হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৫৩৭৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভীতি প্রদর্শন ও সতর্কীকরণ

৫৩৭৩-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাযিল হলো, (وَأَنْذِرْ عشيرتك الْأَقْرَبين)“হে নবী! তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সাবধান করে দাও”- (সূরা আশ শুআরা ২৬ : ২১৪); তখন নবী (সা.) কুরায়শদেরকে আহ্বান করলে তারা সমবেত হলো। তিনি (সা.) সতর্কবাণী শুনালেন। তিনি (সা.) বললেন, হে কা’ব ইবনু লুয়াই-এর বংশধর! হে মুররাহ্ ইবনু কা’ব-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর! হে ’আবদ শামস্-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে আগুন হতে বাঁচাও! হে ’আবদ মানাফ-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে আগুন থেকে মুক্ত কর! হে হাশিম-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা কর! হে ’আবদুল মুত্ত্বালিব-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচাও! হে ফাতিমাহ্! তুমি তোমার দেহকে জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচাও! কেননা, আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে তোমাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে, তা আমি (দুনিয়াতে) ভালো আচরণ দ্বারা সিক্ত করব। (মুসলিম)

বুখারী ও মুসলিম-এর যৌথ বর্ণনায় আছে, নবী (সা.) বললেন: হে কুরায়শ সম্প্রদায়! তোমাদের জানকে খরিদ করে নাও (অর্থাৎ- আমার ওপরে ঈমান এনে জাহান্নামের আগুন হতে আত্মরক্ষা কর)। আমি তোমাদের ওপর থেকে আল্লাহর শাস্তি কিছুই দূর করতে পারব না। হে আবদ মানাফ-এর বংশধর! আমি তোমাদের ওপর হতে আল্লাহর শাস্তি কিছুই দূর করতে পারব না। হে রাসূলুল্লাহর ফুফী সফিয়্যাহ! আমি তোমাকে আল্লাহর ’আযাব হতে বাঁচাতে পারব না। হে মুহাম্মাদ-এর মেয়ে ফাতিমাহ! আমার কাছে দুনিয়াবী ধন-সম্পদ হতে যা ইচ্ছা তা চাইতে পার, কিন্তু আমি তোমাকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারব না।

الفصل الاول ( بَاب الْإِنْذَار والتحذير)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ (وَأَنْذِرْ عشيرتك الْأَقْرَبين) دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُرَيْشًا فَاجْتَمَعُوا فَعَمَّ وَخَصَّ فَقَالَ: «يَا بَنِي كَعْبِ بْنِ لُؤَيٍّ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ يَا بَنِي مُرَّةَ بْنِ كَعْبٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ. يَا بَنِي عَبْدِ شَمْسٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ من النَّار يَا بني عبد منَاف أَنْقِذُوا أَنفسكُم من النَّار. با بَنِي هَاشِمٍ أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ. يَا بني عبد الْمطلب أَنْقِذُوا أَنفسكُم من النَّار. يَا فَاطِمَةُ أَنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ فَإِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلَالِهَا» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَفَى الْمُتَّفَقِ عَلَيْهِ قَالَ: «يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ لَا أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَيَا صَفِيَّةُ عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ لَا أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا. وَيَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَلِينِي مَا شِئْتِ مِنْ مَالِي لَا أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا» رواہ مسلم (348 / 204)، (501) 0 و حدیث ’’ یا معشر قریش ‘‘ الخ متفق علیہ (البخاری : 2753 و مسلم :351 / 206)، (504) ۔ (صَحِيح)

ব্যাখ্যা : (أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ) তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত কর।
(فَإِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا) তোমাদের কাউকে ব্যাপকভাবে অথবা নির্দিষ্ট করে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারব না, অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা যদি তোমাদেরকে শাস্তি দিতে চান তাহলে আমি তোমাদেরকে তার শাস্তি হতে রক্ষা করতে সক্ষম হব না। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে,
(قُلۡ فَمَنۡ یَّمۡلِکُ لَکُمۡ مِّنَ اللّٰهِ شَیۡئًا اِنۡ اَرَادَ بِکُمۡ ضَرًّا اَوۡ اَرَادَ بِکُمۡ نَفۡعًا) “(তাদেরকে) বল, আল্লাহ তোমাদের কোন ক্ষতি বা কোন কল্যাণ করার ইচ্ছে করলে তার বিপক্ষে তোমাদের জন্য কিছু করার ক্ষমতা কার আছে?..." (সূরাহ্ আল ফাতহ ৪৮:১১)
এমনকি আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন- (قُلۡ لَّاۤ اَمۡلِکُ لِنَفۡسِیۡ نَفۡعًا وَّ لَا ضَرًّا اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰهُ)
“বল, আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তাছাড়া আমার নিজের ভালো বা মন্দ করার কোন ক্ষমতা আমার নেই...।” (সূরা আল আ'রাফ ৭: ১৮৮)।
মূলত এ বিধানটি এককভাবে কাউকে রক্ষা করার জন্য। যদিও নবী (সা.) -এর শাফা'আত মু'মিন বান্দাদের জন্য প্রযোজ্য হবে। তথাপি তিনি বলেছেন- আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে কিছুই করতে পারব না। এটা এ কারণে যে, এর মাধ্যমে তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা, যাতে তারা পরকালীন পাথেয় উপার্জন বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আমার ওপর নির্ভর করে বসে না থাকে।

(غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلَالِهَا) তবে তোমাদের সাথে আমার যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে তা দয়া, অনুগ্রহ, অন্যায়ের প্রতিবাদ ইত্যাদি ভালো আচরণের মাধ্যমে সর্বদা রক্ষা করে চলব।
(ফাতহুল বারী ‘কিতাবুত তাফসীর ৮/৪৭৭১, শারহুন নাবাবী কিতাবুল ঈমান ৩/৩৪৮, তুহফাতুল আহওয়াযী ৮/৩১৮৫, মিরকাতুল মাফাতীহ)