৬৯৩

পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৬৯৩-[৫] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন মাসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে সফর করা যায় নাঃ (১) মসজিদে হারাম, (২) মসজিদে আক্বসা (আকসা) ও (৩) আমার এই মাসজিদ (মসজিদে নাবাবী)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَسَاجِدِ وَمَوَاضِعِ الصَّلَاةِ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ: مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى وَمَسْجِدِي هَذَا

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী- (لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ) ‘‘সফর করা যায় না’’। মসজিদে হারাম, মসজিদে আক্বসা (আকসা) ও মসজিদে নাবাবী এ সম্মানিত স্থানগুলো ছাড়া অন্য স্থানে সফরের উদ্দেশে বের হওয়া ঠিক নয়। কারণ এগুলোর আলাদা বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা রয়েছে। কেননা তিনটি মসজিদের একটি হলো মসজিদে হারাম। এটা তাদের (মুসলিমদের) ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা), যার ভিত্তি প্রস্তর করেছেন ইব্রাহীম (আঃ)।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে পূর্ববর্তী জাতির ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা)  যা সুলায়মান (আঃ) নির্মাণ করেছিলেন। এর তৃতীয়টি যা নির্মিত হয়েছে তাক্বওয়ার উপর এবং এর নির্মাতা হচ্ছেন সমগ্র সৃষ্টির উৎকৃষ্ট ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী: (مَسْجِدِىْ هذَا) আমার এ মাসজিদ, অর্থাৎ- মদীনার মাসজিদ। অন্য বর্ণনায় আছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাসজিদ। হাদীসে বর্ণিত এ তিনটি মসজিদের আলাদা বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা রয়েছে অন্য মসজিদের তুলনায়। কেননা তা নাবীদের মাসজিদ এবং প্রথমত সকল মানুষের ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা)  এবং হাজ্জের (হজ্জের/হজের) স্থান। দ্বিতীয়ত পূর্ব জাতিরও ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা)  ছিল। তৃতীয়ত এটা তাক্বওয়ার উপর গঠিত।

এ তিনটি মাসজিদ ব্যতীত অন্য সকল স্থানে সফর করার ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে, যেমন সৎ ব্যক্তির সাক্ষাতের উদ্দেশে গমন করা, হোক না তিনি মৃত অথবা জীবিত এবং সম্মানিত স্থানে সফর করা বারাকাত গ্রহণ এবং সালাত আদায়ের উদ্দেশে।

শায়খ আবূ মুহাম্মাদ আল্ জুওয়াইনী বলেন, হাদীসের ভাষ্যানুযায়ী অন্য স্থানে সাওয়াবের উদ্দেশে সফর করা হারাম।

হাদীসের ভাষ্যানুযায়ী সাধারণভাবে এটা প্রমাণিত হয় যে, এ তিন মাসজিদ ব্যতীত কোন স্থানে বারাকাত পাওয়া ও সালাত আদায়ের উদ্দেশে সফর করা বৈধ নয়। আর ব্যবসা, জ্ঞান অন্বেষণ বা অন্য কোন উদ্দেশে কোন স্থানে সফর করা বৈধ অন্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যা স্বতন্ত্র বিষয়।

শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী ‘হুজ্জাতুল্লাহ’ কিতাবে বলেনঃ জাহিলী যুগের লোকেরা তীর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ বিশ্বাস নিয়ে সফর করতো যে, সেখানে বারাকাত পাওয়া যাবে। এ চিন্তা-চেতনাকে বন্ধ করার জন্যে যাতে আল্লাহ ছাড়া আর কারো ‘ইবাদাতের পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেজন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ঘোষণা দিয়েছেন। আমার নিকট সত্য হলো যে, কবর এবং ওলী-আওলিয়াদের ‘ইবাদাতের স্থান এবং তূর পাহাড় সফরের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সবই সমান।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