পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
أطعمة (আত্ব’ইমাহ্) শব্দটি বহুবচন। এর একবচন হল طَعَامٌ (ত্ব’আ-মুন)। অর্থ হলো, যে জিনিস খাওয়া বা ভক্ষণ করা হয়ে থাকে। এখানে أطعمة (আত্ব’ইমাহ্) দ্বারা ভক্ষণীয় ও পানীয় উভয় ধরনের বস্তু উদ্দেশ্য। কিন্তু ভক্ষণীয় জিনিসকে প্রাধান্য দিয়ে লেখক শিরোনাম তৈরি করেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
মূলত এ অধ্যায়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব খাবার খেয়েছেন, পান করেছেন অথবা খাননি, পানও করেননি তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর খাবার ও পান করার আদব বা শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।
[সম্পাদক]
৪১৫৯-[১] ’উমার ইবনু আবূ সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একজন বালক হিসেবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তত্ত্বাবধানে ছিলাম। আমার হাত খাওয়ার পাত্রের চতুর্দিকে পৌঁছত, তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ ’বিসমিল্লাহ’ বলে ডান হাতে খাও এবং নিজের সম্মুখ হতে খাও। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
عَن عمر بن أبي سَلمَة قَالَ: كُنْتُ غُلَامًا فِي حِجْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَتْ يَدِي تَطِيشُ فِي الصفحة. فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «سم الله وكل يَمِينك وكل مِمَّا يليك»
ব্যাখ্যাঃ (كُنْتُ غُلَامًا فِىْ حِجْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তত্ত্বাবধানে আমি প্রতিপালিত এক শিশু ছিলাম। অর্থাৎ আমার বাবা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল আসাদ মৃত্যুবরণ করার পর আমার মা উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিয়ে করেন। আর আমি শিশু অবস্থায় থাকার দরুন আমার মায়ের কাছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তত্ত্বাবধানে পালিত এক শিশু ছিলাম।
(وَكَانَتْ يَدِىْ تَطِيشُ فِى الصَّفْحَةِ) আমার হাত পাত্রের চতুস্পার্শ্বে ঘুরাঘুরি করত। অর্থাৎ আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে খেতে বসে পাত্রের সকল প্রান্ত থেকেই খাবার নিয়ে খেতাম।
(سَمِّ اللهَ وَكُلْ بِيَمِيْنِكَ) ‘‘তুমি ‘বিসমিল্লা-হ’ বল এবং ডান হাত দিয়ে খাও।’’ অর্থাৎ ‘বিসমিল্লা-হ’ বলে খাবার শুরু করবে এবং ডান হাত দিয়ে খাবার খাবে।
(وَكُلْ مِمَّا يَلِيْكَ) ‘‘তোমার পার্শ্ব থেকে খাও’’ অর্থাৎ এক সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি খাবার বসলে তোমার পার্শ্ব থেকে খাবার খাবে। অন্যের পার্শ্ব থেকে খাবারের দ্রব্য নিবে না। কেননা তা ভদ্রতার লঙ্ঘন এবং খারাপ অভ্যাস। বিশেষ করে খাবার যদি ভিজা বা তরল জাতীয় হয়। তবে খাবার যদি শুকনা জাতীয় হয় তাহলে ভিন্ন কথা।
হাদীসের শিক্ষা : ১. ‘বিসমিল্লা-হ’ বলে খাবার শুরু করতে হবে। ২. ডান হাত দিয়ে খেতে হবে ও পান করতে হবে। ৩. একই পাত্রে একাধিক ব্যক্তি খাবার খেলে প্রত্যেকেই নিজের পার্শ্ব থেকে খাবার খাবে। অন্যের পার্শ্ব থেকে খাবারের দ্রব্য নিবে না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩৭৬; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০২২)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬০-[২] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শয়তান সে খাদ্যকে নিজের জন্য হালাল করে নেয়, যদি না তাতে বিসমিল্লা-হ বলা হয়। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن حُذَيْفَة قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّيْطَانَ يَسْتَحِلُّ الطَّعَامَ أَنْ لَا يُذْكَرَ اسْم الله عَلَيْهِ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ الشَّيْطَانَ يَسْتَحِلُّ الطَّعَامَ) ‘‘শয়তান খাদ্যকে হালাল মনে করে।’’ অর্থাৎ শয়তানের পক্ষ খাবার খাওয়া সম্ভব হয় অথবা আল্লাহর সন্তুষ্টি নেই এমন পদ্ধতিতে খাবারের মধ্যে তার কার্য পরিচালনা করে।
