পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
اِنَّاۤ اَنْزَلْنٰهُ فِیْ لَیْلَةِ الْقَدْرِ وَمَاۤ اَدْرٰىكَ مَا لَیْلَةُ الْقَدْرِ لَیْلَةُ الْقَدْرِﺃ خَیْرٌ مِّنْ اَلْفِ شَھْرٍ تَنَزَّلُ الْمَلٰٓئِكَةُ وَالرُّوْحُ فِیْھَا بِاِذْنِ رَبِّھِمْ مِنْ كُلِّ اَمْرٍ سَلٰمٌ ھِیَ حَتّٰی مَطْلَعِ الْفَجْرِ
অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আমি এ (কুরআন) কে অবতীর্ণ করেছি মর্যাদাপূর্ণ রাত্রিতে (শবেকদরে)। আর মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি সম্বন্ধে তুমি কি জান? মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। ঐ রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ (জিবরীল) অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিময় সেই রাত্রি ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত। (সূরা ক্বাদর) তিনি আরো বলেছেন,
حٰمٓ وَالْكِتٰبِ الْمُبِیْنِ اِنَّاۤ اَنْزَلْنٰهُ فِیْ لَیْلَةٍ مُّبٰرَكَةٍ اِنَّا كُنَّا مُنْذِرِیْنَ فِیْھَا یُفْرَقُ كُلُّ اَمْرٍ حَكِیْمٍ اَمْرًا مِّنْ عِنْدِنَاﺕ اِنَّا كُنَّا مُرْسِلِیْنَ رَحْمَةً مِّنْ رَّبِّكَ اِنَّهٗ ھُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ
অর্থাৎ, নিশ্চয় আমি এ (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় (আশিসপূত শবেক্বদর) রাতে; নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার আদেশত্রুমে, আমি তো রসূল প্রেরণ করে থাকি। এ তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে করুণা; নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা দুখান ৩)
(১০৭৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে এবং সওয়াবের আশা রেখে রমযানের সিয়াম রাখে, তার পূর্বেকার পাপরাশি মাফ হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি শবেক্বদরে (ভাগ্যরজনী অথবা মহিয়সী রজনীতে) ঈমানসহ নেকীর আশায় কিয়াম করে (নামায পড়ে), তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
(১০৭৯) আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিছু সাহাবাকে স্বপ্নযোগে (রমযান মাসের) শেষ সাত রাতের মধ্যে শবেক্বদর দেখানো হল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি দেখছি যে, শেষ সাত রাতের ব্যাপারে তোমাদের স্বপ্নগুলি পরস্পরের মুতাবিক। সুতরাং যে ব্যক্তি শবেক্বদর অনুসন্ধানী হবে, সে যেন শেষ সাত রাতে তা অনুসন্ধান করে।
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : أَنَّ رِجَالاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ ﷺ أُرُوا لَيْلَةَ القَدْرِ فِي المَنَامِ فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأتْ فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
(১০৮০) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশ দিনে এতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমযানের শেষ দশকে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর।
وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهُا قَالَتْ : كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يُجَاوِرُ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، ويَقُوْلتَحرَّوا لَيْلَةَ القَدْرِ في العَشْرِ الأَوَاخرِ مِنْ رَمَضَانَ متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
(১০৮১) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমযান মাসের শেষ দশকের বিজোড় (রাত)গুলিতে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর।
وعنها رَضِيَ اللهُ عَنْهُا : أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ تَحَرَّوْا لَيْلَةَ القَدْرِ فِي الوَتْرِ مِنَ العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
(১০৮২) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমযানের শেষ দশক প্রবেশ করত, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নিজে জাগতেন, নিজ পরিজনদেরকেও জাগাতেন, কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং কোমরে লুঙ্গি বেঁধে নিতেন।
وَعَنْهَا رَضِيَ اللهُ عَنْهُا قَالَتْ : كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِذَا دَخَلَ العَشْرُ الأَوَاخِرُ مِنْ رَمَضَانَ أَحْيَا اللَّيْلَ وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ، وَجَدَّ وَشَدَّ المِئزَرَ -متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
(১০৮৩) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আল্লাহর ইবাদতের জন্য রমযানের) শেষ দশকে যত মেহনত করতেন অন্য দিনগুলিতে তত মেহনত করতেন না।
وَعَنْهَا قَالَتْ : كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَجْتَهِدُ فِى الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِى غَيْرِهِ
পরিচ্ছেদঃ শবে ক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে
(১০৮৪) উক্ত রাবী (রাঃ) হতেই বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন, যদি আমি (ভাগ্যক্রমে) শবেক্বদর জেনে নিই, তাহলে তাতে কোন্ (দু’আ) পড়ব? তিনি বললেন, এই দু’আ, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউবুন (কারীমুন) তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী। অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল, (মহানুভব) ক্ষমা ভালবাস। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।
وَعَنْهَا قَالَتْ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأيْتَ إِنْ عَلِمْتُ أَيُّ لَيلَةٍ لَيْلَةُ القَدْرِ مَا أَقُوْلُ فِيهَا ؟ قَالَ قُولِي: اللَّهُمَّ إنَّكَ عَفُوٌ (كَرِيْمٌ) تُحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنّي