পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়ালীমাহ্ (বৌভাত)

৩২২৬-[১৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (লোক দেখানো) দুই প্রতিযোগীর দা’ওয়াত কবুল করা ঠিক নয় এবং তাদের খাদ্য গ্রহণও ঠিক নয়।

ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, ’খাবার আয়োজনে প্রতিযোগী’ এর অর্থ লৌকিকতা ও অহংকার প্রদর্শনীর জন্য দা’ওয়াত প্রতিযোগিতাই উদ্দেশ্য।[1]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُتَبَارِيَانِ لَا يُجَابَانِ وَلَا يُؤْكَلُ طَعَامُهُمَا» . قَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: يَعْنِي المتعارضين بالضيافة فخراً ورياء

عن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «المتباريان لا يجابان ولا يوكل طعامهما» . قال الامام احمد: يعني المتعارضين بالضيافة فخرا ورياء

ব্যাখ্যা: পরস্পর গর্ব অহংকারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত দু’জনের দা‘ওয়াত-যিয়াফতে যোগদান করতে নেই। কেননা তাদের উদ্দেশ্য খারাপ। বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে যদি উপস্থিত হতেই হয় তাহলে খানা থেকে বিরত থাকবে, অর্থাৎ খানা খাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়ালীমাহ্ (বৌভাত)

৩২২৭-[১৮] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাসিকগণের দা’ওয়াত গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। (বায়হাক্বী)[1]

وَعَن عمرَان ين حُصَيْنٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِجَابَة طَعَام الْفَاسِقين

وعن عمران ين حصين قال: نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم اجابة طعام الفاسقين

ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাসিক বা পাপাচারী লম্পটের খানার দা‘ওয়াত গ্রহণ করতে নিষেধ করেছন। এটা মুতালাক বা সাধারণ নিষেধ, দা‘ওয়াত গ্রহণ করলে গুনাহগার হবে এমনটিও নয়। নিষেধ এজন্য যে, ফাসিক ফাজিরের সাধারণ দা‘ওয়াতে একজন পরহেজগার ব্যক্তি অবাধে যাতায়াত করলে তার পাপাচারের স্পর্ধা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। অথবা ফাসিক বা পাপাচারীর সাথে একজন পরহেজগার ব্যক্তির অবাধে ওঠা বসা দেখে অন্যদের মধ্যে পাপাচারের প্রতি ঘৃণা ও ভয় দূর হয়ে যাবে, ফলে সমাজে পাপাচারিতার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পাপাচারী ব্যক্তির পাপ স্পষ্ট ও প্রকাশ্য হওয়ার পরে মুত্তাক্বী ব্যক্তি তার সাথে নির্বিঘ্ন সম্পর্ক স্থাপন আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যক্ষ্য কারো সাথে সম্পর্কচ্ছেদের ‘আমল করা হয় না, পাপাচার ব্যক্তিকে মুত্তাক্বী ব্যক্তি কর্তৃক উদারভাবে সম্পর্ক রক্ষা একদিকে পাপের প্রতি উল্লাসিকতা প্রদর্শিত হয়, অন্যদিকে পাপাচারী ব্যক্তি পাপকে বর্জন করতে কোনো রূপ গরজ অনুভব করে না। আর এটি যেন পাপের প্রতি এক নীরব সমর্থন।

একই সাথে পাপের প্রতি মুত্তাক্বী ব্যক্তির এক প্রকার সহনীয় মানসিকতা তৈরি হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে পাপের প্রতি ঘৃণাবোধ সমাজ থেকে উঠে যায়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়ালীমাহ্ (বৌভাত)

৩২২৮-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা কোনো মুসলিম ভাইয়ের (দা’ওয়াতে) তার ঘরে যাও, তখন তার (আপ্যায়নে) খাদ্য খাও এবং জিজ্ঞাসাবাদ করো না (খাদ্য কোথা থেকে কিভাবে প্রস্তুত হলো)। অনুরূপ তার পানীয় পান কর, কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ করো না। (উপরোল্লিখিত হাদীস তিনটি বায়হাক্বী শু’আবুল ঈমান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)[1]

আর ইমাম বায়হাক্বী বলেন, যদি হাদীসটি সহীহ হয় তাহলে তার অর্থ হয়- ’মুসলিম ভাই তার অপর মুসলিম ভাইকে হালাল খাদ্য-পানীয় ছাড়া আহার করাবে না’।

