পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ওফাতের পর সাহাবীদের মক্কাহ্ হতে হিজরত করা সম্পর্কে

৫৯৬২-[৭] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদীনায় আগমন করলেন, তখন হাবশী লোকেরা তাঁর আগমনে উৎফুল্ল হয়ে নিজ বর্শা দিয়ে খেল-তামাশা প্রদর্শন করল। (আবূ দাউদ)
দারিমীর এক বর্ণনাতে আছে, আনাস (রাঃ) বলেন: যেদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) (মদীনায়) আমাদের মাঝে আগমন করলেন, সেদিনের তুলনায় অধিক উত্তম ও উজ্জ্বলতম দিন আমি কখনো দেখতে পাইনি এবং যেদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) ইন্তিকাল করেছেন, সেদিনের তুলনায় অধিক মন্দ ও তিমিরময় দিন আমি দেখতে পাইনি।
তিরমিযীর বর্ণনায় আছে, আনাস (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) যেদিন মদীনায় আগমন করেছেন, সেদিন তার সবকিছু আলোকিত হয়ে যায়। আর যেদিন তিনি ইন্তিকাল করেছেন, সেদিন তার সবকিছু আধারে ঢেকে যায়। (তিনি আরো বলেছেন,) রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে দাফন করে আমরা আমাদের হাত হতে মাটি ঝেড়ে না নিতেই আমরা স্বীয় অন্তরে উদাসীনতা অনুভব করতে লাগলাম।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب هِجْرَة أَصْحَابه صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من مَكَّة ووفاته)

عَن أَنَسٍ قَالَ: لَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ لَعِبَتِ الْحَبَشَةُ بِحِرَابِهِمْ فَرَحًا لِقُدُومِهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَفِي رِوَايَةِ الدَّارِمِيِّ (صَحِيح) قَالَ: مَا رَأَيْتُ يَوْمًا قَطُّ كَانَ أَحْسَنَ وَلَا أَضْوَأَ مِنْ يَوْمٍ دَخَلَ عَلَيْنَا فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا رَأَيْت يَوْمًا كَانَ أقبح وأظلم مِنْ يَوْمٍ مَاتَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيِّ قَالَ: لَمَّا كَانَ الْيَوْمُ الَّذِي دَخَلَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ أَضَاءَ مِنْهَا كُلُّ شَيْءٍ فَلَمَّا كَانَ الْيَوْمُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ أَظْلَمَ مِنْهَا كُلُّ شَيْءٍ وَمَا نَفَضْنَا أَيْدِيَنَا عَنِ التُّرَابِ وَإِنَّا لَفِي دَفْنِهِ حَتَّى أَنْكَرْنَا قُلُوبنَا

اسنادہ صحیح ، رواہ ابوداؤد (4923) و الدارمی (1 / 41 ح 89) و الترمذی (3618 وقال : صحیح غریب) * سند ابی داود صحیح علی شرط الشیخین و سند الدارمی صحیح و سند الترمذی : حسن ۔
(صَحِيح)

عن انس قال: لما قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة لعبت الحبشة بحرابهم فرحا لقدومه. رواه ابو داود وفي رواية الدارمي (صحيح) قال: ما رايت يوما قط كان احسن ولا اضوا من يوم دخل علينا فيه رسول الله صلى الله عليه وسلم وما رايت يوما كان اقبح واظلم من يوم مات فيه رسول الله صلى الله عليه وسلم وفي رواية الترمذي قال: لما كان اليوم الذي دخل فيه رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة اضاء منها كل شيء فلما كان اليوم الذي مات فيه اظلم منها كل شيء وما نفضنا ايدينا عن التراب وانا لفي دفنه حتى انكرنا قلوبنا اسنادہ صحیح ، رواہ ابوداؤد (4923) و الدارمی (1 / 41 ح 89) و الترمذی (3618 وقال : صحیح غریب) * سند ابی داود صحیح علی شرط الشیخین و سند الدارمی صحیح و سند الترمذی : حسن ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: নবী (সা.) -এর মদীনায় আগমনের কারণে মদীনাবাসী খুব খুশি হয়েছিলেন। আর তাদের শহর আনন্দে আলোকিত হয়ে উঠেছিল। আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই আলোকিত হওয়াটা ছিল অনুভূত আলো। তারা তাদের মন দিয়ে অনুভব করেছিল।
আর নবী (সা.) যেদিন মারা যান সেদিন তাদের সবকিছু অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। কারণ নবী (সা.) - এর নুবুওয়্যাতের আলো ছিল বাহ্যিক ও গোপনভাবে সারা পৃথিবীর আলোস্বরূপ, আর মদীনাবাসী ছিল সেই আলোর সব থেকে কাছে।
“আমরা আমাদের অন্তরে উদাসীনতা অনুভব করতে লাগলাম।” অর্থাৎ রাসূল (সা.) -এর মৃত্যুর কারণে আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হতে লাগল। আর আমাদের মধ্যে এক ধরনের অন্ধকার অনুভূত হতে লাগল। ওয়াহীর বন্ধের কারণে আমরা আমাদের হৃদয়ে নম্রতা, দয়া ও আমাদের অন্তরে থাকা নূরকে খুঁজে পাচ্ছিলাম।
আর আমরা তার উপস্থিত থাকার বরকতকে হারিয়ে ফেললাম। তুরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তারা তাদের হৃদয়ে যে বিশুদ্ধতা ও দয়া ওয়াহী চলাকালীন সময়ে পেত তা হারিয়ে ফেলল। দীর্ঘদিন ধরে রাসূল (সা.) -এর যে শিক্ষা ও শক্তি ছিল তা তারা হারিয়ে ফেলল। আর তিনি এটা বলেননি যে, তারা যে সত্যের উপর ছিলেন তা তারা পাননি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ওফাতের পর সাহাবীদের মক্কাহ্ হতে হিজরত করা সম্পর্কে

