পরিচ্ছেদঃ সফরকারীকে উপদেশ দেওয়া, বিদায় দেওয়ার দু‘আ পড়া ও তার কাছে নেক দু‘আর নিবেদন ইত্যাদি

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّى بِهَا إبْرَاهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَا بَنِيَّ إنَّ اللهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدّينَ فَلاَ تَمُوتُنَّ إِلاَّ وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ أَمْ كُنْتُمْ شُهَدَاءَ إذْ حَضَرَ يَعْقُوبَ المَوْتُ إذْ قَالَ لِبَنِيهِ مَا تَعْبُدُونَ مِنْ بَعْدِي قَالُوا نَعْبُدُ إلهَكَ وَإلهَ آبَائِكَ إبْراهِيمَ وَإسْمَاعِيلَ وَإسْحاقَ إلهَاً وَاحِداً وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ

অর্থাৎ, ইব্রাহীম ও ইয়াকূব এ সম্বন্ধে তাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়েছিল, হে পুত্রগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য দ্বীনকে (ইসলাম ধর্মকে) মনোনীত করেছেন। সুতরাং আত্মসমর্পণকারী না হয়ে তোমরা অবশ্যই মৃত্যুবরণ করো না। ইয়াকুবের নিকট যখন মৃত্যু এসেছিল তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে? সে যখন নিজ পুত্রগণকে জিজ্ঞাসা করেছিল, আমার (মৃত্যুর) পরে তোমরা কিসের উপাসনা করবে। তারা তখন বলেছিল, আমরা আপনার উপাস্য ও আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্য, সেই অদ্বিতীয় উপাস্যের উপাসনা করব। আর আমরা তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী। (সূরা বাক্বারাহ ১৩২-১৩৩)


(৩১৮৬) যায়েদ ইবনে আরক্বামের হাদীস যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার পরিজনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পরিচ্ছেদে অতীত হয়ে গেছে, তাতে যায়দ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) আমাদের মাঝে উঠে ভাষণ দান করলেন; তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন তাঁর গুণ বর্ণনা করলেন এবং উপদেশ ও নসীহত করলেন ও বললেন, ’’অতঃপর হে জনমণ্ডলী! শোন! আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আমার প্রতিপালকের দূত আমার নিকট পৌঁছে যাবে। আর আমি তাঁর ডাকে সাড়া দেব। এমতাবস্থায় আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি ভারী (সম্মানিত) বস্তু রেখে যাচ্ছি, প্রথমটি আল্লাহর কিতাব; যাতে হিদায়াত ও আলো নিহিত আছে। অতএব তোমরা আল্লাহর কিতাবকে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করো।’’

অতঃপর তিনি আল্লাহর কিতাব (মান্য করার) ব্যাপারে উৎসাহিত করলেন এবং তার প্রতি অনুপ্রাণিত করলেন। তারপর তিনি বললেন, ’’দ্বিতীয় বস্তুটি হচ্ছে আমার পরিবার-পরিজন। আমি তোমাদেরকে আমার ’আহলে বায়ত’ (পরিবার)এর ব্যাপারে আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। (যেন তাদের প্রতি কোন অন্যায় আচরণ করো না।)’’ (মুসলিম ৬৩৭৮, হাদীসটি পূর্ণরূপে পূর্বে গত হয়েছে।)

حَدِيْثُ زَيْدٍ بْنِ أَرْقَمٍ الَّذِيْ سَبَقَ فِي بَابِ إِكرَامِ أهْلِ بَيْتِ رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ : قَامَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فِينَا خَطِيباً فَحَمِدَ الله وَأثْنَى عَلَيْهِ وَوَعَظَ وَذَكَّرَ ثُمَّ قَالَ أمَّا بَعْدُ ألاَ أيُّهَا النَّاسُ إنَّمَا أنَا بَشَرٌ يُوشِكُ أنْ يَأتِيَ رَسُوْلُ رَبِّي فَأُجِيبَ وَأنَا تَارِكٌ فِيكُمْ ثَقَلَيْنِ أوَّلَهُمَا : كِتَابُ اللهِ فِيهِ الْهُدَى وَالنُّورُ فَخُذُوا بِكِتَابِ اللهِ وَاسْتَمْسِكُوا بِهِ فَحَثَّ عَلَى كِتَابِ اللهِ وَرَغَّبَ فِيهِ ثُمَّ قَالَ وَأَهْلُ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ في أهْلِ بَيْتِي رواه مسلم، وَقَدْ سَبَقَ بِطُولِهِ