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ عَلَى أَخِيهِ الْمُسْلِمِ فَلْيَأْكُلْ مِنْ طَعَامِهِ وَلَا يَسْأَلْ وَيَشْرَبْ مِنْ شَرَابِهِ وَلَا يَسْأَلْ»
رَوَى الْأَحَادِيثَ الثَّلَاثَة الْبَيْهَقِيّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» وَقَالَ: هَذَا إِنْ صَحَّ فَلِأَنَّ الظَّاهِرَ أَنَّ الْمُسْلِمَ لَا يُطْعِمُهُ وَلَا يسْقِيه إِلَّا مَا هُوَ حَلَال عِنْده

وعن ابي هريرة قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: «اذا دخل احدكم على اخيه المسلم فلياكل من طعامه ولا يسال ويشرب من شرابه ولا يسال» روى الاحاديث الثلاثة البيهقي في «شعب الايمان» وقال: هذا ان صح فلان الظاهر ان المسلم لا يطعمه ولا يسقيه الا ما هو حلال عنده

ব্যাখ্যা: একজন মুসলিম আরেকজন মুসলিমের প্রতি সুধারণা পোষণ করবে। দা‘ওয়াত করে খাবার সামনে দিলে তা খাবে, তা নিয়ে এভাবে প্রশ্ন তুলবে না যে, এ খাদ্য কোথায় পেলে? যাতে তা হারাম না হালাল, এটা প্রকাশ পেয়ে যায়। মুসলিমের খাদ্য পানীয় হালাল হওয়ার দৃঢ় ইয়াক্বীন নিয়েই তার বাড়ী খানাপিনা করবে। তাকে প্রশ্ন করে কষ্ট দিবে না এবং অপমানিত করবে না। আর এটা কেবল ঐ সময় যখন কোনো ব্যক্তির ফিসকিয়াত বা পাপাচারিতা সম্পর্কে জানা না থাকবে। পূর্বের হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাসিকের খাদ্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন, এ হাদীসে কোনো মুসলিমের খাদ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে নিষেধ করেছেন, এ উভয় হাদীসের সমন্বয় কিভাবে হবে? ‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ উত্তরে আমরা বলব ফাসিক তো সেই, যে সোজা-সরল সিরাতে মুস্থাক্বীমের সুদৃঢ় পথ লঙ্ঘন করে চলে। সে সোজা-সরল পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে চলে এমনকি অধিকাংশ সময় স্পষ্ট হারাম থেকেও পরহেয করে চলে না, তাই একজন বিচক্ষণ ব্যক্তিকে তার খাদ্যগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসে ‘তার ভাই’ শব্দ দ্বারা খাস করা হয়েছে এবং ‘ইসলাম’ শব্দ দ্বারা তাকে বিশেষিত করা হয়েছে। একজন মুসলিমের প্রকাশ্য অবস্থা হবে এই যে, সে হারাম বা নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দূরে থাকবে। তাই তার সম্পর্কে অন্যকে ভালো ধারণা এবং এমন আচরণের নির্দেশ করা হয়েছে যাতে তার সাথে ভালোবাসা এবং হৃদ্যতা বেড়ে যায়, প্রশ্ন করে তাকে কষ্ট দেয়া থেকে নিজেকে সে বিরত রাখবে। এটাও সত্য যে, তার খাদ্য থেকে বিরত থাকা তার জন্য ধমকী যেন, সে ফিসকিয়াতে লিপ্ত না হয়; এটা প্রকৃতপক্ষে তার প্রতি সহৃদয়তা ও স্নেহই মাত্র। যেমন হাদীসে এসেছে, তোমার ভাই যালিম এবং মাযলূমকে সাহায্য কর।

ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) বলেনঃ এ বিষয়ে তিনটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। শেষের হাদীসটি যদি সহীহ হয় তাহলে এর অর্থ হলো একজন কামিল মু’মিন যিনি ফাসিক বা পাপাচারী নন তিনি তার কোনো মুসলিম ভাইকে তার নিকট যে হালাল খাদ্য ও পানীয় রয়েছে তা ছাড়া অন্য কিছু দিতে পারে না, কারণ সে নিজের জন্য হালাল ছাড়া কোনো হারামকে পছন্দ করে না। কেননা হাদীসে এসেছে, ‘‘তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ তোমার অন্য (কোনো মুসলিম) ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে যা তুমি তোমার নিজের জন্য পছন্দ কর’’- (বুখারী, মুসলিম)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে