পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩০-[৫] আবূ মূসা আল আশ্’আরী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ওয়ালী (অভিভাবক) ছাড়া কোনো বিবাহ নেই। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, মাজাহ ও দারিমী)[1]

عَن أَبِي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا نِكَاحَ إِلَّا بِوَلِيٍّ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ

عن ابي موسى عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «لا نكاح الا بولي» . رواه احمد والترمذي وابو داود وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা হলো ওয়ালী ছাড়া কোনো বিবাহ হবে না। এর উপর ‘আমল বিদ্যমান রয়েছে। বিবাহে ওয়ালীর শর্তারোপের ব্যাপারে ‘উলামাগণের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে। জুমহূর ‘উলামাগণ ইমাম তিরমযীর কথা গ্রহণ করেছেন এবং বলেছেন, কোনো মহিলা কোনক্রমেই নিজেকে বিবাহ দিতে পারবে না। উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে তারা দলীল গ্রহণ করেছেন। পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেছেনঃ বিবাহে ওয়ালী শর্ত নয় এবং মহিলার জন্য তার নিজেকে বিবাহে দেয়া জায়িয এবং ওয়ালীর অনুমতি ছাড়াই যদি সে নিজেকে বিবাহ দেয় তবে তা যথেষ্ট হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১০১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩১-[৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোনো নারী তার ওয়ালীর (অভিভাবকের) অনুমতি ছাড়া বিয়ে করবে; তার বিয়ে বাত্বিল (না-মঞ্জুর, পরিত্যক্ত), তার বিয়ে বাত্বিল, তার বিয়ে বাত্বিল। যদি এরূপ বিয়েতে স্বামীর সাথে সহবাস হয়ে থাকে, তবে স্ত্রীর মোহর দিতে হবে তার (লজ্জাস্থান) উপভোগ (হালাল) করার জন্যে। আর যদি তাদের (ওয়ালীগণের) মধ্যে আপোসে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার ওয়ালী নেই শাসক (প্রশাসন) তার ওয়ালী (বলে বিবেচিত) হবে।

(আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ وَلَيِّهَا فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَإِنْ دَخَلَ بِهَا فَلَهَا الْمَهْرُ بِمَا اسْتَحَلَّ مِنْ فَرْجِهَا فَإِنِ اشْتَجَرُوا فَالسُّلْطَانُ وَلِيُّ من لَا ولي لَهُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ والدارمي

وعن عاىشة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ايما امراة نكحت بغير اذن وليها فنكاحها باطل فنكاحها باطل فنكاحها باطل فان دخل بها فلها المهر بما استحل من فرجها فان اشتجروا فالسلطان ولي من لا ولي له» . رواه احمد والترمذي وابو داود وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা : ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ ‘‘ওয়ালী ছাড়া বিবাহ হবে না’’ এ কথার উপর বিদ্বান সাহাবীগণের ‘আমল রয়েছে। তাদের মধ্য ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব, ‘আলী ইবনু আবূ তালিব, ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আব্বাস ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-সহ প্রমুখগণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এবং তাবি‘ঈনদের মধ্য হতে ফুকাহা কিরামগণ অনুরূপ বর্ণনা দিয়েছেন। তাদের মধ্য হতে সা‘ঈদ বিন মুসায়ব, হাসান আল বাসরী, শুরাইহ, ইব্রাহীম আন্ নাখ‘ঈ ও ‘উমার বিন ‘আবদুল ‘আযীয-সহ প্রমুখগণ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও সুফ্ইয়ান আস্ সাওরী, আওযা‘ঈ, ‘আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক, ইমাম শাফি‘ঈ, আহমাদ ও ইসহক (রহঃ)-গণ এটাই বলেছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২০৮৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩২-[৭] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাক্ষ্য-প্রমাণ ব্যতিরেকে যে নারীর বিয়ে হয়, তারা ব্যভিচারিণী। (রাবী বলেন) তবে উল্লেখিত ইবনু ’আব্বাস -এর হাদীসটি মাওকূফ (অর্থাৎ- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী নয়)। (তিরমিযী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْبَغَايَا اللَّاتِي يُنْكِحْنَ أَنْفُسَهُنَّ بِغَيْرِ بَيِّنَةٍ» . وَالْأَصَحُّ أَنَّهُ مَوْقُوفٌ عَلَى ابْنِ عَبَّاس. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابن عباس ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «البغايا اللاتي ينكحن انفسهن بغير بينة» . والاصح انه موقوف على ابن عباس. رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এখানে বাইয়িনা বা প্রমাণ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সাক্ষী। সাক্ষী ছাড়া যে মহিলা নিজেকে বিবাহ দিবে সে যিনাকারিণী হবে। আর সাহাবীগণ ও তাবি‘ঈনগণসহ অন্যান্য বিদ্বানদের এর উপর ‘আমল রয়েছে। তারা বলেছেন, সাক্ষী ছাড়া কোনো বিবাহ হবে না। আর এ মর্মে তাদের মাঝে কোনো মতবিরোধ নেই। তবে কুফাবাসীর অধিকাংশ ‘উলামাহ্গণ বলেছেন, বিবাহের সময় দু’ সাক্ষীর একত্র সাক্ষী ছাড়া বিবাহ বৈধ নয়। অন্যদিকে কিছু সংখ্যক মদীনার ‘উলামাগণ বর্ণনা করেছেন যে, যদি বিবাহ ঘটা করে হয়, তবে একজনের পর অপর সাক্ষী দিলে বিবাহ বিশুদ্ধ হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১০৩)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩৩-[৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াতীম মেয়ের (বিয়ের) ব্যাপারে তার মতামত নিতে হবে, আর তার নিরবতা সম্মতি বলে গণ্য হবে। আর যদি সে অস্বীকার করে, তবে তাকে বাধ্য করা যাবে না (বৈধ হবে না)। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْيَتِيمَةُ تُسْتَأْمَرُ فِي نَفْسِهَا فَإِنْ صَمَتَتْ فَهُوَ إِذْنُهَا وَإِنْ أَبَتْ فَلَا جَوَازَ عَلَيْهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيّ

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اليتيمة تستامر في نفسها فان صمتت فهو اذنها وان ابت فلا جواز عليها» . رواه الترمذي وابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: কতিপয় বিদ্বানদের মতে ইয়াতীমা মহিলাকে যখন বিবাহ দেয়া হবে তখন তার বিবাহ তার সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। বালেগা হওয়ার পর তার ঐচ্ছিক থাকবে সে বিবাহ মেনে নিতেও পারে অথবা ভেঙ্গে দিতেও পারে। আর এটা আসহাবে আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর কথা। অন্যদিকে আল্লাহ তা‘আলার কথা, অর্থাৎ- ‘‘তোমরা যদি ইয়াতীমা মহিলাদের প্রতি ইনসাফ না করার আশংকা কর তবে তোমাদের চাহিদানুযায়ী বিবাহ কর.....’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৩)। ইয়াতীমা মহিলা (অর্থাৎ- সেসব নাবাগেলা মহিলা যাদের বাবা নেই)’’ তাদের বিবাহ বৈধ হওয়ার প্রতি প্রমাণ বহন করে।

হাফিয ‘আসকালানী ফাতহুল বারীতে বলেছেনঃ এই আয়াতে এ মর্মে দলীল রয়েছে যে, পিতাহীন নাবাগেলা মহিলাকে বিবাহ দেয়া বৈধ। কারণ ইয়াতীমা হলো সে নাবালেগা মহিলা যার বাবা নেই। তবে তাকে বিবাহ দেয়া যাবে এ শর্তে যে, তার জন্য নির্ধারিত মোহর যেন যৎসামান্য না হয়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২০৯৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩৪-[৯] ইমাম দারিমী (রহঃ) আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।[1]

وَرَوَاهُ الدَّارمِيّ عَن أبي مُوسَى

ورواه الدارمي عن ابي موسى

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩৫-[১০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ক্রীতদাস মালিকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করেছে, সে ব্যভিচারী। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, দারিমী)[1]

وَعَنْ جَابِرٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَيُّمَا عَبْدٍ تَزَوَّجَ بِغَيْرِ إِذْنِ سَيِّدِهِ فَهُوَ عَاهِرٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ والدرامي

وعن جابر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «ايما عبد تزوج بغير اذن سيده فهو عاهر» . رواه الترمذي وابو داود والدرامي

ব্যাখ্যা:  (فَهُوَ عَاهِرٌ) অর্থাৎ- যিনাকারী। ‘আল্লামা আল মুযহির (রহঃ) বলেনঃ মুনীবের অনুমতি ছাড়া দাসের বিবাহ করা বৈধ নয়। ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ (রহঃ) এমনটাই বলেছেন এবং বিবাহ যদি মুনীব মেনে নেয় তবুও এ বিবাহ বিশুদ্ধ হবে না, তবে ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও মালিক (রহঃ)-এর মতে বিবাহ বিশুদ্ধ হবে। ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তাঁর একজন দাস ছিল সে তাঁর অনুমতি ছাড়াই বিবাহ করেছিল। তিনি (ইবনু ‘উমার ) উভয়ের বিবাহ ভেঙ্গে দিয়েছিলেন এবং মোহরও বাতিল করেছিলেন এবং ঐ দাসকে তিনি বেত্রাঘাত করেছিলেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১১১)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে