পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِـيْ أَسْتَجِبْ لَكُمْ
অর্থাৎ, তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাক আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। (সূরা গাফের ৬০)
তিনি বলেন,
اُدْعُوْا رَبَّكُمْ تَضَرُّعاً وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ
অর্থাৎ, তোমরা কাকুতি-মিনতি সহকারে ও সংগোপনে তোমাদের প্রতিপালককে ডাক, নিশ্চয় তিনি সীমালংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (সূরা আ’রাফ ৫৫ অয়াত)
তিনি আরো বলেন,
وَإذَا سَألَكَ عِبَادِيْ عَنِّـيْ فَإِنِّـيْ قَريْبٌ أُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ
অর্থাৎ, আর আমার দাসগণ যখন আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন তুমি বল, আমি তো কাছেই আছি। যখন কোন প্রার্থনাকারী আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দিই। (সূরা বাক্বারাহ১৮৬)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
أَمَّـنْ يُـجِيْبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوْءَ
অর্থাৎ, অথবা (উপাস্য) তিনি, যিনি আর্তের আহবানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে ডাকে এবং বিপদণ্ডআপদ দূরীভূত করেন। (সূরা নামল ৬২)
(৩৬৩৯) নুমান বিন বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দু’আই তো ইবাদত।
وَعَنْ النُّعْمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الدُّعَاءُ هُوَ العِبَادَةُ رواه أَبُو داود والترمذي وقال حديث حسن صحيح
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪০) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, (আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,) শ্রেষ্ঠ ইবাদত হল দু’আ।
عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَفْضَلُ العِبادَةِ الدُّعاءُ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট দু’আ অপেক্ষা অন্য কোন জিনিস অধিক মর্যাদাপূর্ণ নয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ شَيْءٌ أَكْرَمَ عَلَى اللهِ مِنَ الدُّعَاءِ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪২) সালমান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় তোমাদের প্রভু লজ্জাশীল অনুগ্রহপরায়ণ, বান্দা যখন তাঁর কাছে দুই হাত তোলে, তখন তা শূন্য ও নিরাশভাবে ফিরিয়ে দিতে বান্দা থেকে লজ্জা করেন।
عَنْ سَلْمَانَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالٰـى حَيِىٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِى مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرًا
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে আল্লাহর কাছে দু’আ বা প্রার্থনা করে না, আল্লাহ তার উপর ক্রোধান্বিত হন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَمْ يَدْعُ اللهَ غَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ
وفي رواية مَنْ لَمْ يَسْأَلِ اللهَ يَغْضَبْ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৪) সালমান ফারেসী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’আ ছাড়া অন্য কিছু তাকদীর রদ্দ্ (খণ্ডন) করতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কিছু আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে না। (তিরমিযী ২১৩৯, সহীহুল জামে’ ৭৬৮৭)
عَنْ سَلْمَانَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ وَلاَ يَزِيدُ في الْعُمُرِ إِلاَّ الْبِرُّ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৫) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ দু’আ এই হত, ’আল্লাহুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুন্য়্যা হাসানাহ, অফিল আ-খিরাতে হাসানাহ, অক্বিনা আযাবান্নার।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দাও এবং পরকালেও কল্যাণ দাও। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও। (বুখারী ৬৩৮৯, মুসলিম ৭০১৬)
