পরিচ্ছেদঃ কুরআনের তাফসীর

(১৪৮০) আদী বিন হাতেম (রাঃ) বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। তখন আমার ঘাড়ে সোনার ক্রুশ ছিল। তা দেখে তিনি বললেন, ’’হে আদী! এই প্রতিমা তোমার নিকট থেকে খুলে ফেল।’’ শুনলাম তিনি সূরা তাওবার এই আয়াত পাঠ করলেন,

اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ

অর্থাৎ, তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পণ্ডিত-পুরোহিতদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে। (তওবাঃ ৩১)

আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখে উক্ত আয়াত শুনে আরজ করলাম যে, ইয়াহুদী-নাসারারা তো নিজেদের আলেমদের কখনো ইবাদত করেনি, তাহলে এটা কেন বলা হয়েছে যে, তারা তাদেরকে ’রব’ বানিয়ে নিয়েছে? তিনি বললেন, এ কথা ঠিক যে, তারা তাদের ইবাদত করেনি। কিন্তু এটা তো সঠিক যে, তাদের আলেমরা যা হালাল করেছে, তাকে তারা হালাল এবং যা হারাম করেছে,তাকে তারা হারাম বলে মেনে নিয়েছে। আর এটাই হল তাদের ইবাদত করা।

عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي عُنُقِي صَلِيبٌ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ : يَا عَدِيُّ اطْرَحْ عَنْكَ هَذَا الْوَثَنَ وَسَمِعْتُهُ يَقْرَأُ فِي سُورَةِ بَرَاءَةَ : (اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ) قَالَ : أَمَا إِنَّهُمْ لَمْ يَكُونُوا يَعْبُدُونَهُمْ وَلَكِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا أَحَلُّوا لَهُمْ شَيْئًا اسْتَحَلُّوهُ وَإِذَا حَرَّمُوا عَلَيْهِمْ شَيْئًا حَرَّمُوهُ

عن عدي بن حاتم قال: اتيت النبي صلى الله عليه وسلم وفي عنقي صليب من ذهب فقال : يا عدي اطرح عنك هذا الوثن وسمعته يقرا في سورة براءة : (اتخذوا احبارهم ورهبانهم اربابا من دون الله) قال : اما انهم لم يكونوا يعبدونهم ولكنهم كانوا اذا احلوا لهم شيىا استحلوه واذا حرموا عليهم شيىا حرموه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আদী ইবনু হাতিম (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১২/ কুরআন

পরিচ্ছেদঃ কুরআনের তাফসীর

(১৪৮১) আদী বিন হাতেম (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,

حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ

অর্থাৎ, তোমরা পানাহার কর; যতক্ষণ কালো সুতা (রাতের কালো রেখা) হতে ঊষার সাদা সুতা (সাদা রেখা) স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। (বাক্বারাহঃ ১৮৭)

উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি (মাথায় রুমালের উপর ব্যবহার্য) একটি সাদা ও একটি কালো মোটা রশি (বালিশের নিচে) রাখলেন। রাত্রি হলে তিনি লক্ষ্য করলেন, কিন্তু (কোনটা সাদা ও কোনটা কালো) তা স্পষ্ট হল না। সকাল হলে তিনি এ কথা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, তোমার বালিশ তাহলে খুবই বিশাল! কালো সুতা ও সাদা সুতা তোমার বালিশের নিচে ছিল?! (বুখারী ৪৫০৯) অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’তার মানে হল, রাতের অন্ধকার ও দিনের শুভ্রতা। (বুখারী ১৯১৬, মুসলিম ২৫৮৫)

عَنْ عَدِىِّ بْنِ حَاتِمٍ رَضِىَ اللهُ عَنْه قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ (حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ) قَالَ لَهُ عَدِىُّ بْنُ حَاتِمٍ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّى أَجْعَلُ تَحْتَ وِسَادَتِى عِقَالَيْنِ عِقَالاً أَبْيَضَ وَعِقَالاً أَسْوَدَ أَعْرِفُ اللَّيْلَ مِنَ النَّهَارِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّ وِسَادَتَكَ لَعَرِيضٌ إِنَّمَا هُوَ سَوَادُ اللَّيْلِ وَبَيَاضُ النَّهَارِ

عن عدى بن حاتم رضى الله عنه قال لما نزلت (حتى يتبين لكم الخيط الابيض من الخيط الاسود من الفجر) قال له عدى بن حاتم يا رسول الله انى اجعل تحت وسادتى عقالين عقالا ابيض وعقالا اسود اعرف الليل من النهار فقال رسول الله ﷺ ان وسادتك لعريض انما هو سواد الليل وبياض النهار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আদী ইবনু হাতিম (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১২/ কুরআন

