পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭০-[২] ত্বলহাহ্ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: প্রত্যেক নবীরই এক একজন রফীক (সাথি) রয়েছেন, আর জান্নাতে আমার রফীক উসমান। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

عَن طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لِكُلِّ نَبِيٍّ رَفِيقٌ وَرَفِيقِي - يَعْنِي فِي الْجنَّة - عُثْمَان» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3698 وقال : غریب ، لیس اسنادہ بالقوی ‘‘ الخ) و انظر الحدیث الآتی (6062) * فیہ شیخ من بنی زھرۃ : لم اعرفہ ، و شیخہ حارث بن عبد الرحمن بن ابی ذباب لم یدرک طلحۃ رضی اللہ عنہ (انظر تحفۃ الاشراف 4 / 212) ۔
(ضَعِيف)

عن طلحة بن عبيد الله قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لكل نبي رفيق ورفيقي - يعني في الجنة - عثمان» رواه الترمذي اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3698 وقال : غریب ، لیس اسنادہ بالقوی ‘‘ الخ) و انظر الحدیث الآتی (6062) * فیہ شیخ من بنی زھرۃ : لم اعرفہ ، و شیخہ حارث بن عبد الرحمن بن ابی ذباب لم یدرک طلحۃ رضی اللہ عنہ (انظر تحفۃ الاشراف 4 / 212) ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: (لِكُلِّ نَبِيٍّ رَفِيقٌ) বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে, যে ব্যক্তি তোমার সাথে বন্ধুত্ব করে বা বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে।
(وَرَفِيقِي - يَعْنِي فِي الْجنَّة - عُثْمَان) নবী (সা.) -এর কথা ছিল ব্যাপকতার ভিত্তিতে যা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালকে শামিল করে। উক্ত হাদীস দ্বারা অন্যান্যদের বন্ধুত্ব সম্পর্ক অস্বীকার করা হয় না বরং এ কথা থেকে উপকার হাসিল হয় যে, প্রত্যেক নবীর বন্ধু একজন আর নবী (সা.) -এর বন্ধু একাধিক। আর হাদীসটি শুধুমাত্র ‘উসমান (রাঃ)-এর আলোচনায় তাঁর সম্মান ও মর্যাদাকে উঁচু করা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৯ম খণ্ড, হা. ৩৭০৭)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭১-[৩] আর ইবনু মাজাহ হাদীসটি আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাদীসটি গরীব। এর সূত্র সুদৃঢ় নয় এবং তা মুনকাত্বি বা বিচ্ছিন্ন।]

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَرَاه ابْنُ مَاجَهْ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِالْقَوِيِّ وَهُوَ مُنْقَطع

ضعیف ، رواہ ابن ماجہ (109) و سندہ ضعیف جدًا ، فیہ عثمان بن خالد : متروک الحدیث ۔ و انظر الحدیث السابق (6061) ۔
(ضَعِيف)

وراه ابن ماجه عن ابي هريرة وقال الترمذي: هذا حديث غريب وليس اسناده بالقوي وهو منقطع ضعیف ، رواہ ابن ماجہ (109) و سندہ ضعیف جدا ، فیہ عثمان بن خالد : متروک الحدیث ۔ و انظر الحدیث السابق (6061) ۔ (ضعيف)

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭২-[৪] ’আবদুর রহমান ইবনু খব্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি নবী (সা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। সে সময় তিনি (সা.) জায়শুল ’উসরাহ (তাবুক) যুদ্ধের সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য মানুষদেরকে উৎসাহ প্রদান করছিলেন। (তার উৎসাহবাণী শুনে) উসমান (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর রাস্তায় গদি ও পালানসহ একশত উট আমার দায়িত্বে। এরপরও নবী (সা.) উৎসাহ প্রদান করতে লাগলেন, উসমান (রাঃ) আবার উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহর রাস্তায় গদি ও পালানযুক্ত দুইশত উট আমার দায়িত্বে। এরপরও নবী (সা.) সাহায্যের জন্য উৎসাহ প্রদান করলেন। উসমান (রাঃ) আবারও উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহর পথে গদি ও পালানযুক্ত তিনশত উট আমার দায়িত্ব। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) এ কথা বলতে বলতে মিম্বার হতে অবতরণ করলেন এই ’আমলের পর ’উসমান যে ’আমলই করেন, তার জন্য তা ক্ষতিকর হবে না। এই ’আমলের পর ’উসমান যে ’আমলই করেন, তা তাঁর জন্য ক্ষতিকর হবে না। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ خَبَّابٍ قَالَ: شَهِدْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَحُثُّ عَلَى جَيْشِ الْعُسْرَةِ فَقَامَ عُثْمَانُ فَقَالَ: يَا رَسُول الله عَلَيَّ مِائَتَا بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ حَضَّ عَلَى الْجَيْشِ فَقَامَ عُثْمَانُ فَقَالَ: عَلَيَّ مِائَتَا بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ حَضَّ فَقَامَ عُثْمَانُ فَقَالَ: عَلَيَّ ثَلَاثُمِائَةِ بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَأَنَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْزِلُ عَنِ الْمِنْبَرِ وَهُوَ يَقُولُ: «مَا عَلَى عُثْمَانَ مَا عَمِلَ بَعْدَ هَذِهِ مَا عَلَى عُثْمَانَ مَا عَمِلَ بَعْدَ هَذِهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3700 وقال : غریب) * فرقد ابو طلحۃ مجھول و حدیث الترمذی (3701) یغنی عنہ ۔
(ضَعِيف)

وعن عبد الرحمن بن خباب قال: شهدت النبي صلى الله عليه وسلم وهو يحث على جيش العسرة فقام عثمان فقال: يا رسول الله علي ماىتا بعير باحلاسها واقتابها في سبيل الله ثم حض على الجيش فقام عثمان فقال: علي ماىتا بعير باحلاسها واقتابها في سبيل الله ثم حض فقام عثمان فقال: علي ثلاثماىة بعير باحلاسها واقتابها في سبيل الله فانا رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم ينزل عن المنبر وهو يقول: «ما على عثمان ما عمل بعد هذه ما على عثمان ما عمل بعد هذه» . رواه الترمذي سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3700 وقال : غریب) * فرقد ابو طلحۃ مجھول و حدیث الترمذی (3701) یغنی عنہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: (وَهُوَ يَحُثُّ عَلَى جَيْشِ الْعُسْرَةِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তাবুক যুদ্ধ। তাকে এ নামে নামকরণের কারণ হলো তাবুক যুদ্ধের সময় প্রচণ্ড রোদ ছিল। দুর্ভিক্ষ চলছিল, পাথেয়, পানি ও যানবাহন এতই কম ছিল যে, তাদের বের হওয়া একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তাছাড়া অনেক সাহাবীর অন্তরে বক্রতা সৃষ্টি হলো। যখন শুনতে পেল শত্রুদের সৈন্য, শক্তি, সামর্থ্য মুসলিমদের তুলনায় অনেক বেশি।
কারী (রহিমাহুল্লাহ) আরো বলেন, নবী (সা.) -এর সাথে বদূরের যুদ্ধে ৩১৩ জন সৈন্য ছিল। উহুদ যুদ্ধে ছিল ৭০০ জন। হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় ছিল ১৫০০ জন। মক্কাহ্ বিজয়ের সময় ছিল ১০,০০০ জন এবং হুনায়ন যুদ্ধে ছিল ১২,০০০ জন। নবী (সা.)-এর জীবনে এরাই ছিল সর্বশেষ সৈন্যবাহিনী।
(مِائَتَا بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا) ইমাম তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (أَحْلَاسِ) শব্দটি (حِلْس) এর বহুবচন যার অর্থ হলো এমন পাতলা কাপড় যা গদির নিচে দেয়া হয়। (أَقْتَابِ) শব্দটি (قَتَبٍ) এর বহুবচন। উটের কুঁজ পরিমাণ ছোট পালানকে (قَتَبٍ) বলা হয়।
(عَلَيَّ ثَلَاثُمِائَةِ بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ) মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ)-এর কথটি ঠিক নয়। কেননা তিনি মোট ৩০০টি উট দান করেছিলেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ১০/৩৯৪০)
(مَا عَلَى عُثْمَانَ مَا عَمِلَ بَعْدَ هَذِهِ) প্রথম مَا টা নাফিয়া বা না-বোধক অর্থ প্রকাশ করে। দ্বিতীয় مَا টা মাওসূলাহ্। অতএব বাক্যের অর্থ হলো ‘উসমান (রাঃ)-এর কোন ক্ষতি হবে না এই ভালো ‘আমল করার পর সারাজীবন যে 'আমল-ই করুক না কেন। সামষ্টিক অর্থ হলো তার অতীতের পাপগুলো ক্ষমা হয়ে যাবে সাথে সাথে অতিরিক্ত হিসেবে আগত পাপগুলোও ক্ষমা হয়ে যাবে।
ব্যাখ্যাকার বলেন, আল্লাহর পথে এই বিশাল দান করার পর সে যেই ‘আমল করুক না কেন তার ওপর কোন দোষারোপ নেই। যদি مَا টা ইসমে মাওসূলাহ্ হয় তাহলে এ অর্থ হবে। আর যদি مَا টা মাসদারিয়া হয় তাহলে অর্থ হবে এই দানের পর উসমানের কোন নফল ‘আমল করার প্রয়োজন নেই। কেননা এই ভালো ‘আমল-ই তার সমস্ত না ‘আমলের স্থলাভিষিক্ত হবে।
ইমাম মুযহির (রহিমাহুল্লাহ) এ প্রসঙ্গে বলেন, এরপর হতে সে যদি কোন না ‘আমল না করে ফারয বাদে, তাহলে তার ওপর কোন দোষ নেই। কেননা ঐ ভালো ‘আমল তার সমস্ত নফলের জন্য যথেষ্ট।
ইমাম ইবনু শিহাব জুহরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তাবূক যুদ্ধে ‘উসমান (রাঃ) নয়শত ষাটটি উট ও চল্লিশটি ঘোড়া মোট ১০০০টি বাহন দান করেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/৩৭০৯)।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৩-[৫] ’আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) যখন তাবুক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন ’উসমান (রাঃ) নিজ জামার আস্তিনে ভরে এক হাজার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) নিয়ে নবী (সা.) -এর কাছে আসলেন এবং দীনারগুলো রাসূল (সা.) -এর কোলে ঢেলে দিলেন। আমি দেখলাম, নবী (সা.) নিজ কোলের মুদ্রাগুলো উলট-পালট করে বলতে লাগলেন, আজকের পরে ’উসমান-কে কোন ক্ষতি করবে না। তিনি যে আমলই করেন না কেন- এ কথাটি তিনি (সা.) দু’বার বলেছেন। (আহমাদ)।

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: جَاءَ عُثْمَانُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَلْفِ دِينَارٍ فِي كُمِّهِ حِينَ جَهَّزَ جَيْشَ الْعُسْرَةِ فَنَثَرَهَا فِي حِجْرِهِ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَلِّبُهَا فِي حِجْرِهِ وَيَقُولُ: «مَا ضَرَّ عُثْمَانَ مَا عَمِلَ بَعْدَ الْيَوْمِ» مرَّتَيْنِ. رَوَاهُ أَحْمد

اسنادہ حسن ، رواہ احمد (5 / 63 ح 20906) [و الترمذی (3701 وقال : حسن غریب) و صححہ الحاکم (3 / 102) و وافقہ الذھبی] ۔
(حسن)

وعن عبد الرحمن بن سمرة قال: جاء عثمان الى النبي صلى الله عليه وسلم بالف دينار في كمه حين جهز جيش العسرة فنثرها في حجره فرايت النبي صلى الله عليه وسلم يقلبها في حجره ويقول: «ما ضر عثمان ما عمل بعد اليوم» مرتين. رواه احمد اسنادہ حسن ، رواہ احمد (5 / 63 ح 20906) [و الترمذی (3701 وقال : حسن غریب) و صححہ الحاکم (3 / 102) و وافقہ الذھبی] ۔ (حسن)

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৪-[৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন (লোকেদেরকে) “বায়’আতে রিযওয়ান”-এর আদেশ দিলেন, সে সময় ’উসমান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর দূত হিসেবে মক্কায় গিয়েছিলেন। লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে বায়’আত করল, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ’উসমান, আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের কাজে (মক্কায়) গিয়েছেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.) ’উসমান-এর বায়’আতস্বরূপ নিজেরই এক হাত অন্য হাতে রাখলেন। অতএব রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর হাত উসমান (রাঃ)-এর হাতস্বরূপ হয়ে যাওয়াটা সাহাবীগণের নিজেদের হাতের চেয়ে অতি উত্তম। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَن أنسٍ قَالَ: لَمَّا أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبَيْعَةِ الرِّضْوَانِ كَانَ عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَسُولُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى مَكَّةَ فَبَايَعَ النَّاسُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِن عُثْمَانَ فِي حَاجَةِ اللَّهِ وَحَاجَةِ رَسُولِهِ» فَضَرَبَ بِإِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى فَكَانَتْ يَدُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِعُثْمَانَ خَيْرًا من أَيْديهم لأَنْفُسِهِمْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3702 وقال : حسن صحیح غریب) * الحکم بن عبدالملک ضعیف و حدیث ابی داود (2726) یغنی عنہ ۔
(ضَعِيف)

