পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাভিযানে হত্যার বর্ণনা
৩৯৪৬-[১০] আবূ উসায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদরের যুদ্ধের দিন যখন আমরা সারিবদ্ধ হয়ে কুরায়শদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম এবং তারাও আমাদের মুকাবিলায় সারিবদ্ধ হয়েছিল, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন, যখন তারা তোমাদের খুব সন্নিকটবর্তী হবে তখনই তাদের ওপর তীর নিক্ষেপ করবে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, যখনই তারা তোমাদের খুব কাছাকাছি এসে যাবে, তখনই তীর ছুঁড়তে থাকবে এবং কিছু তীর সংরক্ষিত রাখবে। (বুখারী)[1]
মিশকাত গ্রন্থকার বলেন, মূল মাসাবীহ গ্রন্থে সা’দ -এর হাদীস যার প্রথম বাক্য ’’তোমরা কি সাহায্যপ্রাপ্ত?’’ তা আমি ’’ফাকীরদের ফযীলত’’ অধ্যায়ে এবং অপর একটি হাদীস বারা হতে বর্ণিত, ’’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় একটি দল পাঠিয়েছিলেন’’ হাদীসটি আমি ইনশা-আল্লা-হ ’’মু’জিযা’’র অধ্যায়ে বর্ণনা করব।
بَابُ الْقِتَالِ فِى الْجِهَادِ
وَعَن أبي أَسِيدٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَنَا يَوْمَ بَدْرٍ حِينَ صَفَفَنَا لِقُرَيْشٍ وَصَفُّوا لَنَا: «إِذَا أَكْثَبُوكُمْ فَعَلَيْكُمْ بِالنَّبْلِ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «إِذَا أَكْثَبُوكُمْ فَارْمُوهُمْ وَاسْتَبْقُوا نَبْلَكُمْ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ وَحَدِيث سعد: «هُوَ تُنْصَرُونَ» سَنَذْكُرُهُ فِي بَابِ «فَضْلِ الْفُقَرَاءِ» . وَحَدِيثُ الْبَرَاءِ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَهْطًا فِي بَابِ «الْمُعْجِزَاتِ» إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى
ব্যাখ্যা: (إِذَا أَكْثَبُوْكُمْ) অর্থাৎ- তারা যখন তোমাদের এ পরিমাণ কাছাকাছি হয় যে, তোমাদের তীরগুলো তাদের কাছে পৌঁছবে। বুখারীর অন্য বর্ণনাতে আছে, (إِذَا أَكْثَبُوْكُمْ فَارْمُوْهُمْ) অর্থাৎ- তোমরা তীর নিক্ষেপে তাড়াতাড়ি করবে না এবং দূর থেকেও নিক্ষেপ করবে না, কেননা কখনো তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
আবূ দাঊদ-এর বর্ণনাতে এসেছে «يَعْنِي غَشَوْكُمْ» অর্থাৎ ‘‘তারা যখন তোমাদেরকে ঘিড়ে নিবে।’’ আর এটা উদ্দেশের সাথে, সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। একে সমর্থন করছে ইবনু ইসহক-এর বর্ণনা, ‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, তারা যখন তোমাদের নিকটবর্তী হবে তখন তীর দ্বারা তাদেরকে তোমাদের থেকে সরিয়ে দিবে। ইবনু ফারিস বলেনঃ অর্থাৎ- তারা যখন তোমাদের কাছাকাছি হবে এবং তোমাদেরকে তাদের ব্যাপারে সক্ষম করে দিবে তখন তোমরা তাদেরকে তীর নিক্ষেপ করবে।
(فَارْمُوْهُمْ وَاسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ) অর্থাৎ তিনি অবশিষ্টতার অনুসন্ধান করেছেন। দাঊদী বলেন, (ارْمُوْهُمْ) এর অর্থ হলো, তোমরা প্রস্তর নিক্ষেপ কর, কেননা তা যখন দলের মাঝে নিক্ষেপ করা হবে তখন তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে না। তিনি বলেন, (اسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ) এর অর্থ হলো- পারস্পরিক সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তীর নিক্ষেপ না করে তা সংরক্ষণ কর। এভাবে তিনি বলেন এবং অন্য কেউ বলেন, অর্থাৎ তোমাদের কিছু তীর তাদেরকে নিক্ষেপ করবে, সমস্ত তীর না। আমার কাছে যা স্পষ্ট হচ্ছে তা হলো নিঃসন্দেহে (اسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ) তাঁর এ উক্তির অর্থ তার (ارْمُوْهُمْ) এ উক্তির সাথে সম্পর্কিত নয়। এটা কেবল মুশরিক বা মুসলিমদের নিকটবর্তী না হওয়া পর্যন্ত তীর নিক্ষেপ বিলম্ব করার ব্যাপারে নির্দেশের মাধ্যমে উদ্দেশ্যকে বর্ণনা করে দেয়ার মত। অর্থাৎ- তারা যখন দূরে থাকবে তখন অধিকাংশ তীর তাদের কাছে পৌঁছবে না। অতএব তারা যখন এমন অবস্থাতে পরিণত হবে যে অবস্থাতে অধিকাংশ তীর নিক্ষেপ করা হলে তীর তাদের কাছে পৌঁছা সম্ভব তখন নিক্ষেপ করবে। (ফাতহুল বারী ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯৮৪)