(أَنْ لَا يُذْكَرَ اسْمَ اللهِ عَلَيْهِ) ‘‘খাদ্যের উপর আল্লাহর নাম স্মরণ না করার কারণে।’’ অর্থাৎ খাবার খেতে শুরু করার সময় ‘বিসমিল্লা-হ’ না বললে অথবা ভুলক্রমে শুরুতে ‘বিসমিল্লা-হ’ না বলা হলেও স্মরণ হওয়ার পর ‘বিসমিল্লা-হ’ না বললে। তূরিবিশতী বলেনঃ খাবারের শুরুতে ‘বিসমিল্লা-হ’ বলা না হলে শয়তান তার বারাকাত নষ্ট করে দেয়।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘বিসমিল্লা-হ’ না বলে খাবার শুরু করার মধ্যে শয়তানের জন্য খাবার গ্রহণ করার অনুমতি রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। ‘বিসমিল্লা-হ’ বলাটা তার জন্য বাধা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০১৭)
‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যদি একদল লোক একসঙ্গে খাবার খায় এবং তাদের মধ্য থেকে কোন একব্যক্তি ‘বিসমিল্লা-হ’ বলে খাবার শুরু করে তাহলে শয়তান সেই খাবারে অংশগ্রহণ করতে পারে না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৬২)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬১-[৩] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি গৃহে প্রবেশ করে এবং প্রবেশকালে ও খাওয়ার সময় আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন শয়তান (তার অনুসারীদেরকে) বলে, এ ঘরে তোমাদের জন্য রাত্রি যাপনের সুযোগ নেই এবং রাতে খাবারও নেই। আর যখন সে (ঘরে) প্রবেশ করে এবং প্রবেশকালে আল্লাহর নাম নেয় না, তখন শয়তান বলে, তোমরা রাত্রি যাপনের স্থান পেয়েছ। আর যখন সে খাওয়ার সময়ও আল্লাহর নাম নেয় না, তখন সে বলে, তোমরা রাত্রি যাপন ও রাতের খাওয়া উভয়টির সুযোগ লাভ করেছ। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ فَذَكَرَ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ وَعِنْدَ طَعَامِهِ قَالَ الشَّيْطَانُ: لَا مَبِيتَ لَكُمْ وَلَا عَشَاءَ وَإِذَا دَخَلَ فَلَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ قَالَ الشَّيْطَانُ: أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيتَ وَإِذَا لَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ طَعَامِهِ قَالَ: أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيتَ وَالْعَشَاءَ . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (لَا مَبِيتَ لَكُمْ وَلَا عَشَاءَ) ‘‘তোমাদের জন্য রাত যাপনের জায়গা নেই এবং রাতের খাবারও নেই’’। অর্থাৎ এ বাড়ীতে তোমাদের বাসস্থান ও আহার কোনটাই জুটবে না।
কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ শয়তান তার অনুগামীদের লক্ষ্য করে বলে, এ বাড়ীতে তোমাদের জন্য রাতযাপন এবং আহার কোনটাই সহজলভ্য হবে না। কেননা তারা তাদের জান ও মাল সবই আল্লাহকে স্মরণ করার মাধ্যমে সংরক্ষণ করেছে। মানুষ যখন আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ হয়ে গাফেল হয়ে যায়, তখনই শয়তান তাদের থেকে সুযোগ লাভ করে থাকে। আর মানুষ যখন আল্লাহকে স্মরণ করার মাধ্যমে সতর্ক ও সজাগ থাকে তখন তাদেরকে বিপথগামী করতে পারে না। ধোঁকাও দিতে পারে না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
হাদীসের শিক্ষা : বাড়ীতে প্রবেশ এবং খাদ্য গ্রহণের সময় ‘বিসমিল্লা-হ’ বলা মুস্তাহাব। (শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০১৮)