৫৯৬৩-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ইন্তিকাল হলো, তখন তাঁর দাফনের ব্যাপারে সাহাবীদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিল। তখন আবূ বকর সিদ্দিক (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে এ ব্যাপারে একটি কথা শুনেছি। তিনি (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবীকে যে স্থানে দাফন করা পছন্দ করেন, সে স্থানে তাঁর আত্মা কবয করেন। অতএব, রাসূল (সা.) -কে তাঁর বিশ্রামস্থলেই তোমরা দাফন কর। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب هِجْرَة أَصْحَابه صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من مَكَّة ووفاته)

وَرُوِيَ صَحِيحا من وَجه آخر) وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: لَمَّا قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اخْتَلَفُوا فِي دَفْنِهِ. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا. قَالَ: «مَا قَبَضَ اللَّهُ نَبِيًّا إِلَّا فِي الْمَوْضِعِ الَّذِي يحبُ أَن يُدْفَنَ فِيهِ» . ادفنوه فِي موضعِ فراشِهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

صحیح ، رواہ الترمذی (1018 وقال : غریب

وروي صحيحا من وجه اخر) وعن عاىشة قالت: لما قبض رسول الله صلى الله عليه وسلم اختلفوا في دفنه. فقال ابو بكر: سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم شيىا. قال: «ما قبض الله نبيا الا في الموضع الذي يحب ان يدفن فيه» . ادفنوه في موضع فراشه. رواه الترمذي صحیح ، رواہ الترمذی (1018 وقال : غریب

ব্যাখ্যা: (اخْتَلَفُوا فِي دَفْنِهِ) “তাঁর দাফনের ব্যাপারে সাহাবীদের মধ্যে মতভেদ দেখা গেল।” অর্থাৎ কোন জায়গায় তার কবর হবে, তাকে কোথায় দাফন করা হবে তা নিয়ে। বলা হলো, তাকে মাসজিদে নাবাবীতে কবর দেয়া হোক। কেউ বলল, তাকে তার সাহাবীদের মাঝে বাকী'তে কবর দেয়া হোক। কেউ বলল, তাকে মক্কায় কবর দেয়া হোক। কেউ বলল, তার পিতা ইবরাহীম-এর নিকট তাকে দাফন করা হোক। সালিম ইবনু ‘উবায়দ থেকে তিরমিযী তার শামায়িল কিতাবে বর্ণনা করেছেন, তারা তাঁর বহু দিনের সাথি আবূ বাকর (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, তাঁকে কি কবর দেয়া যাবে? তিনি বললেন, হ্যা। তারা বলল, কোথায়? তিনি বললেন, যে জায়গা থেকে আল্লাহ তাঁর রূহ নিয়েছেন। কারণ আল্লাহ তাঁর রূহকে কোন পবিত্র স্থান ব্যতীত গ্রহণ করেননি। তখন তারা মনে করল, তিনি সত্য কথা বলছেন। আর তিনি এ ব্যাপারে যে হাদীস বলেছেন, এটা তার বিপরীত নয়।  (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে