পরিচ্ছেদঃ ২৩: ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করার গুরুত্ব
১৩/২০১। ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে প্রথমে এভাবে অন্যায় ও অপকর্ম প্রবেশ করেঃ এক (আলিম) ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে মিলিত হতো এবং তাকে বলত, হে অমুক! আল্লাহকে ভয় কর এবং যা করছ তা পরিত্যাগ কর, কারণ, তোমার জন্য এ কাজ অবৈধ, সে তার সঙ্গে দ্বিতীয় দিনও মিলিত হয়ে তাকে একই অবস্থায় দেখতে পেত কিন্তু সে কাজ তাকে তার পানাহার ও উঠা-বসায় অংশীদার হতে বাধা দিত না, তাদের অবস্থা এরকম হওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের একের অন্তরের (কালিমার) মাধ্যমে অপরের অন্তরকে আল্লাহ তা’আলা অন্ধকার করে দিলেন। তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করলেনঃ ’’বানী ইসলাঈলের মাঝে যারা কুফরীর পথ ধরল দাঊদ ও ’ঈসা ইবনু মারইয়ামের মুখ দিয়ে তাদের প্রতি লানত করা হলো। কেননা, তারা বিদ্রোহী হয়ে গিয়েছিল এবং অতিরিক্ত সীমালঙ্ঘন করেছিল। তারা পরস্পরকে পাপ কাজ করতে নিষেধ করত না। তারা অতিশয় নিকৃষ্ট কর্মপন্থা অবলম্বন করেছিল।
বহু লোককে তোমরা দেখছ, যারা (মু’মিনদের বদলে) কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব ও সহায়তা করতে ব্যস্ত। নিশ্চয়ই সামনে খুব মন্দ পরিণতই রয়েছে, যার ব্যবস্থা তাদের প্রবৃত্তিসমূহ করেছে। আল্লাহ তা’আলা তাদের প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন। তাদের আযাবভোগ স্থায়ী হবে। আল্লাহ, রাসূল এবং সেই জিনিসের প্রতি তারা যদি প্রকৃতই ঈমান আনত, তাঁর (নবীর) প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তাহলে তারা কখনও বন্ধুরূপে (ঈমানদার লোকদের বিপরীতে) কাফিরদেরকে গ্রহণ করতো না। কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তই ফাসিক’’- (সূরা আল-মায়িদাহ্ঃ ৭৮-৮১)। তারপর তিনি (মহানবী) বললেনঃ কখনও নয়! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কসম! অবশ্যই তোমরা সৎ কর্মের আদেশ দিতে থাক এবং অন্যায় ও খারাপ কাজ হতে (মানুষকে) বিরত রাখ, অত্যাচারীর হাত মজবূত করে ধর এবং তাকে টেনে তুলে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত কর। তাকে হকের উপর এনে ছাড়। নচেৎ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের (নেককার ও গুনাহ্গার) পরস্পরের অন্তরকে একত্রিত করে (অন্ধকার করে) দিবেন, তারপর তোমাদেরকেও বনী ইসরাঈলের ন্যায় অভিশপ্ত করবেন। হাদীসটি ইমাম আবূ দাউদ ও তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। তিরমিযি বলেছেন, এটা হাসান হাদীস। হাদীসের মূল শব্দগুলো আবূ দাউদের-৪৩৩৬।
মূল হাদীসের অর্থ নিম্নরূপঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন বনী ইসরাঈল গর্হিত কর্মে লিপ্ত হলো, তাদেরকে তাদের আলিমগণ তা হতে বিরত থাকতে বলল, কিন্তু তারা তা করল না। তাদের সাথে আলিমগণ উঠা-বসা ও পানাহার চালিয়ে যেতে থাকল। তারপর আল্লাহ তা’আলা তাদের পরস্পরের হৃদয়কে একত্রিত করে দিলেন (ফলে আলিমরাও অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ল)। আল্লাহ তা’আলা দাউদ ও ঈসা ইবনু মারইয়ামের মুখ দিয়ে তাদেরকে অভিশাপ দিলেন। কেননা, তারা বিদ্রোহী হয়ে গিয়েছিল এবং অত্যন্ত বাড়াবাড়ি শুরু করেছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠেস দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বলেলনঃ কখনও নয়, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন! তাদেরকে তোমরা (অত্যাচারীদেরকে) হাত ধরে টেনে এনে হক্ব ও ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত ছেড়ে দিবে না।[1]
(23) - باب الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر
عَنْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «إِنَّ أَوَّلَ مَا دَخَلَ النَّقْصُ عَلٰى بَنِي إِسْرائيلَ أَنَّهُ كَانَ الرَّجُلُ يَلْقىٰ الرَّجُلَ فَيَقُولُ : يَا هٰذَا اتَّقِ اللهِ وَدَعْ مَا تَصْنَعُ فَإِنَّهُ لَا يَحِلُّ لَكَ، ثُمَّ يَلْقَاهُ مِنَ الْغَدِ وَهُوَ عَلىٰ حَالِهِ، فَلَا يَمْنَعُهُ ذٰلِكَ أَنْ يَكُوْنَ أَكِيلَهُ وَشَرِيْبَهُ وَقَعِيْدَهُ، فَلَمَّا فَعَلُوْا ذٰلِكَ ضَرَبَ اللهِ قُلُوْبَ بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ» ثُمَّ قَالَ : ﴿لُعِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۢ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۚ ذَٰلِكَ بِمَا عَصَواْ وَّكَانُواْ يَعۡتَدُونَ ٧٨ كَانُواْ لَا يَتَنَاهَوۡنَ عَن مُّنكَرٖ فَعَلُوهُۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ يَفۡعَلُونَ ٧٩ تَرَىٰ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ يَتَوَلَّوۡنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۚ لَبِئۡسَ مَا قَدَّمَتۡ لَهُمۡ أَنفُسُهُمۡ ﴾ إِلىٰ قَوْلِهِ : ﴿ فَٰسِقُونَ ﴾ [المائدة: ٧٨، ٨١] ثُمَّ قَالَ: «كَلاَّ، وَاللهِ لَتَأْمُرُنَّ بِالْمَعْرُوفِ، وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ، وَلَتَأْخُذُنَّ عَلىٰ يَدِ الظَّالِمِ، وَلَتَأْطِرُنَّهُ عَلَى الْحَقِّ أَطْرًا، وَلَتَقْصُرُنَّهُ عَلَى الْحَقِّ قَصْراً، أَوْ لَيَضْرِبَنَّ اللهِ بِقُلُوْبِ بَعْضِكُمْ عَلَى بَعْضٍ، ثُمَّ لَيَلْعَنْكُمْ كَمَا لَعَنَهُمْ»رواه أبو داود، والترمذي وقال : حديث حسن .
(23) Chapter: Enjoining Good and forbidding Evil
'Abdullah bin Mas'ud (May Allah bepleased with him) reported:
Messenger of Allah (ﷺ) said, "The first defect (in religion) which affected the Children of Israel in the way that man would meet another and say to him: 'Fear Allah and abstain from what you are doing, for this is not lawful for you.' Then he would meet him the next day and find no change in him, but this would not prevent him from eating with him, drinking with him and sitting in his assemblies. When it came to this, Allah led their hearts into evil ways on account of their association with others." Then he (ﷺ) recited, "Those among the Children of Israel who disbelieved were cursed by the tongue of Dawud (David) and 'Isa (Jesus), son of Maryam (Mary). That was because they disobeyed (Allah and the Messengers) and were ever transgressing beyond bounds. They used not to forbid one another from the Munkar (wrong, evildoing, sins, polytheism, disbelief) which they committed. Vile indeed was what they used to do. You see many of them taking the disbelievers as their Auliya' (protectors and helpers). Evil indeed is that which their own selves have sent forward before them; for that (reason) Allah's wrath fell upon them and in torment will they abide. And had they believed in Allah and in the Prophet (Muhammad (ﷺ)) and in what has been revealed to him, never would they have taken them (the disbelievers) as Auliya' (protectors and helpers); but many of them are the Fasiqun (rebellious, disobedient to Allah)." (5:78-81)
Then he (ﷺ) continued: "Nay, by Allah, you either enjoin good and forbid evil and catch hold of the hand of the oppressor and persuade him to act justly and stick to the truth, or, Allah will involve the hearts of some of you with the hearts of others and will curse you as He had cursed them".
[Abu Dawud and At-Tirmidhi].
The wording in At-Tirmidhi is: Messenger of Allah (ﷺ) said, "When the Children of Israel became sinful, their learned men prohibited them but they would not turn back. Yet, the learned men associated with them and ate and drank with them. So, they were cursed at the tongues of Dawud and 'Isa (Jesus), son of Maryam (Mary), because they were disobedient and were given to transgression." At this stage Messenger of Allah (ﷺ) who was reclining on a pillow sat up and said, "No, By Him in Whose Hand my soul is, there is no escape for you but you persuade them to act justly."