পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৩) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, যখন কোন ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিজের কোন অসুস্থতার অভিযোগ করত অথবা (তার দেহে) কোন ফোঁড়া কিংবা ক্ষত হত, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ আঙ্গুল নিয়ে এ রকম করতেন। (হাদীসের রাবী) সুফয়ান তাঁর শাহাদত আঙ্গুলটিকে যমীনের উপর রাখার পর উঠালেন। (অর্থাৎ, তিনি এভাবে মাটি লাগাতেন।) অতঃপর দু’আটি পড়তেনঃ বিসমিল্লাহি তুরবাতু আরযিনা, বিরীক্বাতি বা’যিবনা, য়্যুশফা বিহী সাক্বীমুনা, বিইযনি রাব্বিনা। অর্থাৎ, আল্লাহর নামের সঙ্গে আমাদের যমীনের মাটি এবং আমাদের কিছু লোকের থুথু মিশ্রিত করে (ফোঁড়াতে) লাগালাম। আমাদের প্রতিপালকের আদেশে এর দ্বারা আমাদের রুগী সুস্থতা লাভ করবে।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُا : أنَّ النَّبيَّ ﷺ كَانَ إِذَا اشْتَكَى الإنْسَانُ الشَّيْءَ مِنْهُ أَوْ كَانَتْ بِهِ قَرْحَةٌ أَوْ جُرْحٌ قَالَ النَّبيُّ ﷺ بِأُصْبُعِهِ هكَذا وَوَضَعَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَة الرَّاوي سَبَّابَتَهُ بِالأَرْضِ ثُمَّ رَفَعَها وَقَالَ بِسمِ اللهِ، تُرْبَةُ أرْضِنَا، بِرِيقَةِ بَعْضِنَا، يُشْفَى بِهِ سَقِيمُنَا، بِإِذْنِ رَبِّنَا متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৪) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন পরিবারের কোন রোগী-দর্শন করার সময় নিজের ডান হাত তার ব্যথার স্থানে ফিরাতেন এবং এ দু’আটি পড়তেন, ’আযহিবিল বা’স, রাব্বান্না-স, ইশফি আন্তাশ শা-ফী, লা শিফা-আ ইল্লা শিফা-উক, শিফা-আল লা য়্যুগা-দিরু সাক্বামা।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক! তুমি কষ্ট দূর কর এবং আরোগ্য দান কর। (যেহেতু) তুমি রোগ আরোগ্যকারী। তোমারই আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। তুমি এমনভাবে রোগ নিরাময় কর, যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।
وَعَنْها : أَنَّ النَّبيَّ ﷺ كَانَ يَعُودُ بَعْضَ أَهْلِهِ يَمْسَحُ بِيدِهِ اليُمْنَى وَيَقُولُاللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ البَأسَ اِشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَماً متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৫) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি সাবেত (রহঃ)-কে বললেন, আমি কি তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মন্ত্র দ্বারা ঝাড়ফুঁক করব না? সাবেত বললেন, অবশ্যই। আনাস (রাঃ) এই দু’আ পড়লেন, ’আল্লাহুম্মা রাববান্না-স, মুযহিবাল বা’স, ইশফি আনতাশ শা-ফী, লা শা-ফিয়া ইল্লা আনতা, শিফা-আল লা য়্যুগা-দিরু সাক্বামা।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক! তুমি কষ্ট দূর কর এবং আরোগ্য দান কর। (যেহেতু) তুমি রোগ আরোগ্যকারী। তুমি ছাড়া আরোগ্যকারী আর কেউ নেই। তুমি এমনভাবে রোগ নিরাময় কর, যেন তা রোগকে নির্মূল ক’রে দেয়।
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّهُ قَالَ لِثَابِتٍ رَحِمَهُ اللهُ : أَلاَ أَرْقِيكَ بِرُقْيَةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ ؟ قَالَ : بَلَى قَالَ اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ البَأسِ اِشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَماًرواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৬) সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার অসুস্থ অবস্থায়) আমাকে দেখা করতে এসে বললেন, হে আল্লাহ! সা’দকে রোগমুক্ত কর, হে আল্লাহ! সা’দকে রোগমুক্ত কর। হে আল্লাহ! সা’দকে রোগমুক্ত কর।
وَعَنْ سَعدِ بنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ : عَادَنِي رَسُولُ اللهِ ﷺ فَقَالَ اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৭) আবূ আব্দুল্লাহ উসমান ইবনে আবুল আ’স (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ঐ ব্যথার অভিযোগ করলেন, যা তিনি তার দেহে অনুভব করছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তুমি তোমার দেহের ব্যথিত স্থানে হাত রেখে তিনবার ’বিসমিল্লাহ’ এবং সাতবার ’আউযু বিইয্যাতিল্লাহি অক্বুদরাতিহী মিন শাররি মা আজিদু অউহাযিরু’ বল।’ অর্থাৎ, আল্লাহর ইজ্জত এবং কুদরতের আশ্রয় গ্রহণ করছি, সেই মন্দ থেকে যা আমি পাচ্ছি এবং যা থেকে আমি ভয় করছি।
وَعَنْ أَبي عَبدِ اللهِ عُثمَانَ بنِ أَبي العَاصِ أَنَّهُ شَكَا إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ وَجَعاً يَجِدُهُ في جَسَدِهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ ضَعْ يَدَكَ عَلَى الَّذِي يَألَمُ مِنْ جَسَدِكَ وَقُلْ : بِسمِ اللهِ ثَلاثاً وَقُلْ سَبْعَ مَرَّاتٍ : أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أجِدُ وَأُحَاذِرُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন কোন রুগ্ন মানুষকে সাক্ষাৎ করবে, যার এখন মরার সময় উপস্থিত হয়নি এবং তার নিকট সাতবার এই দু’আটি বলবে, ’আসআলুল্লাহাল আযীম, রাব্বাল আরশিল আযীম, আঁই য়্যাশফিয়াক’ (অর্থাৎ, আমি সুমহান আল্লাহ, মহা আরশের প্রভুর নিকট তোমার আরোগ্য প্রার্থনা করছি), আল্লাহ তাকে সে রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন।
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ عَادَ مَرِيضاً لَمْ يَحْضُرْهُ أَجَلُهُ فَقَالَ عِنْدَهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ : أَسْأَلُ اللهَ العَظيمَ رَبَّ العَرْشِ العَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ إِلاَّ عَافَاهُ اللهُ مِنْ ذَلِكَ المَرَضِ رواه أَبُو داود والترمذي، وَقَالَ حَدِيْثٌ حسن وَقَالَ الحاكم حديث صحيح عَلَى شرط البخاري
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২১৯) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক পীড়িত বেদুঈনের সাক্ষাতে গেলেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগীকেই সাক্ষাৎ করতে যেতেন, তাকে বলতেন, ’লা-বা’স, ত্বাহুরুন ইনশাআল্লাহ।’ অর্থাৎ, কোন ক্ষতি নেই, (গোনাহ থেকে) পবিত্র হবে ইন শাআল্লাহ।
وَعَنْه: أنَّ النَّبِيِّ ﷺ دَخَلَ عَلَى أَعْرَابِيٍّ يَعُوْدُهُ وَكَانَ إِذَا دَخَلَ عَلَى مَنْ يَعُوْدُهُ قَالَ لاَ بَأسَ طَهُورٌ إنْ شَاءَ اللهُرواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২২০) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, জিবরীল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি অসুস্থ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জিবরীল তখন এই দু’আটি পড়লেন, ’বিসমিল্লা-হি আরক্বীক, মিন কুল্লি শাইয়িন ইউ’যীক, অমিন শাররি কুল্লি নাফসিন আউ আইনি হা-সিদ, আল্লা-হু য়্যাশফীক, বিসমিল্লা-হি আরক্বীক।’
অর্থাৎ,আমি তোমাকে আল্লাহর নাম নিয়ে প্রত্যেক কষ্টদায়ক বস্তু থেকে এবং প্রত্যেক আত্মা অথবা বদনজরের অনিষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ঝাড়ছি। আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করুন। আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাকে ঝাড়ছি।
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِي أَنَّ جِبرِيلَ أتَى النَّبيَّ ﷺ فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ اشْتَكَيْتَ ؟ قَالَ نَعَمْ قَالَ : بِسْمِ الله أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللهُ يَشْفِيكَ بِسمِ اللهِ أُرقِيكَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অসুস্থ মানুষের জন্য যে সব দু‘আ বলা হয়
(১২২১) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) এবং আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তাঁরা উভয়েই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অল্লাহু আকবার’ (অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আল্লাহ সবচেয়ে বড়) বলে, আল্লাহ তার সত্যায়ন ক’রে বলেন, ’আমি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং আমি সবচেয়ে বড়।
আর যখন সে বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারীকা লাহ’ (অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই), তখন আল্লাহ বলেন, ’আমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, আমি একক, আমার কোন অংশী নেই।
আর যখন সে বলে ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লাহুল মুলকু অলাহুল হামদ’ (অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, সার্বভৌম ক্ষমতা তাঁরই এবং তাঁরই যাবতীয় প্রশংসা), তখন আল্লাহ বলেন, ’আমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, সার্বভৌম ক্ষমতা আমারই এবং আমারই যাবতীয় প্রশংসা।
আর যখন সে বলে, ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অলা হাওলা অলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার বা নড়া-সরার শক্তি নেই), তখন আল্লাহ বলেন, ’আমি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং আমার প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার বা নড়া-সরার শক্তি নেই।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, যে ব্যক্তি তার পীড়িত অবস্থায় এটি পড়ে মারা যাবে, জাহান্নামের আগুন তাকে খাবে না। (অর্থাৎ, সে জাহান্নামে যাবে না।)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِي وأَبِي هُرَيرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : أنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى رَسُول اللهِ ﷺ أنّه قَالَ مَنْ قَالَ : لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أكْبَرُ صَدَّقَهُ رَبُّهُ فَقَالَ : لاَ إلهَ إِلاَّ أنَا وَأَنَا أكْبَرُ وَإِذَا قَالَ : لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ قَالَ : يَقُولُ : لاَ إِلَهَ إلاَّ أنَا وَحْدِي لاَ شَريكَ لِي وَإِذَا قَالَ : لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ قَالَ : لاَ إلهَ إِلاَّ أنَا لِيَ المُلْكُ وَلِيَ الحَمْدُ وَإِذَا قَالَ : لاَ إله إِلاَّ اللهُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ باللهِ، قَالَ: لاَ إلهَ إِلاَّ أنَا وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِي وَكَانَ يقُولُ مَنْ قَالَهَا في مَرَضِهِ ثُمَّ مَاتَ لَمْ تَطْعَمْهُ النَّارُ - رواه الترمذي وَقَالَ حديث حسن