পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাসি
৪৭৪৫-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমনভাবে অট্টহাসি দিতে দেখিনি যে, তাঁর জিহবামূল দেখা গেছে; বরং তিনি কেবল মুচকি হাসতেন। (বুখারী)[1]
بَابُ الضِّحْكِ
عَن عائشةرضي اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْتَجْمِعًا ضَاحِكًا حَتَّى أَرَى مِنْهُ لَهَوَاتِهِ إِنَّمَا كَانَ يتبسم. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ উচ্চশব্দে, স্বশব্দে হাসা ও কাউকে উপহাস করা ঠিক না। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ অভ্যাস ছিল না। এ অভ্যাস কাফিরদের ছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসি ছাড়া স্বশব্দে হাসতেন না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাসি
৪৭৪৬-[২] জারীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হতে আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কোন অবস্থাতেই তাঁর কাছে আসতে নিষেধ করেননি। যখনই তিনি আমাকে দেখতেন, মুচকি হাসতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الضِّحْكِ
وَعَن جرير قَالَ: مَا حَجَبَنِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْذُ أَسْلَمْتُ وَلَا رَآنِي إِلَّا تَبَسَّمَ. مُتَّفق عَلَيْهِ
ব্যাখ্যাঃ (ضحك) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মুচকি হাসা, এ কথাটুকু রয়েছে তিরমিযী হাদীস গ্রন্থে, আর এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিপূর্ণ উত্তম চরিত্র। ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ গ্রন্থে এ হাদীস উল্লেখ করেন এবং সহীহ মুসলিম ও মুসনাদে আহমাদে রয়েছে। [সম্পাদক]
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাসি
৪৭৪৭-[৩] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে স্থানে ফজরের সালাত আদায় করতেন সূর্য পূর্ণরূপে উদয় না হওয়া পর্যন্ত ঐ স্থান হতে উঠতেন না। সূর্য উদয় হলে উঠে দাঁড়াতেন। আর ইত্যবসরে কথাবার্তা বলতেন এবং জাহিলিয়্যাত যুগের কাজ-কারবারের আলোচনা করে সাহাবায়ে কিরাম হাসতেন এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও মুচকি হাসতেন। (মুসলিম)[1]তিরমিযী’র এক বর্ণনায় আছে যে, সাহাবায়ে কিরাম কবিতা আবৃত্তিও করতেন।
بَابُ الضِّحْكِ
وَعَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَقُومُ مِنْ مُصَلَّاهُ الَّذِي يُصَلِّي فِيهِ الصُّبْحَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَإِذَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ قَامَ وَكَانُوا يَتَحَدَّثُونَ فَيَأْخُذُونَ فِي أَمْرِ الْجَاهِلِيَّة فيضحكون ويبتسم صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ. وَفِي رِوَايَة لِلتِّرْمِذِي: يتناشدون الشِّعْرَ
ব্যাখ্যাঃ ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ সময় ফজরের সালাতের পর জিকর করা মুস্তাহাব। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের বসার স্থানে সার্বক্ষণিক থাকতেন যতক্ষণ পর্যন্ত কোন সমস্যা না হত।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সালাফগণ এই সুন্নাতের উপর সর্বদা ‘আমল করতেন। তারা সংক্ষিপ্ত করতেন এ ব্যাপারে জিকর ও দু‘আর উপর। এমনকি সূর্য উদয় হত।
ইমাম মুসলিম (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর গ্রন্থে এবং ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর সুনানে তুহফাতুল আহ্ওয়াযীতে রয়েছে, জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এক শতকের অধিকবার বসেছি, অতঃপর সাহাবীরা কবিতা পাঠ করতেন এবং তারা উল্লেখ করতেন, জাহিলিয়্যাতের অনেক বিষয় এবং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন চুপ থাকতেন এবং অনেক সময় তাদের সঙ্গে মুচকি হাসতেন।
শিক্ষণীয় : আমরা ফজরের সালাত আদায় করার পর হতে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত যিকরে ও দু‘আতে লিপ্ত থাকব এবং পরে সম্ভব হলে সূর্য উঠার পর দুই রাক্‘আত ইশরাকের সালাত আদায় করব। [সম্পাদক]