পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২৫-[২৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহনের উপর বসা ছিলেন এবং তাঁর পেছনে মু’আয (রাঃ) আরোহণ করেছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে মু’আয! তিনি (মু’আয) বললেন, আমি উপস্থিত আছি, হে আল্লাহর রসূল! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার বললেন, হে মু’আয! তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি। তৃতীয়বার আবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে মু’আয! তিনি বললেন, আমি উপস্থিত আছি। এভাবে মু’আযকে তিনবার ডাকলেন এবং (মু’আয) তিনবারই তাঁর উত্তর দিলেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহর যে বান্দা খাঁটি মনে এ ঘোষণা দিবে, ’’আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল’’, আল্লাহ তার ওপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।
তখন মু’আয (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এ সুসংবাদটি কি আমি লোকেদেরকে জানিয়ে দিব? তারা যাতে এ খোশখবরী শুনলে খুশী হয়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, না, তাহলে তারা এর উপর নির্ভর করে বসে থাকবে। [আনাস (রাঃ) বলেন] মু’আয (রাঃ) শুধুমাত্র হাদীস গোপন করার অপরাধে অপরাধী হওয়ার ভয়েই মৃত্যুকালে এ হাদীসটি প্রকাশ করে গিয়েছেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]
الفصل الاول
وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمُعَاذٌ رديفه على الرحل قَالَ: «يَا معَاذ بن جبل قَالَ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ قَالَ يَا مُعَاذُ قَالَ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْديك ثَلَاثًا قَالَ مَا مِنْ أَحَدٍ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ صِدْقًا مِنْ قَلْبِهِ إِلَّا حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلَا أُخْبِرُ بِهِ النَّاس فيستبشروا قَالَ إِذا يتكلوا وَأخْبر بِهَا مُعَاذٌ عِنْدَ مَوْتِهِ تَأَثُّمًا»
Chapter - Section 1
Anas reported that, when Mu'adh was riding behind the Prophet on the saddle, he said, “Mu'adh”, to which he replied, “At your service and at your pleasure, messenger of God.” He said, “Mu'adh”, to which he replied, “At your service and at your pleasure, messenger of God.” He said, “Mu'adh”, to which he replied, “At your service and at your pleasure, messenger of God,” three times altogether. He said, “If anyone testifies sincerely from his heart that there is no god but God and that Muhammad is God’s messenger, God will declare him immune from hell.” He asked, “Messenger of God, shall I not then inform people of it, so that they may be of good cheer?” He replied, “Then they would trust in it alone.” Mu'adh told about it at the time of his death, to avoid sinning.
(Bukhari and Muslim.)
ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রিসালাতের প্রতি সত্যের সাক্ষ্য প্রদান করবে- তারা সকলেই জাহান্নামে প্রবেশ হতে বেঁচে যাবে অর্থাৎ- কালিমায়ে শাহাদাতের প্রতি বিশ্বাসী কোন ব্যক্তিই জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। এ হাদীসটি ঐ স্পষ্ট বিশুদ্ধ হাদীসের বিরোধী যা দ্বারা প্রমাণিত যে, একত্ববাদে বিশ্বাসী একদল গুনাহগার জাহান্নামে প্রবেশ করবে, অতঃপর সুপারিশের মাধ্যমে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে।
এর জবাব এই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে জানিয়েছেন যে, ঈমানের জন্য সৎ ‘আমল জরুরী। আর গুনাহের কাজ আল্লাহর অসন্তুষ্টিকে আবশ্যক করে দেয়- এ কথাটি তাদেরকে বার বার বলার প্রয়োজনবোধ করেননি এজন্য যে, এটি তাদের জানা বিষয়। তা সত্ত্বেও এ হাদীসে ঈমানের শাখাগুলোর মধ্য হতে শাহাদাতায়নকে বিশেষভাবে এজন্য উল্লেখ করেছেন যে, এ দু’টি ঈমানের প্রকৃত ও মূল ভিত্তি। যার উপর স্থায়ী জীবনের ফলাফল নির্ভরশীল। মোট কথা এই যে, জাহান্নামের জন্য হারাম হওয়া অর্জিত হয় শাহাদাতায়ন ও আনুষঙ্গিক কর্মের ভিত্তিতে। তবে তার মধ্য থেকে শুধু ঐ বিষয়টিকে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যা অতি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো কালিমাহ্। তা গাছের ঐ মূলের ন্যায় যা ব্যতীত গাছের জীবন অকল্পনীয়।
মু‘আয (রাঃ) তার মৃত্যুকালে ‘ইলম গোপন করার গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য হাদীসটি বর্ণনা করেন।
এখানে প্রশ্ন হতে পারে, হাদীস গোপন করা যদি গুনাহ হয় তাহলে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিষেধের বিরোধিতা করা কি গুনাহ নয়?
জবাব এই যে, নিশ্চয় তিনি অবহিত হতে পেরেছিলেন, এ নিষেধাজ্ঞা কোন মাসলাহাত তথা উপকারের জন্য ছিল। তা অবশ্যই হারাম ছিল না যাতে তিনি এ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে গুনাহে পতিত হবেন। তা সত্ত্বেও যে কারণে তিনি তা অবহিত করেছিলেন, তা এই যে কুরআন মাজীদে প্রচার করার আদেশ বিদ্যমান।