পরিচ্ছেদঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদে খিয়ানত
(২০০১) আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গনীমতের (যুদ্ধলব্ধ) মাল দেখাশুনা করার জন্য কিরকিরাহ (বা কারকারাহ) নামক এক ব্যক্তি নিযুক্ত ছিল। সে মারা গেলে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’ও তো জাহান্নামী!’’ (একথা শুনে) তার ব্যাপার দেখতে সকলে তার নিকট উপস্থিত হল; দেখল, একটি আলখাল্লা সে খেয়ানত করে রেখে নিয়েছিল।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ كَانَ عَلَى ثَقَلِ النَّبِيِّ ﷺ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ كِرْكِرَةُ فَمَاتَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ هُوَ فِي النَّارِ فَذَهَبُوا يَنْظُرُونَ إِلَيْهِ فَوَجَدُوا عَبَاءَةً قَدْ غَلَّهَا
পরিচ্ছেদঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদে খিয়ানত
(২০০২) উবাদাহ বিন স্বামেত (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইনের দিন গনীমতের একটি উটের পাশে আমাদেরকে নিয়ে নামায পড়লেন। অতঃপর তিনি হাত বাড়িয়ে উট থেকে কিছু গ্রহণ করলেন। বুঝা গেল, তিনি কিছু লোম হাতে নিয়েছেন। অতঃপর তা দুটি আঙ্গুলের মাঝে রেখে বললেন, হে লোক সকল! এ হল তোমাদের গনীমতের মাল। সুতা অথবা ছুঁচ, এর চাইতে কোন বেশী দামের জিনিস অথবা কম দামের জিনিস তোমরা আদায় (জমা) করে দাও। কেন না, গনীমতের মালে খেয়ানত হল কিয়ামতের দিন লাঞ্ছনা, কলঙ্ক ও দোযখ যাওয়ার কারণ।
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ إِلَى جَنْبِ بَعِيرٍ مِنَ الْمَقَاسِمِ ثُمَّ تَنَاوَلَ شَيْئًا مِنَ الْبَعِيرِ فَأَخَذَ مِنْهُ قَرَدَةً يَعْنِى وَبَرَةً فَجَعَلَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ ثُمَّ قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ هَذَا مِنْ غَنَائِمِكُمْ أَدُّوا الْخَيْطَ وَالْمِخْيَطَ فَمَا فَوْقَ ذَلِكَ فَمَا دُونَ ذَلِكَ فَإِنَّ الْغُلُولَ عَارٌ عَلَى أَهْلِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشَنَارٌ وَنَارٌ
পরিচ্ছেদঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদে খিয়ানত
(২০০৩) যায়দ বিন খালেদ জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত, খাইবারের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক সহচরের মৃত্যু হলে সে কথা তাঁর নিকট উল্লেখ করা হল। তিনি বললেন, ’’তোমরা তোমাদের সঙ্গীর জানাযা পড়ে নাও।’’ এ কথা শুনে লোকেদের চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তিনি বললেন, ’’তোমাদের ঐ সঙ্গী আল্লাহর পথে খেয়ানত করেছে। (তাই আমি ওর জানাযা পড়ব না।)’’ আমরা তার আসবাব-পত্রের তল্লাশী নিলাম, এর ফলে তাতে আমরা ইয়াহুদীদের ব্যবহৃত একটি মাত্র মালা পেলাম; যার মূল্য দুই দিরহামও নয়!
عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِىِّ أَنَّ رَجُلاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ ﷺ تُوُفِّىَ يَوْمَ خَيْبَرَ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ فَتَغَيَّرَتْ وُجُوهُ النَّاسِ لِذَلِكَ فَقَالَ إِنَّ صَاحِبَكُمْ غَلَّ فِى سَبِيلِ اللهِ فَفَتَّشْنَا مَتَاعَهُ فَوَجَدْنَا خَرَزًا مِنْ خَرَزِ يَهُودَ لاَ يُسَاوِى دِرْهَمَيْنِ
পরিচ্ছেদঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদে খিয়ানত
(২০০৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে দণ্ডায়মান হয়ে গনীমতের মালে খেয়ানতের কথা উল্লেখ করলেন এবং বিষয়টির প্রতি ভীষণ গুরুত্ব আরোপ করলেন। পরিশেষে তিনি বললেন, ’’আমি তোমাদের মধ্যে কাউকে যেন কিয়ামতের দিন চিঁহিঁ-রববিশিষ্ট উট ঘাড়ে করে বহন করা অবস্থায় উপস্থিত না পাই। যখন সে বলবে, ’হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বাঁচান!’ আর আমি বলব, ’আমি তোমার কোন প্রকার সাহায্য করতে পারব না। আমি তো (দুনিয়াতে) তোমার নিকট এ (দুরবস্থার কথা) পৌঁছে দিয়েছিলাম।’
আমি তোমাদের মধ্যে কাউকে যেন কিয়ামতের দিন চিঁহিঁ-রববিশিষ্ট ঘোড়া ঘাড়ে করে বহন করা অবস্থায় উপস্থিত না পাই। যখন সে বলবে ’আল্লাহর রসূল! আমাকে বাঁচান!’ তখন আমি বলব, ’আমি তোমার কোন প্রকার উপকার করতে সমর্থ নই। আমি তো (পৃথিবীতে) তোমার নিকট (এ দুর্দিনের কথা) পৌঁছে দিয়েছিলাম।’
আমি তোমাদের মধ্যে কাউকে যেন কিয়ামতের দিন মেঁ-মেঁ রববিশিষ্ট ছাগল ঘাড়ে বহন করা অবস্থায় উপস্থিত না পাই। যখন সে বলবে, ’হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বাঁচান।’ আর আমি তখন বলব, ’আমি তোমার কোন প্রকার সহায়তা করতে সক্ষম নই। আমি তো তোমার নিকট (এ করুণ অবস্থার কথা দুনিয়াতে) পৌঁছে দিয়েছিলাম।’
আমি তোমাদের মধ্যে কাউকে যেন কিয়ামতের দিন চিৎকার আওয়াজ-বিশিষ্ট কোন জীব ঘাড়ে বহন করা অবস্থায় উপস্থিত না পাই। যখন সে বলবে, ’হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বাঁচান!’ আর আমি সে সময় বলব ’আমি তোমার কোন প্রকার সাহায্য করতে পারব না। আমি তো (দুনিয়াতে) তোমার নিকট (এ নিদারুন অবস্থার কথা) পৌঁছে দিয়েছিলাম।’
আমি তোমাদের কাউকে যেন কিয়ামতের দিন উড়ন্ত কাপড় ঘাড়ে বহন করা অবস্থায় উপস্থিত না পাই। যখন সে বলবে, ’হে আল্লাহর রসূল! আমাকে সাহায্য করুন!’ আর আমি তখন বলব, ’আমি তোমার কোন প্রকার উপকার করতে পারব না। আমি তো (দুনিয়াতে) তোমার নিকট (এ দুর্দশার কথা) পৌঁছে দিয়েছিলাম।’
আমি তোমাদের মধ্যে কাউকে যেন কিয়ামতের দিন সোনা-চাঁদি ঘাড়ে বহন করা অবস্থায় উপস্থিত না পাই। যখন সে বলবে, ’হে আল্লাহর রসূল! আমাকে সাহায্য করুন!’ আর আমি তখন বলব, ’আমি তোমার কোন প্রকার সাহায্য করতে সমর্থ নই। আমি তো (পৃথিবীতে) তোমাকে (শরীয়তের কথা) পৌঁছে দিয়েছিলাম।’’
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَامَ فِينَا رَسُولُ اللهِ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ فَذَكَرَ الْغُلُولَ فَعَظَّمَهُ وَعَظَّمَ أَمْرَهُ ثُمَّ قَالَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ بَعِيرٌ لَهُ رُغَاءٌ يَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُولُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ فَرَسٌ لَهُ حَمْحَمَةٌ فَيَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُولُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ شَاةٌ لَهَا ثُغَاءٌ يَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُولُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ نَفْسٌ لَهَا صِيَاحٌ فَيَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُولُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ رِقَاعٌ تَخْفِقُ فَيَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُولُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ صَامِتٌ فَيَقُولُ يَا رَسُولَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُولُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