যদিও সর্বাবস্থায় বাড়ীতে প্রবেশ ও খাদ্যগ্রহণের জন্য ‘বিসমিল্লা-হ’ বলা মুস্তাহাব তথাপি হাদীসে রাত ও খাদ্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ এই যে, অধিকাংশ মানুষই রাতে ঘরে ফিরে এবং আহার করে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৬১)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬২-[৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কিছু খায়, তখন সে যেন ডান হাতে খায়। আর যখন পান করে তখন যেন ডান হাতে পান করে। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَأْكُلْ بِيَمِينِهِ وَإِذَا شَرِبَ فَلْيَشْرَبْ بِيَمِينِهِ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (فَلْيَأْكُلْ بِيَمِينِه وَإِذَا شَرِبَ فَلْيَشْرَبْ بِيَمِينِه) ‘‘সে যেন ডান হাতে খায় এবং ডান হাতে পান করে’’। হাদীসের এ অংশ প্রমাণ করে যে, ডান হাত দ্বারা পানাহার করা ওয়াজিব। যা কতিপয় বিজ্ঞজনের অভিমত। সহীহ মুসলিমে সালামাহ্ ইবনুল আকওয়া‘ বর্ণিত একটি হাদীস এ অভিমতকে সমর্থন করে। তাতে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বাম হাত দ্বারা খেতে দেখে তাকে বললেনঃ তোমার ডান হাত দ্বারা খাও, সে বললো আমি (ডান হাত দ্বারা) খেতে পারি না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি আর পারবেও না। এরপর লোকটি তার ডান হাত আর মুখে তুলতে পারেনি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
তবে অসুস্থতা বা আহত হওয়ার কারণে যদি ডান হাত দিয়ে খেতে না পারে তাহলে বাম হাত দিয়ে পানাহার করা বৈধ। (শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০১৯)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৩-[৫] উক্ত রাবী [’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের কেউই যেন বাম হাতে না খায় এবং সে (বাম) হাতে পানও না করে। কেননা শয়তান তার বাম হাতে খায় এবং সে হাতে পানও করে। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَأْكُلَنَّ أَحَدُكُمْ بِشِمَالِهِ وَلَا يَشْرَبَنَّ بِهَا فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْكُلُ بِشِمَالِهِ وَيَشْرَبُ بهَا» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْكُلُ بِشِمَالِه وَيَشْرَبُ بِهَا) ‘‘কেননা শয়তান বাম হাত দ্বারা পানাহার করে।’’ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীর অর্থ হলো তোমরা যদি বাম হাতে পানাহার করো তাহলে তোমরা শয়তানের বন্ধুত্বে পরিণত হবে। কেননা শয়তান তার মানব বন্ধুদের এ কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
হাদীসের শিক্ষা : ১. শয়তান যে সমস্ত কাজ করে তা পরিত্যাগ করা উচিত, ২. শয়তানের হাত দু’টি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৪-[৬] কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুলে খাবার খেতেন এবং হাত মোছার পূর্বে তা চেটে নিতেন। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ بِثَلَاثَةِ أَصَابِعَ وَيَلْعَقُ يَدَهُ قَبْلَ أَن يمسحها. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ بِثَلَاثَةِ أَصَابِعَ) ‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুল দ্বারা খেতেন’’ অর্থাৎ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাবার খেতে বৃদ্ধা, তর্জনী ও মধ্যমা- এ তিনটি আঙ্গুল ব্যবহার করতেন। ‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তিন আঙ্গুল দ্বারা খাবার খাওয়া সুন্নাত। প্রয়োজন ব্যতীত তিন আঙ্গুলের অধিক ব্যবহার করবে না।
(وَيَلْعَقُ يَدَهٗ قَبْلَ أَنْ يَمْسَحَهَا) ‘‘(খাওয়ার পর) তিনি তাঁর হাত রুমাল দ্বারা মুছে ফেলার আগে চেটে নিতেন।’’ ‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ খাবার গ্রহণের একটি সুন্নাত হলো খাওয়ার পর হাত মুছে ফেলার আগে তা চেটে খাওয়া। আর তা খাদ্যের বারাকাত অর্জন এবং হাত পরিষ্কার করার লক্ষ্যে।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০৩১)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৫-[৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (খাওয়ার শেষে) অঙ্গুলিসমূহ ও খাদ্যপাত্র চেটে খেতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেনঃ খাদ্যের কোন অংশটির মধ্যে বারাকাত রয়েছে নিশ্চয় তোমরা তা অবগত নও। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ جَابِرٌ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِلَعْقِ الْأَصَابِعِ وَالصَّفْحَةِ وَقَالَ: إِنَّكُمْ لَا تَدْرُونَ: فِي أَيَّهِ الْبَرَكَةُ؟ . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّكُمْ لَا تَدْرُونَ: فِىْ أَيَّةٍ الْبَرَكَةُ؟) ‘‘তোমরা জান না যে, কোন্ অংশে বারাকাত আছে।’’ অর্থাৎ তোমরা যে খাবার গ্রহণ করছো সে খাবারের কোন্ অংশে অথবা কোন্ গ্রাসে বারাকাত আছে, তা তোমরা জান না। অতএব বারাকাত অর্জনের লক্ষ্যে তোমরা হাত ও খাবারের পাত্র চেটে খাবে। যাতে খাবারের সম্পূর্ণ অঙ্কন খাওয়া হয় এবং বারাকাত ছুটে না যায়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৬-[৮] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ কিছু খায়, তখন সে যেন (অঙ্গুলি) চেটে খাওয়া অথবা অন্যের দ্বারা তা চাটিয়ে নেয়া পর্যন্ত হাত না মুছে ফেলে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ فَلَا يمسحْ يدَه حَتَّى يلعقها أَو يلعقها»
ব্যাখ্যাঃ (حَتّٰى يَلْعَقَهَا أَوْ يُلْعِقَهَا) ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে হাত চেটে না খায় অথবা অন্যকে দিয়ে চাটিয়ে খাওয়ায় (ততক্ষণ পর্যন্ত হাত মুছবে না) অন্যকে দিয়ে চেটে খাওয়াবে যে তা চেটে খেতে ঘৃণা না করে, যেমন- স্বীয় স্ত্রী, দাসী, সন্তান ও সেবক। কেননা এরা চেটে খেতে মজা পায়। অনুরূপ যে ছাত্র শিক্ষকের হাত চেটে খাওয়ার মধ্যে বারাকাত আছে বলে মনে করে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৪৫৬; ‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৮৪৩)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৭-[৯] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কারো প্রতিটি কাজের সময় শয়তান তার পাশে উপস্থিত হয়, এমনকি তার খাওয়ার সময়েও। অতএব যদি তোমাদের কারো লোকমা পড়ে যায়, সে যেন তা তুলে ময়লা পরিষ্কার করে তা খেয়ে নেয় এবং শয়তানের জন্য তা ছেড়ে না দেয়। আর খাওয়া শেষে যেন অঙ্গুলি চেটে নেয়। কেননা সে জানে না যে, তার খাদ্যের কোন্ অংশে বারাকাত রয়েছে। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن جَابر قَالَ: النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ الشَّيْطَانَ يَحْضُرُ أَحَدَكُمْ عِنْدَ كُلِّ شَيْءٍ مِنْ شَأْنِهِ حَتَّى يَحْضُرَهُ عِنْدَ طَعَامِهِ فَإِذَا سَقَطَتْ من أحدكُم لقْمَة فَلْيُمِطْ مَا كَانَ بِهَا مِنْ أَذًى ثُمَّ ليأكلها وَلَا يَدعهَا للشَّيْطَان فَإِذا فرع فليلعق أصَاب فَإِنَّهُ لَا يَدْرِي: فِي أَيِّ طَعَامِهِ يَكُونُ الْبركَة؟ . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ الشَّيْطَانَ يَحْضُرُ أَحَدَكُمْ عِنْدَ كُلِّ شَيْءٍ مِنْ شَأْنِه) ‘‘অবশ্যই শয়তান তোমাদের কারো নিকট তার সকল বিষয়ে উপস্থিত হয়।’’ অর্থাৎ শয়তান মানুষের সাথে সকল অবস্থায়ই লেগে থাকে এবং তার কাজ-কর্মে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করে। অতএব মানুষের উচিত তার সম্পর্কে সতর্ক থাকা তার থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা এবং শয়তানের ধোঁকায় না পরা। (শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০৩৩)
(فَإِذَا سَقَطَتْ مِنْ أَحَدِكُمُ اللُّقْمَةُ فَلْيُمِطْ مَا كَانَ بِهَا مِنْ أَذًى) ‘‘অতএব তোমাদের কারো খাবারের সময় তার লোকমা পরে গেলে সে যেন তার সাথে লেগে যাওয়া ময়লা দূর করে ফেলে। অর্থাৎ ধূলা অথবা এ জাতীয় কিছু লেগে গেলে তা দূর করবে। আর নাপাক কিছু লেগে গেলে তা ধুবে যদি ধোয়া সম্ভব হয়।
(ثُمَّ لْيَأْكُلْهَا) ‘অতঃপর তা খাবে’ যদি তা খাওয়া সম্ভব হয়, নচেৎ কুকুর বিড়াল ইত্যাদিকে তা খেতে দিবে।