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় বর্ধিত আকারে আছে, আনাস (রাঃ) যখন একটি দু’আ করার ইচ্ছা করতেন, তখন ঐ দু’আ করতেন। আবার যখন (বিভিন্ন) দু’আ করার ইচ্ছা করতেন, তখন তার মাঝেও ঐ দু’আ করতেন।
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : كَانَ أَكثَرُ دُعَاءِ النَّبِيّ ﷺ اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ متفقٌ عَلَيْهِ
زاد مسلم في روايتهِ قَالَ : وَكَانَ أَنَسٌ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ بِدَعْوَةٍ دَعَا بِهَا فََإِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ بِدُعَاءٍ دَعَا بِهَا فِيهِ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৬) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ করতেন, ’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা অত্তুক্বা অলআফা-ফা অলগিনা।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট হেদায়াত, পরহেযগারী, অশ্লীলতা হতে পবিত্রতা এবং সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি।
وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ كَانَ يَقُولُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الهُدَى وَالتُّقَى وَالعَفَافَ، وَالغِنَى رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৭) ত্বারেক ইবনে আশয়্যাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কেউ ইসলাম ধর্মে দীক্ষেত হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নামায শিখাতেন। তারপর তাকে এই দু’আ পাঠ করতে আদেশ করতেন, ’আল্লা-হুম্মাগফিরলী, অরহামনী, অহদিনী, অ আ-ফিনী, অরযুক্বনী।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে সঠিক পথ দেখাও, আমাকে নিরাপত্তা দান কর এবং আমাকে জীবিকা দাও। (মুসলিম ৭০২৫-৭০২৬)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ত্বারেক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তাঁর নিকটে একটি লোক এসে নিবেদন করল, ’হে আল্লাহর রসূল! যখন আমি আমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করব, তখন কী বলব?’ তখন তিনি বললেন, ’’বল, ’আল্লাহুম্মাগ ফিরলী---।’ কারণ, এই শব্দগুলিতে তোমার ইহকাল-পরকাল উভয়ই শামিল রয়েছে।’’
وَعَنْ طَارِقِ بنِ أَشْيَمَ قَالَ : كَانَ الرَّجُلُ إِذَا أَسْلَمَ عَلَّمَهُ النَّبِيُّ ﷺ الصَّلاَةَ ثُمَّ أَمَرَهُ أَنْ يَدْعُوَ بِهَؤلاَءِ الكَلِمَاتِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاهْدِني وَعَافِني وَارْزُقْنِي رواه مسلم
وَفِي رِوَايَةٍ لَـهُ عَنْ طَارِقٍ : أنَّه سَمِعَ النَّبِيَّ ﷺ وَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ أَقُولُ حِيْنَ أَسْأَلُ رَبِّي ؟ قَالَ قُلْ : اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَعَافِني وارْزُقْنِي فَإِنَّ هَؤُلاَءِ تَجْمَعُ لَكَ دُنْيَاكَ وَآخِرَتَكَ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৮) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু’আ পড়তেন, ’আল্লা-হুম্মা মুসাররিফাল ক্বুলূবি স্বাররিফ ক্বুলূবানা আলা ত্বা-আ’তিক।’
অর্থঃ- হে আল্লাহ! হে হৃদয়সমূহকে আবর্তনকারী! তুমি আমাদের হৃদয়সমূহকে তোমার আনুগত্যের উপর আবর্তিত কর।
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ اللَّهُمَّ مُصَرِّفَ القُلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৪৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (রাঃ) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে বল, ’(আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা) মিন জাহদিল বালা-ই অদারাকিশ শাক্বা-ই অসূইল ক্বায্বা-ই অশামা-তাতিল আ’দা-’।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট কঠিন দুরবস্থা (অল্প ধনে জনের আধিক্য), দুর্ভাগ্যের নাগাল, মন্দ ভাগ্য এবং দুশমন-হাসি থেকে রক্ষা কামনা করছি। (বুখারী ৬৩৪৭, ৬৬১৬, মুসলিম ৭০৫২)
এক বর্ণনায় সুফিয়ান বলেছেন, ’আমার সন্দেহ হয় যে, ঐ কথাগুলির মধ্যে একটি কথা আমি বাড়িয়ে দিয়েছি।’
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ تَعَوَّذُوا بِاللهِ مِنْ جَهْدِ البَلاَءِ وَدَرَكِ الشَّقَاءِ وَسُوْءِ القَضَاءِ وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ متفق عَلَيْهِ
وفي روايةٍ قَالَ سُفيَانُ : أَشُكُّ أنِّي زِدْتُ وَاحِدَةً مِنْهَا
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫০) উক্ত রাবী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ পড়তেন, ’আল্লা-হুম্মা আস্বলিহ লী দীনিয়াল্লাযী হুয়া ইসমাতু আমরী, অ আস্ব্লিহ লী দুনয়্যা-য়্যাল্লাতী ফীহা মাআ-শী, অ আস্ব্লিহ লী আ-খিরাতিয়াল্লাতী ফীহা মাআ-দী। অজআলিল হায়া-তা যিয়া-দাতাল লী ফী কুল্লি খাইর্। অজআলিল মাউতা রা-হাতাল লী মিন কুল্লি শার্র্।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমার দ্বীনকে শুধ্রে দাও, যা আমার সকল কর্মের হিফাযতকারী। আমার পার্থিব জীবনকে শুধরে দাও, যাতে আমার জীবিকা রয়েছে। আমার পরকালকে শুধ্রে দাও, যাতে আমার প্রত্যাবর্তন হবে। আমার জন্য হায়াতকে প্রত্যেক কল্যাণে বৃদ্ধি কর এবং মওতকে প্রত্যেক অকল্যাণ থেকে আরামদায়ক কর।
وَعَنْهُ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَقُولُ اللَّهُمَّ أَصْلِحْ لِيْ دِيْنِيَ الَّذِي هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِي وَأَصْلِحْ لِي دُنْيَايَ الَّتي فِيهَا مَعَاشِي وَأَصْلِحْ لِي آخِرَتِيَ الَّتي فِيهَا مَعَادِي وَاجْعَلِ الحَيَاةَ زِيَادَةً لِي فِي كُلِّ خَيْرٍ وَاجْعَلِ المَوتَ رَاحَةً لِي مِنْ كُلِّ شَرٍّ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫১) আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ’তুমি বল, ’আল্লাহুম্মাহদিনী অসাদ্দিদনী।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে হিদায়াত কর ও সোজাভাবে রাখ।
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা অস্সাদা-দ’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট হেদায়াত ও সরল পথ কামনা করছি।
وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ لِي رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قُلْ : اَللّٰهُمَّ اهْدِنِـيْ وَسَدِّدْنِـيْ
وفي رواية اللَّهُمَّ إنّـِيْ أَسْأَلُكَ الهُدٰى وَالسَّدَادَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫২) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ পড়তেন, ’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিনাল আজযি অল-কাসালি অল-জুবনি অল-হারামি অল-বুখল, অ আঊযু বিকা মিন আযাবিল ক্বাবরি, অ আঊযু বিকা মিন ফিতনাতিল মাহয়্যা অল-মামাতি, (অ য্বালাইদ্ দাইনি অ গালাবাতির রিজা-ল।)’
অর্থ- হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, স্থবিরতা ও কৃপণতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আযাব থেকে, আশ্রয় কামনা করছি জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে (এবং ঋণের ভার ও মানুষের প্রতাপ থেকে)। (বুখারী ২৮২৩, মুসলিম ৭০৪৮)
’অ য্বালাইদ্ দাইনি অ গালাবাতির রিজা-ল।’ অপর বর্ণনায় (যুক্ত) আছে। (বুখারী ৬৩৬৯)
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَقُولُ اللَّهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجْزِ وَالكَسَلِ وَالجُبْنِ وَإِلٰهَرَمِ وَالبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ المَحْيَا وَالمَمَاتِ