حديث زيد بن ارقم الذي سبق في باب اكرام اهل بيت رسول الله ﷺ قال : قام رسول الله ﷺ فينا خطيبا فحمد الله واثنى عليه ووعظ وذكر ثم قال اما بعد الا ايها الناس انما انا بشر يوشك ان ياتي رسول ربي فاجيب وانا تارك فيكم ثقلين اولهما : كتاب الله فيه الهدى والنور فخذوا بكتاب الله واستمسكوا به فحث على كتاب الله ورغب فيه ثم قال واهل بيتي، اذكركم الله في اهل بيتي رواه مسلم، وقد سبق بطوله

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ সফরকারীকে উপদেশ দেওয়া, বিদায় দেওয়ার দু‘আ পড়া ও তার কাছে নেক দু‘আর নিবেদন ইত্যাদি

(৩১৮৭) আবূ সুলায়মান মালিক ইবনে হুওয়াইরিস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা প্রায় সমবয়স্ক কতিপয় নব যুবক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বিশ দিন অবস্থান করলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত দয়ালু ও স্নেহপরবশ ছিলেন। তাই তিনি ধারণা করলেন যে, আমরা আমাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছি। সেহেতু তিনি আমাদেরকে প্রশ্ন করলেন যে, আমরা আমাদের পরিবারে কাকে ছেড়ে এসেছি? সুতরাং আমরা তাঁকে জানালে তিনি বললেন, ’’তোমরা তোমাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মাঝেই বসবাস কর। তাদেরকে শিক্ষা দান কর এবং তাদেরকে (ভাল কাজের) আদেশ দাও। অমুক নামায অমুক সময়ে পড়। অমুক নামায অমুক সময়ে পড়। সুতরাং যখন নামাযের সময় হবে, তখন তোমাদের মধ্যে কেউ একজন আযান দেবে এবং তোমাদের মধ্যে যে বড় সে ইমামতি করবে। (বুখারী ৬৩১, মুসলিম ১৫৬৭)

বুখারীর বর্ণনায় এরূপ বাড়তিভাবে আছে যে, আমাকে তোমরা যেভাবে নামায পড়তে দেখেছ, ঠিক সেইভাবেই নামায পড়।

وَعَن أَبي سُلَيمَانَ مَالِكِ بنِ الحُوَيْرِثِ قَالَ : أَتَيْنَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَنَحْنُ شَبَبَةٌ مُتَقَارِبُونَ، فَأقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ لَيْلَةً وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ رَحِيماً رَفِيقاً فَظَنَّ أنَّا قَدِ اشْتَقْنَا أهْلَنَا فَسَألَنَا عَمَّنْ تَرَكْنَا مِنْ أهْلِنَا فَأخْبَرْنَاهُ فَقَالَ ارْجِعُوا إِلَى أهْلِيكُمْ فَأَقِيمُوا فِيهمْ وَعَلِّمُوهُم وَمُرُوهُمْ وَصَلُّوا صَلاَةَ كَذَا فِي حِيْنِ كَذَا وَصَلُّوا كَذَا فِي حِيْنِ كَذَا فَإذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أكْبَرُكُمْ متفقٌ عَلَيْهِ زاد البخاري في رواية لَهُ وَصَلُّوا كَمَا رَأيْتُمُونِي أُصَلِّي

وعن ابي سليمان مالك بن الحويرث قال : اتينا رسول الله ﷺ ونحن شببة متقاربون، فاقمنا عنده عشرين ليلة وكان رسول الله ﷺ رحيما رفيقا فظن انا قد اشتقنا اهلنا فسالنا عمن تركنا من اهلنا فاخبرناه فقال ارجعوا الى اهليكم فاقيموا فيهم وعلموهم ومروهم وصلوا صلاة كذا في حين كذا وصلوا كذا في حين كذا فاذا حضرت الصلاة فليوذن لكم احدكم وليومكم اكبركم متفق عليه زاد البخاري في رواية له وصلوا كما رايتموني اصلي

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ সফরকারীকে উপদেশ দেওয়া, বিদায় দেওয়ার দু‘আ পড়া ও তার কাছে নেক দু‘আর নিবেদন ইত্যাদি

(৩১৮৮) সালেম বিন আব্দুল্লাহ ইবনে উমার হতে বর্ণিত, সফরকারীকে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলতেন, আমার নিকটবর্তী হও, তোমাকে ঠিক সেইভাবে বিদায় দেব, যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বিদায় দিতেন। সুতরাং তিনি বলতেন, ’আসতাউদিউল্লা-হা দীনাকা অআমা-নাতাকা অখাওয়াতীমা আমলিক।’ অর্থাৎ, তোমার দ্বীন, তোমার সততা এবং তোমার কাজের পরিণাম আল্লাহকে সঁপে দিলাম।

وَعَنْ سَالِمِ بنِ عَبدِ اللهِ بنِ عُمَرَ : أنَّ عَبدَ اللهِ بنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، كَانَ يَقُولُ للرَّجُلِ إِذَا أرَادَ سَفَراً: اُدْنُ مِنِّي حَتّٰـى أُوَدِّعَكَ كَمَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُوَدِّعُنَا فَيَقُولُ أَسْتَوْدِعُ اللهَ دِينَكَ وَأمَانَتَكَ وَخَواتِيمَ عَمَلِكَ رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح

وعن سالم بن عبد الله بن عمر : ان عبد الله بن عمر رضي الله عنهما، كان يقول للرجل اذا اراد سفرا: ادن مني حتـى اودعك كما كان رسول الله ﷺ يودعنا فيقول استودع الله دينك وامانتك وخواتيم عملك رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ সফরকারীকে উপদেশ দেওয়া, বিদায় দেওয়ার দু‘আ পড়া ও তার কাছে নেক দু‘আর নিবেদন ইত্যাদি

(৩১৮৯) সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে য়্যাযীদ খাত্বমী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সেনাবাহিনীকে বিদায় জানাতেন, তখন এই দু’আ বলতেন, ’আস্তাওদিউল্লাহা দ্বীনাকুম অআমানাতাকুম অখাওয়াতীমা আ’মালিকুম। অর্থাৎ, তোমাদের দ্বীন, তোমাদের সততা এবং তোমাদের কর্মসমূহের পরিণাম আল্লাহকে সঁপে দিলাম।

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ يَزِيدَ الخَطْمِيِّ الصَّحَابيِّ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا أرَادَ أنْ يُوَدِّعَ الجَيشَ قَالَ أسْتَوْدِعُ اللهَ دِينَكُمْ وَأمَانَتَكُمْ وَخَواتِيمَ أعْمَالِكُمْ حديث صحيح رواه أَبُو داود وغيره بإسناد صحيح

وعن عبد الله بن يزيد الخطمي الصحابي قال : كان رسول الله ﷺ اذا اراد ان يودع الجيش قال استودع الله دينكم وامانتكم وخواتيم اعمالكم حديث صحيح رواه ابو داود وغيره باسناد صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ সফরকারীকে উপদেশ দেওয়া, বিদায় দেওয়ার দু‘আ পড়া ও তার কাছে নেক দু‘আর নিবেদন ইত্যাদি

(৩১৯০) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে নিবেদন জানাল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমি সফরে যাব, সুতরাং আমাকে পাথেয় দিন।’ তিনি উত্তরে এই দু’আদিলেন, ’যাউওয়াদাকাল্লা-হুত্ তাক্বওয়া।’ অর্থাৎ, আল্লাহ তোমাকে সংযমশীলতার পাথেয় দান করুন। লোকটি পুনরায় বলল, ’আমাকে আরো পাথেয় দিন।’ তিনি দু’আ দিয়ে বললেন, ’অগাফারা যামবাকা।’ অর্থাৎ, আল্লাহ তোমার অপরাধ ক্ষমা করুন। লোকটি আবার নিবেদন করল, ’আমাকে আরো দিন।’ তিনি পুনরায় দু’আ দিয়ে বললেন, ’অয়্যাসসারা লাকাল খাইরা হাইসুমা কুনতা।’ অর্থাৎ, তুমি যেখানেই থাক, আল্লাহ যেন তোমার জন্য কল্যাণ সহজ ক’রে দেন।

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّي أُرِيدُ سَفَراً فَزَوِّدْنِي فَقَالَ زَوَّدَكَ الله التَّقْوَى قَالَ : زِدْنِي قَالَ وَغَفَرَ ذَنْبَكَ قَالَ : زِدْنِي قَالَ وَيَسَّرَ لَكَ الْخَيْرَ حَيْثُمَا كُنْتَ رواه الترمذي وقال حديث حسن

وعن انس قال : جاء رجل الى النبي ﷺ فقال : يا رسول الله اني اريد سفرا فزودني فقال زودك الله التقوى قال : زدني قال وغفر ذنبك قال : زدني قال ويسر لك الخير حيثما كنت رواه الترمذي وقال حديث حسن

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে