পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৩৮৬-[৫] গরীফ ইবনু ’আইয়্যাশ আদ্ দায়লামী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা ওয়াসিলাহ্ ইবনুল আসক্বা’ (রাঃ)-এর নিকট এসে বললাম, আমাদেরকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করুন যার মধ্যে কমবেশির পার্থক্য যেন না হয়। (এ কথা শুনে) তিনি ভীষণ রাগস্বরে বললেন, তোমরা (নিয়মিত) কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত কর, আর এ কুরআন মাজীদ তোমাদের ঘরেই (নখদর্পণে) ঝুলন্ত অবস্থায় বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও (অনিচ্ছাকৃতভাবে) কমবেশি হয়ে যায়। আমরা বললাম, আমাদের এ কথা বলা উদ্দেশ্য হলো এই যে, আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যে হাদীস সরাসরি শুনেছেন (তা হুবহু আমাদেরকে বর্ণনা করুন)। তখন তিনি বললেন, (একদা) আমরা আমাদের এমন এক সাথীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলাম, যে অন্য এক লোককে হত্যা করে নিজের জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে ফেলেছিল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে আদেশ করলেন, ঐ ব্যক্তির পক্ষ হতে একটি গোলাম মুক্ত করে দাও। আল্লাহ তা’আলা গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে তার (হত্যাকারীর) প্রতিটি অঙ্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]
عَن الغريف بن عَيَّاش الديلمي قَالَ: أَتَيْنَا وَاثِلَة بن الْأَسْقَع فَقُلْنَا: حَدِّثْنَا حَدِيثًا لَيْسَ فِيهِ زِيَادَةٌ وَلَا نُقْصَانٌ فَغَضِبَ وَقَالَ: إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَقْرَأُ وَمُصْحَفُهُ مُعَلَّقٌ فِي بَيْتِهِ فَيَزِيدُ وَيَنْقُصُ فَقُلْنَا: إِنَّمَا أَرَدْنَا حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ: أَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَاحِبٍ لَنَا أَوْجَبَ يَعْنِي النَّارَ بِالْقَتْلِ فَقَالَ: «أعتقوا عَنهُ بِعِتْق الله بِكُل عُضْو مِنْهُ عُضْو أَمنه من النَّار» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: (فَيَزِيدُ وَيَنْقُصُ) ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ আধিক্য অর্থে বুঝানো হয়েছে কুরআন পঠনে কম-বেশী করা যাবে না। তবে হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে অর্থের দিক লক্ষ্য রেখে শব্দ কম বেশী করা যেতে পারে।
(بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ) তথা আযাদকৃত গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে। (عُضْوٍ مِنْهُ) হত্যাকারীর অঙ্গকে। (مِنَ النَّارِ) আগুন হতে মুক্ত করবে। সম্ভবত নিহত লোকটি ছিল معاهد (মুআহিদ) বা নিরাপত্তাপ্রাপ্ত এবং তাকে ভুলবশতঃ হত্যা করা হয়েছিল। আর তার ওয়ালী ওয়ারিসরা এই ধারণা করেছিল যে, নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ভুলবশতঃ হত্যা করলে জাহান্নাম অবধারিত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৩৮৭-[৬] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন শাফা’আত (সুপারিশ) করা সর্বোত্তম সাদাকা, যে শাফা’আতের দরুন কোনো লোক গোলামী হতে মুক্তি লাভ করতে পারে। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]
وَعَن سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفْضَلُ الصَّدَقَةِ الشَّفَاعَةُ بِهَا تُفَكُّ الرَّقَبَة» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»
ব্যাখ্যা: (تُفَكُّ الرَّقَبَةُ) দাসত্ব হতে মুক্তি লাভ বন্দিত্ব হতে অথবা আটক হতে মুক্তি লাভ সুপারিশ করাটাও এক পর্যায়ের সাদাকা। বায়হাক্বীর বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ «أَفْضَلُ الصَّدَقَةِ الشَّفَاعَةُ تَفُكُّ بِهَا الْأَسِيرَ، وَتَحْقِنُ بِهَا الدَّمَ، وَتَجُرُّ بِهَا الْمَعْرُوفَ وَالْإِحْسَانَ إِلٰى أَخِيكَ، وَتَدْفَعُ عَنْهُ الْكَرِيهَةَ» সর্বোত্তম সাদাকা হলো সুপারিশ যা দ্বারা বন্দী মুক্তি করা হয় এবং রক্তাক্ত পরিবেশ বন্ধ করা হয় এবং সৎকাজ চালু করা হয় আর তোমরা ভাইয়ের প্রতি ইহসান করা এবং তার ঘৃণ্য বস্তু দূরীভূত করা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)