হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩৫৫৪

পরিচ্ছেদঃ ৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে

৩৫৫৪-[২২] আবূ গালিব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আবূ উমামাহ্ দামেশকের (বর্তমানে সিরিয়ার) মূল ফটকে ঝুলন্ত কিছু মস্তক দেখতে পেলেন। তখন আবূ উমামাহ্ বলেন, এরা (খারিজীরা) হলো জাহান্নামের কুকুর। এই সকল যারা নিহত হয়েছে তারা আকাশমন্ডলীর নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং নিহত লোকেদের যাদের তারা হত্যা করেছে, তারা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট। অতঃপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন, ’সেদিন অনেক মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হবে এবং অনেক মুখমণ্ডল কুৎসিত হবে।’ আবূ গালিব (রহঃ) উমামাহ্ (রাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এ কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? আবূ উমামাহ্ বললেন, একবার দু’বার কিংবা তিনবার নয়, বরং সাতবার শুনেছি; যদি আমি না শুনতাম তাহলে তোমাদের নিকট বর্ণনা করতাম না। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; তবে ইমাম তিরমিযী [রহঃ] হাদীসটিকে ’হাসান’ বলেছেন)[1]

وَعَن أبي غالبٍ رأى أَبُو أُمامةَ رؤوساً مَنْصُوبَةً عَلَى دَرَجِ دِمَشْقَ فَقَالَ أَبُو أُمَامَةَ: «كِلَابُ النَّارِ شَرُّ قَتْلَى تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ خَيْرُ قَتْلَى مَنْ قَتَلُوهُ» ثُمَّ قَرَأَ (يَوْمَ تبيَضُّ وُجوهٌ وتَسوَدُّ وُجوهٌ) الْآيَةَ قِيلَ لِأَبِي أُمَامَةَ: أَنْتَ سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: لَوْ لَمْ أَسْمَعْهُ إِلَّا مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ أوْ ثَلَاثًا حَتَّى عَدَّ سَبْعًا مَا حَدَّثْتُكُمُوهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ

ব্যাখ্যা: الدرج শব্দের অর্থ রাস্তা পথ। এর বহুবচন أدراج। আর الدرجة শব্দের অর্থ সিঁড়ি। এর বহুবচন الدرج। এখানে এটাই উদ্দেশ্য।
আবূ উমামাহ্ দামেশকের মসজিদের সিঁড়িতে নিহত খারিজীদের মাথাকে দেখে বললেন, كِلَابُ النَّارِ (জাহান্নামের কুকুর) অর্থাৎ এসব মাথার মালিকেরা জাহান্নামের কুকুর। মিরকাতুল মাফাতীহ গ্রন্থে উল্লেখ আছে, তাদের মাথাগুলো শূলে চড়ানো ছিল।

ইবনু মাজায় উল্লেখিত হাদীসের শেষাংশে «قَدْ كَانَ هَؤُلَاءِ مُسْلِمِينَ فَصَارُوا كُفَّارًا» উল্লেখ আছে। আবূ উমামাকে বলা হলো, আপনি কিছু বলবেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ বরং এটা আমি রাসুল   থেকে শুনেছি।
মুসনাদে আহমাদে উল্লেখ আছে,

لما أتى برؤوس الْأَزَارِقَةِ فَنُصِبَتْ عَلٰى دَرَجِ دِمَشْقَ جَاءَ أَبُو أُمَامَةَ فَلَمَّا رَآهُمْ دَمَعَتْ عَيْنَاهُ فَقَالَ كِلَابُ النَّارِ

অর্থাৎ যখন আযারিকাদের মাথাকে নিয়ে আসা হলো এবং দামেশকের সিঁড়িতে দাঁড় করিয়ে রাখা হলো। যখন তাদেরকে আবূ উমামাহ্ দেখলো তখন তার চক্ষুদ্বয় অশ্রু ঝরালো। আর তিনবার বললো, এরা জাহান্নামের কুকুর। বলা হলো, আপনার কি ব্যাপার? আপনার চোখদ্বয় কেন অশ্রু ঝরাচ্ছে। উত্তরে তিনি বললেনঃ তাদের ওপর রহমাত যে, তারা মুসলিম ছিল।

(আযারিকা হলো খাওয়ারিজ। نَافِعِ بْنِ الْأَزْرَقِ এর দিকে নিসবাত করে তাদেরকে أَزَارِقَةُ বলা হয়।)
আহমাদ-এর অন্য এক বর্ণনায় আছে, যখন মাথাগুলোকে ইরাকের দিক থেকে নিয়ে এসে মসজিদের দরজায় খাড়া করা হলো। আর আবূ উমামাহ্ এসে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং দুই রাক্‘আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর বের হলেন এবং তাদের প্রতি নযর করলেন ও মাথা উঠালেন। অতঃপর বললেনঃ

(شَرُّ قَتْلٰى تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ خَيْرُ قَتْلٰى مَنْ قَتَلُوهُ)

অতঃপর তিনি আয়াত পাঠ করলেন:

يَوْمَ تَبْيَضُّ وُجُوهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوهٌ فَأَمَّا الَّذِينَ اسْوَدَّتْ وُجُوهُهُمْ أَكَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُون

‘‘সেদিন কতক মুখ উজ্জ্বল হবে আর কতক মুখ কালো হবে, যাদের মুখ কালো হবে, তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কি ঈমান আনার পরও কুফরী করেছিলে? কাজেই নিজেদের কুফরীর জন্য শাস্তি ভোগ করতে থাক’’- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১০৬)। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ৩০০১)