পরিচ্ছেদঃ আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস ও আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত হাদীসে ঈমানের যে শাখা-প্রশাখা ও অংশ বর্ণিত হয়েছে এছাড়াও ঈমানের আরোপ শাখা-প্রশাখা রয়েছে, যা পরম বিশ্বস্ত জিবরীল ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফায়সালায় এসেছে
১৭৩. ইয়াহইয়া বিন ইয়া’মার রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি বললাম: ’হে আবু আব্দুর রহমান (এর দ্বারা তিনি আব্দুল্লাহ বিন উমারকে বুঝিয়েছেন), কিছু লোক বিশ্বাস করে যে, ভাগ্য বলতে কিছু নেই।’ তিনি বললেন: ’আপনাদের মাঝে (এখানে) তাদের কেউ আছে কি?’ আমি বললাম: ’জ্বী, না।’ তিনি বলেন: ’যখনি আপনি তাদের সাথে সাক্ষাত করবেন, তখন আমার পক্ষ থেকে তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যে, ’নিশ্চয়ই আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা তোমাদের থেকে আল্লাহর কাছে দায়মুক্ত, আর তোমরাও তাঁর থেকে দায়মুক্ত।’ এরপর তিনি বলেন: ’আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, তিনি বলেছেন: ’আমরা একদিন কিছু লোকের সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাছে বসে ছিলাম, এমন সময় একজন লোক আসলেন, যার উপর সফরের কোন আলামত ছিল না আর সে আমাদের শহরের লোকও ছিল না। তিনি মানুষকে ডিঙ্গিয়ে এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বসলেন। অতঃপর বললেন: ’হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইসলাম কী?’ জবাবে তিনি বললেন: “ইসলাম হলো আপনি এই সাক্ষ্য দিবেন যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল, সালাত প্রতিষ্ঠা করবেন, যাকাত প্রদান করবেন, হজ্জ করবেন উমরা করবেন, নাপাকীর গোসল করবেন, পরিপূর্ণভাবে ওযূ করবেন এবং রমযানের সিয়াম পালন করবেন।’ তিনি বললেন: ’যখন আমি এসব পালন করবো, তখন কি আমি মুসলিম হয়ে যাবো?’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ’হ্যাঁ।’তিনি বললেন: ’আপনি ঠিকই বলেছেন।’ তিনি বললেন: ’হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমাকে বলুন, ঈমান কী?’ জবাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’ঈমান হলো আপনি আল্লাহ, তাঁর ফেরেস্তা, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস করবেন, বিশ্বাস করবেন জান্নাত, জাহান্নাম ও মীযানের প্রতি, বিশ্বাস করবেন মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের প্রতি, আরো বিশ্বাস করবেন ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি।’ তিনি বললেন: ’যখন আমি এসব বিশ্বাস করবো, তখন কি আমি মু’মিন হয়ে যাবো?’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন: ’আপনি ঠিকই বলেছেন।’ তিনি বললেন: ইহসান কী?’ জবাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’ইহসান হলো আপনি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবেন যে, যেন আপনি তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন। যদি আপনি তাকে দেখতে না পান তবে (মনে করবেন যে) নিশ্চয়ই তিনি আপনাকে দেখতে পাচ্ছেন।’ তিনি বললেন: ’যখন আমি এমন করবো, তখন কি আমি মুহসিন হয়ে যাবো?’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন: ’আপনি ঠিকই বলেছেন।’ তিনি বললেন:কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?’ তিনি বলেন: ’সুবহানাল্লাহ! এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞেসকারীর চেয়ে বেশি অবগত নন। তবে আপনি চাইলে আমি আপনাকে কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে বলতে পারি।’ তিনি বললেন: ’জ্বী, বলুন।’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: কিয়ামতের আলামত হলো তুমি দেখবে অভাবী, বিবস্ত্র, নগ্নপদ, ছাগলের রাখালদের প্রাসাদ নিয়ে গর্ব করতে আর তারা রাজা হয়ে যাবে।’ তিনি বললেন: ’অভাবী, বিবস্ত্র, নগ্নপদ কী?’ তিনি বলেন: ’নিম্ন শ্রেণির গ্রাম্য লোক। আর যখন তুমি দাসীকে তার মুনীবকে প্রসব করতে দেখবে, এসব কিয়ামতের আলামত।’ তিনি বললেন: ’আপনি ঠিকই বলেছেন।’ তারপর তিনি উঠে চলে গেলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’তোমরা লোকটিকে আমার কাছে নিয়ে আসো।’ অতঃপর আমরা তাঁকে সাধ্যমত খোঁজা-খুঁজি করলাম, কিন্তু তাঁকে খুঁজে বের করতে পারলাম না। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’কি জানো সেই লোকটি কে ছিল? উনি জিবরীল আলাইহিস সালাম, তিনি এসেছিলেন,আপনাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার জন্য। তোমরা তাঁর থেকে এসব শিখে নাও। আল্লাহর শপথ! জিবরীল আলাইহিস সালাম যতবার আমার কাছে এসেছেন, (তাঁকে চেনার ক্ষেত্রে) এবার ছাড়া আর কখনই সংশয়পূর্ণ হয়নি। আর এবার তিনি চলে যাওয়ার পরেই তাঁকে চিনতে পেরেছি।’[1]
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আস সহীহাহ: ২৯০৩।)
ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ الْإِيمَانَ وَالْإِسْلَامَ شُعَبٌ وَأَجْزَاءٌ غير ما ذكرنا في خبر بن عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ بِحُكْمِ الْأَمِينَيْنِ مُحَمَّدٍ وَجِبْرِيلَ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ خُزَيْمَةَ حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ وَاضِحٍ الْهَاشِمِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ قَالَ: قُلْتُ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ يَعْنِي لِابْنِ عُمَرَ إِنَّ أَقْوَامًا يَزْعُمُونَ أَنْ لَيْسَ قَدَرٌ قَالَ: هَلْ عِنْدَنَا مِنْهُمْ أَحَدٌ؟ قُلْتُ: لَا قَالَ: فَأَبْلِغْهُمْ عَنِّي إِذَا لَقِيتَهُمْ إِنَّ ابْنَ عُمَرَ يَبْرَأُ إِلَى اللَّهِ مِنْكُمْ وَأَنْتُمْ بُرَآءُ مِنْهُ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أُنَاسٍ إذ جاء رجل لَيْسَ عَلَيْهِ سَحْنَاءُ سَفَرٍ وَلَيْسَ مِنْ أَهْلِ الْبَلَدِ يَتَخَطَّى حَتَّى وَرَكَ فَجَلَسَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم فقال: يَا مُحَمَّدُ مَا الْإِسْلَامُ؟ قَالَ: "الْإِسْلَامُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ محمد رَسُولُ اللَّهِ وَأَنْ تُقِيمَ الصَّلَاةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَحُجَّ وَتَعْتَمِرَ وَتَغْتَسِلَ مِنَ الْجَنَابَةِ وَأَنْ تُتِمَّ الْوُضُوءَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ" قَالَ: فَإِذَا فَعَلْتُ ذَلِكَ فَأَنَا مُسْلِمٌ؟ قَالَ: "نَعَمْ" قَالَ: صَدَقْتَ قَالَ: يَا مُحَمَّدُ مَا الْإِيمَانُ؟ قَالَ: "أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْجَنَّةِ وَالنَّارِ وَالْمِيزَانِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْتِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ" قَالَ: فَإِذَا فَعَلْتُ ذَلِكَ فَأَنَا مُؤْمِنٌ؟ قَالَ: "نَعَمْ" قَالَ: صَدَقْتَ قَالَ: يَا مُحَمَّدُ مَا الْإِحْسَانُ؟ قَالَ: "الْإِحْسَانُ أَنْ تَعْمَلَ لِلَّهِ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنَّكَ إِنْ لَا تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ" قَالَ: فَإِذَا فَعَلْتُ هَذَا فَأَنَا مُحْسِنٌ؟ قَالَ: "نَعَمْ" قَالَ: صَدَقْتَ قَالَ: فَمَتَى السَّاعَةُ؟ قَالَ: "سُبْحَانَ اللَّهِ مَا الْمَسْؤُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ وَلَكِنْ إِنْ شِئْتَ نَبَّأْتُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا" قَالَ: أَجَلْ قَالَ: "إِذَا رَأَيْتَ الْعَالَةَ الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبِنَاءِ وَكَانُوا مُلُوكًا" قَالَ: مَا الْعَالَةُ الْحُفَاةُ الْعُرَاةُ قَالَ: "الْعُرَيْبُ" قَالَ: "وَإِذَا رَأَيْتَ الْأَمَةَ تَلِدُ رَبَّتَهَا فَذَلِكَ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ" قَالَ: صَدَقْتَ ثُمَّ نَهَضَ فَوَلَّى فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "عَلَيَّ بِالرَّجُلِ" فَطَلَبْنَاهُ كُلَّ مَطْلَبٍ فلم نقدر عليه فقال رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "هَلْ تَدْرُونَ مَنْ هَذَا؟ هَذَا جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ لَيُعَلِّمَكُمْ دِينَكُمْ خُذُوا عَنْهُ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا شُبِّهَ عَلَيَّ مُنْذُ أَتَانِي قَبْلَ مَرَّتِي هَذِهِ وَمَا عَرَفْتُهُ حَتَّى وَلَّى".
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ: تَفَرَّدَ سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ بِقَوْلِهِ: "خُذُوا عَنْهُ" وَبِقَوْلِهِ: "تعتمر وتغتسل وتتم الوضوء".
الراوي : يَحْيَى بْن يَعْمَرَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ عُمَرَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 173 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.