পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬১) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যতদিন পর্যন্ত মুসলিমেরা শীঘ্র ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الفِطْرَ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দ্বীন ততকাল বিজয়ী থাকবে, যতকাল লোকেরা ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করবে। কারণ, ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা দেরী করে ইফতার করে।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ لاَ يَزَالُ الدِّينُ ظَاهِرًا مَا عَجَّلَ النَّاسُ الْفِطْرَ لأَنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى يُؤَخِّرُونَ
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৩) আবূ আত্বিয়্যাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও মাসরূক আয়েশা (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলাম। মাসরুক তাঁকে বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহচরদের মধ্যে দু’জন সহচর কল্যাণের ব্যাপারে আদৌ ত্রুটি করেন না। তাঁদের একজন মাগরিব ও ইফতার সত্বর সম্পাদন করেন এবং অপরজন মাগরিব ও ইফতার দেরীতে সম্পাদন করেন। এ কথা শুনে আয়েশা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, কে মাগরিব ও ইফতার সত্বর করেন? তিনি বললেন, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)। তিনি বললেন, ’আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপই করতেন।
وَعَنْ أَبي عطِيَّةَ قَالَ : دَخَلْتُ أَنَا وَمَسْرُوقٌ عَلَى عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنْهُا فَقَالَ لَهَا مَسْرُوق : رَجُلاَنِ مِنْ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ ﷺ كِلاَهُمَا لاَ يَألُو عَنِ الخَيْرِ ؛ أَحَدُهُمَا يُعَجِّلُ المَغْرِبَ وَالإِفْطَارَ وَالآخَرُ يُؤَخِّرُ المَغْرِبَ وَالإِفْطَارَ ؟ فَقَالَتْ : مَنْ يُعَجِّلُ المَغْرِبَ وَالإِفْطَارَ ؟ قَالَ : عَبْدُ اللهِ - يعني : ابن مسعود - فَقَالَتْ : هَكَذَا كَانَ رَسُولُ اللهِ يَصْنَعُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৪) উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন রাত্রি এ (পূর্ব) দিক থেকে আগমন করবে এবং দিন এ (পশ্চিম) দিক থেকে প্রস্থান করবে এবং সূর্য ডুবে যাবে, তখন অবশ্যই সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে।
وَعَنْ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِذَا أَقْبَلَ اللَّيْلُ مِنْ هَاهُنَا وَأَدْبَرَ النَّهَارُ مِنْ هَاهُنَا وَغَرَبَتِ الشَّمْسُ فَقَدْ أَفْطَر الصَّائِمُ متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৫) আবূ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একবার) আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্যে পথ চলছিলাম, তখন তিনি সিয়াম পালনকারী ছিলেন। অতঃপর যখন সূর্য অস্ত গেল, তখন তিনি সফররত সঙ্গীদের একজনকে বললেন, হে অমুক! বাহন থেকে নেমে আমাদের জন্য ছাতু ঘুলে দাও। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! যদি আর একটু সন্ধ্যা করতেন (তাহলে ভাল হত।) তিনি বললেন, তুমি বাহন থেকে নামো এবং আমাদের জন্য ছাতু ঘুলে দাও।
সে বলল, এখনো দিন হয়ে আছে। তিনি আবার বললেন, তুমি নামো এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, সুতরাং সে নেমে তাঁদের জন্য ছাতু গুলে দিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করলেন এবং বললেন, যখন তোমরা প্রত্যক্ষ করবে যে, রাত্রি এ (পূর্ব) দিক থেকে এসে পড়েছে, তখন অবশ্যই সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে। আর সেই সাথে তিনি পূর্বদিকে ইঙ্গিত করলেন।
وَعَنْ أَبِي إِبرَاهِيمَ عَبدِ اللهِ بنِ أَبي أَوفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : سِرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَهُوَ صَائِمٌ فَلَمَّا غَرَبَتِ الشَّمْسُ قَالَ لِبَعْضِ القَوْمِ يَا فُلاَنُ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ أَمْسَيْتَ ؟ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا قَالَ : إِنَّ عَلَيْكَ نَهَاراً، قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لَنَا قَالَ : فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَهُمْ فَشَرِبَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ثُمَّ قَالَ إِذَا رَأَيْتُمُ اللَّيْلَ قَدْ أَقْبَلَ مِنْ هَاهُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ وَأشَارَ بِيَدِهِ قِبَلَ المَشْرِقِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৬) আবূ উমামা বাহেলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম; এমন সময় (স্বপ্নে) আমার নিকট দুই ব্যক্তি উপস্থিত হলেন। তাঁরা আমার উভয় বাহুর ঊর্ধ্বাংশে ধরে আমাকে এক দুর্গম পাহাড়ের নিকট উপস্থিত করলেন এবং বললেন, আপনি এই পাহাড়ে চড়ুন। আমি বললাম, এ পাহাড়ে চড়তে আমি অক্ষম। তাঁরা বললেন, আমরা আপনার জন্য চড়া সহজ করে দেব। সুতরাং আমি চড়ে গেলাম। অবশেষে যখন পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে পৌঁছলাম তখন বেশ কিছু চিৎকার-ধ্বনি শুনতে পেলাম।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম এ চিৎকার-ধ্বনি কাদের? তাঁরা বললেন, এ হল জাহান্নামবাসীদের চীৎকার-ধ্বনি। পুনরায় তাঁরা আমাকে নিয়ে চলতে লাগলেন। হঠাৎ দেখলাম একদল লোক তাদের পায়ের গোড়ালির উপর মোটা শিরায় (বাঁধা অবস্থায়) লটকানো আছে, তাদের কেশগুলো কেটে ও ছিঁড়ে আছে এবং কশবেয়ে রক্তও ঝরছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি বললাম, ওরা কারা? তাঁরা বললেন, ওরা হল তারা; যারা সময় হওয়ার পূর্বে-পূর্বেই ইফতার করে নিত।
وَعَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ إِذْ أَتَانِي رَجُلَانِ فَأَخَذَا بِضَبْعَيَّ فَأَتَيَا بِي جَبَلا وَعْرًا فَقَالَا : اصْعَدْ فَقُلْتُ : إِنِّي لَا أُطِيقُهُ فَقَالَا : إِنَّا سَنُسَهِّلُهُ لَكَ فَصَعِدْتُ حَتَّى إِذَا كُنْتُ فِي سَوَاءِ الْجَبَلِ إِذَا بِأَصْوَاتٍ شَدِيدَةٍ فَقُلْتُ : مَا هَذِهِ الْأَصْوَاتُ قَالُوا : هَذَا عُوَاءُ أَهْلِ النَّارِ ثُمَّ انْطَلَقَا بِي فَإِذَا أَنَا بِقَوْمٍ مُعَلَّقِينَ بِعَرَاقِيبِهِمْ مُشَقَّقَةٍ أَشْدَاقُهُمْ تَسِيلُ أَشْدَاقُهُمْ دَمًا فَقُلْتُ : مَنْ هَؤُلَاءِ قَالَا : هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يُفْطِرُونَ قَبْلَ تَحِلَّةِ صَوْمِهِمْ
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৭) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়ার আগে কতিপয় টাটকা পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি টাটকা পাকা খেজুর না পেতেন, তাহলে শুকনো কয়েকটি খেজুর যোগে ইফতার করতেন। যদি শুকনো খেজুরও না হত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يُفْطِرُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّي عَلَى رُطَبَاتٍ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ رُطَبَاتٌ فَتُمَيْرَاتٌ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تُمَيْرَاتٌ حَسَا حَسَوَاتٍ مِنْ مَاءٍ رواه أَبُو داود والترمذي وقَالَ حديث حسن
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৮) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন এই দু’আ বলতেন, যাহাবায যামা-উ অবতাল্লাতিল উরুক্বু অসাবাতাল আজরু ইন শা-আল্লাহ।
অর্থাৎ, পিপাসা দূরীভূত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল এবং ইন শাআল্লাহ সওয়াব সাব্যস্ত হল।
عَنِ ابنِ عُمَرَ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِذَا أَفْطَرَ قَالَ ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُرواه أبو داود
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৬৯) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সা’দ ইবনে উবাদাহ (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলেন। তিনি রুটি ও (যায়তুনের) তেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে পেশ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ভক্ষণ করে এই দু’আ পড়লেন,
উচ্চারণ আফত্বারা ইন্দাকুমুস স্বা-য়িমূন, অআকালা ত্বাআমাকুমুল আবরার, অস্বাল্লাত আলাইকুমুল মালাইকাহ।
অর্থাৎ, সিয়াম পালনকারীগণ তোমাদের নিকট ইফতার করল। সৎব্যক্তিগণ তোমাদের খাবার ভক্ষণ করল এবং ফিরিশতাগণ তোমাদের (ক্ষমার) জন্য দু’আ করলেন।
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ جَاءَ إِلَى سَعْدِ بنِ عُبَادَةَ فَجَاءَ بِخُبْزٍ وَزَيْتٍ فَأَكَلَ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ أَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُونَ وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الأَبرَارُ وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ المَلاَئِكَةُ رواه أَبُو داود بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ সূর্যাস্তের সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করার ফযীলত, কোন খাদ্য দ্বারা ইফতার করবে ও তার পরের দু‘আ
(১০৭০) যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন সিয়াম পালনকারী-কে ইফতার করাবে, সে (রোযাদারের) সমান নেকীর অধিকারী হবে। আর তাতে রোযাদারের নেকীর কিছুই কমবে না।
عَن زَيدِ بنِ خَالِدٍ الجُهَنِيِّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ فَطَّرَ صَائِماً كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أنَّهُ لاَ يُنْقَصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْءٌرواه الترمذي وقَالَ حَدِيْثٌ حَسَنٌ صَحِيْحٌ