পরিচ্ছেদঃ কুরআনের তাফসীর

(১৪৮২) আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) বলেন,

الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ

অর্থাৎ, যারা বিশ্বাস করেছে এবং তাদের বিশ্বাসকে যুলুম (শির্ক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই সৎপথপ্রাপ্ত। (আন্আমঃ ৮২)

’এই আয়াত যখন অবতীর্ণ হল, তখন মুসলিমদের নিকট বিষয়টি কঠিন মনে হল। বলল, ’আমাদের মধ্যে কে আছে যে নিজের উপর যুল্ম (অন্যায় বা পাপ) করে না?’ তা শুনে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (তোমরা যে যুলম মনে করছ) তা নয়। বরং তা (সবচেয়ে বড় যুলম) কেবলমাত্র শির্ক। তোমরা কি পুত্রকে সম্বোধন করে লুকমানের উক্তি শ্রবণ করনি? (তিনি তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন),

يَا بُنَيَّ لاَ تُشْرِكْ باِللهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ

অর্থাৎ, হে বৎস্য! আল্লাহর সাথে শির্ক করো না, নিশ্চয় শির্ক বড় যুলম।

عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ (الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ) شَقَّ ذَلِكَ عَلَى أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَقَالُوا أَيُّنَا لاَ يَظْلِمُ نَفْسَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَيْسَ هُوَ كَمَا تَظُنُّونَ إِنَّمَا هُوَ كَمَا قَالَ لُقْمَانُ لاِبْنِهِ (يَا بُنَىَّ لاَ تُشْرِكْ بِاللهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ)

عن علقمة عن عبد الله قال لما نزلت (الذين امنوا ولم يلبسوا ايمانهم بظلم) شق ذلك على اصحاب رسول الله ﷺ وقالوا اينا لا يظلم نفسه فقال رسول الله ﷺ ليس هو كما تظنون انما هو كما قال لقمان لابنه (يا بنى لا تشرك بالله ان الشرك لظلم عظيم)

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১২/ কুরআন

পরিচ্ছেদঃ কুরআনের তাফসীর

(১৪৮৩)য়্যা’লা বিন উমাইয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি উমার (রাঃ) কে বলেন, কী ব্যাপার যে, লোকেরা এখনো পর্যন্ত নামায কসর পড়েই যাচ্ছে, অথচ মহান আল্লাহ তো কেবল বলেছেন যে, ’’যখন তোমরা ভূপৃষ্ঠে সফর কর, তখন তোমরা নামায সংক্ষেপ করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই; যদি তোমরা এই আশংকা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে বিব্রত করবে।’’ আর বর্তমানে তো ভীতির সে অবস্থা অবশিষ্ট নেই?

উমার (রাঃ) উত্তরে বললেন, যে ব্যাপারে তুমি আশ্চর্যবোধ করছ, আমিও সেই ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ কথার উল্লেখ করলে তিনি বললেন, এটা তোমাদেরকে দেওয়া আল্লাহর একটি সদকাহ। সুতরাং তোমরা তাঁর সদকাহ গ্রহণ কর।

عَنْ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ قَالَ قُلْتُ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ (لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلاَةِ إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا) فَقَدْ أَمِنَ النَّاسُ فَقَالَ عَجِبْتُ مِمَّا عَجِبْتَ مِنْهُ فَسَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ صَدَقَةٌ تَصَدَّقَ اللهُ بِهَا عَلَيْكُمْ فَاقْبَلُوا صَدَقَتَهُ

عن يعلى بن امية قال قلت لعمر بن الخطاب (ليس عليكم جناح ان تقصروا من الصلاة ان خفتم ان يفتنكم الذين كفروا) فقد امن الناس فقال عجبت مما عجبت منه فسالت رسول الله ﷺ عن ذلك فقال صدقة تصدق الله بها عليكم فاقبلوا صدقته

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১২/ কুরআন

পরিচ্ছেদঃ কুরআনের তাফসীর

(১৪৮৪) আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই কুরআনের ব্যাখ্যার উপর লড়বে, যেমন আমি ওর অবতরণের উপর লড়ছি।

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّ مِنْكُمْ مَنْ يُقَاتِلُ عَلَى تَأْوِيلِهِ كَمَا قَاتَلْتُ عَلَى تَنْزِيلِهِ

عن ابي سعيد قال قال رسول الله ﷺ ان منكم من يقاتل على تاويله كما قاتلت على تنزيله

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১২/ কুরআন
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে