পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা আবূ জাহ্ল বলল, ’তোমাদের সামনে কি মুহাম্মাদ নিজ চেহারা মাটিতে রাখে?’ বলা হল, ’হ্যাঁ।’ সে বলল, ’লাত-উয্যার কসম! আমি যদি তাকে তা করতে দেখি, তাহলে তার ঘাড়ে পা রেখে দলব। অথবা তার চেহারাকে মাটিতে রগড়ে দেব।’ অতঃপর এক সময় সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল, তখন তিনি নামায পড়ছিলেন। সে তাঁর ঘাড়ে পা রেখে দলার ইচ্ছা করল। কিন্তু অকস্মাৎ লোকেরা দেখল, সে পশ্চাদ্পদ হয়ে ফিরে আসছে এবং নিজ দুই হাত দিয়ে নিজেকে বাঁচাবার চেষ্টা করছে। তারা তাকে কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বলল, ’আমার ও ওর মাঝে আগুনের পরিখা, বিভীষিকা ও পক্ষরাজি ছিল।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ও যদি আমার নিকটবর্তী হতো, তাহলে ফিরিশতা ওর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিতেন।
عَنْ أَبِـىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ أَبُو جَهْلٍ هَلْ يُعَفِّرُ مُحَمَّدٌ وَجْهَهُ بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ قَالَ فَقِيلَ نَعَمْ فَقَالَ وَاللاَّتِ وَالْعُزَّى لَئِنْ رَأَيْتُهُ يَفْعَلُ ذٰلِكَ لأَطَأَنَّ عَلٰى رَقَبَتِهِ أَوْ لأُعَفِّرَنَّ وَجْهَهُ فِى التُّرَابِ قَالَ فَأَتَى رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَهُوَ يُصَلِّى زَعَمَ لِيَطَأَ عَلٰى رَقَبَتِهِ قَالَ فَمَا فَجِئَهُمْ مِنْهُ إِلاَّ وَهُوَ يَنْكِصُ عَلٰى عَقِبَيْهِ وَيَتَّقِى بِيَدَيْهِ قَالَ فَقِيلَ لَهُ مَا لَكَ فَقَالَ إِنَّ بَيْنِى وَبَيْنَهُ لَخَنْدَقًا مِنْ نَارٍ وَهَوْلاً وَأَجْنِحَةً فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَوْ دَنَا مِنِّى لاَخْتَطَفَتْهُ الْمَلاَئِكَةُ عُضْوًا عُضْوًا
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা জিবরীল (আঃ) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে বসেছিলেন। হঠাৎ তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে, একজন ফিরিশতা অবতরণ করছেন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লক্ষ্য ক’রে) বললেন, ’এই ফিরিশতা যখন থেকে সৃষ্ট হয়েছেন, তখন থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত কোন দিন অবতরণ করেননি।’ ফিরিশতা অবতরণ করে (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে) সম্বোধন ক’রে বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! আপনার প্রতিপালক আমাকে আপনার কাছে পাঠিয়েছেন। (তিনি জানতে চান যে,) আপনাকে কি তিনি একজন সম্রাট ও নবী ক’রে প্রেরণ করবেন, না কেবল একজন বান্দা ও রাসূল ক’রে পাঠাবেন?’ জিবরীল (আঃ) বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! আপনি আপনার প্রতিপালকের জন্য নম্র-বিনয়ী হন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, বরং আমি একজন বান্দা ও রাসূল হিসাবে প্রেরিত হতে চাই।
عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ جَلَسَ جِبْرِيلُ إِلَـى النَّبِيِّ ﷺ فَنَظَرَ إِلَـى السَّمَاءِ فَإِذَا مَلَكٌ يَنْزِلُ فَقَالَ جِبْرِيلُ إِنَّ هٰذَا الْمَلَكَ مَا نَزَلَ مُنْذُ يَوْمِ خُلِقَ قَبْلَ السَّاعَةِ فَلَمَّا نَزَلَ قَالَ يَا مُحَمَّدُ أَرْسَلَنِي إِلَيْكَ رَبُّكَ قَالَ أَفَمَلِكًا نَبِيًّا يَجْعَلُكَ أَوْ عَبْدًا رَسُولًا قَالَ جِبْرِيلُ: تَوَاضَعْ لِرَبِّكَ يَا مُحَمَّدُ، قَالَ بَلْ عَبْدًا رَسُولًا
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৫) আনাস বিন মালিক (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি জান্নাতের নিকট এসে তার দরজা খুলতে বলব। দারোয়ান ফিরিশতা বলবেন, ’কে আপনি?’ আমি বলব, ’মুহাম্মাদ।’ দারোয়ান বলবেন, ’আমি আদিষ্ট হয়েছি, যেন আপনার পূর্বে অন্য কারো জন্য দরজা না খুলি।
عَنْ أَنَسٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ آتِى بَابَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَسْتَفْتِحُ فَيَقُوْلُ الْخَازِنُ مَنْ أَنْتَ فَأَقُولُ مُحَمَّدٌ فَيَقُوْلُ بِكَ أُمِرْتُ لاَ أَفْتَحُ لأَحَدٍ قَبْلَكَ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৬) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি পৃথিবীর কাউকে ’খালীল’রূপে গ্রহণ করলে ইবনে আবী ক্বুহাফাহ (আবূ বকর) কে ’খালীল’রূপে গ্রহণ করতাম। কিন্তু তোমাদের সাথী ’খালীলুল্লাহ’।
عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ خَلِيلاً لاَتَّخَذْتُ ابْنَ أَبِى قُحَافَةَ خَلِيلاً وَلَكِنْ صَاحِبُكُمْ خَلِيلُ اللهِ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৭) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা তিনি উম্মে সুলাইম (রাঃ) এর ঘরে এসে শুয়ে ঘুমিয়ে গেলেন। তিনি ঘর্মাক্ত হলে আমার মা উম্মে সুলাইম সেই ঘাম জমা করতে লাগলেন। তিনি জেগে উঠে তা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ’কী ব্যাপার উম্মে সুলাইম?’ বললেন, ’আপনার ঘাম। আমাদের সুগন্ধিতে মিশিয়ে দেব। আর তা হবে শ্রেষ্ঠ সুগন্ধি।
عَنْ أَنَسٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ دَخَلَ عَلَيْنَا النَّبِىُّ ﷺ فَقَالَ عِنْدَنَا فَعَرِقَ وَجَاءَتْ أُمِّى بِقَارُورَةٍ فَجَعَلَتْ تَسْلُتُ الْعَرَقَ فِيهَا فَاسْتَيْقَظَ النَّبِىُّ ﷺ فَقَالَ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ مَا هٰذَا الَّذِى تَصْنَعِينَ؟ قَالَتْ هٰذَا عَرَقُكَ نَجْعَلُهُ فِى طِيبِنَا وَهُوَ مِنْ أَطْيَبِ الطِّيبِ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৮) আনাস (রাঃ) বলেন, ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর করতল অপেক্ষা অধিকতর কোমল কোন পুরু বা পাতলা রেশম আমি স্পর্শ করিনি। আর তাঁর শরীরের সুগন্ধ অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধ কোন বস্তু আমি কখনো শুঁকিনি।’
عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَزْهَرَ اللَّوْنِ كَأَنَّ عَرَقَهُ اللُّؤْلُؤُ إِذَا مَشَى تَكَفَّأَ وَلاَ مَسِسْتُ دِيبَاجَةً وَلاَ حَرِيرَةً أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ وَلاَ شَمَمْتُ مِسْكَةً وَلاَ عَنْبَرَةً أَطْيَبَ مِنْ رَائِحَةِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭২৯) আবূ জুহাইফা (রাঃ) বলেন, ’লোকেরা তাঁর হাত নিয়ে নিজেদের চেহারার উপর বুলাত। আমিও তাঁর হাত নিয়ে আমার চেহারার উপর রাখলাম; অনুভব করলাম, তা বরফ অপেক্ষা বেশি ঠাণ্ডা এবং কস্ত্তরী অপেক্ষা বেশি সুগন্ধময়।
عَنْ أَبِـيْ جُحَيْفَةَ قَالَ وَقَامَ النَّاسُ فَجَعَلُوا يَأْخُذُونَ يَدَيْهِ فَيَمْسَحُونَ بِهَا وُجُوهَهُمْ قَالَ فَأَخَذْتُ بِيَدِهِ فَوَضَعْتُهَا عَلٰى وَجْهِي فَإِذَا هِيَ أَبْرَدُ مِنْ الثَّلْجِ وَأَطْيَبُ رَائِحَةً مِنْ الْمِسْكِ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩০) জাবের বিন সামুরাহ (রাঃ) বলেন, ’তিনি আমার গালের উপর হাত বুলালেন। আমি তাঁর হাতে এমন শীতলতা অথবা সুগন্ধি অনুভব করলাম, যেন তিনি (সবেমাত্র) তাঁর হাতকে আতরের বাঙ থেকে বের করেছেন।’
عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ فَجَعَلَ يَمْسَحُ خَدَّىْ أَحَدِهِمْ وَاحِدًا وَاحِدًا - قَالَ - وَأَمَّا أَنَا فَمَسَحَ خَدِّى - قَالَ - فَوَجَدْتُ لِيَدِهِ بَرْدًا أَوْ رِيحًا كَأَنَّمَا أَخْرَجَهَا مِنْ جُؤْنَةِ عَطَّارٍ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩১) উবাই বিন কা’ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন এলে আমি হব নবীগণের ইমাম ও খতীব এবং তাঁদের শাফাআত-ওয়ালা। আর এতে কোন গর্ব নেই।
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ كُنْتُ إِمَامَ النَّبِيِّينَ وَخَطِيبَهُمْ وَصَاحِبَ شَفَاعَتِهِمْ غَيْرَ فَخْرٍ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩২) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার বৈবাহিক ও বংশীয় সম্পর্ক ছাড়া সকল বৈবাহিক ও বংশীয় সম্পর্ক কিয়ামতের দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ كُلُّ نَسَبٍ وَصِهْرٍ يَنْقَطِعُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا نَسَبِـيْ وَصِهْرِي
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৩) আবূ যার্র (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, ’(সর্বপ্রথম) নিশ্চিতরূপে কীভাবে জানলেন যে, আপনি নবী?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’’হে আবূ যার্র! আমি মক্কার কোন এক বাত্হাতে (উপত্যকার বালুচরে) ছিলাম। সেই সময় আমার কাছে দু’জন ফিরিশতা এলেন। তাঁদের মধ্যে একজন যমীনে অবতরণ করলেন অন্য জন আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে শূন্যে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের একজন তাঁর সঙ্গীকে বললেন, ’উনিই কি তিনি?’ সঙ্গী বললেন, ’হ্যাঁ।’ প্রথমজন বললেন, ’উনাকে একজন লোক দ্বারা ওজন কর।’ সুতরাং আমাকে একজন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতে আমার ওজন বেশি হল। তারপর প্রথমজন বললেন, ’এখন উনাকে দশজন লোক দ্বারা ওজন কর।’
সুতরাং আমাকে দশজন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতেও আমার ওজন বেশি হল। তারপর প্রথমজন বললেন, ’এখন উনাকে একশত জন লোক দ্বারা ওজন কর।’ সুতরাং আমাকে একশত জন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতেও আমার ওজন বেশি হল। তারপর প্রথমজন বললেন, ’এখন উনাকে এক হাজার জন লোক দ্বারা ওজন কর।’ সুতরাং আমাকে এক হাজার জন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতেও আমার ওজন বেশি হল। আমি যেন এখনও তাদেরকে দেখছি, তাদের পাল্লা হাল্কা হওয়ার দরুন তারা আমার উপর পড়ে যাচ্ছিল! তারপর প্রথমজন তাঁর সঙ্গীকে বললেন, ’উনাকে যদি তাঁর উম্মত দ্বারা ওজন করা হয়, তাহলেও নিশ্চিতরূপে তাঁরই ওজন বেশি হবে।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ عَلِمْتَ أَنَّكَ نَبِيٌّ حَتَّى اسْتَيْقَنْتَ؟ فَقَالَ: " يَا أَبَا ذَرٍّ أَتَانِي مَلَكَانِ وَأَنَا بِبَعْضِ بَطْحَاءِ مَكَّةَ فَوَقَعَ أَحَدُهُمَا عَلَى الْأَرْضِ، وَكَانَ الْآخَرُ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ: أَهُوَ هُوَ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ زِنْهُ بِرَجُلٍ، فَوُزِنْتُ بِهِ فَوَزَنْتُهُ، ثُمَّ قَالَ: فَزِنْهُ بِعَشَرَةٍ، فَوُزِنْتُ بِهِمْ فَرَجَحْتُهُمْ، ثُمَّ قَالَ: زِنْهُ بِمِائَةٍ، فَوُزِنْتُ بِهِمْ فَرَجَحْتُهُمْ ثُمَّ قَالَ: زِنْهُ بِأَلْفٍ، فَوُزِنْتُ بِهِمْ فَرَجَحْتُهُمْ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَنْتَثِرُونَ عَلَيَّ مِنْ خِفَّةِ الْمِيزَانِ، قَالَ: فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ: لَوْ وَزَنْتَهُ بِأُمَّتِهِ لَرَجَحَهَا "
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৪) ইরবায বিন সারিয়াহ বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি (আব্দুল্লাহ) আল্লাহর নিকট তাঁর লওহে মাহফূযে লিখিত তখনও সর্বশেষ নবী, যখন আদম কাদা অবস্থায় পড়ে ছিলেন। আর এর তাৎপর্য এই যে, (আমার নবুঅতের প্রথম বিকাশ ঘটে) আমার পিতা ইব্রাহীমের দু’আ, ঈসার তাঁর কওমকে দেওয়া সুসংবাদ এবং আমার আম্মার দেখা সেই স্বপ্নের মাধ্যমে, যাতে তিনি তাঁর নিকট থেকে এমন জ্যোতি বের হতে দেখেন যা, শামদেশের অট্টালিকাসমূহকে আলোকিত করেছিল। আর অনুরূপই আম্বিয়া (সালাওয়াতুল্লাহি আলাইহিম)এর আম্মাগণ দেখে থাকেন।
عَنِ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ السُّلَمِيِّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ إِنِّي عَبْدُ اللهِ فِي أُمِّ الْكِتَابِ لَخَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ آدَمَ لَمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ وَسَأُنَبِّئُكُمْ بِتَأْوِيلِ ذٰلِكَ دَعْوَةِ أَبِـيْ إِبْرَاهِيمَ وَبِشَارَةِ عِيسَى قَوْمَهُ وَرُؤْيَا أُمِّي الَّتِي رَأَتْ أَنَّهُ خَرَجَ مِنْهَا نُورٌ أَضَاءَتْ لَهُ قُصُورُ الشَّامِ وَكَذٰلِكَ تَرَى أُمَّهَاتُ النَّبِيِّينَ صَلَوَاتُ اللهِ عَلَيْهِمْ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৫) জাবের বিন আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে এমন পাঁচটি বস্তু দেওয়া হয়েছে, যা আমার পূর্বে কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। (১) এক মাসের পথ চলার মত দূরত্বেও আমার ভীতি দুশমনদের মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, (২) আমার জন্য সারা পৃথিবীকে মসজিদ ও (তার মাটিকে) পবিত্রকারী করে দেওয়া হয়েছে, অতএব আমার উম্মত যেখানেই থাকুক নামাযের সময় হয়ে গেলে সেখানেই সে যেন নামায পড়ে নেয়, (৩) আমার জন্য গনীমাতের সম্পদ বৈধ করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে অন্য কারোর জন্য বৈধ ছিল না, (৪) আমাকে কিয়ামতের দিন সুপারিশ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে (৫) অন্য সকল নবীকে নির্দিষ্ট গোত্রের নিকট পাঠানো হয়েছিল আর আমাকে সকল মানুষের জন্য নবী করে পাঠানো হয়েছে।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الأَنْصَارِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أُعْطِيتُ خَمْسًا لَمْ يُعْطَهُنَّ أَحَدٌ قَبْلِي نُصِرْتُ بِالرُّعْبِ مَسِيرَةَ شَهْرٍ وَجُعِلَتْ لِي الْأَرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُورًا فَأَيُّمَا رَجُلٍ مِنْ أُمَّتِي أَدْرَكَتْهُ الصَّلَاةُ فَلْيُصَلِّ وَأُحِلَّتْ لِي الْمَغَانِمُ وَلَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِي وَأُعْطِيتُ الشَّفَاعَةَ وَكَأَنَّ النَّبِـيَّ يُبْعَثُ إِلٰـى قَوْمِهِ خَاصَّةً وَبُعِثْتُ إِلَـى النَّاسِ عَامَّةً
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ছয়টি জিনিস দিয়ে আমাকে অন্যান্য নবীগণের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। আমাকে বহুলার্থবোধক সংক্ষিপ্ত বাক্যাবলী (বলার ক্ষমতা) দেওয়া হয়েছে। আতঙ্ক দিয়ে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। গনীমতের মাল আমার জন্য হালাল করা হয়েছে। পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ ও (তার মাটিকে) পবিত্রকারী বানানো হয়েছে। আমি সারা সৃষ্টির জন্য প্রেরিত হয়েছি। আর আমাকে দিয়ে নবুঅতের সমাপ্তি ঘটানো হয়েছে।
عَنْ أَبِـىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ فُضِّلْتُ عَلَى الأَنْبِيَاءِ بِسِتٍّ أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَأُحِلَّتْ لِـىَ الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِـىَ الْأَرْضُ طَهُوْرًا وَمَسْجِدًا وَأُرْسِلْتُ إِلَـى الْـخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِىَ النَّبِيُّونَ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৭) সাওবান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ আমার জন্য পৃথিবীকে গুটিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং আমি তার পূর্ব ও পশ্চিম (অর্থাৎ পুরোটাই) দেখেছি। নিশ্চয় আমার উম্মতের রাজত্ব ততদূর পৌঁছবে, যতদূর আমার জন্য গুটিয়ে দেওয়া হয়েছে (অর্থাৎ পুরোটাই)। আর আমাকে দেওয়া হয়েছে লাল ও সাদা (স্বর্ণ ও রৌপ্য-ভাণ্ডার)।
عَنْ ثَوْبَانَ أَنَّ نَبِىَّ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ اللهَ زَوَى لِـىْ الأَرْضَ فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا وَإِنَّ أُمَّتِى سَيَبْلُغُ مُلْكُهَا مَا زُوِىَ لِـىْ مِنْهَا وَأُعْطِيتُ الْكَنْزَيْنِ الأَحْمَرَ وَالأَبْيَضَ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৮) তামীম আদ দারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই এ দ্বীন পৌঁছবে, যেখানে রাত-দিন পৌঁছেছে। আল্লাহ কোন ঘর ও শিবিরে এ দ্বীন প্রবিষ্ট না করে ছাড়বেন না; সম্মানীর সম্মানের সাথে হোক অথবা অসম্মানীর অসম্মানের সাথে হোক। এমন সম্মান, যার দ্বারা আল্লাহ ইসলামকে সম্মানিত করবেন এবং এমন অসম্মান, যার দ্বারা আল্লাহ কুফরীকে লাঞ্ছিত করবেন।
عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَيَبْلُغَنَّ هٰذَا الْأَمْرُ مَا بَلَغَ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَلَا يَتْرُكُ اللهُ بَيْتَ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللهُ هٰذَا الدِّينَ بِعِزِّ عَزِيزٍ أَوْ بِذُلِّ ذَلِيلٍ عِزًّا يُعِزُّ اللهُ بِهِ الْإِسْلَامَ وَذُلًّا يُذِلُّ اللهُ بِهِ الْكُفْرَ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৯) হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লোকেদের উপরে তিনটি বিষয় দিয়ে আমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছেঃ আমাদের কাতারকে ফিরিশতামণ্ডলীর কাতারের মতো গণ্য করা হয়েছে। পৃথিবীর সকল স্থানকে আমাদের জন্য মসজিদ বানানো হয়েছে। পানি না পেলে তার মাটিকে আমাদের জন্য পবিত্রতার মাধ্যম বানানো হয়েছে। আর আমাকে সূরা বাক্বারার শেষাংশের এই আয়াতগুলি আরশের নিচের ভাণ্ডার থেকে দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে কোন নবীকে দান করা হয়নি।
عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فُضِّلْنَا عَلَى النَّاسِ بِثَلاَثٍ جُعِلَتْ صُفُوفُنَا كَصُفُوفِ الْمَلاَئِكَةِ وَجُعِلَتْ لَنَا الأَرْضُ كُلُّهَا مَسْجِدًا وَجُعِلَتْ تُرْبَتُهَا لَنَا طَهُورًا إِذَا لَمْ نَجِدِ الْمَاءَ وَأُعْطِيتُ هَذِهِ الْآيَاتِ مِنْ آخِرِ الْبَقَرَةِ مِنْ كَنْزٍ تَحْتَ الْعَرْشِ لَمْ يُعْطَهَا نَبِيٌّ قَبْلِي
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৪০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বহুলার্থবোধক বাক্য-সহ আমি প্রেরিত হয়েছি, (কাফেরদের মনে) আতঙ্ক প্রক্ষেপ দ্বারা আমি সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছি, আর এক সময় যখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, তখন (স্বপ্নে) পৃথিবীর যাবতীয় ভান্ডারের চাবিরাশি এনে আমার হাতে রাখা হয়েছে।
عَنْ أَبِـىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَبَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِمَفَاتِيحِ خَزَائِنِ الأَرْضِ فَوُضِعَتْ فِى يَدَىَّ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৪১) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার কাছে সকল উম্মত পেশ করা হল। আমি দেখলাম, কোন নবীর সাথে কতিপয় (৩ থেকে ৭ জন অনুসারী) লোক রয়েছে। কোন নবীর সাথে এক অথবা দুইজন লোক রয়েছে। কোন নবীকে দেখলাম তাঁর সাথে কেউ নেই। ইতোমধ্যে বিরাট একটি জামাআত আমার সামনে পেশ করা হল। আমি মনে করলাম, এটিই আমার উম্মত। কিন্তু আমাকে বলা হল যে, ’এটি হল মূসা ও তাঁর উম্মতের জামাআত। কিন্তু আপনি অন্য দিগন্তে তাকান।’ অতঃপর তাকাতেই আরও দিগন্তভর একটি বিরাট জামাআত দেখতে পেলাম। আমাকে বলা হল যে, ’এটি হল আপনার উম্মত। আর তাদের সঙ্গে রয়েছে এমন ৭০ হাজার লোক, যারা বিনা হিসাব ও আযাবে বেহেশত প্রবেশ করবে।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ عُرِضَتْ عَلَىَّ الأُمَمُ فَرَأَيْتُ النَّبِىَّ وَمَعَهُ الرُّهَيْطُ وَالنَّبِىَّ وَمَعَهُ الرَّجُلُ وَالرَّجُلاَنِ وَالنَّبِىَّ لَيْسَ مَعَهُ أَحَدٌ إِذْ رُفِعَ لِـىْ سَوَادٌ عَظِيمٌ فَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ أُمَّتِى فَقِيلَ لِـىْ هٰذَا مُوسَى ﷺ وَقَوْمُهُ وَلَكِنِ انْظُرْ إِلٰـى الأُفُقِ فَنَظَرْتُ فَإِذَا سَوَادٌ عَظِيمٌ فَقِيلَ لِـىْ انْظُرْ إِلٰـى الأُفُقِ الآخَرِ فَإِذَا سَوَادٌ عَظِيمٌ فَقِيلَ لِـىْ هَذِهِ أُمَّتُكَ وَمَعَهُمْ سَبْعُونَ أَلْفًا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ وَلاَ عَذَابٍ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৪২) সামুরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক নবীর হওয থাকবে (কিয়ামতে)। তাঁরা আপোসে গর্ব করবেন, তাঁদের মধ্যে কার (হওযের) অবতরণকারী সবচেয়ে বেশী হবে। আর আমি অবশ্যই আশা করি যে, তাঁদের মধ্যে আমার (হওযের) অবতরণকারী সবচেয়ে বেশি হবে।
عَنْ سَمُرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إنّ لكلِّ نَبِيَ حَوْضاً وإنّهُمْ يَتَباهَوْنَ أيُّهُمْ أكْثَرُ وَارِدَةً وإنِّـيْ أرْجُو أنْ أكُونَ أكْثَرَهُمْ وَاردَةً