পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৩৯৫) বুরাইদাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদেরকে (পূর্বে) কবর যিয়ারত করা থেকে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা তা যিয়ারত কর। (মুসলিম ৫২২৮)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, সুতরাং যে ব্যক্তি কবর যিয়ারত করতে চায়, সে যেন তা করে। কারণ তা পরকাল স্মরণ করায়।
(কবরের ধারে-পাশে এবং মৃতদেরকে নিয়েই শির্ক ও মূর্তিপূজা শুরু হয়েছে বলে) আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। সুতরাং এখন তোমরা কবর যিয়ারত করতে পার। কারণ, তা তোমাদেরকে আখেরাত স্মরণ করিয়ে দেয়। (মুসলিম ২৩০৫, আবূ দাউদ ৩২৩৫, আহমাদ ৫/৩৫০-৩৫৫) এক বর্ণনায় আছে, তোমাদের কবর যিয়ারত যেন তোমাদের কল্যাণ বৃদ্ধি করে। (আহমাদ ৫/৩৫০-৩৫৫ প্রমুখ) অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, সুতরাং যে ব্যক্তি যিয়ারত করার ইচ্ছা করে সে করতে পারে; তবে যেন (সেখানে) তোমরা অশ্লীল ও বাজে কথা বলো না। (নাসাঈ ২০৩২)
عَن بُرَيْدَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَن زِيَارَةِ القُبُورِ فَزُورُوهَارواه مسلم وَفِيْ رِوَايَةٍفَمَنْ أرَادَ أنْ يَزُورَ القُبُورَ فَلْيَزُرْ فإنَّهَا تُذَكِّرُنَا الآخِرَةَ
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৩৯৬) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। শোনো! এখন তোমরা যিয়ারত করতে পার। কারণ, কবর যিয়ারত হৃদয় নম্র করে, চক্ষু অশ্রুসিক্ত করে এবং পরকাল স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে (যিয়ারতে গিয়ে) বাজে কথা বলো না।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ أَلَّا فَزُوْرُوْهَا فَإِنَّهُ يَرُقُّ الْقَلْبَ وَ تَدْمَعُ الْعَيْنَ وَ تُذَكِّرُ الْآخِرَةِ وَ لَا تَقُوْلُوْا هَجْرًا
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৩৯৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আম্মার কবর যিয়ারত করতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেললেন এবং তাঁর আশে-পাশে সকলকে কাঁদিয়ে তুললেন। (কারণ, জিজ্ঞাসা করা হলে) তিনি বললেন, আমি আল্লাহর নিকট আমার আম্মার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুমতি চাইলাম। কিন্তু তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন না। অতঃপর আমি তাঁর নিকট তাঁর কবর যিয়ারত করতে অনুমতি চাইলে তিনি তাতে অনুমতি দিলেন। সুতরাং তোমরা কবর যিয়ারত কর। কারণ, তা মরণকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ زَارَ النَّبِىُّ ﷺ قَبْرَ أُمِّهِ فَبَكَى وَأَبْكَى مَنْ حَوْلَهُ فَقَالَ اسْتَأْذَنْتُ رَبِّى فِى أَنْ أَسْتَغْفِرَ لَهَا فَلَمْ يُؤْذَنْ لِى وَاسْتَأْذَنْتُهُ فِى أَنْ أَزُورَ قَبْرَهَا فَأُذِنَ لِى فَزُورُوا الْقُبُورَ فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الْمَوْتَ
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৩৯৮) আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাড়ি হতে বের হলে গেলেন। তিনি কোথায় গেলেন তা দেখার জন্য আমি (দাসী) বারীরাহকে তাঁর পশ্চাতে পাঠালাম। বারীরাহ দেখল, তিনি বাকী’তে গিয়ে নিচের দিকে দাঁড়িয়ে হাত তুললেন। অতঃপর ফিরে এলেন। বারীরাহ আমাকে সে খবর দিল। সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাত্রে আপনি কোথায় বের হয়েছিলেন? বললেন, বাকী’তে গিয়ে সেখানকার কবরবাসীর জন্য দু’আ করতে যেতে আমি আদিষ্ট হয়েছিলাম। (নাসাঈ ২০৩৮, হাকেম ১৭৯৪, মালিক ৫৭৫)
মুসলিম শরীফ প্রভৃতির এক বর্ণনায় আছে যে, তিনি নিজে তাঁর পশ্চাতে গিয়ে দেখলেন, বাকী’তে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে দণ্ডায়মান থাকলেন। অতঃপর তিন বার হাত তুললেন। (মুসলিম ২৩০১)
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَلَبِسَ ثِيَابَهُ، ثُمَّ خَرَجَ، قَالَتْ: فَأَمَرْتُ جَارِيَتِي بَرِيرَةَ تَتْبَعُهُ، فَتَبِعَتْهُ حَتَّى جَاءَ الْبَقِيعَ، فَوَقَفَ فِي أَدْنَاهُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقِفَ، ثُمَّ انْصَرَفَ، فَسَبَقَتْهُ بَرِيرَةُ، فَأَخْبَرَتْنِي، فَلَمْ أَذْكُرْ لَهُ شَيْئًا حَتَّى أَصْبَحَ، ثُمَّ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: إِنِّي بُعِثْتُ إِلَى أَهْلِ الْبَقِيعِ لِأُصَلِّيَ عَلَيْهِمْ
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৩৯৯) আয়েশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাড়িতে তাঁর পালাতে রাতের শেষভাগে বাকী’ (নামক মদীনার কবরস্থান) যেতেন এবং বলতেন, ’আসসালামু আলাইকুম দা-রা ক্বাওমিম মু’মিনীন অআতাকুম মা তূআদূন, গাদাম মুআজ্জালূন। অইন্না ইনশা-আল্লা-হু বিকুম লাহিক্বুন। আল্লাহুম্মাগফির লিআহলি বাকীইল গারক্বাদ।’
অর্থাৎ, হে মুসলিম কবরবাসীগণ! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। তোমাদের নিকট তা চলে এসেছে যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেওয়া হচ্ছিল, আগামী কাল (কিয়ামত) পর্যন্ত (বিস্তারিত পুরস্কার ও শাস্তি) বিলম্বিত করা হয়েছে। আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। হে আল্লাহ! তুমি বাক্বীউল গারক্বাদবাসীদেরকে ক্ষমা কর।
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُا قَالَت : كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ كُلَّمَا كَانَ لَيْلَتُهَا مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ يَخْرُجُ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ إِلَى البَقِيعِ، فَيَقُولُ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ، وَأتَاكُمْ مَا تُوعَدُونَ، غَداً مُؤَجَّلْونَ، وَإنَّا إنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لأهْلِ بَقِيعِ الغَرْقَدِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০০) বুরাইদা (রাঃ) বলেন, যখন সাহাবীগণ কবরস্থান যেতেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে শিক্ষা দিতেন যে, তোমরা এ দু’আ পড়ো,
’আসসালা-মু আলাইকুম আহলাদ্দিয়া-রি মিনাল মু’মিনীনা অলমুসলিমীন, অইন্না ইনশা-আল্লা-হু বিকুম লালা-হিক্বূন, আসআলুল্লা-হা লানা অলাকুমুল আ-ফিয়াহ।’
অর্থাৎ, হে মু’মিন ও মুসলিম কবরবাসিগণ! যদি আল্লাহ চান তাহলে আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব। আমি আল্লাহর কাছে আমাদের এবং তোমাদের জন্য নিরাপত্তা চাচ্ছি।
وَعَن بُرَيدَةَ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ ﷺ يُعَلِّمُهُمْ إِذَا خَرَجُوا إِلَى المَقَابِرِ أنْ يَقُولَ قَائِلُهُمْ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أهلَ الدِّيَارِ مِنَ المُؤْمِنينَ وَالمُسلمينَ وَإنَّا إنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لَلاَحِقونَ أسْألُ اللهَ لَنَا وَلَكُمُ العَافِيَةَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের ঘরকে কবর বানিয়ে নিয়ো না (অর্থাৎ কবরে যেমন নামায বা তেলাঅত হয় না তেমনি বিনা নামায ও তেলাঅতে ঘরকেও তার মত করো না; বরং তাতে নামায ও তেলাঅত করতে থাক।)
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ الْبَيْتِ الَّذِى تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, তিনি বলেন, অধিক কবর যিয়ারতকারিণী মহিলাদেরকে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ : أن رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لعن زَوَّارات القبور
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০৩) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ইয়াহুদ ও খ্রিস্টানকে অভিসম্পাত করুন (অথবা করেছেন), তারা তাদের পয়গম্বরদের সমাধিসমূহকে উপাসনালয়ে পরিণত করেছে।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ قَالَ لَعَنَ اللهُ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন স্থানের প্রতি সফর করা হবে না; আমার এই মসজিদ (নববী), মসজিদে হারাম এবং মসজিদে আকসা।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىَّ ﷺ لاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلاَّ إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِى هَذَا وَمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الأَقْصَى
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০৫) সাহাবী আবূ বাসরাহ (রাঃ) এর সঙ্গে আবূ হুরাইরা (রাঃ) এর দেখা হল। আবূ বাসরা জিজ্ঞাসা করলেন, কোত্থেকে আসছেন? তিনি বললেন, ত্বূর থেকে, যেখানে আল্লাহ মূসার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আবূ বাসরা বললেন, আপনার যাওয়ার পূর্বে যদি আপনার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো, তাহলে আমি আপনাকে খবর দিতাম। আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তিনটি মসজিদ ছাড়া সফর করা যাবে না, (মক্কার) মসজিদে হারাম, (জেরুজালেমের) মসজিদে আক্বসা এবং মদীনার আমার এই মসজিদ।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: لَقِيتُ أَبَا بَصْرَةَ صَاحِبَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لِي: مِنْ أَيْنَ أَقْبَلْتَ؟ قُلْتُ: مِنَ الطُّورِ حَيْثُ كَلَّمَ اللهُ مُوسَى فَقَالَ لَهُ: لَوْ لَقِيتُكَ قَبْلَ أَنْ تَذْهَبَ لَزَجَرْتُكَ، سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إلَّا إلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ: مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى وَمَسْجِدِي بِالْمَدِينَةِ
পরিচ্ছেদঃ পুরুষের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব এবং তার দু‘আ
(১৪০৬) ক্বাযআহ বলেন, আমি ত্বূর যাওয়ার সংকল্প করলাম। সুতরাং এ ব্যাপারে ইবনে উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তুমি কি জান না যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি মসজিদ ছাড়া সফর করা যাবে না।
-