পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫৮-[৩] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: জান্নাতীগণ উচ্চ সম্মানের অধিবাসীগণকে এমনিভাবে (মাথা তুলে) পরস্পরকে দেখতে থাকবে, যেমনিভাবে তোমরা আকাশের প্রান্তে উজ্জ্বল তারকা দেখতে পাও। আর আবূ বকর এবং ’উমার তাদের মাঝে হবেন, বরং তদপেক্ষা উচ্চস্থানে। (শারহুস্ সুন্নাহ্, আর ইমাম আবূ দাউদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহও হাদীসটি ভাবার্থ বর্ণনা করেছেন)
* তিরমিযী ৩৬৫৮, ইবনু মাজাহ ৯৬ হাদিসটিকে সহিহ বলা হয়েছে (হাদিসবিডি এডমিন)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِن أهل الْجنَّة ليراءون أهلَ عِلِّيِّينَ كَمَا تَرَوْنَ الْكَوْكَبَ الدُّرِّيَّ فِي أُفُقِ السَّمَاءِ وَإِنَّ أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ مِنْهُمْ وَأَنْعَمَا» . رَوَاهُ فِي «شَرْحِ السُّنَّةِ» وَرَوَى نَحْوَهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
سندہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (14 / 100 ح 3893) و ابوداؤد (3987) و الترمذی (3658 وقال : حسن) و ابن ماجہ (96) * عطیۃ العوفی ضعیف مدلس و للحدیث شواھد ضعیفۃ و روی الطبرانی فی الاوسط (7 / 6 ح 6003) بلفظ : ((ان الرجل من اھل علیین یشرف علی اھل الجنۃ کانہ کوکب دری و ان ابا بکر و عمر منھما و انعما۔)) و سندہ حسن ۔
(ضَعِيف)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫৯-[৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আবূ বকর এবং ’উমার নবী-রাসূলগণ ছাড়া দুনিয়ার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল জান্নাতবাসী প্রৌঢ়দের সরদার হবেন। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ سَيِّدَا كُهُولِ أَهْلِ الْجَنَّةِ مِنَ الْأَوَّلِينَ وَالْآخِرِينَ إِلَّا النَّبِيين وَالْمُرْسلِينَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
حسن ، رواہ الترمذی (3664 وقال : غریب) و للحدیث شواھد وھوبھا حسن ۔
(صَحِيح لشواهده)
ব্যাখ্যা: (أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ سَيِّدَا كُهُولِ أَهْلِ الْجَنَّةِ) كُهُولِ শব্দটি (كُهُولِ) এর (جَمْعُ) যার অর্থ হলো যে ব্যক্তি ত্রিশ অথবা চৌত্রিশ থেকে একান্ন বছর বয়সী তাকে (كُهلً) বলে।
‘আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, জান্নাতের প্রবেশের সময় পরিণত বয়সী হবে এবং তাদের সরদার হবে। কেউ কেউ বলেন, মুসলিমদের মধ্যে যারা পরিণত বয়সে মারা যাবে। আর তারা জান্নাতী হবে এবং তাদের সরদার হবে।
অতঃপর জান্নাতে প্রবেশ করে তাদের সরদার হবেন আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ)। কেননা সেখানে কোন (كُهل) থাকবে না, বরং প্রত্যেকেই ৩৩ বছর বয়সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যেখানে তারা কুহলদের সরদার হবেন সেখানে যুবকদের সর্দার হওয়া আরো বেশি যুক্তিসঙ্গত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
(مِنَ الْأَوَّلِينَ) এ প্রসঙ্গে কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, পূর্ববর্তী সকল জাতিসমূহের ওয়ালীদের তারা সরদার। তারা উভয়ে আসহাবে কাহফদের চেয়ে উত্তম। ফি‘আওনের যুগের মুমিনদের চেয়ে উত্তম এবং খিযির আলায়হিস (আঃ)-এর চেয়ে। যারা তাকে নবী না বলে ওয়ালী বলেন সে মতের উপর ভিত্তি করে।
(وَالْآخِرِينَ) তারা দু'জন এই উম্মতের সকল ওয়ালী, ‘আলিম ও শহীদগণের চেয়ে উত্তম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬০-[৫] আর ইমাম ইবনু মাজাহ (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنهُ
حسن ، رواہ ابن ماجہ (97) ۔
(صَحِيح)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬১-[৬] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) - বলেছেন: আমি জানি না কতদিন আমি তোমাদের মাঝে থাকব। অতএব আমার পরে তোমরা আবূ বকর এবং ’উমার-এর অনুকরণ কর। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَعَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لَا أَدْرِي مَا بَقَائِي فِيكُمْ؟ فَاقْتَدُوا بِاللَّذَيْنِ مِنْ بَعْدِي: أَبِي بكر وَعمر . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
حسن ، رواہ الترمذی (3663) ۔
(حسن)
ব্যাখ্যা: (إِنِّي لَا أَدْرِي مَا بَقَائِي فِيكُمْ؟) এ প্রসঙ্গে ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে مَا টা প্রশ্নবোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। অতএব বাক্যের অর্থ হবে আমি জানি না কত সময় আমি তোমাদের মাঝে অবস্থান করব কম নাকি বেশি।
হাফিয আবূ নাসরুল কসসার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, কেননা তারা উভয়ে (অর্থাৎ আবূ বাকর ও ‘উমার রা.) আল্লাহর প্রসারিত রশি। অতএব যে ব্যক্তি তাদের আঁকড়ে ধরবে সে ব্যক্তি এমন দৃঢ় রশি আঁকড়ে ধরল যার বন্ধন বিচ্ছেদ হওয়ার নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬২-[৭] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন, তখন আবূ বকর এবং ’উমার ছাড়া আর কেউই মাথা উঠাতেন না। তাঁরা উভয়ে তাঁর দিকে চেয়ে হালকা হাসতেন এবং তিনিও তাঁদের প্রতি চেয়ে হালকা হাসতেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ لَمْ يَرْفَعْ أَحَدٌ رَأْسَهُ غَيْرُ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ كَانَا يَتَبَسَّمَانِ إِلَيْهِ وَيَتَبَسَّمُ إِلَيْهِمَا رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3668) * فیہ الحکم بن عطیۃ ضعیف ضعفہ الجمھور و روی عنہ ابوداؤد (الطیالسی) احادیث منکرۃ (راجع تھذیب التھذیب وغیرہ) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (فَلَا يَرْفَعُ إِلَيْهِ أَحَدٌ مِنْهُمْ بَصَرَهُ) সাহাবীদের কেউ শ্রদ্ধায় তার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারতেন না।
(يَتَبَسَّمَانِ إِلَيْهِ وَيَتَبَسَّمُ إِلَيْهِمَا) লুম'আতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এটা হলো স্বভাবগত ভালোবাসা। বিশেষ করে, তাদের উভয়ে যখন একে অপরের দিকে তাকাতেন তখন তারা মুচকি হাসতেন।
মিরকাতুল মাফাতীহে বলা হয়েছে, তাদের উভয়ের মাঝে পূর্ণ প্রফুল্লতাকে রূপকভাবে বলা হয়েছে মুচকি হাসি। হাফিয আদ দিমাশকী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, আমরা নবী (সা.) -এর সামনে এমনভাবে বসে থাকতাম যেন আমাদের মাথার উপর পাখি এসে বসেছে আর আমাদের মাঝে আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) ছাড়া কেউ কথা বলতেন না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আওয়ামী ৯/৩৬৭৭)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬৩-[৮] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী (সা.) হুজরা হতে বের হয়ে এমন অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করলেন যে, আবূ বকর এবং ’উমার (রাঃ) তারা দুজনের একজন তার ডানে এবং অপরজন তাঁর বামে ছিলেন। আর তিনি তাদের উভয়ের হাত ধরে রেখেছিলেন। অতঃপর তিনি (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমাদের এ অবস্থায় উঠানো হবে। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আর তিনি বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ ذَاتَ يَوْمٍ وَدَخَلَ الْمَسْجِدَ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ أَحَدُهُمَا عَنْ يَمِينِهِ وَالْآخَرُ عَنْ شِمَالِهِ وَهُوَ آخِذٌ بِأَيْدِيهِمَا. فَقَالَ: «هَكَذَا نُبْعَثُ يَوْمِ الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3669) [و ابن ماجہ (99)] * فیہ سعید بن مسلمۃ : ضعیف ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (خَرَجَ ذَاتَ يَوْمٍ) কোন একদিন বের হলেন।
(أَحَدُهُمَا عَنْ يَمِينِهِ وَالْآخَرُ عَنْ شِمَالِهِ) কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে একটি আরবী কায়দা প্রয়োগ হয়েছে যাকে ‘আরবীতে বলা হয় (لَفَّ وَنَشْرٌ مُرَتَّبٌ) যার দাবী হলো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
উল্লেখিত হাদীসে বলা হয়েছে তাদের দুজনের একজন তাঁর ডানে বসেছে, শ্রোতা এ কথা শ্রবণ করার সাথে সাথে উপরোক্ত ফায়েদানুযায়ী বুঝতে সক্ষম হবেন যে, ডানদিকে বলা ব্যক্তি হচ্ছেন আবূ বাকর (রাঃ) এবং বামদিকে বলা ব্যক্তি হচ্ছেন ‘উমার ইবনুল খড়াব (রাঃ)।
نُبْعَثُ কবর থেকে বের হব এবং হাশরের মাঠে উপস্থিত হব। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/৩৬৭৮)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬৪-[৯] ’আবদুল্লাহ ইবনু হানত্বাব (রহ.) হতে বর্ণিত। একদিন নবী (সা.) আবূ বকর এবং ’উমার (রাঃ)-কে দেখে বললেন, এ দু’জন হলো কান ও চোখসম। (তিরমিযী, মুরসাল হিসেবে)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَنْطَبٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ فَقَالَ: «هَذَانِ السَّمْعُ وَالْبَصَرُ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ مُرْسلا
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3671) * المطلب بن عبداللہ بن حنطب مدلس و عنعن و للحدیث شواھد ضعیفۃ عند الحاکم (3 / 369 ح 4432) و الخطیب (8 / 460 ، فیہ ابن عقیل ضعیف) وغیرھما
ব্যাখ্যা: (هَذَانِ السَّمْعُ وَالْبَصَرُ) তারা উভয়ে ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির ন্যায় অথবা তারা মুসলিমদের জন্য ও দীনের জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ, যেমন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য কর্ণ ও চক্ষুর গুরুত্ব রয়েছে। অথবা তারা উভয়ে মর্যাদার দিক থেকে আমার নিকট চক্ষু ও কর্ণের মর্যাদায়।
ক্বাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) এ প্রসঙ্গে বলেন, সম্ভবত নবী (সা.) তাদের এ নামে ডেকেছেন সত্যকে অধিক আগ্রহের সাথে শ্রবণ ও পালন করার জন্য এবং আয়াতসমূহের প্রতি প্রফুল্লতার সাথে গবেষণা করা, চিন্তা-ভাবনা করা ও গভীর ভাবনায় নিমজ্জিত হওয়ার দরুন এরূপ বলেছেন।
উক্ত হাদীস হতে এটা প্রমাণিত হয়, যে চক্ষুর চেয়ে কর্ণের মর্যাদা বেশি। এ কথাকে আরো শক্তিশালী করে আল্লাহর বাণী, (وَّ جَعَلَ لَکُمُ السَّمۡعَ وَ الۡاَبۡصَارَ) “তিনি তোমাদের কর্ণ ও চক্ষু দান করেছেন।” (সূরা আন্ নাহল ১৬: ৭৮)
ইমাম সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) এ প্রসঙ্গে জামিউস্ সগীরে বলেন, আবূ বাকর ও ‘উমার আমার নিকট তেমনি মর্যাদাবান যেমনি মানুষের মাথায় কর্ণ ও চক্ষু মর্যাদাবান। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/৩৬৮০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬৫-[১০] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: প্রত্যেক নবীর জন্য আকাশবাসী হতে দু’জন পরামর্শদাতা ছিলেন এবং জমিনবাসী হতে দু’জন পরামর্শদাতা ছিলেন। আকাশবাসী হতে আমার দু’জন পরামর্শদাতা হলেন, জিবরীল ও মীকাঈল আর জমিনবাসী হতে পরামর্শদাতা দুজন হলেন আবূ বকর এবং ’উমার । (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَلَهُ وَزِيرَانِ مِنْ أَهْلِ السَّمَاءِ وَوَزِيرَانِ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ فَأَمَّا وَزِيرَايَ مِنْ أَهْلِ السَّمَاءِ فَجِبْرِيلُ وَمِيكَائِيلُ وَأَمَّا وَزِيرَايَ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ فَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3680 وقال : حسن غریب) * فیہ تلید : رافضی ضعیف و عطیۃ العوفی شیعی ضعیف مدلس ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَلَهُ وَزِيرَانِ مِنْ أَهْلِ السَّمَاءِ وَوَزِيرَانِ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ) উজিরকে উজির বলা হয় এজন্য যে, উজির আমির বা নেতার ভারী বোঝা বহন করে।
অতএব হাদীসের অর্থ হবে যখন নবী (সা.) কোন বিষয়ে চিন্তিত হয়ে পড়তেন তখন আবূ বাকর ও ‘উমার এই উভয়ের সাথে পরামর্শ করতেন যেমন বাদশাহ কোন বিপদে বা কষ্টে পড়লে তার উজিরের সাথে পরামর্শ করে থাকে যেমন আল্লাহ বলেন,
وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ وَزِیۡرًا مِّنۡ اَهۡلِیۡ ﴿ۙ۲۹﴾ هٰرُوۡنَ اَخِی ﴿ۙ۳۰﴾ اشۡدُدۡ بِهٖۤ اَزۡرِیۡ ﴿ۙ۳۱﴾ “আমার পরিবার হতে আমার ভাই হারুনকে আমার উজির বানিয়ে দিন। তার দ্বারা আমাকে শক্তিশালী করুন।” (সূরা ত্ব-হা- ২০: ২৯-৩১)
এ প্রসঙ্গে আন্ নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে, উজির হলো যে ব্যক্তি কারো হতে বোঝা বহন করে তাকে সাহায্য করে। আর আমির হলো যার মতামত ও বোধশক্তি গ্রহণ করা হয়।
(فَأَمَّا وَزِيرَايَ مِنْ أَهْلِ السَّمَاءِ فَجِبْرِيلُ وَمِيكَائِيلُ) এখানে সুস্পষ্টভাবে নবী (সা.) -এর মর্যাদা প্রকাশ পেয়েছে জিবরীল ও মীকাঈল (আঃ)-এর ওপর। এখানে আরো ইঙ্গিত রয়েছে জিবরীল-এর মর্যাদা মীকাঈলএর ওপর।
(وَزِيرَايَ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ فَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ) এখানে সুস্পষ্ট প্রমাণ যে, আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) সকল সাহাবী ও সকল উম্মতের চেয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ। (তুহফাতুল আওয়ামী ৯/৩৬৭৯
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবূ বাকর সিদ্দীক ও ‘উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৬৬-[১১] আবূ বকরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলল, আমি স্বপ্নে দেখেছি, আকাশ হতে যেন একটি পাল্লা অবতীর্ণ হলো। তাতে আপনাকে ও আবূ বকর (রাঃ) -কে ওযন করা হলো, এতে আপনার দিক ভারী হলো। এরপর আবূ বকর (রাঃ) এবং ’উমার (রাঃ)-কে ওযন করা হলো, এতে আবূ বকর-এর দিক ভারী হলো। এরপর ’উমার এবং উসমান (রাঃ)-কে ওযন করা হলো, এতে ’উমার -এর পাল্লা ভারী হলো। অতঃপর পাল্লাটি উঠিয়ে নেয়া হলো। (বর্ণনাকারী বলেন) এ কথাটি শুনে রাসূলুল্লাহ (সা.) চিন্তিত হয়ে পড়লেন। অর্থাৎ এ স্বপ্নের ঘটনা রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিল। অতঃপর তিনি (সা.) বললেন, এটা খিলাফতে নুবুওয়্যাত, তারপর আল্লাহ তা’আলা যাকে চাবেন, রাজত্ব দান করবেন। (তিরমিযী ও আবূ দাউদ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابِ مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا)
إِن سلم من عنعنة الْحسن الْبَصْرِيّ) وَعَن أبي بكرَة أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ كَأَنَّ مِيزَانًا نَزَلَ مِنَ السَّمَاءِ فَوُزِنْتَ أَنْتَ وَأَبُو بَكْرٍ فَرَجَحْتَ أَنْتَ وَوُزِنَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فَرَجَحَ أَبُو بَكْرٍ وَوُزِنَ عُمَرُ وَعُثْمَانُ فَرَجَحَ عُمَرُ ثُمَّ رُفِعَ الْمِيزَانُ فَاسْتَاءَ لَهَا رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْنِي فَسَاءَهُ ذَلِكَ. فَقَالَ: «خِلَافَةُ نُبُوَّةٍ ثُمَّ يُؤْتِي اللَّهُ الْمُلْكَ مَنْ يَشَاءُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2287 وقال : حسن صحیح) و ابوداؤد (4634) * الحسن البصری مدلس و عنعن
ব্যাখ্যা: (فَرَجَحَ عُمَرُ ثُمَّ رُفِعَ الْمِيزَانُ) দাড়িপাল্লা উঠিয়ে নেয়ার ব্যাখ্যা হলো ধারাবাহিক বিষয়ের অবনতি ঘটার জন্য এবং ‘উমার (রাঃ)-এর খিলাফতকালের পর হতে ফিতনার আবির্ভাব ঘটার প্রতি ইঙ্গিত। উসমান ও ‘আলী (রাঃ) মাপা হয়নি, কেননা আলী (রাঃ) -এর খিলাফত নিয়ে সাহাবীরা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। কেউ ছিলেন আলী (রাঃ)-এর সাথে, আবার কেউ মু'আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর সাথে, অর্থাৎ খিলাফতের কোন স্থিরতা ছিল না। ইবনু মালিক (রহিমাহুল্লাহ) উক্ত কথাগুলো তুলে ধরেন। তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ)-ও এরূপ বলেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)