হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৩৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২৩৪-[৩৭] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআনের ব্যাপারে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে কোন মতামত দিয়েছে সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে তৈরি করে নেয়। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে (শব্দগুলো হল), যে লোক কুরআন সম্পর্কে নিশ্চিত ’ইলম ছাড়া (মনগড়া) কোন কথা বলে, সে যেন তার স্থান জাহান্নামে নির্দিষ্ট করে নেয়। (তিরমিযী)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَالَ فِي الْقُرْآنِ بِرَأْيِهِ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «مَنْ قَالَ فِي الْقُرْآنِ بِغَيْرِ عِلْمٍ فَليَتَبَوَّأ مَقْعَده من النَّار» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

ব্যাখ্যা: যেহেতু হাদীসটি দুর্বল, সেজন্য এ হাদীসটিকে সরাসরি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে সম্বন্ধ করা যাবে না। তবে সকলের কাছে এ কথা কুরআন দ্বারা প্রমাণিত যে, বিনা ‘ইলমে শারী‘আতের ব্যাপারে কোন কথা বলা হারাম। কুরআনের শব্দ, ক্বিরাআত (কিরআত) অথবা অর্থের ক্ষেত্রে আহাদীসে মারফূ‘আহ্ বা মাওকূ‘ফাতে তাফসীর অনুসন্ধান এবং শারী‘আতের নীতিমালার অনুকূল ‘আরাবী ভাষাবিদ ইমামদের উক্তি অনুসন্ধান ছাড়াই যে নিজের তরফ থেকে কোন কথা বলবে বরং তার জ্ঞান যা দাবী করে সে অনুপাতে কথা বলবে সে আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِه عِلْمٌ কে লঙ্ঘন করবে।

নীসাপূরী বলেনঃ কথার সারাংশ হচ্ছে- কুরআনের কোন আয়াতের তাফসীর কুরআনের অন্য আয়াত এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করা ছাড়া এমনটা বলা যাবে না। উল্লিখিত ইবারত হতে উদ্দেশ্য করা বৈধ হবে না। কেননা সাহাবীগণ তাফসীর করেছেন এবং সে তাফসীরের ব্যাপারে তাঁরা মতানৈক্য করেছেন এবং তাঁরা প্রত্যেকে যা বলেছেন তা কেবল রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  থেকে শ্রবণ করার পরই বলেছেন এমনও নয়। কারণ যদি পরিস্থিতি এমনই হয়ে থাকে তাহলে সে মুহূর্তে ইবনু ‘আব্বাসের জন্য রসূলের দু‘আ اَللّهُمَّ فَقَهْهُ فِي الدِّيْنِ وَعَلِّمْهُ التَّأْوِيْلِ কোন উপকারে আসবে না।

অতএব বলা যেতে পারে, না জেনে কুরআন সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না এর দ্বারা নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো দু’টিঃ একটি- কোন বিষয়ে ব্যক্তির কোন অভিমত থাকা ও সে দিকে তার স্বভাব, প্রবৃত্তি ঝুঁকে পড়া, অতঃপর নিজ উদ্দেশ্যকে বিশুদ্ধকরণের নিমিত্তে প্রবৃত্তি অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা। ব্যক্তির কাছে এ বিষয়টি ‘ইলমের অন্তর্গত হওয়া সত্ত্বেও আয়াত দ্বারা (কক্ষনো) তা উদ্দেশ্য হয় না। আবার কখনো কোন আয়াতের তাফসীরকে ধারণাভিত্তিক করা সত্ত্বেও তা প্রকৃত তাফসীর হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও নিজ অভিমতকে প্রাধান্য দেয়ার কারণে তা নিষিদ্ধ।

দ্বিতীয়- কুরআনের অপরিচিত ও অস্পষ্ট শব্দগুলো এবং যেখানে তাক্বদীম ও তা‘খীর আছে এবং বিলুপ্ত ইবারত আছে সে স্থানগুলোর তাফসীর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করে ‘আরাবী ভাষার বাহ্যিক দিক লক্ষ্য করে দ্রুত তাফসীর করা। সুতরাং বাহ্যিক তাফসীর এর ক্ষেত্রে প্রথমত আবশ্যক হচ্ছে, তা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  থেকে শ্রবণ বা কুরআন ও হাদীস হতে নকল হতে হবে। যাতে এর মাধ্যমে ভুলের স্থানগুলো আলাদা হয়ে যায়। অতঃপর ব্যক্তির পক্ষে জ্ঞান খাটানো ও মাসআলাহ্ ইস্তিম্বাততের সুযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে উল্লেখ করা তাফসীর করার দু’টি নিষেধাজ্ঞা ছাড়া নিষেধাজ্ঞার আর কোন কারণ নেই; যতক্ষণ তা ‘আরাবী জ্ঞান-বিজ্ঞানের নীতিমালা ও মূল ও শাখা-প্রশাখাজনিত নিয়ম অনুযায়ী হবে।

শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী বলেনঃ যে ভাষাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে সে ভাষা ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবী, তাবি‘ঈদের থেকে মাশহুর এবং অপরিচিত শব্দের ব্যাখ্যা, আয়াত অবতীর্ণের কারণ, নাসিখ এবং মানসূখ যে ব্যক্তি না জানবে সে ব্যক্তির জন্য কুরআনের তাফসীর বা গবেষণাতে লিপ্ত হওয়া হারাম।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