وعن انس قال: لما امر رسول الله صلى الله عليه وسلم ببيعة الرضوان كان عثمان رضي الله عنه رسول رسول الله صلى الله عليه وسلم الى مكة فبايع الناس فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان عثمان في حاجة الله وحاجة رسوله» فضرب باحدى يديه على الاخرى فكانت يد رسول الله صلى الله عليه وسلم لعثمان خيرا من ايديهم لانفسهم. رواه الترمذي سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3702 وقال : حسن صحیح غریب) * الحکم بن عبدالملک ضعیف و حدیث ابی داود (2726) یغنی عنہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: (لَمَّا أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبَيْعَةِ الرِّضْوَانِ) এটা এমন একটি বায়'আত ছিল যা হুদায়বিয়াহ্ নামক স্থানে একটি গাছের নিচে সংঘটিত হয় আর এ বায়'আতের বিষয় ছিল তারা কুরায়শদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে কিন্তু পলায়ন করতে পারবে না।
‘রিযওয়া’ নামকরণের কারণ হলো আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে আয়াত অবতীর্ণ করে বলেন, (لَقَدۡ رَضِیَ اللّٰهُ عَنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ یُبَایِعُوۡنَکَ تَحۡتَ الشَّجَرَۃِ) “আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা আপনার কাছে শপথ গ্রহণ করে গাছের নিচে।” (সূরাহ আল ফাতহ ৪৮ : ১৮)
(انَ عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَسُولُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى مَكَّةَ) নবী (সা.)-এর দূত। তাদের দিকে প্রেরিত হয়েছেন হুদায়বিয়াহ্ হতে মক্কাহ্ অভিমুখে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-তাকে আবূ সুফইয়ান ও কুরায়শদের বড় বড় নেতাদের নিকট এই সংবাদ দেয়ার জন্য পাঠিয়েছেন যে, তিনি যুদ্ধের জন্য আসেননি। তিনি এই কা'বার যিয়ারত ও সম্মানার্থে এসেছেন। এ সংবাদ নিয়ে ‘উসমান (রাঃ) মক্কাহ্ অভিমুখে বের হয়ে গেলেন এবং রাসূল (সা.) -এর সংবাদ পৌছে দিলেন।
(إِن عُثْمَانَ فِي حَاجَةِ اللَّهِ وَحَاجَةِ رَسُولِهِ) ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আলোচ্য বাক্য আল্লাহর এই বাণীর অন্তর্ভুক্ত: (اِنَّ الَّذِیۡنَ یُؤۡذُوۡنَ اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ) “যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়।” (সূরাহ্ আল আহযাব ৩৩: ৫৭)
আয়াত হতে স্পষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নিকট দু'টি বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। আর আল্লাহর প্রয়োজন বলতে তাঁর দীনের স্বার্থে প্রয়োজন, আল্লাহর জন্য নয়। আল্লাহ মুখাপেক্ষী হওয়া হতে অনেক উর্ধ্বে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আওয়ামী ৯/৩৭১১)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৫-[৭] সুমামাহ্ ইবনু হাযন আল কুশায়রী (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যখন তাঁর গৃহের কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন উসমান (রাঃ) গৃহের উপর হতে লোকেদের প্রতি তাকিয়ে বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলা এবং ইসলামের হক স্মরণ করিয়ে প্রশ্ন করছি- তোমরা কি এ ব্যাপারে অবহিত আছ যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) হিজরত করে যখন মদীনায় আগমন করলেন, তখন ’রূমার কূপ’ ছাড়া অন্য কোথাও লবণমুক্ত পানি পাওয়া যেত না?
তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যে রূমার কূপটি ক্রয় করে মুসলিমদের অবাধে ব্যবহারের জন্য ওয়াকফ করে দেবে, বিনিময়ে সে জান্নাত তদপেক্ষা উত্তম কূপ অর্জন করবে। তখন আমি উক্ত কূপটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অর্থে ক্রয় করি। অথচ আজ তোমরা আমাকে উক্ত কূপের পানি পান করা হতে বাধা দিচ্ছ। এমনকি আমি সমুদ্রের লোনা পানি পান করছি। লোকেরা বলল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ, আমরা জানি।
এরপর তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ ও ইসলামের হক স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করছি- তোমরা কি জান যে, যখন মসজিদে নাবাবী মুসল্লীদের তুলনায় সংকীর্ণ হয়ে পড়ল, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, যে লোক অমুকের বংশধর হতে এ জমিনটি ক্রয় করে মসজিদখানি বৃদ্ধি করে দেবে, তার বিনিময়ে আল্লাহ তা’আলা তাকে তা হতে উত্তম ঘর জান্নাতে দান করবেন। তখন আমিই তা আমার ব্যক্তিগত অর্থ হতে ক্রয় করি, অথচ আজ তোমরা আমাকে সেই মসজিদে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করা হতেও বাধা দিচ্ছ। উত্তরে লোকেরা বলল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ, আমরা জানি।
অতঃপর তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ ও ইসলামের হক স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করছি- তোমরা কি অবগত আছ যে, ভীষণ কষ্টের অভিযানে (তাবুক যুদ্ধে) সৈন্যদেরকে আমি আমার নিজস্ব সম্পদ হতে যুদ্ধের সামান দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছিলাম? লোকেরা বলল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ, আমরা জানি। তারপর তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ ও ইসলামের হক স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করছি- তোমরা এ কথাটিও অবগত আছ কি, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) মক্কার অনতিদূরে ’সাবীর’ পাহাড়ের উপর দণ্ডায়মান ছিলেন, তাঁর সঙ্গে সেখানে আবূ বকর, ’উমার এবং আমিও ছিলাম। হঠাৎ পাহাড়টি নড়াচড়া করতে লাগল। এমনকি তা হতে কিছু পাথর নিচের দিকে পড়তে লাগল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাতে স্বীয় পা ঠুকে বললেন, স্থির হয়ে যাও, হে সাবার!
তোমার ওপর একজন নবী, একজন সিদ্দীক ও দুজন শহীদ রয়েছে। উত্তরে লোকেরা বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহ! আমরা জানি। অতঃপর তিনি তিনবার বললেন, কাবার প্রভুর শপথ! নিশ্চয় আমি একজন শহীদ লোক। (তিরমিযী, নাসায়ী ও দারাকুত্বনী)

