পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫১-[১৫] ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শেষ যামানায় আমার উম্মাতের ওপর তাদের শাসকদের পক্ষ থেকে কঠিন বিপদ আপতিত হবে। ঐ বিপদ থেকে শুধু সেসব লোকই রেহাই পাবে, যারা আল্লাহ তা’আলার দীন সম্পর্কে জ্ঞাত থাকবে। সে তার নিজের মুখ, হাত ও অন্তর দ্বারা সত্যকে প্রকাশ করার জন্য জিহাদ করবে। এ ব্যক্তির সৌভাগ্য তার জন্য অগ্রগামী হয়েছে। অন্য আরেক ব্যক্তি হবে, যে আল্লাহ তা’আলার দীন সম্পর্কে জানবে, এতে বিশ্বাস স্থাপন করবে। অন্য এক ব্যক্তি হবে, যে আল্লাহর দীন সম্পর্কে জানবে; কিন্তু চুপচাপ থাকবে। যখন কাউকে কোন নেক কাজ করতে দেখবে, তখন তাকে ভালোবাসবে। আর যখন কাউকে অসৎকাজ করতে দেখবে, তখন তাকে ঘৃণা করবে। এ ব্যক্তিও অন্তরে ভালোবাসা ও বিদ্বেষভাব লুকায়িত রাখার কারণে পরিত্রাণ পাবে।[1]
হাদীসটি দু’টি কারণে য‘ঈফ : ১ম- ইনক্বিতা‘ জাবির ইবনু যায়দ-এর মাঝে। আর ২য়টি- য‘ঈফ সালিম আল মুরাদী। আর সে হলো ইবনু ‘আবদুল ওয়াহিদ, অথবা ইবনুল আ‘লা অথবা ‘আবদুল ‘আলা; তাকে ইমাম নাসায়ী ও ইবনু মা‘ঈন য‘ঈফ বলেছেন। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ৬৭২৫।
عَنْ عُمَرَ
بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُ تُصِيبُ أُمَّتِي فِي آخِرِ الزَّمَانِ مِنْ سُلْطَانِهِمْ شَدَائِدُ لَا يَنْجُو مِنْهُ إِلَّا رَجُلٌ عَرَفَ دِينَ اللَّهِ فَجَاهَدَ عَلَيْهِ بِلِسَانِهِ وَيَدِهِ وَقَلْبِهِ فَذَلِكَ الَّذِي سَبَقَتْ لَهُ السَّوَابِقُ وَرَجُلٌ عَرَفَ دِينَ اللَّهِ فَصَدَّقَ بِهِ وَرَجُلٌ عَرَفَ دِينَ اللَّهِ فَسَكَتَ عَلَيْهِ فَإِنْ رَأَى مَنْ يَعْمَلُ الْخَيْرَ أَحَبَّهُ عَلَيْهِ وَإِنْ رَأَى مَنْ يَعْمَلُ بِبَاطِلٍ أَبْغَضَهُ عَلَيْهِ فَذَلِكَ يَنْجُو على إبطانه كُله»
পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫২-[১৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ মহীয়ান-গরীয়ান জিবরীল (আ.)-কে আদেশ করেন যে, অমুক শহর বা জনপদটিকে সেটার বাসিন্দাসহ উল্টিয়ে দাও। তখন জিবরীল (আ.)বললেনঃ হে প্রভু! ঐ জনপদে তোমার অমুক বান্দা রয়েছে, যে এক মুহূর্ত তোমার নাফরমানি করেনি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন, তার ও তাদের সকলের ওপর শহরটিকে উল্টিয়ে দাও। কারণ ঐ ব্যক্তির মুখমণ্ডলে পাপীদের পাপাচার দেখে আমার সন্তুষ্টির জন্য এক মুহূর্তের জন্যও পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ- সে পাপীদের পাপ এক মুহূর্তের জন্যও খারাপ মনে করেনি।[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘আম্মার ইবনু সায়ফ’’ নামের বর্ণনাকারী য‘ঈফ। ইমাম যাহাবী তাকে য‘ঈফ বলেছেন, আর ইমাম দারাকুত্বনী তাকে মাতরূক বলেছেন। আর ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু ইসহাকব আল আত্বার নামের বর্ণনাকারী সম্পর্কেও ইমাম যাহাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তারা তাকে য‘ঈফ বলেছেন। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ১৯০৪, হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৯১।
وَعَنْ جَابِرٍ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَوْحَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلى جبريلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: أَنِ اقْلِبْ مَدِينَةَ كَذَا وَكَذَا بِأَهْلِهَا قَالَ: يارب إِنَّ فِيهِمْ عَبْدَكَ فُلَانًا لَمْ يَعْصِكَ طَرْفَةَ عَيْنٍ . قَالَ: فَقَالَ: اقْلِبْهَا عَلَيْهِ وَعَلَيْهِمْ فَإِنَّ وَجهه لم يتمعر فِي سَاعَة قطّ
পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫৩-[১৭] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ মহীয়ান-গরীয়ান কিয়ামতের দিন বান্দাকে জিজ্ঞেস করবেন এবং বলবেন, যখন শারী’আত বিরোধী কাজ সংঘটিত হতে দেখছিলে, তখন তোমার কি হয়েছিল যে, তুমি এতে নিষেধ করতে পারনি? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ বান্দাকে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে প্রমাণ শিখিয়ে দেয়া হবে। যখন আল্লাহ তা’আলা তাকে ক্ষমা করার মর্যি করবেন, তখন সে বলবে, হে আল্লাহ! আমি মানুষের জুলুম-অত্যাচারের ভয়ে ভীত ছিলাম এবং তোমারই ক্ষমার আশা পোষণ করেছিলাম। [ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখিত হাদীস তিনটি শু’আবুল ঈমানে বর্ণনা করেছেন।][1]
وَعَنْ أَبِي
سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَسْأَلُ الْعَبْدَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ: مَا لَكَ إِذَا رَأَيْتَ الْمُنْكَرَ فَلَمْ تُنْكِرْهُ؟ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَيُلَقَّى حُجَّتَهُ فَيَقُولُ: يَا رَبِّ خِفْتُ النَّاسَ وَرَجَوْتُكَ «. رَوَى الْبَيْهَقِيُّ الْأَحَادِيثَ الثَّلَاثَةَ فِي» شُعَبِ الْإِيمَانِ
ব্যাখ্যাঃ (فَيَقُولُ: يَا رَبِّ خِفْتُ النَّاسَ وَرَجَوْتُكَ) লোকটির এই উত্তরের মধ্যে আল্লাহর অনুগ্রহের উপর নির্ভরশীল থাকা, অপারগতা প্রকাশ এবং অন্যায়ের স্বীকৃতি পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এমনও হতে পারে যে, দুষ্ট লোকেদের দাপটের কারণে ভয়ে সে প্রতিবাদ করতে পারেনি, ফলে সে অক্ষম ছিল। ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ ধরনের ব্যক্তি শারী‘আত সমর্থিত অবস্থার সম্মুখীন, তাই তার কোন অপরাধ নেই। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫৪-[১৮] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সেই পবিত্র সত্তার কসম! যাঁর হাতে মুহাম্মাদ-এর প্রাণ, কিয়ামতের দিন সৎ ও অসৎ কাজগুলোকে বিশেষ আকৃতিতে তৈরি করা হবে এবং তাদের সম্মুখে উপস্থাপন করা হবে। ভালো কাজগুলো তার ’আমলকারীকে সুসংবাদ দেবে এবং ভালো ফলাফলের অঙ্গীকার করবে। আর মন্দ কাজগুলো তার ’আমলকারীকে বলবে, দূর হয়ে যাও, দূর হয়ে যাও। প্রকৃতপক্ষ তারা দূর হয়ে যাওয়ার শক্তি পাবে না; বরং তার সাথেই জড়িয়ে থাকবে। (আহমাদ ও বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমানে’’ বর্ণনা করেছেন।)[1]
হাদীসিট য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর বর্ণনাকারীগুলো বিশ্বস্ত তবে ‘‘কতাদাহ্ ও হাসান বাসরী’’ মুদাল্লিস রাবী। আর তারা দু’ জনের ‘আন দ্বারা হাদীস বর্ণনা করেছে। দেখুন- হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৯১ পৃঃ।
وَعَنْ أَبِي
مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ الْمَعْرُوفَ وَالْمُنْكَرَ خَلِيقَتَانِ تُنْصَبَانِ لِلنَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَمَّا الْمَعْرُوفُ فَيُبَشِّرُ أَصْحَابَهُ وَيُوعِدُهُمُ الْخَيْرَ وَأَمَّا الْمُنْكَرُ فَيَقُولُ: إِلَيْكُمْ إِلَيْكُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ لَهُ إِلَّا لُزُومًا «. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيّ فِي» شعب الإِيمان