পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮১৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু আমাকে এই তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন; (১) প্রতি মাসে তিনটি (১৩, ১৪, ১৫ তারীখে) রোযা রাখার। (২) চাশতের দু’ রাকআত (সুন্নত) পড়ার। (৩) এবং ঘুমাবার আগে বিতর পড়ে নেওয়ার।
-
(বুখারী ১৯৮১, মুসলিম ১৭০৫)
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : أَوْصَانِي خَلِيلِي ﷺ بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَكْعَتَي الضُّحَى وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أَرْقُدَ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮১৫) আবূ যার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ এমন অবস্থায় সকালে ওঠে যে, তার (দেহের) প্রতিটি জোড়ের সাদকা দেওয়ার জন্য সে দায়বদ্ধ হয়। সুতরাং প্রত্যেক ’সুবহানাল্লাহ’ বলা সাদকাস্বরূপ, প্রত্যেক ’আলহামদুলিল্লাহ’ বলা সাদকাস্বরূপ, প্রত্যেক ’লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা সাদকাস্বরূপ, প্রতিটি ’আল্লাহু আকবার’ বলা সাদকাস্বরূপ, সৎকাজের আদেশ দেওয়া সাদকাস্বরূপ এবং মন্দকাজে বাধা দেওয়া সাদকাস্বরূপ। আর এ সমস্ত কিছুর পরিবর্তে দু’ রাকআত (চাশতের) নামায পড়লে তা যথেষ্ট হবে।
وَعَنْ أَبيْ ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ يُصْبحُ عَلَى كُلِّ سُلاَمَى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ : فَكُلُّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْيٌ عَن المُنْكَرِ صَدَقَةٌ وَيُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ رَكْعَتَانِ يَرْكَعُهُمَا مِن الضُّحَى رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮১৬) বুরাইদাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানবদেহে ৩৬০টি গ্রন্থি আছে। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ঐ প্রত্যেক গ্রন্থির পক্ষ থেকে দেয় সদকাহ রয়েছে। সকলে বলল, এত সদকাহ দিতে আর কে সক্ষম হবে, হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেন, মসজিদ হতে কফ (ইত্যাদি নোংরা) দূর করা, পথ হতে কষ্টদায়ক বস্ত্ত (কাঁটা-পাথর প্রভৃতি) দূর করা এক একটা সদকাহ। যদি তাতে সক্ষম না হও, তবে দুই রাকআত চাশতের নামায তোমার সে প্রয়োজন পূর্ণ করবে।
عَن بُرَيْدَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فِي الْإِنْسَانِ ثَلَاثُ مِائَةٍ وَسِتُّونَ مَفْصِلًا فَعَلَيْهِ أَنْ يَتَصَدَّقَ عَن كُلِّ مَفْصِلٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ بِصَدَقَةٍ قَالُوْا وَمَنْ يُطِيقُ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ النُّخَاعَةُ تَرَاهَا فِي الْمَسْجِدِ فَتَدْفِنُهَا أَوْ الشَّيْءُ تُنَحِّيهِ عَن الطَّرِيقِ فَإِنْ لَمْ تَقْدِرْ فَرَكْعَتَا الضُّحَى تُجْزِئُكَ
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮১৭) আনাস বিন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে পড়ে, অতঃপর সূর্যোদয় অবধি বসে আল্লাহর যিকর করে তারপর দুই রাকআত নামায পড়ে, সেই ব্যক্তির একটি হজ্জ ও উমরার সওয়াব লাভ হয়। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ। অর্থাৎ কোন অসম্পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব নয় বরং পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব।
عَن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮১৮) উক্ববাহ বিন আমের জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ আয্যা অজাল্ল বলেন, হে আদম সন্তান! দিনের প্রথমাংশে তুমি আমার জন্য চার রাকআত নামায পড়তে অক্ষম হয়ো না, আমি তার প্রতিদানে তোমার দিনের শেষাংশের জন্য যথেষ্ট হব।
عَن عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ اكْفِنِي أَوَّلَ النَّهَارِ بِأَرْبَعِ رَكَعَاتٍ أَكْفِكَ بِهِنَّ آخِرَ يَوْمِكَ
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮১৯) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাশতের চার রাকআত নামায পড়তেন এবং আল্লাহ যতটা চাইতেন সেই মত তিনি আরো বেশী পড়তেন।
وَعَن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يُصَلِّي الضُّحَى أَرْبَعاً وَيَزِيدُ مَا شَاءَ الله رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮২০) উম্মে হানী ফাখেতাহ বিনতে আবু তালেব হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছরে আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত হয়ে দেখি যে, তিনি গোসল করছেন। যখন তিনি গোসল সম্পন্ন করলেন, তখন আট রাকআত নামায পড়লেন। আর তখন ছিল চাশতের সময়।
وَعَن أُمِّ هَانِىءٍ فَاخِتَةَ بِنتِ أَبي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : ذَهَبْتُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ عَامَ الفَتْحِ فَوَجَدْتُهُ يَغْتَسِلُ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ صَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ وَذَلِكَ ضُحىً متفقٌ عَلَيْهِ وهذا مختصرُ لفظِ إحدى روايات مسلم
পরিচ্ছেদঃ চাশতের নামাযের ফযীলত
(৮২১) আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক যোদ্ধাবাহিনী প্রেরণ করেন। এই যুদ্ধ সফরে তারা বহু যুদ্ধলব্ধ সম্পদ লাভ করে খুব শীঘ্রই ফিরে আসে। লোকেরা তাদের যুদ্ধস্থানের নিকটবর্তিতা, লব্ধ সম্পদের আধিক্য এবং ফিরে আসার শীঘ্রতা নিয়ে সবিস্ময় বিভিন্ন আলোচনা করতে লাগল। তা শুনে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে ওদের চেয়ে নিকটতর যুদ্ধক্ষেত্র, ওদের চেয়ে অধিকতর লব্ধ সম্পদ এবং ওদের চেয়ে শীঘ্রতর ফিরে আসার কথার সন্ধান বলে দেব না? যে ব্যক্তি সকালে ওযু করে চাশতের নামাযের উদ্দেশ্যে মসজিদে যায়, সে ব্যক্তি ওদের চেয়ে নিকটতর যুদ্ধক্ষেত্রে যোগদান করে, ওদের চেয়ে অধিকতর সম্পদ লাভ করে এবং ওদের চেয়ে অধিকতর শীঘ্র ঘরে ফিরে আসে।
عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِي قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللهِ ﷺ سَرِيَّةً فَغَنِمُوا وَأَسْرَعُوا الرَّجْعَةَ فَتَحَدَّثَ النَّاسُ بِقُرْبِ مَغْزَاهُمْ وَكَثْرَةِ غَنِيمَتِهِمْ وَسُرْعَةِ رَجْعَتِهِمْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى أَقْرَبَ مِنْهُ مَغْزًى وَأَكْثَرَ غَنِيمَةً وَأَوْشَكَ رَجْعَةً مَنْ تَوَضَّأَ ثُمَّ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ لِسُبْحَةِ الضُّحَى فَهُوَ أَقْرَبُ مَغْزًى وَأَكْثَرُ غَنِيمَةً وَأَوْشَكُ رَجْعَةً