(وَلَا يَدَعَهَا لِلشَّيْطَانِ) আর শয়তানের জন্য তা ফেলে রাখবে না। তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ফেলে রাখলে তা শয়তানের জন্য হয়, কেননা এতে আল্লাহর নি‘আমাত বিনষ্ট হয় এবং আল্লাহর নি‘আমাতকে অবজ্ঞা করা হয় আর পরে যাওয়া লোকমা ফেলে দেয়া অহংকারীদের চরিত্র। আর অহংকারই পরে যাওয়া লোকমা উঠিয়ে নিতে বাধা প্রদান করে। আর তা শয়তানের কাজ। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৮-[১০] আবূ জুহায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি হেলান দিয়ে খাই না। (বুখারী)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن أبي جُحَيْفَة قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «لَا آكل مُتكئا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ (لَا آكُلُ مُتَّكِئًا) ‘‘আমি ঠেস দিয়ে বসে খাই না’’। খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সাধারণ মানুষে মনে করে কোন এক দিকে হেলে ভর দিয়ে বসাকে ঠেস দিয়ে বসা বলা হয়। হাদীসের প্রকৃত অর্থ তা নয়। বরং এখানে ঠেস দিয়ে বসার অর্থ হলো নিতম্বের নীচের বিছানা, পিঁড়ি ইত্যাদিতে ভর দিয়ে বসা। অতএব হাদীসের অর্থ এই যে, আমি যখন খাবার খাই তখন কোন কিছুর উপর ভর দিয়ে বসি না যা বেশী খাবার ইচ্ছাকারী করে থাকে। বরং অল্প খাবার খাই তাই আমার বসা হয় অস্বস্তি নিয়ে বসা। আর অধিকাংশ ‘আলিম এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ কোন একদিকে ঝুকে বসা। কেননা এভাবে বসলে খাদ্য গ্রহণ করার জন্য ক্ষতিকর। আর কেউ এর ব্যাখ্যা করেছেন চার জানু হয়ে আরাম করে বসা। কেননা এ অবস্থায় বসে খাবার গ্রহণ করলে অধিক খাবার গ্রহণ করা সহজ হয় তাতে খাদ্যাভ্যাস বৃদ্ধি পায়। ‘আল্লামা ইবনুল কইয়্যিম বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবার জন্য বাম পা বিছিয়ে হাঁটুর উপর ভর করে বসতেন। এতে আল্লাহর প্রতি নম্রতা ও তার সামনে ভদ্রতা প্রকাশ পায়। আর খাবার গ্রহণ করার জন্য এ পদ্ধতি সর্বোত্তম ও সর্বোচ্চ উপকারী পদ্ধতি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩৯৮, ‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৬৫)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৬৯-[১১] কতাদাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি [আনাস (রাঃ)] বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো টেবিলে রেখে আহার করেননি এবং পিরিচেও খাবার খাননি। আর তাঁর জন্য কখনো চাপাতি রুটিও তৈরি করা হয়নি। কতাদাকে জিজ্ঞেস হলো, তবে তাঁরা কিভাবে খেতেন? তিনি বললেনঃ সাধারণ দস্তরখান বিছিয়ে আহার করতেন। (বুখারী)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن قَتَادَة عَنْ أَنَسٍ قَالَ: مَا أَكَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى خِوَانٍ وَلَا فِي سُكُرَّجَةٍ وَلَا خُبِزَ لَهُ مُرَقَّقٌ قِيلَ لِقَتَادَةَ: على مَ يَأْكُلُون؟ قَالَ: على السّفر. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ (مَا أَكَلَ النَّبِىُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى خِوَانٍ) ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো টেবিলে খাবার খাননি’’। তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ টেবিলে খাবার খাওয়া বিলাসীদের অভ্যাস এবং অহংকারীদের কার্যকলাপ, যাতে খাবার গ্রহণ করার সময় ঘাড় নিচু করতে না হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
(وَلَا فِىْ سُكُرَّجَةٍ) আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পিরিচেও খাবার খাননি। হতে পারে যে, তখন পিরিচের প্রচলন ছিল না, তাই তিনি তাতে খাননি। অথবা তা ছোট হওয়ার দরুণ তিনি তাতে খাননি। কেননা তাদের অভ্যাস ছিল একপাত্রে একাধিক ব্যক্তি মিলে আহার গ্রহণ করা। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩৬৮)
(عَلٰى مَا يَأْكُلُوْنَ؟) ‘‘তারা কিসের উপর খেতো’’ অর্থাৎ যে সমস্ত সাহাবীদের কার্যকলাপ অনুসরণ করা হয় তারা কিসের উপর আহার গ্রহণ করতো?
(قَالَ: عَلَى السُّفَرِ) ‘‘দস্তরখানের উপর’’ টেবিল ব্যতীত অন্য যে কোন বস্তু তা চামড়া বা অন্য যাই হোক যাতে খাবার রাখা হয় তাকে سُفْرةِ তথা দস্তরখান বলা হয়। অতএব দস্তুরখানের উপর খাবার পাত্র রেখে খাবার খাওয়া সুন্নাত। আর টেবিলে খাবার খাওয়া রসূলের সুন্নাত নয় তবে তা বৈধ। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭০-[১২] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত পাতলা রুটি দেখেছেন বলে আমার জানা নেই আর না তিনি কখনো স্বচক্ষে ভুনা বকরী দেখেছেন। (বুখারী)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن أنس قَالَ: مَا أَعْلَمُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَغِيفًا مُرَقَّقًا حَتَّى لَحِقَ بِاللَّهِ وَلَا رَأَى شَاةً سَمِيطًا بِعَيْنِهِ قَطُّ. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ (وَلَا رَأَى شَاةً سَمِيطًا بِعَيْنِه قَطُّ) ‘‘তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনো স্বচক্ষে ভুনা ছাগল দেখেননি’’। شَاةً سَمِيطًا এমন ভুনা ছাগলকে বলা হয় যার লোম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে চামড়াসহ ভুনা করা হয়। قَطُّ শব্দের মধ্যে এ ইঙ্গিত রয়েছে যে, চামড়াসহ ভুনা করা ছাগলের গোশত খাওয়া তো দূরের কথা তিনি তা কখনো দেখেননি। না নিজ গৃহে আর না অপরের গৃহে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩৮৫)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭১-[১৩] সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখন হতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রেরণ করেছেন, তখন হতে ওফাত পর্যন্ত তিনি কখনো ময়দা দেখেননি। তিনি আরো বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত কখনো চালুনি দেখেননি। তখন সাহলকে জিজ্ঞেস করা হলো, না চেলে আপনারা যব কিভাবে খেতেন? তিনি বললেনঃ আমরা তাকে পিষে নিতাম এবং তাতে ফুঁ দিতাম, ফলে যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত। আর যা অবশিষ্ট থাকত আমরা তা মন্থন করে নিতাম এবং এরপর তা খেতাম। (বুখারী)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن سهل بن سعد قَالَ: مَا رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّقِيَّ مِنْ حِينِ ابْتَعَثَهُ اللَّهُ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ وَقَالَ: مَا رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْخُلًا مِنْ حِين ابتعثهُ الله حَتَّى قبضَهُ قِيلَ: كَيْفَ كُنْتُمْ تَأْكُلُونَ الشَّعِيرَ غَيْرَ مَنْخُولٍ؟ قَالَ: كُنَّا نَطْحَنُهُ وَنَنْفُخُهُ فَيَطِيرُ مَا طَارَ وَمَا بَقِي ثريناه فأكلناه. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ (فَيَطِيرُ مَا طَارَ) ‘‘যা উড়ে যাবার তা উড়ে যেত’’ অর্থাৎ যব পিষিয়ে তা বাতাসে উড়ালে আটার সাথে থাকা হালকা খোশাগুলো উড়ে যেত।
(وَمَا بَقِىْ) ‘‘আর যা কিছু অবশিষ্ট থাকত’’ যা ওজনে ভারী তা অবশিষ্ট থাকত, অর্থাৎ আটা থেকে যেত এবং খোশা উড়ে যেত।
(ثَرَّيْنَاهُ فأكَلْنَاهُ) তা পানি দিয়ে ভিজাতাম, অতঃপর তা খেতাম। অর্থাৎ পানি দিয়ে ভিজিয়ে খামীর তৈরি করে রুটি বানানোর পর তা খেতাম অথবা তা পানিতে গুলে রান্না করার পর তা খেতাম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭২-[১৪] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কোন খাদ্যের দোষ প্রকাশ করেননি। অবশ্য মনে ধরলে খেয়েছেন। আর অপছন্দ হলে পরিত্যাগ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَن أبي هُرَيْرَة قَالَ: مَا عَابَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا قَطُّ إِنِ اشْتَهَاهُ أَكَلَهُ وَإِنْ كرهه تَركه
ব্যাখ্যাঃ (مَا عَابَ النَّبِىُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا قَطُّ) ‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবারে দোষ ধরতেন না।’’ হাফিয ইবনু হাজার (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ বৈধ খাবারের দোষ ধরেননি। তবে হারাম খাবারের দোষ ধরতেন এবং তা খেতে নিষেধ করতেন। ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ খাবার খাওয়ার আদব হলো তার দোষ ধরবে না। অর্থাৎ এরূপ বলবে না এটা টক, এটা সিদ্ধ হয়নি বা পাকেনি এটা পাতলা, এটা মোটা ইত্যাদি।
(إِنِ اشْتَهَاهُ أَكَلَهٗ وَإِنْ كَرِهَهٗ تَرَكَهٗ) ‘‘খাদ্যের প্রতি তার আগ্রহ থাকলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা খেতেন অন্যথায় তা পরিত্যাগ করতেন। যেমন দব্বের ব্যাপারে যা ঘটেছিল। এটা তার অপছন্দ ছিল তাই তিনি তা খাননি। এটা দোষ বর্ণনা নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৪০৯; শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৬৪; ‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৫৯; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২০৩১)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭৩-[১৫] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি অধিক পরিমাণে খাবার খেতো, পরে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন সে অল্প খেতে লাগল। ব্যাপারটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালে তিনি বললেনঃ মু’মিন খায় এক পাকস্থলীতে আর কাফির খায় সাত পাকস্থলীতে। (বুখারী)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْهُ أَنَّ رَجُلًا كَانَ يَأْكُلُ أَكْلًا كَثِيرًا فَأَسْلَمَ فَكَانَ يَأْكُلُ قَلِيلًا فَذَكَرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَأْكُلُ فِي مِعًى وَاحِدٍ وَالْكَافِرُ يَأْكُلُ فِي سبعةِ أمعاء» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَأْكُلُ فِىْ مِعًى وَاحِدٍ وَالْكَافِرُ يَأْكُلُ فِىْ سَبْعَةِ أَمْعَاءٍ) ‘‘মু’মিন এক পেটে খায় আর কাফির সাত পেটে খায়।’’ مِعًى বলা হয় খাদ্য থলিকে। জেনে রাখা দরকার মু’মিনের তুলনায় কাফিরের খাদ্যথলি বেশী নেই। বরং প্রত্যেক মানুষেরই শুধুমাত্র একটি করে খাদ্য থলি আছে। তাই কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ বাণীর মর্ম হলো মু’মিনের খাদ্যের প্রতি লোভ কম থাকে, তাই তার খাদ্য ও পানীয়তে বারাকাত হয় এবং অল্পতেই সে তৃপ্ত হয়। পক্ষান্তরে খাদ্যের প্রতি কাফিরের লোভ অত্যন্ত বেশী, যেমন- চতুষ্পদ জন্তুর লোভ খাদ্যের প্রতি, দেখলেই খেতে চায়, অনুরূপ কাফির ব্যক্তিও দেখলেই খেতে চায়। অত্র হাদীসে কাফির ও মু’মিনের এই তারতম্য বর্ণনা করা হয়েছে। আর মু’মিন যখন খেতে আরম্ভ করে তখন শুরুতে ‘বিসমিল্লা-হ’ বলে, ফলে শয়তান তার খাবারে অংশগ্রহণ করতে পারে না। আর কাফির ‘বিসমিল্লা-হ’ বলে, না তাই শয়তান তার খাদ্যে অংশগ্রহণ করে। ফলে মু’মিনের অল্প খাবারই যথেষ্ট হয়ে যায় কিন্তু কাফিরের তা হয় না। আর মু’মিনের পেট কিছুটা ভরলেই সে তৃপ্ত হয়, তাই তার খাবার কম লাগে। আর কাফির পেট পূর্ণ না করে তৃপ্ত হয় না, তাই তার খাবার বেশী লাগে।
ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসের উদ্দেশ্য হলো দুনিয়ার প্রতি আসক্ত না হওয়া ও তার ভোগ বিলাসে যথাসাধ্য কমে তুষ্ট থাকা। আর খাদ্যাভ্যাস কম থাকা মানুষের উত্তম গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত আর অধিক খাদ্যগ্রহণ করা এর বিপরীত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩৯৭; শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৬০, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮১৯)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭৪-[১৬] ও ৪১৭৫-[১৭] ইমাম মুসলিম আবূ মূসা ও ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে শুধুমাত্র রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত বাণীটিই (অর্থাৎ- اِنَّ الْمُؤْ مِنَ يَأْكُلُ.....) বর্ণনা করেছেন।
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَرَوَى مُسْلِمٌ عَنْ أَبِي مُوسَى وَابْنِ عُمَرَ الْمسند مِنْهُ فَقَط
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭৪-[১৬] ও ৪১৭৫-[১৭] ইমাম মুসলিম আবূ মূসা ও ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে শুধুমাত্র রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত বাণীটিই (অর্থাৎ- اِنَّ الْمُؤْ مِنَ يَأْكُلُ.....) বর্ণনা করেছেন।
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَرَوَى مُسْلِمٌ عَنْ أَبِي مُوسَى وَابْنِ عُمَرَ الْمسند مِنْهُ فَقَط
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭৬-[১৮] তবে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে সহীহ মুসলিম-এর অপর একটি রিওয়ায়াতে আছে যে, জনৈক কাফির রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মেহমান হলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বকরীর দুধ আনতে নির্দেশ দিলেন, দুধ দোহন করা হলো এবং লোকটি সবটুকু দুধ পান করে ফেলল। অতঃপর আরেকটি বকরীর দুধ আনতে নির্দেশ দিলেন, বকরী দোহন করা হলো। এ দুধটুকুও সে পান করে ফেলল। এরপর তৃতীয় আরেকটি বকরী দোহন করা হলো। এ দুধটুকুও সে পান করে ফেলল। এভাবে সে শেষ নাগাদ সাতটি বকরীর সবটুকু দুধ একাই পান করে ফেলল। (পরদিন) ভোরে লোকটি ইসলাম গ্রহণ করল। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য একটি বকরীর দুধ দোহন করার নির্দেশ দিলেন। দুধ দোহন করা হলো। লোকটি সবটুকু দুধ পান করে ফেলল। অতঃপর আরেকটি বকরী দোহন করার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু সে এবার সবটুকু দুধ পান করতে পারল না। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মু’মিন এক পাকস্থলীতে পান করে। আর কাফির পান করে সাত পাকস্থলীতে।[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَافَهُ ضَيْفٌ وَهُوَ كَافِرٌ فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَاةٍ فَحُلِبَتْ فَشَرِبَ حِلَابَهَا ثُمَّ أُخْرَى فَشَرِبَهُ ثُمَّ أُخْرَى فَشَرِبَهُ حَتَّى شَرِبَ حِلَابَ سَبْعِ شِيَاهٍ ثُمَّ إِنَّهُ أَصْبَحَ فَأَسْلَمَ فَأَمَرَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَاةٍ فَحُلِبَتْ فَشَرِبَ حِلَابَهَا ثُمَّ أَمَرَ بِأُخْرَى فَلَمْ يَسْتَتِمَّهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُؤْمِنُ يَشْرَبُ فِي مِعًى وَاحِدٍ وَالْكَافِرُ يشربُ فِي سَبْعَة أمعاء»
ব্যাখ্যাঃ (ثُمَّ أَمَرَ بِأُخْرٰى فَلَمْ يَسْتَتِمَّهَا) ‘‘অতঃপর আরেকটি ছাগলের দুধ তাকে দেয়া হলে তিনি তা পুরোপুরি পান করতে পারলেন না।’’ অর্থাৎ যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পূর্বে সাতটি ছাগলের দুধ একাই পান করেছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর একটি ছাগলের দুধ পান করার পর দ্বিতীয় ছাগলের দুধ অল্প কিছু পান করার পর আর পান করতে পারলেন না।
(الْمُؤْمِنُ يَشْرَبُ فِىْ مِعًى وَاحِدٍ وَالْكَافِرُ يَشْرَبُ فِىْ سَبْعَةٍ أَمْعَاءٍ) ‘‘মু’মিন এক পেটে পান করে আর কাফির সাত পেটে পান করে’’ (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৬৩)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭৭-[১৯] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’জনের খাবার তিনজনের জন্য যথেষ্ট এবং তিনজনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «طَعَامُ الِاثْنَيْنِ كَافِي الثلاثةِ وطعامِ الثلاثةِ كَافِي الْأَرْبَعَة»
ব্যাখ্যাঃ (طَعَامُ الِاثْنَيْنِ كَافِى الثَّلَاثَةِ) ‘‘দু’জনের খাবার তিনজনের জন্য যথেষ্ট’’ অর্থাৎ যে খাবার দু’জনে পেটপুরে তৃপ্তি সহকারে খেতে পারে, ঐ খাবার তিনজনের পেটপুরে খাবার না হলেও তাদের প্রয়োজন পূরণের জন্য যথেষ্ট হয়, ফলে তাদের ‘ইবাদাত করার জন্য শক্তি অর্জিত হয় ও দুর্বল হয়ে পরা থেকে রক্ষা পায়।
এ হাদীসের তথা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্দেশ্য হলো মু’মিনের উচিত পেটপুরে আহার করতে না পারলেও অল্প আহারে তুষ্ট হওয়া এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার অভাবী ব্যক্তিকে প্রদান করা।
হাদীসের শিক্ষা : অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং অন্যদের প্রতি সমব্যথিত হওয়া।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮২০)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪১৭৮-[২০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, একজনের খাবার দু’জনের জন্য যথেষ্ট, দু’জনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট এবং চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট। (মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «طَعَامُ الْوَاحِدِ يَكْفِي الِاثْنَيْنِ وَطَعَامُ الِاثْنَيْنِ يَكْفِي الْأَرْبَعَةَ وَطَعَامُ الْأَرْبَعَةِ يَكْفِي الثمانيَة» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (طَعَامُ الْوَاحِدِ يَكْفِى الِاثْنَيْنِ) ‘‘একজনের খাবার দু’জনের জন্য যথেষ্ট’’। শারহুস্ সুন্নাহ্ প্রণেতা এর ব্যাখ্যায় ইসহাক্ব ইবনু রহ্ওয়াহ্ সূত্রে জারীর থেকে বর্ণনা করেন যে, এর অর্থ হলো যে খাবার একজনে পেটপুরে খেতে পারে, ঐ খাবার দু’জনের বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট। ইমামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অত্র হাদীসে অন্যের প্রতি খাদ্যের ব্যাপারে সমব্যথি হতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। খাদ্যের পরিমাণ অল্প হলেও তা দ্বারা বেঁচে থাকার প্রয়োজন পূর্ণ হয় এবং এতে বারাকাতও অর্জিত হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৫৯/১৭৯)