পরিচ্ছেদঃ ৩৪৪. বিতর সালাত দুইবার না আদায় করা প্রসঙ্গে
১৪৩৯। ক্বায়িস ইবনু ত্বালক্ব (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রমাযান মাসে ত্বালক্ব ইবনু ’আলী (রাঃ) আমাদের সাথে দেখা করতে এসে এখানে সন্ধ্যা অতিবাহিত করেন এবং এখানেই ইফতার করেন। অতঃপর রাতে আমাদেরকে নিয়ে তারাবীহ ও বিতর সালাত আদায় করেন। অতঃপর তিনি নিজেদের মসজিদের গিয়ে তার সাথীদেরকে নিয়েও সালাত আদায় করেন। অতঃপর বিতর সালাতের জন্য এক ব্যক্তিকে সম্মুখে এগিয়ে দিয়ে বলেন, তোমার সাথীদেরকে বিতর পড়াও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ একই রাতে দুইবার বিতর হয় না।[1]
সহীহ।
এক নজরে বিতর সালাতের পদ্ধতিঃ
(১) বিতর সালাত ১, ৩, ৫, ৭, ৯ রাকআত আদায় করা যায়। এর সবগুলোর সমর্থনেই হাদীস বর্ণিত আছে। তবে চার খলীফা সহ অধিকাংশ সাহাবায়ি কিরাম, তাবেঈন ও মুজতাহিদ ইমামগণ এক রাকআত বিতরে অভ্যস্ত ছিলেন। হাদীসে এসেছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ বিতর রাতের শেষভাগে মাত্র এক রাক‘আত- (সহীহ মুসলিম)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাক‘আত দ্বারা বিতর করতেন। (ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৫৫)
(২) ১ রাকআত থেকে ৫ রাকআত পর্যন্ত এক বৈঠকে সালাম সহ বিতর সালাত আদায় করবে। আর ৭ রাক‘আত বিতর পড়লে তাতে ছয় রাক‘আতে প্রথম বৈঠক করবে, তারপর ৭ম রাক‘আতে শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরাবে। আর ৯ রাক‘আত বিতর সালাত আদায় করলে তাতে আট রাক‘আতে প্রথম বৈঠক করবে এবং ৯ম রাক‘আতে শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরাবে- (সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম, বায়হাক্বী, হাকিম, মিরআত। উল্লেখ্য, ৩ রাক‘আত বিতর সালাতে মাগরিবের ন্যায় দ্বিতীয় রাক‘আতে প্রথম বৈঠক এবং তৃতীয় রাক‘আতে শেষ বৈঠক করার নিয়ম সঠিক নয়)
(৩) বিতর সালাত ‘ইশা, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ ইত্যাদি রাতের সালাতের শেষে আদায় করা সুন্নাত। বিতর সালাত রাতের প্রথম, মধ্য এবং শেষ ভাগ- যেকোন সময়ে আদায় করা যায়। (মিরআত, নায়লুল আওত্বার, সহীহুল বুখারী ও মুসলিম)
(৪) কেউ বিতর সালাত আদায় করতে ভুলে গেলে কিংবা না আদায় করেই ঘুমিয়ে পড়লে স্মরণ হলেই বা ঘুম থেকে জাগার পরই তা আদায় করবে। (আবূ দাউদ, মিরআত)
(৫) বিতর সালাতের দুআ কুনূত সারা বছরই পড়া যায়। তবে বিতর সালাতের জন্য যেহেতু কুনূত শর্ত নয় তাই মাঝে মধ্যে কুনূত পাঠ না করাও উত্তম। (আবূ দাউদ, নাসায়ী, মিশকাত)
(৬) বিতরের কুনূত রুকূ‘র আগে এবং রুকূ‘র পরে দুই ভাবেই পড়া জায়িয আছে। (সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাত)।
