পরিচ্ছেদঃ কার জানাযা পড়া হবে
(১৩১৬) আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, বাদশা নাজাশী যেদিন ইন্তেকাল করেন সেদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যু-সংবাদ সকলকে জানান এবং মুসাল্লায় বের হয়ে গিয়ে কাতার বানিয়ে চার তকবীর দিয়ে (গায়েবানা) জানাযার নামায পড়েন।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ نَعَى النَّجَاشِيَّ فِي الْيَوْمِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ خَرَجَ إِلَى الْمُصَلَّى فَصَفَّ بِهِمْ وَكَبَّرَ أَرْبَعًا
পরিচ্ছেদঃ কার জানাযা পড়া হবে
(১৩১৭) আবূ কাতাদাহ আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা রাসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের যোদ্ধাদলের সংবাদ দেব না? তারা বহু পথ চলার পর শত্রুদলের সম্মুখীন হয়েছে। অতঃপর যায়দ শহীদ হয়ে গেছে, অতএব তোমরা তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। এতে সকলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করল। তিনি পুনঃ বললেন, এরপর পতাকা ধারণ করেছে জা’ফর বিন আবী তালেব। সে শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কঠিনভাবে লড়ে শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়ে গেছে। আমি তার শাহাদতের সাক্ষী। সুতরাং তোমরা তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। অতঃপর পতাকা ধারণ করেছে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা। দৃঢ়পদে লড়াই লড়ে শেষে সেও শহীদ হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা তার জন্যও আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর।
عَنْ أَبي قَتَادَةَ الأنصاري قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَلَا أُخْبِرُكُمْ عَنْ جَيْشِكُمْ هَذَا الْغَازِي إِنَّهُمْ انْطَلَقُوا حَتَّى لَقُوا الْعَدُوَّ فَأُصِيبَ زَيْدٌ شَهِيدًا فَاسْتَغْفِرُوا لَهُ فَاسْتَغْفَرَ لَهُ النَّاسُ ثُمَّ أَخَذَ اللِّوَاءَ جَعْفَرُ بْنُ أَبِي طَالِبٍ فَشَدَّ عَلَى الْقَوْمِ حَتَّى قُتِلَ شَهِيدًا أَشْهَدُ لَهُ بِالشَّهَادَةِ فَاسْتَغْفِرُوا لَهُ ثُمَّ أَخَذَ اللِّوَاءَ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَوَاحَةَ فَأَثْبَتَ قَدَمَيْهِ حَتَّى أُصِيبَ شَهِيدًا فَاسْتَغْفِرُوا لَهُ
পরিচ্ছেদঃ কার জানাযা পড়া হবে
(১৩১৮) ইমরান ইবনে হুস্বাইন খুযায়ী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, জুহাইনা গোত্রের একটি মহিলা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাজির হল। সে অবৈধ মিলনে গর্ভবর্তী ছিল। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি দণ্ডনীয় অপরাধ করে ফেলেছি তাই আপনি আমাকে শাস্তি দিন! সুতরাং আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আত্মীয়কে ডেকে বললেন, তুমি একে নিজের কাছে যত্ন সহকারে রাখ এবং সন্তান প্রসবের পর একে আমার নিকট নিয়ে এসো। সুতরাং সে তাই করল (অর্থাৎ, প্রসবের পর তাকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে এল)। আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাপড় তার (শরীরের) উপর মজবুত ক’রে বেঁধে দেওয়ার আদেশ দিলেন।
অতঃপর তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলার আদেশ দিলেন। অতঃপর তিনি তার জানাযার নামায পড়লেন। উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এই মেয়ের জানাযার নামায পড়লেন, অথচ সে ব্যভিচার করেছিল? তিনি বললেন, (উমার! তুমি জান না যে,) এই স্ত্রী লোকটি এমন বিশুদ্ধ তওবা করেছে, যদি তা মদীনার ৭০টি লোকের মধ্যে বন্টন করা হত তা তাদের জন্য যথেষ্ট হত। এর চেয়ে কি তুমি কোন উত্তম কাজ পেয়েছ যে, সে আল্লাহর জন্য নিজের প্রাণকে কুরবান করে দিল?
