খন্ডে ১৭০ পৃষ্ঠাতে বলেছেন, এ হুমকি ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাদৃশ্য যে ইমামতির উপযুক্ত নয়। সুতরাং তার ইমামতির বিষয়ে ঘৃণা সৃষ্টি করতে হবে এবং তাতে বিজয়ী হলে মানুষ তার ইমামতিকে অপছন্দ করবে। পক্ষান্তরে ব্যক্তি যদি ইমামতির যোগ্য হয় তাহলে তিরস্কার ঐ ব্যক্তির ওপর বর্তাবে যে তাকে ঘৃণা করে।

(دبارًا) এমন ব্যক্তি যে সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার সময় সালাত আদায় করে ফলে সালাতের ব্যাপক সময় সে পায় না আর এটা তার অভ্যাস। ইবনু হাজার (রহঃ) বলেছেন, ব্যক্তি সালাতকে তার স্বসময়ে পায় না। জাযারী (রহঃ) বলেন, (دبارًا) হল বস্ত্তর সময়সমূহের শেষাংশ। (وَالدِّبَارُ: أَنْ يَأْتِيَهَا بَعْدَ أَنْ تَفُوتَه) অর্থাৎ ওযর ছাড়া ব্যক্তির পক্ষে জামা‘আতে সালাত আদায় করা ছুটে যাওয়া বা আদায় করা ছুটে যাওয়া। খাত্ত্বাবী বলেছেন, সালাত আদায়কারী সালাতে পরে আসার বিষয়টিকে ব্যক্তি এমনভাবে অভ্যাস হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে যে, মানুষ সালাত থেকে ফারেগ ও ফিরে যাওয়ার পর সে সালাতে উপস্থিত হয়। আর এ ব্যাখ্যাটি রাবীর পক্ষ থেকে পরিষ্কার।

(وَرَجُلٌ اعْتَبَدَ مُحَرَّرَةً) ত্বীবী (রহঃ) বলেন, স্বাধীন অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে গ্রহণ করা, অতঃপর তাকে দাস হিসেবে দাবী করা এবং তার কর্তা হওয়া। অথবা ব্যক্তি তার দাসকে আযাদ করে তার থেকে জোরমূলক খিদমাত নেয়া। অথবা উপকার ও খিদমাত গ্রহণের জন্য দীর্ঘ সময় যাবৎ দাসের মুক্তির বিষয়টি গোপন করা। ইবনু মালিক বলেছেন, হাদীস (مُحَرَّرَةً) শব্দকে স্ত্রী লিঙ্গ নিয়ে (النسمة) শব্দের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে যাতে তা দাস দাসী উভয়কে শামিল করে। একমতে বলা হয়েছে হাদীসে (مُحَرَّرَةً)-কে খাস করা হয়েছে তার দুর্বলতার ও অক্ষমতার কারণে যা (محرر) এর বিপরীত কারণ তার ক্ষমতা রয়েছে তাকে প্রতিহত করার।

শাওকানী (রহঃ) বলেছেন, তার আযাদকারী তাকে মুক্ত করার পর আবার দাস হিসেবে গ্রহণ করা। খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেছেন, স্বাধীন ব্যক্তিকে দাস হিসেবে গ্রহণ করা দু’ভাবে হতে পারে প্রথমে তাকে আযাদ করা; অতঃপর তা গোপন করে রাখা অথবা অস্বীকার করা। আর দু’টি পদ্ধতির মাঝে এটি সর্বাধিক নিকৃষ্ট। দ্বিতীয় পদ্ধতি হল ব্যক্তি তাকে আযাদের পর জোরমূলক তার কাছে থেকে সেবা গ্রহণ করা অর্থাৎ ধমকের মাধ্যমে।


হাদিসের মানঃ সহিহ/যঈফ [মিশ্রিত]
পুনঃনিরীক্ষণঃ