(৭) বিতরের কুনূতের সময় হাত উঠিয়ে দুআ করবে। ইমাম আবূ ইউসূফ (রহঃ) বলেনঃ বিতরের কুনূত পাঠ কালে দুই হাতের তালু আসমানের দিকে বুক বরাবর উঁচু থাকবে। ইমাম ত্বাহাবী ও ইমাম কারখীও এটাকে পছন্দ করেছেন। ইমাম আহমাদের মতও তাই। সাহাবী ‘উমার, ইবনু মাসউদ, আবূ হুরাইরাহ, আনাস (রাঃ) প্রমূখ সাহাবায়ি কিরাম হতে এর প্রমাণ রয়েছে। (মিরআত)
(৮) রমাযান মাসে বিতরের কুনূতে দুআ লম্বা করা যাবে। নেককার পূর্বসূরীদের অনেকে এরূপ করতেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, দুআ যেন এতো বেশি দীর্ঘ না হয় যাতে মুসল্লীদের বিরক্তির কারণ ঘটে।
(৯) বিতর সালাতের কুনূতঃ ‘‘আল্লাহুম্মাহদিনী ফী মান হাদায়তা, ওয়া ‘আফিনী ফী মান ‘আফায়তা, ওয়াতাঅল্লানী ফী মান তাওয়াল্লায়তা, ওয়া বা-রিকলী ফী মা আ‘তায়তা, ওয়াক্বিনী শার্রামা ক্বাযাইতা, ফাইন্নাকা তাক্বযী ওয়ালা ইউক্বযা ‘আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লা ইয়াযিল্লুমাও ওয়া লায়তা, ওয়ালা ইয়া ‘ইযযু মান ‘আদায়তা, তাবারকতা রব্বানা ওয়া তা‘আ-লায়তা, ওয়া আস্তাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলায়কা, ওয়া সল্লাল্লাহু আলান্ নাবী।’’ (হাদীস সহীহ : আবূ দাউদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, তিরমিযী, দারিমী, ইবনু আবূ শায়বাহ, হাকিম, বায়হাক্বী, আহমাদ, ত্বাবারানী, ইবনু খুযায়মাহ, ইবনু হিববান, মিশকাত হা/১২৭৩, ইরওয়াউল গালীল হা/৪২৯)
উল্লেখ্য, জামা‘আতে দুআর সময় ইমাম ত্রিয়াপদের শেষে এক বচন ‘নী’ এর স্থলে বহুবচন ‘না’ শব্দ বলতে পারবেন। (ফাতাওয়াহ ইবনু বায)
(১০) বিতর সালাত শেষে এই দুআ পড়তে হয় : ‘‘সুবহানাল মালিকুল কুদ্দুস।’’ এরপর স্বরবে বলতে হয় ‘‘রাব্বিল মালায়িকাতি ওয়ার রূহি’’ (সুনানু নাসায়ী)
باب فِي نَقْضِ الْوِتْرِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا مُلَازِمُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ بَدْرٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، قَالَ زَارَنَا طَلْقُ بْنُ عَلِيٍّ فِي يَوْمٍ مِنْ رَمَضَانَ وَأَمْسَى عِنْدَنَا وَأَفْطَرَ ثُمَّ قَامَ بِنَا تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَأَوْتَرَ بِنَا ثُمَّ انْحَدَرَ إِلَى مَسْجِدِهِ فَصَلَّى بِأَصْحَابِهِ حَتَّى إِذَا بَقِيَ الْوِتْرُ قَدَّمَ رَجُلاً فَقَالَ أَوْتِرْ بِأَصْحَابِكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لَا وِتْرَانِ فِي لَيْلَةٍ " .
- صحيح
Narrated Talq ibn Ali:
Qays ibn Talq said: Talq ibn Ali visited us on a certain day during Ramadan. He remained with us till evening and broke fast with us. He then stood up and led us in the witr prayer.
He then went to his mosque and led them in prayer. When the witr remained, he put forward another man and said: Lead your companions in the witr prayer, for I heard the Messenger of Allah (ﷺ) as saying: There are no two witrs during one night.