وَعَنْ عِمْرَانَ بنِ الحُصَيْنِ الخُزَاعِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُما : أنَّ امْرَأةً مِنْ جُهَيْنَةَ أتَتْ رسولَ الله ﷺ وَهِيَ حُبْلَى مِنَ الزِّنَى فقالتْ : يَا رَسُولَ اللهِ، أصَبْتُ حَدّاً فَأَقِمْهُ عَلَيَّ فَدَعَا نَبيُّ الله ﷺ وَليَّها فقالَأَحْسِنْ إِلَيْهَا فإذا وَضَعَتْ فَأْتِني فَفَعَلَ فَأَمَرَ بهَا نبيُّ اللهﷺ فَشُدَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا، ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَرُجِمَتْ، ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا فقالَ لَهُ عُمَرُ: تُصَلِّي عَلَيْهَا يَا رَسُولَ اللهِ وَقَدْ زَنَتْ ؟ قَالَ لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أهْلِ المَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ، وَهَلْ وَجَدْتَ أَفضَلَ مِنْ أنْ جَادَتْ بنفْسِها لله عز وجل رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ কার জানাযা পড়া হবে
(১৩১৯) সালামাহ বিন আক্ওয়া’ (রাঃ) বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসে ছিলাম। ইতিমধ্যে একটি জানাযা উপস্থিত হলে লোকেরা তাঁকে তার জানাযা পড়তে বললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ওর কি ঋণ পরিশোধ বাকী আছে? সকলে বলল, না। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, ওকি কোন সম্পদ ছেড়ে যাচ্ছে? সকলে বলল, না। অতঃপর তিনি তার জানাযা পড়লেন।
এরপর আর একটি জানাযা উপস্থিত হলে সকলে তাঁকে তার জানাযা পড়তে অনুরোধ করল। তিনি তার সম্পর্কেও প্রশ্ন করলেন, ওর কি কোন ঋণ পরিশোধ বাকী আছে? বলা হল, হ্যাঁ। বললেন, ওকি কোন সম্পদ ছেড়ে যাচ্ছে? সকলে বলল, তিন দীনার। তা শুনে তিনি তার জানাযা পড়লেন।
অতঃপর তৃতীয় জানাযা উপস্থিত হলে এবং লোকেরা শেষ নামায পড়তে আবেদন জানালে তার সম্বন্ধেও তিনি একই প্রশ্ন করলেন, ওর কি কোন ঋণ পরিশোধ বাকী আছে? বলল, তিন দীনার। বললেন, ওকি কোন সম্পদ ছেড়ে যাচ্ছে? সকলে বলল, না। একথা শুনে বললেন, তোমরা তোমাদের সঙ্গীর জানাযা পড়ে নাও। তখন আবু কাতাদাহ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! ওর জানাযা আপনি পড়ুন। আমি ওর ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নিচ্ছি।
عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ ﷺ إِذْ أُتِيَ بِجَنَازَةٍ فَقَالُوا صَلِّ عَلَيْهَا فَقَالَ هَلْ عَلَيْهِ دَيْنٌ قَالُوا لَا قَالَ فَهَلْ تَرَكَ شَيْئًا قَالُوا لَا فَصَلَّى عَلَيْهِ ثُمَّ أُتِيَ بِجَنَازَةٍ أُخْرَى فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صَلِّ عَلَيْهَا قَالَ هَلْ عَلَيْهِ دَيْنٌ قِيلَ نَعَمْ قَالَ فَهَلْ تَرَكَ شَيْئًا قَالُوا ثَلَاثَةَ دَنَانِيرَ فَصَلَّى عَلَيْهَا ثُمَّ أُتِيَ بِالثَّالِثَةِ فَقَالُوا صَلِّ عَلَيْهَا قَالَ هَلْ تَرَكَ شَيْئًا قَالُوا لَا قَالَ فَهَلْ عَلَيْهِ دَيْنٌ قَالُوا ثَلَاثَةُ دَنَانِيرَ قَالَ صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ قَالَ أَبُو قَتَادَةَ صَلِّ عَلَيْهِ يَا رَسُولَ اللهِ وَعَلَيَّ دَيْنُهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ কার জানাযা পড়া হবে
(১৩২০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জানাযা পড়ার জন্য যখন কোন ঋণগ্রস্ত মুর্দাকে হাযির করা হত, তখন তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, ঋণ পরিশোধ করার মত কোন মাল ও ছেড়ে যাচ্ছে কি? সুতরাং উত্তরে যদি তাঁকে বলা হত যে, হ্যাঁ, পরিশোধ করার মত মাল ছেড়ে যাচ্ছে’ তাহলে তিনি তার জানাযা পড়তেন। নচেৎ বলতেন, ’’তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়ে নাও।
অতঃপর আল্লাহ যখন তাঁর জন্য বিভিন্ন বিজয় দান করলেন তখন তিনি বললেন, মুমিনদের জন্য তাদের নিজেদের চাইতে আমিই অধিক হকদার (দায়িত্বশীল।) সুতরাং যে ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যাবে, তার ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব আমার উপর এবং যে সম্পদ রেখে মারা যাবে, তার অধিকারী হবে তার ওয়ারেসীনরা।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ كَانَ يُؤْتَى بِالرَّجُلِ الْمَيِّتِ عَلَيْهِ الدَّيْنُ فَيَسْأَلُ هَلْ تَرَكَ لِدَيْنِهِ مِنْ قَضَاءٍ فَإِنْ حُدِّثَ أَنَّهُ تَرَكَ وَفَاءً صَلَّى عَلَيْهِ وَإِلاَّ قَالَ صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ فَلَمَّا فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ الْفُتُوحَ قَالَ أَنَا أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ فَمَنْ تُوُفِّىَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ فَعَلَىَّ قَضَاؤُهُ وَمَنْ تَرَكَ مَالاً فَهُوَ لِوَرَثَتِهِ
পরিচ্ছেদঃ কার জানাযা পড়া হবে
(১৩২১) আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তিকে তার পীড়িত অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাক্ষাতে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। সে মারা গেলে তাকে রাতে-রাতেই দাফন করে দেওয়া হল। অতঃপর সকাল হলে সে কথা তাঁর নিকট উল্লেখ করলে তিনি বললেন, আমাকে তার মৃত্যু খবর জানাতে তোমাদের কী বাধা ছিল? সকলে বলল, গভীর রাত্রি ছিল আর অন্ধকারও ছিল খুব বেশী। তাই আপনাকে কষ্ট দিতে আমরা অপছন্দ করলাম। এ শুনে তিনি তার কবরের নিকট এসে তার জানাযা পড়লেন। তিনি আমাদের ইমামতি করলেন। আমরা তাঁর পশ্চাতে কাতার দিয়েছিলাম। ঐ কাতারে আমিও শামিল ছিলাম। তিনি তাঁর জন্য চার তকবীর দিয়ে নামায পড়লেন।
عَنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُما قَالَ: مَاتَ رَجُلٌ وكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ فَدَفَنُوهُ بِاللَّيْلِ فَلَمَّا أَصْبَحَ أَعْلَمُوهُ فَقَالَ: " مَا مَنَعُكُمْ أَنْ تُعْلِمُونِي "قَالُوا كَانَ اللَّيْلُ وَكَانَتِ الظُّلْمَةُ فَكَرِهْنَا أَنْ نَشُقَّ عَلَيْكَ، فَأَتَى قَبْرَهَ فَصَلَّى عَلَيْهِ قَالَ : فَأَمَنَّا وَصَفَّنَا خَلْفَهُ وَأَنَا فِيْهِمَ وَكَبَّرَ أَرْبَعًا