وفي رواية وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫৩) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, ’আমাকে এমন দু’আ শিখিয়ে দিন, যা দিয়ে আমি আমার নামাযে প্রার্থনা করব।’ তিনি বললেন, ’’তুমি বল, ’আল্লাহুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুলমান কাসীরাঁউ অলা য়্যাগফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা অরহামনী, ইন্নাকা আন্তাল গাফুরুর রাহীম।
এক বর্ণনায় আছে, ’(যা দিয়ে আমি আমার নামাযে) এবং আমার ঘরে (প্রার্থনা করব।)’ ’যুলমান কাসীরান’-এর স্থলে কোন কোন বর্ণনায় ’যুলমান কাবীরান’ও বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং উচিত হল, উভয় বর্ণনা একত্র করে ’যুলমান কাসীরান কাবীরান’ বলা।
وَعَنْ أَبي بَكرٍ الصِّدِّيقِ أَنَّه قَالَ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ عَلِّمْنِي دُعَاءً أَدْعُوْ بِهِ فِي صَلاَتِي قَالَ قُلْ : اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْماً كَثِيْراً وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُورُ الرَّحِيمُ متفق عَلَيْهِ
وفي روايةٍ وَفِي بَيتِيْ وَرُوِيَ ظُلماً كَثِيراً وَرُوِي كَبِيراً بالثاء المثلثة وبالباء الموحدة ؛ فينبغي أنْ يَجْمَعُ بَيْنَهُمَا فَيُقَالُ : كَثِيرًا كَبِيرًا
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫৪) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ পড়তেন,
’আল্লা-হুম্মাগফির লী খাত্বীআতী অজাহলী অইসরা-ফী ফী আমরী, অমা আন্তা আ’লামু বিহী মিন্নী। আল্লা-হুম্মাগফির লী জিদ্দী অহাযলী অখাত্বাঈ অআমদী, অকুল্লু যা-লিকা ইনদী। আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু অমা আখখারতু অমা আসরারতু অমা আ’লানতু অমা আন্তা আ’লামু বিহী মিন্নী, আন্তাল মুক্বাদ্দিমু অ আন্তাল মুআখখিরু অআন্তা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমার পাপ, মূর্খামি, কর্মে সীমালংঘনকে এবং যা তুমি আমার চেয়ে অধিক জান, তা আমার জন্য ক্ষমা করে দাও। আল্লাহ গো! তুমি আমার অযথার্থ ও যথার্থ, অনিচ্ছাকৃত ও ইচ্ছাকৃতভাবে করা পাপসমূহকে মার্জনা করে দাও। আর এই প্রত্যেকটি পাপ আমার আছে।
হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মার্জনা কর, যে অপরাধ আমি পূর্বে করেছি এবং যা পরে করেছি, যা গোপনে করেছি এবং যা প্রকাশ্যে করেছি এবং যা তুমি অধিক জান। তুমিই অগ্রসরকারী ও তুমিই পশ্চাদপদকারী এবং তুমি প্রতিটি বস্তুর উপর ক্ষমতাবান।
وَعَنْ أَبي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ ﷺ أَنَّه كَانَ يَدْعُو بِهٰذَا الدُّعَاءِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي خَطِيئَتِي وَجَهْلِي وَإِسرَا فِي فِي أَمْرِي وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنّي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي جِدِّي وَهَزْلِي؛ وَخَطَئِي وَعَمْدِي؛ وَكُلُّ ذٰلِكَ عِنْدِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَنتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ المُقَدِّمُ وَأَنْتَ المُؤَخِّرُ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫৫) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ দু’আতে এই শব্দগুলি বলতেন,
’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিন শাররি মা আমিলতু অ মিন শাররি মা লাম আ’মাল।’
এ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট আমার কৃত (পাপের) অনিষ্ট হতে এবং অকৃত (পুণ্যের) মন্দ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (অথবা অপরের কৃত পাপের ব্যাপক শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।)
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا : أَنَّ النَّبيَّ ﷺ كَانَ يَقُولُ فِي دُعَائِهِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَمِنْ شَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫৬) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি দু’আ ছিল,
’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিন যাওয়া-লি নি’মাতিকা অতাহাউবুলি আ-ফিয়াতিকা অফাজআতি নিক্বমাতিকা অজামী-ই সাখাত্বিক।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট তোমার অনুগ্রহের অপসরণ, নিরাপত্তার প্রত্যাবর্তন, আকস্মিক পাকড়াও এবং যাবতীয় অসন্তোষ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : كَانَ مِن دُعَاءِ رَسُولِ اللهِ ﷺ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ، وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ، وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫৭) যায়েদ ইবনে আরক্বাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ পাঠ করতেন,
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিনাল আজযি অলকাসালি অলবুখলি অলহারামি অ আযা-বিল ক্বাবর্। আল্লা-হুম্মা আ-তি নাফসী তাক্বওয়া-হা অযাক্কিহা আনতা খাইরু মান যাক্কা-হা, আনতা অলিয়্যুহা অমাউলা-হা। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিন ইলমিল লা য়্যানফা’, অমিন ক্বালবিল লা য়্যাখশা’, অমিন নাফসিল লা তাশবা’, অমিন দা’ওয়াতিল লা য়্যুসতাজা-বু লাহা।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, স্থবিরতা এবং কবরের আযাব থেকে পানাহ চাচ্ছি। হে আল্লাহ আমার আত্মায় তোমার ভীতি প্রদান কর এবং তাকে পবিত্র কর, তুমিই শ্রেষ্ঠ পবিত্রকারী। তুমিই তার অভিভাবক ও প্রভু। হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট সেই ইলম থেকে পানাহ চাচ্ছি, যা কোন উপকারে আসে না। সেই হৃদয় থেকে পানাহ চাচ্ছি যা বিনয়ী হয় না। সেই আত্মা থেকে পানাহ চাচ্ছি, যা তৃপ্ত হয় না এবং সেই দু’আ থেকে পানাহ চাচ্ছি যা কবুল হয় না।
وَعَنْ زَيدِ بنِ أَرْقَمَ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَقُولُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجْزِ وَالكَسَلِ وَالبُخْلِ وَإِلٰهَرَمِ وَعَذَابِ القَبْرِ اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا وَزَكِّها أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلاَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَ تَشْبَعُ وَمِنْ دَعْوَةٍ لاَ يُسْتَجابُ لَهَا رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দু‘আর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এবং নবী (ﷺ) এর কতিপয় দু‘আর নমুনা
(৩৬৫৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আটি পড়তেন,
’আল্লা-হুম্মা লাকা আসলামতু অবিকা আ-মানতু, অ আলাইকা তাওয়াক্কালতু, অ ইলাইকা আনাবতু, অবিকা খা-স্বামতু অ ইলাইকা হা-কামতু ফাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু অমা আখখারতু অমা আসরারতু অমা আ’লানতু আনতাল মুক্বাদ্দিমু অআনতাল মুআখখিরু লা ইলা-হা ইল্লা আনতা (অলা হাওলা অলা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।)’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমারই নিকট আত্মসমর্পণ করেছি, তোমার উপরেই ঈমান (বিশ্বাস) রেখেছি, তোমার উপরেই ভরসা করেছি, তোমার দিকে অভিমুখী হয়েছি, তোমারই সাহায্যে বিতর্ক করেছি, তোমারই নিকট বিচার প্রার্থী হয়েছি। অতএব তুমি আমার পূর্বের, পরের, গুপ্ত ও প্রকাশ্য পাপকে মাফ করে দাও। তুমিই অগ্রসরকারী ও তুমিই পশ্চাদপদকারী। তুমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। (কোন কোন বর্ণনাকারীর বর্ধিত বর্ণনা) আল্লাহর তাওফীক ছাড়া পাপ থেকে ফিরার ও সৎকাজ করার (নড়া-সরার) সাধ্য নেই।
وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ يَقُولُ اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وإلَيْكَ أنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ وإلَيْكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أعْلَنْتُ أنتَ المُقَدِّمُ وأَنْتَ المُؤَخِّرُ لا إِلٰهَ إِلاَّ أنْتَ زَادَ بَعْضُ الرُّوَاةِ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ باللهِ متفق عَلَيْهِ