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَن ثُمامة بن حَزْنٍ الْقشيرِي قَالَ: شَهِدْتُ الدَّارَ حِينَ أَشْرَفَ عَلَيْهِمْ عُثْمَانُ فَقَالَ: أنْشدكُمْ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ وَلَيْسَ بِهَا مَاءٌ يُسْتَعْذَبُ غَيْرُ بِئْرِ رُومَةَ؟ فَقَالَ: «مَنْ يَشْتَرِي بِئْرَ رُومَةَ يَجْعَلُ دَلْوَهُ مَعَ دِلَاءِ الْمُسْلِمِينَ بِخَيْرٍ لَهُ مِنْهَا فِي الْجَنَّةِ؟» فَاشْتَرَيْتُهَا مِنْ صُلْبِ مَالِي وَأَنْتُمُ الْيَوْمَ تَمْنَعُونَنِي أَنْ أَشْرَبَ مِنْهَا حَتَّى أَشْرَبَ مِنْ مَاءِ الْبَحْرِ؟ قَالُوا: اللَّهُمَّ نعم. فَقَالَ: أنْشدكُمْ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ الْمَسْجِدَ ضَاقَ بِأَهْلِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ يَشْتَرِي بُقْعَةَ آلِ فُلَانٍ فَيَزِيدُهَا فِي الْمَسْجِد بِخَير مِنْهَا فِي الْجَنَّةِ؟» . فَاشْتَرَيْتُهَا مِنْ صُلْبِ مَالِي فَأَنْتُمُ الْيَوْمَ تَمْنَعُونَنِي أَنْ أُصَلِّيَ فِيهَا رَكْعَتَيْنِ؟ فَقَالُوا: اللَّهُمَّ نعم. قَالَ: أنْشدكُمْ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنِّي جَهَّزْتُ جَيْشَ الْعُسْرَةِ مِنْ مَالِي؟ قَالُوا: اللَّهُمَّ نَعَمْ. قَالَ: أَنْشُدُكُمُ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ عَلَى ثَبِيرِ مَكَّةَ وَمَعَهُ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَأَنَا فَتَحَرَّكَ الْجَبَلُ حَتَّى تَسَاقَطَتْ حِجَارَتُهُ بِالْحَضِيضِ فَرَكَضَهُ بِرِجْلِهِ قَالَ: «اسْكُنْ ثَبِيرُ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ نَبِيُّ وَصِدِّيقٌ وَشَهِيدَانِ» . قَالُوا: اللَّهُمَّ نَعَمْ. قَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ شَهِدُوا وَرَبِّ الْكَعْبَةِ أَنِّي شَهِيدٌ ثَلَاثًا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيّ وَالدَّارَقُطْنِيّ

حسن دون قولہ ’’ ثبیر ‘‘ ، رواہ الترمذی (3703 وقال : حسن) و النسائی (6 / 235 ۔ 236 ح 3638) و الدارقطنی (4 / 196)

وعن ثمامة بن حزن القشيري قال: شهدت الدار حين اشرف عليهم عثمان فقال: انشدكم بالله والاسلام هل تعلمون ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قدم المدينة وليس بها ماء يستعذب غير بىر رومة؟ فقال: «من يشتري بىر رومة يجعل دلوه مع دلاء المسلمين بخير له منها في الجنة؟» فاشتريتها من صلب مالي وانتم اليوم تمنعونني ان اشرب منها حتى اشرب من ماء البحر؟ قالوا: اللهم نعم. فقال: انشدكم بالله والاسلام هل تعلمون ان المسجد ضاق باهله فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من يشتري بقعة ال فلان فيزيدها في المسجد بخير منها في الجنة؟» . فاشتريتها من صلب مالي فانتم اليوم تمنعونني ان اصلي فيها ركعتين؟ فقالوا: اللهم نعم. قال: انشدكم بالله والاسلام هل تعلمون اني جهزت جيش العسرة من مالي؟ قالوا: اللهم نعم. قال: انشدكم بالله والاسلام هل تعلمون ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان على ثبير مكة ومعه ابو بكر وعمر وانا فتحرك الجبل حتى تساقطت حجارته بالحضيض فركضه برجله قال: «اسكن ثبير فانما عليك نبي وصديق وشهيدان» . قالوا: اللهم نعم. قال: الله اكبر شهدوا ورب الكعبة اني شهيد ثلاثا. رواه الترمذي والنساىي والدارقطني حسن دون قولہ ’’ ثبیر ‘‘ ، رواہ الترمذی (3703 وقال : حسن) و النساىی (6 / 235 ۔ 236 ح 3638) و الدارقطنی (4 / 196)

ব্যাখ্যা: (شَهِدْتُ الدَّارَ) আমি ‘উসমান (রাঃ)-এর ঐ বাড়ীতে উপস্থিত ছিলাম যেখানে তাকে বন্দী করা হয়।
(بِئْرَ رُومَةَ) হলো একটি কুপের নাম যা একটি ছোট উপত্যকায় অবস্থিত ছিল। উসমান (রাঃ) কূপটি একশত হাজার দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করেন। ইমাম বাগাবী (রহিমাহুল্লাহ) এ প্রসঙ্গে একটি হাদীস উল্লেখ করেন, যখন মুহাজির সাহাবীগণ মদীনায় আগমন করলেন তখন তাদের পানি পানে খুব কষ্ট হচ্ছিল। আর গিফার গোত্রের এক ব্যক্তির একটি ঝরনা ছিল যাকে রূমাহ্ বলা হত। তিনি তা হতে এক মশক পানি বিক্রি করতেন এক মুদ্দের বিনিময়ে।
নবী (সা.) তাকে বললেন, কূপটি আমার কাছে বিক্রি কর জান্নাতের একটি ঝরনার বিনিময়ে। ব্যক্তিটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল আমার ও আমার পরিবারের জন্য এটাই একমাত্র সম্বল। এ সংবাদ যখন ‘উসমান (রাঃ) এর কাছে পৌছল তখন তিনি ৩৫ হাজার দিরহামের বিনিময়ে কূপটি ক্রয় করলেন। অতঃপর তিনি নবী (সা.) -এর কাছে এসে বললেন, আমার জন্য কি সেই সুযোগ করে দিবেন যে সুযোগ ঐ ব্যক্তিকে দিয়েছিলেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন উসমান (রাঃ) বললেন, আমি কূপটি মুসলিমদের জন্য দান করে দিলাম।
(أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ عَلَى ثَبِيرِ مَكَّةَ) মিসবাহুল লুগাতে (ثَبِيرِ) সম্পর্কে বলা হয়েছে, সাবীর হলো মক্কাহ্ ও মীনার মাঝে অবস্থিত একটি পাহাড় যা মীনা থেকে দেখা যায় এবং মীনা থেকে মক্কাহ অভিমুখী ব্যক্তির হাতের ডানে পড়ে।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) এ প্রসঙ্গে বলেন, সাবীর হলো মুযদালিফার একটি পাহাড়, মীনা অভিমুখী ব্যক্তির হাতের বামে। এটা হলো মক্কাহ্ ও মীনায় অবস্থিত সকল পাহাড়ের চেয়ে বড় ও উঁচু। আর সেখানে অবস্থিত সকল পাহাড়ের নাম সাবীর।
ইমাম ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সাবীর হলো মীনা অভিমুখী ব্যক্তির হাতের বামে।
ইবনু জামা'আহ্ (রহিমাহুল্লাহ) এ প্রসঙ্গে বলেন, মুযদালিফায় অবস্থিত বড় পাহাড় যা ‘আরাফাহ্ অভিমুখী ব্যক্তির হাতের ডানে অবস্থিত।
ইমাম বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সাবীর হলো মক্কার সবচেয়ে বড় পাহাড় যা হুযায়ল গোত্রের একটি ব্যক্তির নামে পরিচিতি লাভ করে, ব্যক্তিটির নাম ছিল সাবির এবং তাকে এখানে দাফন করা হয়।
ইমাম আল জাওহারী, সুহায়লী ও মুত্বাররাযী (রহিমাহুমাল্লাহ) বলেন, সাবীর হলো মক্কার পাহাড়সমূহ হতে একটি পাহাড়। কেউ কেউ বলেন, হেরা পাহাড়ের সামনে অবস্থিত একটি পাহাড়।
উক্ত হাদীস দ্বারা উসমান (রাঃ) -এর মর্যাদা সুস্পষ্ট হয়। আরো স্পষ্ট হয় যে, একজন ব্যক্তি তার মর্যাদার কথা বলতে পারে অপবাদ দূর করা এবং উপকার হাসিলের জন্য, আর এটা অপছন্দ করা হয়েছে গর্ব অহংকারের ক্ষেত্রে। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওযাযী ৯/৩৭১১)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৬-[৮] মুররাহ্ ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে একদিন ফিতনাহ সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছি। আর তা যে অতি কাছাকাছি তিনি তাও বর্ণনা করেছেন। এমন সময় এক লোক মাথার উপর কাপড় দিয়ে সে পথে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি সে লোকের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ঐ যে লোকটি যাচ্ছে, সে ঐ ফিতনার দিনের সঠিক পথের উপর থাকবে। (বর্ণনাকারী মুরারাহ্ বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কথা শুনে আমি লোকটির দিকে গিয়ে দেখলাম, তিনি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)।
অতঃপর ’উসমান-এর চেহারাখানি আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর দিকে ফিরিয়ে বললাম, ইনিই কি তিনি? তিনি (সা.) বললেন, হ্যাঁ।
[তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ এবং ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ]

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَن مرّة بن كَعْب قَالَ: سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذكر الْفِتَن فقر بهَا فَمَرَّ رَجُلٌ مُقَنَّعٌ فِي ثَوْبٍ فَقَالَ: «هَذَا يَوْمئِذٍ على هدى» فَقُمْتُ إِلَيْهِ فَإِذَا هُوَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ. قَالَ: فَأَقْبَلْتُ عَلَيْهِ بِوَجْهِهِ. فَقُلْتُ: هَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث حسن صَحِيح

حسن ، رواہ الترمذی (3704) و ابن ماجہ (11) ۔
(صَحِيح)

وعن مرة بن كعب قال: سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم وذكر الفتن فقر بها فمر رجل مقنع في ثوب فقال: «هذا يومىذ على هدى» فقمت اليه فاذا هو عثمان بن عفان. قال: فاقبلت عليه بوجهه. فقلت: هذا؟ قال: «نعم» . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح حسن ، رواہ الترمذی (3704) و ابن ماجہ (11) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (يقال له مرّة بن كَعْب) তাকরীব গ্রন্থে বলা হয়েছে, ঐ ব্যক্তিটির নাম হলো কা'ব ইবনু মুররাহ্ কিন্তু তাকে বলা হয় মুররাহ্ ইবনু কা'ব আস্ সুলামী।
তিনি একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী ছিলেন। তিনি প্রথমে বাসরায় বসবাস করতেন, পরবর্তীতে জর্ডানে কিছুকাল অবস্থান করেন। তিনি ৫৫ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন।
(فَقُمْتُ إِلَيْهِ) আমি ঐ ব্যক্তির কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম, হঠাৎ দেখি তিনি হলেন ‘উসমান (রাঃ)।
(هَذَا الرجل يَوْ مَئِذٍ عَلَ الْهُدَى) এই মুখ ঢেকে রাখা ব্যক্তি ঐ ফিতনাহ্ সংঘটিত হওয়ার সময় সঠিক পথের উপর অটল থাকবে। যেমন আল্লাহ বলেন, (اُولٰٓئِکَ عَلٰی هُدًی مِّنۡ رَّبِّهِمۡ) “ঐ সকল লোকেরা তাদের রবের পক্ষ হতে সঠিক পথের উপর রয়েছে”- (সূরা আল বাক্বারাহ ২: ৫)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৩৭১৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৭-[৯] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী (সা.) ’উসমান (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেন, হে ’উসমান। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তোমাকে একটি জামা পরিধান করাবেন। পরে লোকেরা তোমার জামাটি খুলে ফেলতে চাইবে, তখন তুমি তাদের দিক জামাটি খুলবে না। [তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ এবং ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, এ হাদীস প্রসঙ্গে একটি দীর্ঘ ঘটনা আছে]

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَا عُثْمَانُ إِنَّهُ لَعَلَّ اللَّهَ يُقَمِّصُكَ قَمِيصًا فَإِنْ أَرَادُوكَ عَلَى خَلْعِهِ فَلَا تَخْلَعْهُ لَهُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ فِي الحَدِيث قصَّة طَوِيلَة

صحیح ، رواہ الترمذی (3705 وقال : حسن غریب) و ابن ماجہ (112) ۔
(صَحِيح)

وعن عاىشة ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «يا عثمان انه لعل الله يقمصك قميصا فان ارادوك على خلعه فلا تخلعه لهم» . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي في الحديث قصة طويلة صحیح ، رواہ الترمذی (3705 وقال : حسن غریب) و ابن ماجہ (112) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (فَإِنْ أَرَادُوكَ عَلَى خَلْعِهِ فَلَا تَخْلَعْهُ لَهُمْ) যদি তারা তোমাকে জোরপূর্বক খিলাফতের আসন হতে নামাতে চায় তখন তুমি খিলাফতের আসন ছেড়ে দিবে না।
কারণ তুমি সঠিক পথে আছো আর তারা হলো ভ্রান্ত তথা বাতিলপন্থী। উক্ত হাদীসের দরুন ‘উসমান (রাঃ) -কে যেদিন অবরোধ করা হয় সেদিন তিনি স্ব-জ্ঞানে, স্ব-ইচ্ছায় খিলাফতের মসনদ হতে পদত্যাগ করেননি।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) এ হাদীস প্রসঙ্গে বলেন, কাপড় দ্বারা খিলাফতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। পরবর্তী শব্দ তার ব্যাখ্যা করছে, (عَلَى خَلْعِهِ) অর্থাৎ কাপড় খোলা বলতে ক্ষমতা হতে অব্যাহতি নেয়া। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৯/৩৭১৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৮-[১০] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) এ ফিতনাহ্ সম্পর্কে আলোচনাকালে ’উসমান (রাঃ)-এর প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন, এ লোকটি ফিতনায় নির্যাতিত অবস্থায় নিহত হবে। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, এ হাদীসটির সনদ হাসান ও গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِتْنَةً فَقَالَ: «يُقْتَلُ هَذَا فِيهَا مَظْلُومًا» لِعُثْمَانَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِسْنَادًا

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3708) * سنان بن ھارون البرجمی ضعیف ضعفہ الجمھور

وعن ابن عمر قال: ذكر رسول الله صلى الله عليه وسلم فتنة فقال: «يقتل هذا فيها مظلوما» لعثمان. رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب اسنادا سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3708) * سنان بن ھارون البرجمی ضعیف ضعفہ الجمھور

ব্যাখ্যা: (ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِتْنَةً) মিরক্বাতুল মাফাতীহের ব্যাখ্যাকার বলেন, অত্যন্ত ভয়াবহ ফিতনার কথা উল্লেখ করলেন।
(يُقْتَلُ هَذَا فِيهَا مَظْلُومًا) এই ব্যক্তিকে সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করা হবে এ কথা শুনে আমি ঐ ব্যক্তির দিকে তাকালাম এবং দেখতে পাই তিনি হলেন ‘উসমান (রাঃ)। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/৩৭১৭)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৭৯-[১১] আবূ সাহলাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উসমান (রাঃ) যে সময় গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন, তখন তিনি আমাকে বলেছেন, আমার প্রতি রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি বিশেষ ওয়াসিয়্যাত করেছেন, অতএব আমি উক্ত ওয়াসিয়্যাতের উপর ধৈর্যধারণ করব। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ]

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عُثْمَان)

وَعَنْ أَبِي سَهْلَةَ قَالَ: قَالَ لِي عُثْمَانُ يَوْمَ الدَّارِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ عَهِدَ إِلَيَّ عَهْدًا وَأَنَا صَابِرٌ عَلَيْهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ

صحیح ، رواہ الترمذی (3711) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي سهلة قال: قال لي عثمان يوم الدار: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قد عهد الي عهدا وانا صابر عليه. رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن صحيح صحیح ، رواہ الترمذی (3711) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (قَدْ عَهِدَ إِلَيَّ عَهْدً) তিরমিযী ব্যাখ্যায় বলেন, 'উসমান (রাঃ) বলেন, আমাকে উপদেশ দেন আমি যেন পদত্যাগ না করি।
সে উপদেশটি ছিল (وَإِنْ أَرَادُوكَ عَلَى خَلْعِهِ فَلَا تَخْلَعْهُ لَهُمْ) অর্থ যদি তারা তোমার ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায় তাহলে তুমি পদত্যাগ করবে না।
(فَأَنَا صَابِرٌ عَلَيْهِ) আমি উক্ত অঙ্গীকারের উপর ধৈর্যধারণ করছি। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/৩৭২০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ সাহলাহ্ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে