৪৬২২

পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাকদীর সম্পর্কে।

৪৬২২. উবায়দুল্লাহ ইবন মু’আয (রহঃ) ..... ইয়াহইয়া ইবন ইয়ামার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বসরার অধিবাসী মা’আবাদ জুহানী সর্ব প্রথম তাকদীরের সমালোচনা করেন। এ সময় আমি এবং হুমায়দ ইবন আবদুর রহমান হিময়ারী (রহঃ) হাজ্জ বা উমরার উদ্দেশ্যে বের হই। আমরা বলাবলি করিঃ যদি আমাদের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন সাহাবীর দেখা হয়, তবে আমরা তার সঙ্গে এ ব্যক্তিদের সম্পর্কে আলোচনা করবো, যারা তাকদীর সম্পর্কে এরূপ বলে। তখন আল্লাহ্‌র মেহেরবানীতে আমরা আবদুল্লাহ্‌ ইবন উমার (রাঃ)-এর দেখা পাই-মসজিদে প্রবেশ করার সাথে-সাথেই।

আমি এবং আমার সাথী তাকে ঘিরে ধরি এবং আমি মনে করি আমার সাথী আমাকে কথা বলার সুযোগ দেবে। তখন আমি তাকে বলিঃ হে আবূ আবদুর রহমান! আমাদের মাঝে এমন কিছু লোকের সৃষ্টি হয়েছে, যারা কুরআন পাঠ করে এবং এর সূক্ষ্ম বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বলেঃ তাকদীর বলে কিছুই নেই। সব কিছুই এমনিতেই হয়ে থাকে। এ কথা শুনে তিনি বলেনঃ যখন তাদের সাথে তোমাদের দেখা হবে, তখন তাদের বলবে, আমি তাদের উপর অসন্তুষ্ট এবং তারাও আমার উপর অসন্তুষ্ট। ঐ জাতের (আল্লাহ্‌র) কসম! যার কসম আবদুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) করছে; যদি তাদের কারো কাছে উহুদ পরিমাণ সোনা থাকে এবং তারা তা (আল্লাহ্‌র রাস্তায় খরচ করে, তবু ও আল্লাহ্‌ ততক্ষণ তা কবূল করবেন না, যতক্ষণ না সে তাকদীরের প্রতি ঈমান আনে।

এরপর তিনি বলেনঃ আমার কাছে উমার ইবন খাত্তাব (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসা ছিলাম। সে সময় সেখানে শাদা পোশাক পরিহিত, কাল চুল বিশিষ্ট একজন আসে, যার মধ্যে সফরের কোন চিহ্ন ছিল না এবং তাঁর দুই জানু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জানুদ্বয়ের নিকট রেখে, স্বীয় দু’হাত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জানুর উপর রেখে জিজ্ঞাসা করেঃ হে মুহাম্মদ! ইসলাম কি, সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বলেনঃ ইসলাম হলো-এরূপ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রাসূল। তুমি সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং রমযানের রোযা রাখবে এবং সামর্থ থাকলে আল্লাহ্‌র ঘর যিয়ারত (হাজ্জ) করবে। তখন সে বলেঃ আপনি সত্য বলেছেন।

উমার (রাঃ) বলেনঃ তার এরূপ উক্তিতে আমরা বিস্মিত হই এ জন্য যে, সে নিজে প্রশ্ন করছে এবং নিজেই তা সত্যায়িত করছে! এরপর সে জিজ্ঞাসা করেঃ ঈমান কি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ঈমান হলো-তুমি আল্লাহ্‌, ফেরেশতা, কিতাব, রাসূল এবং কিয়ামতের দিনের উপর দৃঢ়-বিশ্বাস রাখবে, আর এও ইয়াকীন রাখবে যে, তাকদীরের ভাল-মন্দ সবই আল্লাহ্‌র তরফ থেকে হয়। এ কথা শুনে সে বলেঃ আপনি ঠিকই বলেছেন। এরপর সে ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ আমাকে ইহসান সম্পর্কে কিছু বলুন। জবাবে তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহ্‌র ইবাদত এ ভাবে করবে, যেন তুমি তাঁকে দেখছো। আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তবে এরূপ মনে করবে যে, তিনি তোমাকে দেখছেন।

এরপর সে ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ কিয়ামত কবে হবে? তিনি বলেনঃ এ সম্পর্কে যাকে জিজ্ঞাসা করে হয়েছে, সে প্রশ্নকারী থেকে অধিক অবহিত নয়। তখন সে ব্যক্তি বলেঃ তাহলে এর আলামত সম্পর্কে কিছু বলুন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ দাসী তার মনিবের জন্ম দেবে (অর্থাৎ সন্তান তার মায়ের নাফরমানী করবে); আর তুমি দেখবে যে, খালি পা ও খালি গায়ের অধিকারী মুখাপেক্ষী রাখাল সম্প্রদায়ের লোকেরা উঁচু-উঁচু প্রাসাদ তৈরী করে গর্ব প্রকাশ করবে। রাবী বলেনঃ পরে সে ব্যক্তি চলে গেলে, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কিছুক্ষণ অবস্থান করি। তিনি বলেনঃ হে উমার! তুমি কি জান, এ প্রশ্নকারী ব্যক্তিটি কে? আমি বলিঃ আল্লাহ্‌ এবং তাঁর এ বিষয়ে অধিক জ্ঞাত। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ইনি হলেন, জিবরীল (আঃ), যিনি তোমাদের কাছে এসেছিলেন দীন সম্পর্কে শিক্ষা দেয়ার জন্যে।

باب فِي الْقَدَرِ

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسٌ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ كَانَ أَوَّلَ مَنْ تَكَلَّمَ فِي الْقَدَرِ بِالْبَصْرَةِ مَعْبَدٌ الْجُهَنِيُّ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حَاجَّيْنِ أَوْ مُعْتَمِرَيْنِ فَقُلْنَا لَوْ لَقِينَا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَاهُ عَمَّا يَقُولُ هَؤُلاَءِ فِي الْقَدَرِ ‏.‏ فَوَفَّقَ اللَّهُ لَنَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ دَاخِلاً فِي الْمَسْجِدِ فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي فَظَنَنْتُ أَنَّ صَاحِبِي سَيَكِلُ الْكَلاَمَ إِلَىَّ فَقُلْتُ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّهُ قَدْ ظَهَرَ قِبَلَنَا نَاسٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَيَتَفَقَّرُونَ الْعِلْمَ يَزْعُمُونَ أَنْ لاَ قَدَرَ وَالأَمْرُ أُنُفٌ ‏.‏ فَقَالَ إِذَا لَقِيتَ أُولَئِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنِّي بَرِيءٌ مِنْهُمْ وَهُمْ بُرَآءُ مِنِّي وَالَّذِي يَحْلِفُ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ لَوْ أَنَّ لأَحَدِهِمْ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فَأَنْفَقَهُ مَا قَبِلَهُ اللَّهُ مِنْهُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ ثُمَّ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ لاَ يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ وَلاَ نَعْرِفُهُ حَتَّى جَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنِ الإِسْلاَمِ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ الإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلاً ‏"‏ ‏.‏ قَالَ صَدَقْتَ ‏.‏ قَالَ فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِيمَانِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ صَدَقْتَ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِحْسَانِ قَالَ ‏"‏ أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَاتِهَا ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَنْ تَلِدَ الأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ انْطَلَقَ فَلَبِثْتُ ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ يَا عُمَرُ هَلْ تَدْرِي مَنِ السَّائِلُ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ ‏"‏ ‏.‏


Yahya b. Ya`mur said : The first to speak on Divine decree in al-Basrah was Ma`bad al Juhani. I and Humaid b. `Abd al-Rahman al-Himyari proceeded to perform Hajj or `Umrah. We said : would that we meet any of the Companions of the Messenger of Allah (ﷺ) so that we could ask him about what they say with regard to divine decree. So Allah helped us to meet `Abd Allah b. `Umar who was entering the mosque. So I and my companion surrounded him, and I thought that my companion would entrust me the task of speaking to him. Then I said : Abu ‘Abd al-Rahman, there appeared on our side some people who recite the Qur'an and are engaged in the hair-splitting of knowledge. They conceive that there is no Divine decree and everything happens freely without predestination. He said : When you meet those people, tell them that I am free from them, and they are free from me. By Him by Whom swears ‘Abd Allah b. ‘Umar, if one of them has gold equivalent to Uhud and he spends it, Allah will not accept it from him until he believes in Divine decree. He then said : ‘Umar b. Khattab transmitted to me a tradition, saying : One day when we were with the Messenger of Allah (ﷺ) a man with very white clothing and very black hair came up to us. No mark of travel was visible on him, and we did not recognize him. Sitting down beside the Messenger of Allah (ﷺ), leaning his knees against his and placing his hands on his thighs, he said : tell me, Muhammad, about Islam. The Messenger of Allah (ﷺ) said : Islam means that you should testify that there is no god but Allah, and Muhammad is Allah’s Apostle, that you should observe prayer, pay Zakat, fast during Ramadan, and perform Hajj to the house (i.e., Ka`bah), If you have the means to go. He said : You have spoken the truth. We were surprised at his questioning him and then declaring that he spoke the truth. He said : Now tell me about faith. He replied : It means that you should believe in Allah, his angels, his Books, his Apostles and the last day, and that you should believe in the decreeing both of good and evil. He said : You have spoken the truth. He said : now tell me about doing good (ihsan). He replied: It means that you should worship Allah as though you are seeing him; if you are not seeing him, he is seeing you. He said: Now tell me about the hour. He replied : The one who is asked about it is no better informed than the one who is asking. He said : Then tell me about its signs. He replied : That a maidservant should beget her mistress, and that you should see barefooted, naked, poor men and shepherds exalting themselves in buildings. ‘Umar said : He then went away, and I waited for three days, then he said : Do you know who the questioner was, `Umar? I replied : Allah and his Apostle know best. He said : He was Gabriel who came to you to teach you your religion.