পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

মহান আল্লাহ বলেন,

وَلاَ تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ

অর্থাৎ, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। (সূরা ইসরা ৩৬)

তিনি আরো বলেছেন,

مَا يَلْفِظُ مِنْ قَولٍ إِلاَّ لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ

অর্থাৎ, মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে। (ক্বাফ ১৮)


(২৯৫৮) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ’মহাসত্যবাদী’ রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচারের দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ’মহামিথ্যাবাদী’ রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়।

وَعَنْ ابنِ مَسعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى البِرِّ وَإِنَّ البِرَّ يَهْدِي إِلَى الجَنَّةِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَصْدُقُ حَتّٰـى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ صِدِّيقاً وَإِنَّ الكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الفُجُورِ، وَإِنَّ الفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَكْذِبُ حَتّٰـى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ كَذَّاباً متفقٌ عَلَيْهِ

وعن ابن مسعود قال : قال رسول الله ﷺ ان الصدق يهدي الى البر وان البر يهدي الى الجنة وان الرجل ليصدق حتـى يكتب عند الله صديقا وان الكذب يهدي الى الفجور، وان الفجور يهدي الى النار، وان الرجل ليكذب حتـى يكتب عند الله كذابا متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৫৯) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর বিন আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকবে, সে খাঁটি মুনাফিক্ব গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তির মাঝে তার মধ্য হতে একটি স্বভাব থাকবে, তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকদের একটি স্বভাব থেকে যাবে। (সে স্বভাবগুলি হল,) ১। তার কাছে আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। ২। সে কথা বললে মিথ্যা বলে। ৩। ওয়াদাহ করলে তা ভঙ্গ করে এবং ৪। ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল ভাষা বলে।

وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقاً خَالِصاً وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْ نِفاقٍ حَتّٰـى يَدَعَهَا : إِذَا اؤْتُمِنَ خانَ وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ متفق عَلَيْهِ

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما : ان النبي ﷺ قال اربع من كن فيه كان منافقا خالصا ومن كانت فيه خصلة منهن كانت فيه خصلة من نفاق حتـى يدعها : اذا اوتمن خان واذا حدث كذب واذا عاهد غدر واذا خاصم فجر متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৬০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুনাফিকের লক্ষণ হল তিনটি; কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা দিলে খেলাপ করে এবং চুক্তি করলে ভঙ্গ করে। (বুখারী ৩৩, মুসলিম ২২০)

মুসলিমের এক বর্ণনায় এ কথা বেশী আছে, যদিও সে ব্যক্তি নামায পড়ে রোযা রাখে এবং নিজেকে মুসলিম মনে করে। (মুসলিম ২২২)

عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَاثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ

عن ابـي هريرة عن النبي ﷺ قال اية المنافق ثلاث اذا حدث كذب واذا وعد اخلف واذا اوتمن خان

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৬১) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন স্বপ্ন ব্যক্ত করল, যা সে দেখেনি। (কিয়ামতের দিনে) তাকে দু’টি যব দানার মাঝে সংযোগ সাধন করতে আদেশ করা হবে; কিন্তু সে তা কস্মিন কালেও পারবে না। যে ব্যক্তি কোন জনগোষ্ঠীর কথা শুনবার জন্য কান পাতে, যা তারা আদৌ পছন্দ করে না, কিয়ামতের দিনে তার কানে গলিত সীসা ঢেলে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কোন (প্রাণীর) ছবি তৈরী করে, কিয়ামতের দিন তাকে শাস্তি দেওয়া হবে এবং তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য আদেশ করা হবে, অথচ সে তা করতে পারবে না।

وَعَنْ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ مَنْ تَحَلَّمَ بِحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ كُلِّفَ أَنْ يَعْقِدَ بَيْنَ شَعِيرَتَيْن وَلَنْ يَفْعَلَ، وَمَنِ اسْتَمَعَ إِلَى حَدِيثِ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ، صُبَّ فِي أُذُنَيْهِ الآنُكُ يَوْمَ القِيَامَةِ وَمَنْ صَوَّرَ صُورَةً عُذِّبَ وَكُلِّفَ أَنْ يَنْفُخَ فِيهَا الرُّوحَ وَلَيْسَ بنافِخٍ رواه البخاري

وعن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي ﷺ قال من تحلم بحلم لم يره كلف ان يعقد بين شعيرتين ولن يفعل، ومن استمع الى حديث قوم وهم له كارهون، صب في اذنيه الانك يوم القيامة ومن صور صورة عذب وكلف ان ينفخ فيها الروح وليس بنافخ رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৬২) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা হল, মানুষ আপন চক্ষুকে এমন কিছু দেখায়, যা সে দেখেনি। (অর্থাৎ, সে যা দেখেনি সে সম্পর্কে মিথ্যা ক’রে বলে, ’আমি দেখেছি।’)

وَعَنْ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : قَالَ النَّبِـيُّ ﷺ أَفْرَى الفِرَى أَنْ يُرِيَ الرَّجُلُ عَيْنَيْهِ مَا لَمْ تَرَيَا

وعن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال النبـي ﷺ افرى الفرى ان يري الرجل عينيه ما لم تريا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৬৩) সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে বলতেন, ’’তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছে কি?’’ রাবী বলেন, যার ব্যাপারে আল্লাহর ইচ্ছা সে তাঁর কাছে স্বপ্ন বর্ণনা করত। তিনি একদিন সকালে বললেন, ’’গতরাত্রে আমার কাছে দুজন আগন্তুক এল। তারা আমাকে উঠাল, আর বলল, ’চলুন।’ আমি তাদের সাথে চলতে লাগলাম। অতঃপর আমরা কাত হয়ে শোয়া এক ব্যক্তির নিকট পৌঁছলাম। দেখলাম, অপর এক ব্যক্তি তার নিকট পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে। ফলে তার মাথা ফাটিয়ে ফেলছে। আর পাথর গড়িয়ে সরে পড়ছে। তারপর আবার সে পাথরটির অনুসরণ ক’রে তা পুনরায় নিয়ে আসছে। ফিরে আসতে না আসতেই লোকটির মাথা আগের মত পুনরায় ভাল হয়ে যাচ্ছে। ফিরে এসে আবার একই আচরণ করছে; যা প্রথমবার করেছিল। (তিনি বলেন,) আমি সাথীদ্বয়কে বললাম, ’সুবহানাল্লাহ! এটা কী?’ তারা আমাকে বলল, ’চলুন, চলুন।’

সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম, তারপর চিৎ হয়ে শোয়া এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছলাম। এখানেও দেখলাম, তার নিকট এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এর দ্বারা তার কশ থেকে মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং একইভাবে নাকের ছিদ্র থেকে মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে চোখ থেকে মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে। তারপর ঐ লোকটি শোয়া ব্যক্তির অপরদিকে যাচ্ছে এবং প্রথম দিকের সাথে যেরূপ আচরণ করেছে অনুরূপ আচরণই অপর দিকের সাথেও করছে। ঐ দিক হতে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি আগের মত ভাল হয়ে যাচ্ছে। তারপর আবার প্রথম বারের মত আচরণ করছে। (তিনি বলেন,) আমি বললাম, ’সুবহানাল্লাহ! এরা কারা?’ তারা আমাকে বলল, ’চলুন, চলুন।’

সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং (তন্দুর) চুলার মত একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম। (বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয়, যেন তিনি বললেন,) আর সেখানে শোরগোল ও নানা শব্দ ছিল। আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী-পুরুষ রয়েছে। আর নীচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে, তখনই তারা উচ্চরবে চিৎকার ক’রে উঠছে। আমি বললাম, ’এরা কারা?’ তারা আমাকে বলল, ’চলুন, চলুন।’

সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং একটি নদীর কাছে গিয়ে পৌঁছলাম। (বর্ণনাকারী বলেন, আমার যতদূর মনে পড়ে, তিনি বললেন,) নদীটি ছিল রক্তের মত লাল। আর দেখলাম, সেই নদীতে এক ব্যক্তি সাঁতার কাটছে। আর নদীর তীরে অপর এক ব্যক্তি রয়েছে এবং সে তার কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত ক’রে রেখেছে। আর ঐ সাঁতার-রত ব্যক্তি বেশ কিছুক্ষণ সাঁতার কাটার পর সেই ব্যক্তির কাছে ফিরে আসছে, যে তার নিকট পাথর একত্রিত ক’রে রেখেছে। সেখানে এসে সে তার সামনে মুখ খুলে দিচ্ছে এবং ঐ ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তারপর সে চলে গিয়ে আবার সাঁতার কাটছে এবং আবার তার কাছে ফিরে আসছে। আর যখনই ফিরে আসছে তখনই ঐ ব্যক্তি তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ’এরা কারা?’ তারা বলল, ’চলুন, চলুন।’

সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং এমন একজন কুৎসিত ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছলাম, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক কুৎসিত বলে মনে হয়। আর দেখলাম, তার নিকট রয়েছে আগুন, যা সে জ্বালাচ্ছে ও তার চারিদিকে ছুটে বেড়াচ্ছে। আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ’ঐ লোকটি কে?’ তারা বলল, ’চলুন, চলুন।’

সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং একটা সবুজ-শ্যামল বাগানে এসে উপস্থিত হলাম। সেখানে বসন্তের সব রকমের ফুল রয়েছে আর বাগানের মাঝে এত বেশী দীর্ঘকায় একজন পুরুষ রয়েছে, আকাশে যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছিলাম না। আবার দেখলাম, তার চারদিকে এত বেশী পরিমাণ বালক-বালিকা রয়েছে, যত বেশী পরিমাণ আর কখনোও আমি দেখিনি। আমি তাদেরকে বললাম, ’উনি কে? এরা কারা?’ তারা আমাকে বলল, ’চলুন, চলুন।’

সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং একটা বিশাল (বাগান বা) গাছের নিকট গিয়ে উপস্থিত হলাম। এমন বড় এবং সুন্দর (বাগান বা) গাছ আমি আর কখনো দেখিনি। তারা আমাকে বলল, ’এর উপরে চড়ুন।’ আমরা উপরে চড়লাম। শেষ পর্যন্ত সোনা-রূপার ইঁটের তৈরী একটি শহরে গিয়ে আমরা উপস্থিত হলাম। আমরা শহরের দরজায় পৌঁছলাম এবং দরজা খুলতে বললাম। আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হল। আমরা তাতে প্রবেশ করলাম। তখন সেখানে কতক লোক আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করল, যাদের অর্ধেক শরীর এত সুন্দর ছিল, যত সুন্দর তুমি দেখেছ, তার থেকেও অধিক। আর অর্ধেক শরীর এত কুৎসিত ছিল যত কুৎসিত তুমি দেখেছ, তার থেকেও অধিক। সাথীদ্বয় ওদেরকে বলল, ’যাও ঐ নদীতে গিয়ে নেমে পড়।’ আর সেটা ছিল সুপ্রশস্ত প্রবহমান নদী। তার পানি যেন ধপধপে সাদা। ওরা তাতে গিয়ে নেমে পড়ল। অতঃপর ওরা আমাদের কাছে ফিরে এল। দেখা গেল, তাদের ঐ কুশ্রী রূপ দূর হয়ে গেছে এবং তারা খুবই সুন্দর আকৃতির হয়ে গেছে। (তিনি বলেন,) তারা আমাকে বলল, ’এটা জান্নাতে আদ্ন এবং ওটা আপনার বাসস্থান।’ (তিনি বলেন,) উপরের দিকে আমার দৃষ্টি গেলে, দেখলাম ধপধপে সাদা মেঘের মত একটি প্রাসাদ রয়েছে। তারা আমাকে বলল, ’ঐটা আপনার বাসগৃহ।’ (তিনি বললেন,) আমি তাদেরকে বললাম, ’আল্লাহ তোমাদের মাঝে বরকত দিন, আমাকে ছেড়ে দাও; আমি এতে প্রবেশ করি।’ তারা বলল, ’আপনি অবশ্যই এতে প্রবেশ করবেন। তবে এখন নয়।’

আমি বললাম, ’আমি রাতে অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার দেখতে পেলাম, এগুলোর তাৎপর্য কী?’ তারা আমাকে বলল, ’আচ্ছা আমরা আপনাকে বলে দিচ্ছি। ঐ যে প্রথম ব্যক্তিকে যার কাছে আপনি পৌঁছলেন, যার মাথা পাথর দিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ ব্যক্তি যে কুরআন গ্রহণ ক’রে---তা বর্জন করে। আর ফরয নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকে।

আর ঐ ব্যক্তি যার কাছে গিয়ে দেখলেন যে, তার কশ থেকে মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং একইভাবে নাকের ছিদ্র থেকে মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে চোখ থেকে মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলা হচ্ছিল। সে হল ঐ ব্যক্তি যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন মিথ্যা বলে, যা চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়ে।

আর যে সকল উলঙ্গ নারী-পুরুষ যারা (তন্দুর) চুলা সদৃশ গর্তের অভ্যন্তরে রয়েছে, তারা হল ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণীর দল।

আর ঐ ব্যক্তি যার কাছে পৌঁছে দেখলেন যে, সে নদীতে সাঁতার কাটছে ও তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সে হল সূদখোর।

আর ঐ কুৎসিত ব্যক্তি যে আগুনের কাছে ছিল এবং আগুন জ্বালাচ্ছিল আর তার চারপাশে ছুটে বেড়াচ্ছিল। সে হল মালিক (ফিরিশতা); জাহান্নামের দরোগা।

আর ঐ দীর্ঘকায় ব্যক্তি যিনি বাগানে ছিলেন। তিনি হলেন ইব্রাহীম (আঃ)। আর তাঁর চারপাশে যে বালক-বালিকারা ছিল, ওরা হল তারা, যারা (ইসলামী) প্রকৃতি নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।’’

বারক্বানীর বর্ণনায় আছে, ’’ওরা তারা, যারা (ইসলামী) প্রকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ ক’রে (মৃত্যুবরণ করেছে)।’’ তখন কিছু সংখ্যক মুসলিম জিজ্ঞেস করলেন, ’হে আল্লাহর রসূল! মুশরিকদের শিশু-সন্তানরাও কি (সেখানে আছে)?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’মুশরিকদের শিশু-সন্তানরাও (সেখানে আছে)।

আর ঐ সব লোক যাদের অর্ধেকাংশ অতি সুন্দর ও অর্ধেকাংশ অতি কুৎসিত ছিল, তারা হল ঐ সম্প্রদায় যারা সৎ-অসৎ উভয় প্রকারের কাজ মিশ্রিতভাবে করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ক’রে দিয়েছেন।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’আজ রাতে আমি দেখলাম, দু’টি লোক এসে আমাকে পবিত্র ভূমির দিকে বের করে নিয়ে গেল।’’ অতঃপর ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি বললেন, ’’সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং (তন্দুর) চুলার মত একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম; যার উপর দিকটা সংকীর্ণ ছিল এবং নিচের দিকটা প্রশস্ত। তার নিচে আগুন জ্বলছিল। তার মধ্যে উলঙ্গ বহু নারী-পুরুষ ছিল। আগুন যখন উপর দিকে উঠছিল, তখন তারাও (আগুনের সাথে) উপরে উঠছিল। এমনকি প্রায় তারা (চুলা) থেকে বের হওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। আর যখন আগুন স্তিমিত হয়ে নেমে যাচ্ছিল, তখন (তার সাথে) তারাও নিচে ফিরে যাচ্ছিল।’’

এই বর্ণনায় আছে, ’’একটি রক্তের নদীর কাছে এলাম।’’ বর্ণনাকারী এতে সন্দেহ করেননি। ’’সেই নদীর মাঝখানে একটি লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর নদীর তীরে একটি লোক রয়েছে, যার সামনে পাথর রয়েছে। অতঃপর নদীর মাঝের লোকটি যখন উঠে আসতে চাচ্ছে, তখন তীরের লোকটি তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে সেই দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছে, যেখানে সে ছিল। এইভাবে যখনই সে নদী থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে, তখনই ঐ লোকটি তার মুখে পাথর ছুঁড়ে মারছে। ফলে সে যেখানে ছিল, সেখানে ফিরে যাচ্ছে।’’

এই বর্ণনায় আরো আছে, ’’তারা উভয়ে আমাকে নিয়ে ঐ (বাগান বা) গাছে উঠে গেল। অতঃপর সেখানে এমন একটি গৃহে আমাকে প্রবেশ করাল, যার চেয়ে অধিক সুন্দর গৃহ আমি কখনো দেখিনি। সেখানে বহু বৃদ্ধ ও যুবক লোক ছিল।’’

এই বর্ণনায় আরো আছে, ’’আর যাকে আপনি তার নিজ কশ চিরতে দেখলেন, সে হল বড় মিথ্যুক; যে মিথ্যা কথা বলত, অতঃপর তা তার নিকট থেকে বর্ণনা করা হত। ফলে তা দিকচক্রবালে পৌঁছে যেত। অতএব এই আচরণ তার সাথে কিয়ামত পর্যন্ত করা হবে।’’

এই বর্ণনায় আরো আছে, ’যার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে দেখলেন, সে ছিল এমন ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ কুরআন শিখিয়েছিলেন। কিন্তু সে (তা ভুলে) রাতে ঘুমিয়ে থাকত এবং দিনে তার উপর আমল করত না। অতএব এই আচরণ তার সাথে কিয়ামত পর্যন্ত করা হবে। আর প্রথম যে গৃহটি আপনি দেখলেন, তা হল সাধারণ মু’মিনদের। পক্ষান্তরে এই গৃহটি হল শহীদদের। আমি জিবরীল, আর ইনি মীকাঈল। অতএব আপনি মাথা তুলুন। সুতরাং আমি মাথা তুললাম। তখন দেখলাম, আমার উপর দিকে মেঘের মত কিছু রয়েছে। তাঁরা বললেন, ’ওটি হল আপনার গৃহ।’ আমি বললাম, ’আপনারা আমাকে ছেড়ে দিন, আমি আমার গৃহে প্রবেশ করি।’ তাঁরা বললেন, ’(দুনিয়াতে) আপনার আয়ু অবশিষ্ট আছে; যা আপনি পূর্ণ করেননি। যখন আপনি তা পূর্ণ করবেন, তখন আপনি আপনার গৃহে চলে আসবেন।’ (বুখারী ১৩৮৬)

وَعَنْ سَمُرَةَ بنِ جُنْدُبٍ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مِمَّا يُكْثِرُ أَنْ يَقُوْلَ لأَصْحَابِهِ هَلْ رَأَى أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنْ رُؤْيَا ؟ فَيَقُصُّ عَلَيْهِ مَنْ شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُصَّ، وَإِنَّهُ قَالَ لَنَا ذَاتَ غَدَاةٍ إِنَّهُ أَتَانِيَ اللَّيْلَةَ آتِيَانِ وَإِنَّهُمَا قَالَاَ لِي : انْطَلِقْ وَإِنِّي انْطَلَقتُ مَعَهُمَا وَإِنَّا أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ وَإِذَا آخَرُ قائِمٌ عَلَيْهِ بِصَخْرَةٍ وَإِذَا هُوَ يَهْوِي بِالصَّخْرَةِ لِرَأْسِهِ فَيَثْلَغُ رَأسَهُ فَيَتَدَهْدَهُ الحَجَرُ هَاهُنَا، فَيَتْبَعُ الحَجَرَ فَيَأْخُذُهُ فَلاَ يَرْجِعُ إِلَيْهِ حَتّٰـى يَصِحَّ رَأسُهُ كَمَا كَانَ ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ المَرَّةَ الأوْلَى! قَالَ قُلْتُ لَهُمَا : سُبْحانَ اللهِ مَا هٰذَانِ ؟ قَالَاَ لِي : انْطَلِقِ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُسْتَلْقٍ لِقَفَاهُ وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِكَلُّوبٍ مِنْ حَديدٍ وَإِذَا هُوَ يَأتِي أَحَدَ شِقَّيْ وَجْهِهِ فَيُشَرْشِرُ شِدْقَهُ إِلَى قَفَاهُ وَمِنْخَرَهُ إِلَى قَفَاهُ وَعَيْنَهُ إِلَى قَفَاهُ ثُمَّ يَتَحَوَّلُ إِلَى الجَانِبِ الآخَرِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ بِالجَانِبِ الأَوَّلِ فَمَا يَفْرَغُ مِنْ ذٰلِكَ الجَانِبِ حَتّٰـى يَصِحَّ ذٰلِكَ الجانبُ كَمَا كَانَ ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ مِثْلَ مَا فَعَلَ فِي المرَّةِ الأُوْلَى قَالَ قُلْتُ : سُبْحَانَ اللهِ! مَا هٰذَانِ ؟ قَالَاَ لِي : انْطَلِقِ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى مِثْلِ التَّنُّورِ فَأَحْسِبُ أنَّهُ قَالَ فَإِذَا فِيهِ لَغَطٌ وَأَصْوَاتٌ فَاطَّلَعْنَا فِيهِ فَإِذَا فِيهِ رِجَالٌ وَنِساءٌ عُرَاةٌ وَإِذَا هُمْ يَأتِيهِمْ لَهَبٌ مِنْ أَسْفَلَ مِنْهُمْ فَإِذَا أَتَاهُمْ ذٰلِكَ اللَّهَبُ ضَوْضَوْا قُلْتُ : مَا هَؤُلاَءِ ؟ قَالَاَ لِي : انْطَلِقِ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى نَهْرٍ حَسِبْتُ أَنَّهُ كَانَ يَقُوْلُ أَحْمَرُ مِثْلُ الدَّمِ وَإِذَا فِي النَّهْرِ رَجُلٌ سَابِحٌ يَسْبَحُ وَإِذَا عَلَى شَطِّ النَّهْرِ رَجُلٌ قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ حِجَارَةً كَثِيرَةً وَإِذَا ذٰلِكَ السَّابِحُ يَسْبَحُ مَا يَسْبَحُ ثُمَّ يَأتِي ذٰلِكَ الَّذِي قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ الحِجَارَةَ فَيَفْغَرُ لَهُ فَاهُ، فَيُلْقِمُهُ حَجَراً، فَينْطَلِقُ فَيَسْبَحُ، ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَيْهِ، كُلَّمَا رَجَعَ إِلَيْهِ فَغَرَ لَهُ فَاهُ فَأَلْقَمَهُ حَجَراً قُلْتُ لَهُمَا : مَا هٰذَانِ ؟ قَالَاَ لِي : انْطَلِقِ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ كَرِيهِ المَرْآةِ أَوْ كَأَكْرَهِ مَا أَنْتَ رَاءٍ رَجُلاً مَرْأىً فَإِذَا هُوَ عِنْدَهُ نَارٌ يَحُشُّهَا وَيَسْعَى حَوْلَهَا قُلْتُ لَهُمَا : مَا هٰذَا ؟ قَالَاَ لي : انْطَلِقِ انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا، فَأتَيْنَا عَلَى رَوْضَةٍ مُعْتَمَّةٍ فِيهَا مِنْ كُلِّ نَوْرِ الرَّبيعِ وَإِذَا بَيْنَ ظَهْرَي الرَّوْضَةِ رَجُلٌ طَويلٌ لاَ أَكَادُ أَرَى رَأسَهُ طُولاً فِي السَّماءِ وَإِذَا حَوْلَ الرَّجُلِ مِنْ أَكْثَرِ وِلدَانٍ رَأيْتُهُمْ قَطُّ قُلْتُ : مَا هٰذَا ؟ وَمَا هَؤُلاَءِ ؟ قَالَاَ لِي : انْطَلقِ انْطَلقْ فَانْطَلَقْنَا فَأَتَيْنَا إِلَى دَوْحَةٍ عَظيمةٍ لَمْ أَرَ دَوْحَةً قَطُّ أَعْظَمَ مِنْهَا وَلاَ أَحْسَنَ قَالَاَ لِي : اِرْقَ فِيهَا فَارْتَقَيْنَا فِيهَا إِلَى مَدِينَةٍ مَبْنِيَّةٍ بِلَبنٍ ذَهَبٍ وَلَبنٍ فِضَّةٍ، فَأَتَيْنَا بَابَ المَدِينَةِ فَاسْتَفْتَحْنَا فَفُتِحَ لَنَا فَدَخَلْنَاهَا فَتَلَقَّانَا رِجَالٌ شَطْرٌ مِنْ خَلْقِهِمْ كَأَحْسَنِ مَا أَنتَ رَاءٍ وَشَطْرٌ مِنْهُمْ كَأقْبَحِ مَا أَنتَ رَاءٍ قَالَاَ لَهُمْ : اِذْهَبُوا فَقَعُوا فِي ذٰلِكَ النَّهْرِ وَإِذَا هُوَ نَهْرٌ مُعْتَرِضٌ يَجْرِي كَأَنَّ مَاءَهُ المَحْضُ فِي البَيَاضِ فَذَهَبُوا فَوَقَعُوا فِيهِ ثُمَّ رَجَعُوا إِلَيْنَا قَدْ ذَهَبَ ذٰلِكَ السُّوءُ عَنْهُمْ فَصَارُوا فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ قَالَاَ لِي : هَذِهِ جَنَّةُ عَدْنٍ وَهٰذَاكَ مَنْزِلُكَ فَسَمَا بَصَرِي صُعُداً فَإِذَا قَصْرٌ مِثْلُ الرَّبَابَةِ البَيضَاءِ قَالَاَ لِي : هٰذَاكَ مَنْزِلُكَ ؟ قُلْتُ لَهُمَا: بَارَكَ اللهُ فِيكُمَا فَذَرَانِي فَأَدخُلَهُ قَالَاَ لِي : أَمَّا الآنَ فَلاَ وَأَنتَ دَاخِلُهُ قُلْتُ لَهُمَا : فَإِنِّي رَأَيتُ مُنْذُ اللَّيْلَةِ عَجَباً ؟ فَمَا هٰذَا الَّذِي رَأَيْتُ ؟ قَالَاَ لِي : أَمَا إِنَّا سَنُخْبِرُكَ : أَمَّا الرَّجُلُ الأوَّلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُثْلَغُ رَأسُهُ بِالحَجَرِ فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَأخُذُ القُرآنَ فَيَرفُضُهُ، وَيَنَامُ عَنِ الصَّلاةِ المَكتُوبَةِ وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُشَرْشَرُ شِدْقُهُ إِلَى قَفَاهُ ومِنْخَرُهُ إِلَى قَفَاهُ وَعَيْنُهُ إِلَى قَفَاهُ فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَغْدُو مِنْ بَيْتِهِ فَيَكْذِبُ الكِذْبَةَ تَبْلُغُ الآفَاقَ وَأَمَّا الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ العُرَاةُ الَّذِينَ هُمْ فِي مِثْلِ بِنَاءِ التَّنُّورِ فَإِنَّهُمُ الزُّنَاةُ وَالزَّوَانِي وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيتَ عَلَيهِ يَسْبَحُ فِي النَّهْرِ وَيُلقَمُ الحِجَارَةَ، فَإِنَّهُ آكِلُ الرِّبَا وأمَّا الرَّجُلُ الكَريهُ الْمَرْآةِ الَّذِي عِنْدَ النَّارِ يَحُشُّهَا وَيَسْعَى حَوْلَهَا فَإِنَّهُ مَالِكٌ خازِنُ جَهَنَّمَ وَأَمَّا الرَّجُلُ الطَّوِيلُ الَّذِي فِي الرَّوْضَةِ فَإِنَّهُ إِبرَاهِيم ﷺ وَأمَّا الوَلَدَانِ الَّذِينَ حَوْلَهُ، فَكُلُّ مَوْلُودٍ مَاتَ عَلَى الفِطْرَةِ وَفِي رِوَايَةِ البَرْقَانِيِّ وُلِدَ عَلَى الفِطْرَةِ فَقَالَ بعض المُسلمينَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ وَأَولاَدُ المُشرِكِينَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَأَولاَدُ المُشرِكِينَ وَأَمَّا القَوْمُ الَّذِينَ كَانُوا شَطْرٌ مِنْهُمْ حَسَنٌ وَشَطْرٌ مِنْهُمْ قَبِيحٌ فَإِنَّهُمْ قَومٌ خَلَطُوا عَمَلاً صَالِحاً وَآخَرَ سَيِّئاً تَجَاوَزَ اللهُ عَنهُمْ رواه البخاري

وعن سمرة بن جندب قال : كان رسول الله ﷺ مما يكثر ان يقول لاصحابه هل راى احد منكم من رويا ؟ فيقص عليه من شاء الله ان يقص، وانه قال لنا ذات غداة انه اتاني الليلة اتيان وانهما قالا لي : انطلق واني انطلقت معهما وانا اتينا على رجل مضطجع واذا اخر قاىم عليه بصخرة واذا هو يهوي بالصخرة لراسه فيثلغ راسه فيتدهده الحجر هاهنا، فيتبع الحجر فياخذه فلا يرجع اليه حتـى يصح راسه كما كان ثم يعود عليه فيفعل به مثل ما فعل المرة الاولى! قال قلت لهما : سبحان الله ما هذان ؟ قالا لي : انطلق انطلق فانطلقنا، فاتينا على رجل مستلق لقفاه واذا اخر قاىم عليه بكلوب من حديد واذا هو ياتي احد شقي وجهه فيشرشر شدقه الى قفاه ومنخره الى قفاه وعينه الى قفاه ثم يتحول الى الجانب الاخر فيفعل به مثل ما فعل بالجانب الاول فما يفرغ من ذلك الجانب حتـى يصح ذلك الجانب كما كان ثم يعود عليه فيفعل مثل ما فعل في المرة الاولى قال قلت : سبحان الله! ما هذان ؟ قالا لي : انطلق انطلق فانطلقنا فاتينا على مثل التنور فاحسب انه قال فاذا فيه لغط واصوات فاطلعنا فيه فاذا فيه رجال ونساء عراة واذا هم ياتيهم لهب من اسفل منهم فاذا اتاهم ذلك اللهب ضوضوا قلت : ما هولاء ؟ قالا لي : انطلق انطلق فانطلقنا فاتينا على نهر حسبت انه كان يقول احمر مثل الدم واذا في النهر رجل سابح يسبح واذا على شط النهر رجل قد جمع عنده حجارة كثيرة واذا ذلك السابح يسبح ما يسبح ثم ياتي ذلك الذي قد جمع عنده الحجارة فيفغر له فاه، فيلقمه حجرا، فينطلق فيسبح، ثم يرجع اليه، كلما رجع اليه فغر له فاه فالقمه حجرا قلت لهما : ما هذان ؟ قالا لي : انطلق انطلق فانطلقنا فاتينا على رجل كريه المراة او كاكره ما انت راء رجلا مراى فاذا هو عنده نار يحشها ويسعى حولها قلت لهما : ما هذا ؟ قالا لي : انطلق انطلق فانطلقنا، فاتينا على روضة معتمة فيها من كل نور الربيع واذا بين ظهري الروضة رجل طويل لا اكاد ارى راسه طولا في السماء واذا حول الرجل من اكثر ولدان رايتهم قط قلت : ما هذا ؟ وما هولاء ؟ قالا لي : انطلق انطلق فانطلقنا فاتينا الى دوحة عظيمة لم ار دوحة قط اعظم منها ولا احسن قالا لي : ارق فيها فارتقينا فيها الى مدينة مبنية بلبن ذهب ولبن فضة، فاتينا باب المدينة فاستفتحنا ففتح لنا فدخلناها فتلقانا رجال شطر من خلقهم كاحسن ما انت راء وشطر منهم كاقبح ما انت راء قالا لهم : اذهبوا فقعوا في ذلك النهر واذا هو نهر معترض يجري كان ماءه المحض في البياض فذهبوا فوقعوا فيه ثم رجعوا الينا قد ذهب ذلك السوء عنهم فصاروا في احسن صورة قال قالا لي : هذه جنة عدن وهذاك منزلك فسما بصري صعدا فاذا قصر مثل الربابة البيضاء قالا لي : هذاك منزلك ؟ قلت لهما: بارك الله فيكما فذراني فادخله قالا لي : اما الان فلا وانت داخله قلت لهما : فاني رايت منذ الليلة عجبا ؟ فما هذا الذي رايت ؟ قالا لي : اما انا سنخبرك : اما الرجل الاول الذي اتيت عليه يثلغ راسه بالحجر فانه الرجل ياخذ القران فيرفضه، وينام عن الصلاة المكتوبة واما الرجل الذي اتيت عليه يشرشر شدقه الى قفاه ومنخره الى قفاه وعينه الى قفاه فانه الرجل يغدو من بيته فيكذب الكذبة تبلغ الافاق واما الرجال والنساء العراة الذين هم في مثل بناء التنور فانهم الزناة والزواني واما الرجل الذي اتيت عليه يسبح في النهر ويلقم الحجارة، فانه اكل الربا واما الرجل الكريه المراة الذي عند النار يحشها ويسعى حولها فانه مالك خازن جهنم واما الرجل الطويل الذي في الروضة فانه ابراهيم ﷺ واما الولدان الذين حوله، فكل مولود مات على الفطرة وفي رواية البرقاني ولد على الفطرة فقال بعض المسلمين: يا رسول الله واولاد المشركين فقال رسول الله ﷺ واولاد المشركين واما القوم الذين كانوا شطر منهم حسن وشطر منهم قبيح فانهم قوم خلطوا عملا صالحا واخر سيىا تجاوز الله عنهم رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৬৪) আবু উমামাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের পার্শ্বদেশে এক গৃহের যামিন হচ্ছি, যে ব্যক্তি সত্যাশ্রয়ী হওয়া সত্ত্বেও তর্কাতর্কি বর্জন করে। সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের মধ্যদেশে এক গৃহের যামিন হচ্ছি, যে ব্যক্তি উপহাসছলেও মিথ্যা বলে না। আর সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের ঊর্ধ্বদেশে এক গৃহের যামিন হচ্ছি, যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সুন্দর করে।

عَنْ أَبِى أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِى رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا وَبِبَيْتٍ فِى وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِى أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ

عن ابى امامة قال قال رسول الله ﷺ انا زعيم ببيت فى ربض الجنة لمن ترك المراء وان كان محقا وببيت فى وسط الجنة لمن ترك الكذب وان كان مازحا وببيت فى اعلى الجنة لمن حسن خلقه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ মিথ্যা বলা হারাম

(২৯৬৫) উম্মে কুলসুম বিনতে উক্ববাহ বিন আবী মুআইত্ব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, ’’লোকের মধ্যে সন্ধি স্থাপনকারী মিথ্যাবাদী নয়। সে হয় ভাল কথা পৌঁছায়, না হয় ভাল কথা বলে।’’ (বুখারী ২৬৯২, মুসলিম ৬৭৯৯)

সহীহ মুসলিমে আছে উম্মে কুলসুম বলেন, তাঁকে মানুষের কথাবার্তায় মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে শুনিনি, তিন ক্ষেত্র ছাড়াঃ (১) যুদ্ধকালে (২) লোকেদের ঝগড়া মিটাবার ক্ষেত্রে ও (৩) স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের (প্রেম বর্ধক) কথোপকথনে। (মুসলিম, ৬৮০০)

عَنْ أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ عُقْبَةَ بْنِ أَبِى مُعَيْطٍ أَنَّهَا سَمِعَتْ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَهُوَ يَقُولُ لَيْسَ الْكَذَّابُ الَّذِى يُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ وَيَقُولُ خَيْرًا وَيَنْمِى خَيْرًا

عن ام كلثوم بنت عقبة بن ابى معيط انها سمعت رسول الله ﷺ وهو يقول ليس الكذاب الذى يصلح بين الناس ويقول خيرا وينمى خيرا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে