পরিচ্ছেদঃ ১৪: অন্য আর এক প্রকার বিবরণ
১৪৮২. হিলাল ইবনু বিশর (রহ.) ..... আবু সায়িব (রহ.) হতে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) তার নিকট বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে একবার সূর্যের গ্রহণ লাগল। তখন রসূলুল্লাহ (সা.) সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন আর তার সাথে যারা ছিল তাঁরাও দাঁড়িয়ে গেল। তিনি দাঁড়ালেন আর দাঁড়ানোকে দীর্ঘ করলেন, তারপর রুকূ করলেন আর রুকূ'কেও দীর্ঘ করলেন। তারপর তাঁর মাথা উঠালেন ও সাজদাহ্ করলেন এবং সাজদাকেও লম্বা করলেন। তারপর মাথা উঠালেন ও বসলেন, আর বসাকেও দীর্ঘ করলেন। তারপর সাজদাহ করলেন এবং সাজদাকেও দীর্ঘ করলেন। তারপর মাথা উঠালেন ও দাড়িয়ে গেলেন। তিনি প্রথম রাক'আতে যা যা করেছিলেন। অর্থাৎ, দাঁড়ানো, রুকূ', সাজদাহ্ এবং বসা। তদ্রুপ দ্বিতীয় রাকআতেও করলেন। তিনি দ্বিতীয় রাক'আতের শেষ সাজদায় ফুক মারতে লাগলেন এবং কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন, (হে আল্লাহ!) আমি তাদের মাঝে বিদ্যমান থাকাকালীন তুমি তাদের এমন শাস্তি দেয়ার ওয়াদা আমার নিকট করনি, তোমার নিকট মাগফিরাত চাওয়াকালীন তুমি তো আমার কাছে তাদের শাস্তি দেয়ার ওয়াদা করনি। তারপর তিনি মাথা উঠালেন এবং সূর্যও আলোকিত হয়ে গেল। তখন রসূলুল্লাহ (সা.) দাঁড়ালেন এবং খুৎবা দিলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা এবং গুণগান করলেন। তারপর বললেন, সূর্য এবং চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দু’টি নিদর্শন। অতএব, যখন তোমরা তাদের কোনটার গ্রহণ দেখতে পাও, তখন আল্লাহ তা'আলার যিকর অভিমুখে দ্রুত ধাবিত হও।
ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয় জান্নাত আমার নিকটবর্তী করে দেয়া হয়েছিল, আমি যদি হস্ত প্রসারিত করতাম তাহলে আমি তার ফলরাশি ধরতে পারতাম আর জাহান্নামও আমার নিকটবর্তী করে দেয়া হয়েছিল। আমি তাঁর থেকে বেঁচে থাকতে লাগলাম এ ভয়ে যে, তা তোমাদের বেহুশ করে না ফেলে! আমি তাতে হিমইয়ার গোত্রের এক মহিলাকে দেখতে পেলাম। তাকে একটি বিড়ালের কারণে ‘আযাব দেয়া হচ্ছে, যাকে সে বেঁধে রেখেছিল। তাকে জমিনের কীট-পতঙ্গ খাওয়ার জন্যে ছেড়েও দিত না আর তাকে সে খাদ্য ও পানিও দিত না, এমনকি বিড়ালটা মারা গিয়েছিল। আমি তাকে দেখতে পেলাম যে, বিড়ালটি ঐ মহিলাকে খামচাচ্ছে। যখনই সে তার দিকে মুখ করেছে, আর যখন সে পিছনে ফিরেছে, তখন তার নিতম্বে খামচাচ্ছে। এমনকি আমি তাতে দাদা গোত্রের জুতাওয়ালাকেও দেখেছি, তাকে দু' শাখা বিশিষ্ট একটি লাঠি দ্বারা ঠেলে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আমি তাতে মাথা বাঁকা লাঠিওয়ালা মানুষটিকে দেখেছি, যে বক্র মাথা লাঠি দ্বারা হাজীদের মাল চুরি করত। সে জাহান্নামে বক্র মাথা লাঠিতে ঠেস দিয়ে বলছে, আমি বক্র মাথা লাঠি দ্বারা চুরি করতাম।
باب نَوْعٌ آخَرُ
أَخْبَرَنَا هِلَالُ بْنُ بِشْرٍ، قال: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، قال: حَدَّثَنِي أَبِي السَّائِبُ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو حَدَّثَهُ، قال: انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الصَّلَاةِ وَقَامَ الَّذِينَ مَعَهُ، فَقَامَ قِيَامًا فَأَطَالَ الْقِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَجَلَسَ فَأَطَالَ الْجُلُوسَ، ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَقَامَ فَصَنَعَ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ مَا صَنَعَ فِي الرَّكْعَةِ الْأُولَى مِنَ الْقِيَامِ وَالرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ وَالْجُلُوسِ، فَجَعَلَ يَنْفُخُ فِي آخِرِ سُجُودِهِ مِنَ الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ وَيَبْكِي وَيَقُولُ: لَمْ تَعِدْنِي هَذَا وَأَنَا فِيهِمْ لَمْ تَعِدْنِي هَذَا وَنَحْنُ نَسْتَغْفِرُكَ ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَانْجَلَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَطَبَ النَّاسَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فَإِذَا رَأَيْتُمْ كُسُوفَ أَحَدِهِمَا فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَقَدْ أُدْنِيَتِ الْجَنَّةُ مِنِّي حَتَّى لَوْ بَسَطْتُ يَدِي لَتَعَاطَيْتُ مِنْ قُطُوفِهَا، وَلَقَدْ أُدْنِيَتِ النَّارُ مِنِّي حَتَّى لَقَدْ جَعَلْتُ أَتَّقِيهَا خَشْيَةَ أَنْ تَغْشَاكُمْ، حَتَّى رَأَيْتُ فِيهَا امْرَأَةً مِنْ حِمْيَرَ تُعَذَّبُ فِي هِرَّةٍ رَبَطَتْهَا فَلَمْ تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الْأَرْضِ، فَلَا هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلَا هِيَ سَقَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ، فَلَقَدْ رَأَيْتُهَا تَنْهَشُهَا إِذَا أَقْبَلَتْ وَإِذَا وَلَّتْ تَنْهَشُ أَلْيَتَهَا، وَحَتَّى رَأَيْتُ فِيهَا صَاحِبَ السِّبْتِيَّتَيْنِ أَخَا بَنِي الدَّعْدَاعِ يُدْفَعُ بِعَصًا ذَاتِ شُعْبَتَيْنِ فِي النَّارِ، وَحَتَّى رَأَيْتُ فِيهَا صَاحِبَ الْمِحْجَنِ الَّذِي كَانَ يَسْرِقُ الْحَاجَّ بِمِحْجَنِهِ مُتَّكِئًا عَلَى مِحْجَنِهِ فِي النَّارِ يَقُولُ: أَنَا سَارِقُ الْمِحْجَنِ .
تخریج دارالدعوہ: سنن ابی داود/الصلاة ۲۶۷ (۱۱۹۴)، سنن الترمذی/الشمائل ۴۴ (۳۰۷)، مسند احمد ۲/۱۵۹، ۱۶۳، ۱۸۸، ۱۹۸، ۲۲۳، (تحفة الأشراف: ۸۶۳۹)، ویأتی عند المؤلف فی برقم: ۱۴۹۷ (صحیح)
صحيح وضعيف سنن النسائي الألباني: حديث نمبر 1483 - صحيح
Another version
Abdullah bin 'Amr said: The sun eclipsed during the time of the Messenger of Allah (ﷺ). The Messenger of Allah (ﷺ) got up to pray, and those who were with him also got up. He stood for a long time, then he bowed for a long time, then he raised his head and (then) prostrated for a long time. Then he raised his head and sat for a long time. Then he prostrated for a long time, then he raised his head and stood up, and he did in the second rak'ah the same as he had done in the first, standing, bowing, prostrating and sitting. He started blowing and weeping at the end of his prostration in the second rak'ah, saying: 'You did not tell me that You would do that while I was still among them; You d not tell me that You would do that while we are asking You for forgiveness.' Then he raised his head and the eclipse ended. The Messenger of Allah (ﷺ) stood and addressed the people. He praised and glorified Allah then he said: The sun and moon are two of the signs of Allah (SWT), the Mighty and Sublime. If you see either of them being eclipsed, then hasten to remember Allah (SWT), the Mighty and Sublime. By the One in Whose Hand is the soul of Muhammad, Paradise was brought so near to me that if I had stretched out my hand, I could have taken some of its fruits. And Hell was brought so near to me that I tried to ward it off for fear it may overwhelm you. I saw therein a woman from Himyar who was being punished because of a cat she tied up, not leaving it free to eat of the vermin of the earth, nor feeding it or giving it water, until it died. I saw it biting her when she came and biting her backside when she went. And I saw the owner of the Sabtiyatain, the brother of Banu As-Da'da, being pushed with a two-pronged stick in the Fire. And I saw the owner of the stick with a crooked end, who used to steal from the Hajj pilgrims with that crooked stick, leaning on his stick in Hell and saying: 'I am the thief with the crooked stick.'
পরিচ্ছেদঃ ১৪: অন্য আর এক প্রকার বিবরণ
১৪৮৩. মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল আযীম (রহ.) ..... আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ (সা.) -এর যুগে সূর্যগ্রহণ লেগে গেল। তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং মানুষদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। তিনি দাঁড়ানোকে লম্বা করলেন, তারপর রুকূ করলেন আর রুকূ ও দীর্ঘ করলেন। তারপর দাঁড়ালেন এবং দাঁড়ানোকেও দীর্ঘায়িত করলেন কিন্তু তা আগের দাঁড়ানো থেকে সংক্ষিপ্ত ছিল। তারপর রুকূ করলেন এবং রুকূ'কেও দীর্ঘ করলেন, কিন্তু পূর্ববর্তী রুকূ থেকে সংক্ষিপ্ত ছিল। তারপর সাজদাহ্ করলেন আর সাজদাহকেও দীর্ঘ করলেন। পরে তার মাথা উঠালেন, পুনরায় সাজদাহ্ করলেন। আর সাজদার লম্বা করলেন কিন্তু তা পূর্ববর্তী সাজদাহ্ থেকে সংক্ষিপ্ত ছিল। তারপর দাঁড়ালেন ও দু' রুকূ করলেন এবং তাতেও পূর্বের মতো করলেন। অতঃপর দু'টি সাজদাহ্ করলেন এবং তাতেও পূর্বের ন্যায় করলেন। এভাবে তিনি তাঁর সালাত সমাপ্ত করলেন। তারপর বললেন, সূর্য এবং চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দু’টি নিদর্শন। অবশ্যই কারও জন্ম মৃত্যুর কারণে তাদের গ্রহণ হয় না। অতএব, তোমরা যখন তা দেখবে তখন শীঘ্র আল্লাহর যিকর এবং সালাতের প্রতি ধাবিত হবে।
باب نَوْعٌ آخَرُ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْعَظِيمِ، قال: حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ سَبَلَانُ، قال: حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ الْمُهَلَّبِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قال: كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَامَ فَصَلَّى لِلنَّاسِ، فَأَطَالَ الْقِيَامَ ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ قَامَ فَأَطَالَ الْقِيَامَ وَهُوَ دُونَ الْقِيَامِ الْأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الْأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ وَهُوَ دُونَ السُّجُودِ الْأَوَّلِ، ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَفَعَلَ فِيهِمَا مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ يَفْعَلُ فِيهِمَا مِثْلَ ذَلِكَ، حَتَّى فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ ثُمَّ قَالَ: إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ وَإِنَّهُمَا لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَافْزَعُوا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَإِلَى الصَّلَاةِ .
تخریج دارالدعوہ: تفرد بہ النسائي، (تحفة الأشراف: ۱۵۰۳۳) (حسن صحیح)
صحيح وضعيف سنن النسائي الألباني: حديث نمبر 1484 - حسن صحيح
Another version
It was narrated that Abu Hurairah said: The sun eclipsed during the time of the Messenger of Allah (ﷺ). He stood and led the people in prayer. He stood for a long time, then he bowed for a long time, then he stood for a long time that was shorter than the first time, then he bowed for a long time that was shorter than the first time. Then he prostrated for a long time, then he sat up, then he prostrated for a long time that was shorter than the first time. Then he stood up and bowed twice again, doing the same again. Then he prostrated twice, doing the same again, until he had finished his prayer. Then he said: 'The sun and the moon are two of the signs of Allah (SWT), and they do not become eclipsed for the death or birth of anyone. If you see that then hasted to remember Allah (SWT) and pray.'