পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুড়িয়ে পাওয়া দ্রব্য-সামগ্রী

৩০৩৬-[৪] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গাছে ঝুলন্ত ফলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি কোনো অভাবগ্রস্ত তা হতে কিছু খায় তাতে কিছুই নেই, যদি আঁচলে ভরে কিছু না নিয়ে যায়। হ্যাঁ, যদি তার কিছু নিয়ে যায়, তবে তার ওপর দুই গুণ দণ্ড বর্তাবে, তারপর শাস্তিও হবে। আর যে তার কিছু চুরি করবে শস্য মাড়াইয়ের স্থানে বা শস্য শুকানোর ওঠানে আশ্রয় দেয়ার পর, যার মূল্য একটি ঢাল পরিমাণ, তার হাত কাটা যাবে। উল্লেখ্য যে, ’আমর (রাঃ)-এর দাদা হারানো উট ও ছাগলের বর্ণনা করেন যেভাবে অন্যরা উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরো বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হারানো জিনিস সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করা হলো। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যা চলমান পথে-ঘাটে অথবা ঘনবসতি এলাকায় পাওয়া যায়, তবে তার জন্য সে এক বছর প্রচার করবে, তারপর যদি তার মালিক আসে, তবে তো তা তাকে দিয়ে দেবে, আর যদি এর মালিক না আসে, তবে তা তোমার (অধিকার) হবে। আর যা জনমানবহীন জায়গায় পাওয়া যায় তাতে এবং মাটিতে প্রোথিত গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশ বায়তুল মালে (সরকারী কোষাগারে) দিতে হবে (আর অবশিষ্টটা তোমার হবে)। (নাসায়ী)[1]

আবূ দাঊদ ’হারানো জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো’ হতে শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন।

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الثَّمَرِ الْمُعَلَّقِ فَقَالَ: «مَنْ أَصَابَ مِنْهُ مِنْ ذِي حَاجَةٍ غَيْرَ مُتَّخِذٍ خُبْنَةً فَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ وَمَنْ خَرَجَ بِشَيْءٍ مِنْهُ فَعَلَيْهِ غَرَامَةُ مِثْلَيْهِ وَالْعُقُوبَةُ وَمَنْ سَرَقَ مِنْهُ شَيْئًا بَعْدَ أَنْ يُؤْوِيَهُ الْجَرِينَ فَبَلَغَ ثَمَنَ الْمِجَنِّ فَعَلَيْهِ الْقَطْعُ» وَذَكَرَ فِي ضَالَّة الْإِبِل وَالْغنم كَمَا ذكر غَيْرُهُ قَالَ: وَسُئِلَ عَنِ اللُّقَطَةِ فَقَالَ: «مَا كَانَ مِنْهَا فِي الطَّرِيقِ الْمِيتَاءِ وَالْقَرْيَةِ الْجَامِعَةِ فَعَرِّفْهَا سَنَةً فَإِنْ جَاءَ صَاحِبُهَا فَادْفَعْهَا إِلَيْهِ وَإِنْ لَمْ يَأْتِ فَهُوَ لَكَ وَمَا كَانَ فِي الْخَرَابِ الْعَادِيِّ فَفِيهِ وَفِي الرِّكَازِ الْخُمُسُ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَرَوَى أَبُو دَاوُدَ عَنْهُ مِنْ قَوْله: وَسُئِلَ عَن اللّقطَة إِلَى آخِره

عن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده عن رسول الله صلى الله عليه وسلم انه سىل عن الثمر المعلق فقال: «من اصاب منه من ذي حاجة غير متخذ خبنة فلا شيء عليه ومن خرج بشيء منه فعليه غرامة مثليه والعقوبة ومن سرق منه شيىا بعد ان يوويه الجرين فبلغ ثمن المجن فعليه القطع» وذكر في ضالة الابل والغنم كما ذكر غيره قال: وسىل عن اللقطة فقال: «ما كان منها في الطريق الميتاء والقرية الجامعة فعرفها سنة فان جاء صاحبها فادفعها اليه وان لم يات فهو لك وما كان في الخراب العادي ففيه وفي الركاز الخمس» . رواه النساىي وروى ابو داود عنه من قوله: وسىل عن اللقطة الى اخره

ব্যাখ্যা: (الثَّمَرِ الْمُعَلَّقِ) কাটা এবং শুকানোর পূর্বে খেজুর যা ঝুলন্ত ছিল তা উদ্দেশ্য। الثمر (ফল) শব্দটি খেজুর, আঙ্গুর ও অন্যান্য ফল থেকে আর্দ্র, শুকনো উভয় ধরনের ফলকে অন্তর্ভুক্ত করে।

(وَمَنْ خَرَجَ بِشَيْءٍ مِنْهُ) অর্থাৎ- লুঙ্গির ভাঁজ, কাপড়ের কিনারা, তথা সে যেন তা থেকে তার কাপড়ে গ্রহণ না করে। নিহায়াহ্ গ্রন্থে এ রকম আছে। (غَيْرَ مُتَّخِذٍ خُبْنَةً) উল্লেখিত হাদীসাংশে রয়েছে, ফলের গাছ হতে কোনো ফল নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া হারাম। অতঃপর যদি কোনো ফল নিয়ে বেরিয়ে যায় তাহলে তা ঐ ফল গাছ থেকে কেটে খুলায় তাকে আশ্রয় দেয়ার পূর্বে অথবা এরপর হওয়া থেকে মুক্ত নয়। সুতরাং তা যদি কাটার পূর্বে হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির ওপর জরিমানা এবং শাস্তি বর্তাবে। আর যদি তা কাটা এবং খুলায় তাকে আশ্রয় দেয়ার পর হয়, তাহলে তার।

(فَبَلَغَ ثَمَنَ الْمِجَنِّ) ‘‘অতঃপর তা ঢালের মূল্যের সমপরিমাণে পৌঁছে’’ এ উক্তির কারণে গৃহীত অংশ যদি নিসাব পরিমাণে পৌঁছে তাহলে তার হাত কাটতে হবে আর এটা ঐ কথার উপর নির্ভর করছে যে, খুলা সংরক্ষিতস্থল। অধিকাংশ সময় এমনই হয়ে থাকে, কেননা সংরক্ষিত স্থান হতে চুরি করা ছাড়া হাত কাটা জায়িয নয়। ‘‘সবুলুস্ সালামে’’ এভাবেই আছে।

(فَعَلَيْهِ غَرَامَةُ مِثْلَيْهِ وَالْعُقُوبَةُ) শাস্তি বলতে তা‘যীর উদ্দেশ্য। বায়হাক্বী’র বর্ণনাতে আছে, (بِأَنَّ الْعُقُوبَة جَلَدَات نَكَال) অর্থাৎ- নিশ্চয় শাস্তি বলতে শাস্তির চাবুক। এর দ্বারা তিনি সম্পদের মাধ্যমে শাস্তি বৈধ হওয়ার উপর প্রমাণ গ্রহণ করেছেন, কেননা তার দ্বিগুণ শাস্তি সম্পদ দ্বারা শাস্তির অন্তর্ভুক্ত। প্রবীণ মতে ইমাম শাফি‘ঈ একে বৈধ বলেছেন, অতঃপর এ মত থেকে তিনি প্রত্যাবর্তন করেছেন। আর বলেছেন, কোনো বস্তুর ক্ষেত্রে কারো ওপর দ্বিগুণ জরিমানা করা যাবে না। শাস্তি কেবল দেহে, সম্পদে না। তিনি বলেন, এটা রহিত হয়ে গেছে। আর একে রহিতকারী হলো- আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাণীর মালিকের ব্যাপারে ফায়সালা দিয়েছেন, প্রাণী রাত্রে যা ধ্বংস করবে তার কারণে প্রাণীর মালিককে জরিমানা করা হবে। তিনি বলেন, তারা এমন ব্যক্তিকে মূল্যের মাধ্যমে জরিমানা করতেন। খত্ত্বাবী বলেন, এ ব্যাপারটি তা‘যীর স্বরূপ হওয়ার সাথে সাদৃশ্য রাখছে। উদ্দেশ্য- ফলে ঐ কাজের কর্তা ঐ কাজ থেকে বিরত থাকবে। মূল হলো- কোনো বস্তু ধ্বংসকারীর উপর ঐ বস্তু অপেক্ষা বেশি ক্ষতিপূরণ দেয়া আবশ্যক নয়। একমতে বলা হয়েছে, এটা ইসলামের সূচনাতে ছিল, কর্মসমূহের উপর এ ধরনের কতিপয় শাস্তি সংঘটিত হত, অতঃপর তা রহিত হয়ে গেছে। গাছে ঝুলন্ত ফল চুরি করার ক্ষেত্রে হাত কাটার বিধান বাদ দেয়া হয়েছে। কেননা মদীনার বাগানসমূহের পাশ দিয়ে কোনো দেয়াল ছিল না।

(الْجَرِيْنُ) অর্থাৎ- খেজুর শুকানোর স্থান, খেজুরের জন্যও গম শুকানোর উঠানের মতো স্থান আছে। (ثَمَنَ الْمِجَنِّ) নিহায়াহ্ গ্রন্থকার বলেন, المجن অর্থ ঢাল। কেননা এটা তার বাহককে আড়াল করে।

ঢালের মূল্য ছিল তিন দিরহাম, আর তা হলো দীনারের এক-চতুর্থাংশ। এটা হলো ইমাম শাফি‘ঈ-এর কাছে চুরির নিসাব যে পরিমাণ মূল্য চুরি করলে হাত কাটা যাবে।
(فِى الطَّرِيقِ الْمِيتَاءِ) الْمِيتَاءِ শব্দটির ‘মীম’ বর্ণটি অতিরিক্ত যা الْإِتْيَان হতে এসেছে। খত্ত্বাবী এবং ইবনুল আসীর বলেন, অবলম্বনীয় পথ, যে পথে মানুষ আসা-যাওয়া করে। (وَالْقَرْيَةِ الْجَامِعَةِ) অর্থাৎ- যে গ্রামে মানুষের আসা-যাওয়া আছে, তথা আবাদি গ্রাম যেখানে মানুষ বসবাস করে। (وَمَا كَانَ فِى الْخَرَابِ) খত্ত্বাবী বলেনঃ সাধারণ অনাবাদি জায়গা। (‘আওনুল মা‘বূদ ৩য় খন্ড, হাঃ ১৭০৭)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুড়িয়ে পাওয়া দ্রব্য-সামগ্রী

৩০৩৭-[৫] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ’আলী একটি হারানো দীনার পেলেন এবং তা ফাতিমা (রাঃ)-কে দিলেন। অতঃপর (প্রচারের পর) সে ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা আল্লাহ প্রদত্ত রিযক। সুতরাং এটা হতে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও খেলেন এবং ’আলী ও ফাতিমা (রাঃ)-ও খেলেন। অতঃপর এক স্ত্রীলোক দীনারের সন্ধানে এলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে ’আলী! তার দীনার পরিশোধ করে দাও। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ: أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ وَجَدَ دِينَارًا فَأتى بِهِ فَاطِمَة رَضِي الله عَنْهَا فَسَأَلَ عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَذَا رِزْقُ اللَّهِ» فَأَكَلَ مِنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأكل عَليّ وَفَاطِمَة رَضِي الله عَنْهُمَا فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَتِ امْرَأَةٌ تَنْشُدُ الدِّينَارَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عَلِيُّ أَدِّ الدِّينَارَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي سعيد الخدري: ان علي بن ابي طالب رضي الله عنه وجد دينارا فاتى به فاطمة رضي الله عنها فسال عنه رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «هذا رزق الله» فاكل منه رسول الله صلى الله عليه وسلم واكل علي وفاطمة رضي الله عنهما فلما كان بعد ذلك اتت امراة تنشد الدينار فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يا علي اد الدينار» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (هٰذَا رِزْقُ اللّٰهِ) স্পষ্ট যে, এটা অবহিতকরণের পর হয়েছে। এখান থেকে এ মাস্আলাহ্ গ্রহণ করা যাচ্ছে যে, প্রত্যেক বস্তুর অবহিতকরণ তার যথেষ্টতা অনুপাতে, এটা সিনদী-এর মত। অথবা কোনো অবহিতকরণ ছাড়াই তা প্রয়োজনমুখী ব্যক্তির জন্য সাব্যস্ত হবে। তবে এ শর্তে যে, তার মালিক যখন চলে আসবে তখন তা মালিককে ফেরত দিতে হবে। এটা শায়খ মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ ইসহক (রহঃ)-এর অভিমত। শায়খ ‘আব্দুল হক দেহলবী-এর লেখা মিশকাতের ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘‘লাম্‘আত’’-এ স্পষ্ট আছে যে, ঐ বস্তু সম্পর্কে অবহিত করা হয়নি। এটা কতিপয়ের মত যে, অল্প বস্তুর ক্ষেত্রে অবহিতকরণের প্রয়োজন নেই। অল্পের সীমার ক্ষেত্রে বিদ্বানগণ মতানৈক্য করেছেন। একমতে বলা হয়েছে, তা দশ দিরহামের কম হবে। একমতে বলা হয়েছে, এক দীনার এবং তার কমে যা হবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৩য় খন্ড, হাঃ ১৭১১)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুড়িয়ে পাওয়া দ্রব্য-সামগ্রী

৩০৩৮-[৬] জারূদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমের হারানো বস্তু আগুনের শিখা স্বরূপ (যদি তা প্রচার না করা হয়)। (দারিমী)[1]

وَعَنِ الْجَارُودِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ضَالَّةُ الْمُسْلِمِ حَرَقُ النَّارِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن الجارود قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ضالة المسلم حرق النار» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (ضَالَّةُ الْمُسْلِمِ) নিহায়াহ্ গ্রন্থে আছে, ضالة বলতে প্রত্যেক ঐ জিনিসের অন্তর্ভুক্ত নষ্ট বস্তু যা প্রাণী এবং অন্যান্য হতে সংগ্রহ করা হয়। এটা পুংলিঙ্গ, স্ত্রীলিঙ্গ এবং বহুবচন সকল কিছুর উপর প্রয়োগ হয়। (حَرَقُ النَّارِ) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হারানো বস্তুর ঘোষণা না দেয়ার জন্য এবং তাতে খিয়ানাত করা উদ্দেশ্য। হারানো বস্তু গ্রহণ করা আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার দিকে ঠেলে দেয়া। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুড়িয়ে পাওয়া দ্রব্য-সামগ্রী

৩০৩৯-[৭] ’ইয়ায ইবনু হিমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো হারানো বস্তু পায়, সে যেন এক কি দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোককে সে ব্যাপারে সাক্ষী রাখে এবং তা গোপন ও গায়েব না করে। অতঃপর যদি তার মালিককে পায় তাকে তা ফিরিয়ে দেয়। নচেৎ তা আল্লাহর মাল, তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে দেন। (আহমাদ, আবূ দাঊদ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ عِيَاضِ بْنِ حِمَارٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ وَجَدَ لُقَطَةً فَلْيُشْهِدْ ذَا عَدْلٍ أَوْ ذَوِي عَدْلٍ وَلَا يَكْتُمْ وَلَا يُغَيِّبْ فَإِنْ وَجَدَ صَاحِبَهَا فَلْيَرُدَّهَا عَلَيْهِ وَإِلَّا فَهُوَ مَالُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ

وعن عياض بن حمار قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من وجد لقطة فليشهد ذا عدل او ذوي عدل ولا يكتم ولا يغيب فان وجد صاحبها فليردها عليه والا فهو مال الله يوتيه من يشاء» . رواه احمد وابو داود والدارمي

ব্যাখ্যা: (فَلْيُشْهِدْ ذَا عَدْلٍ) খত্ত্বাবী বলেনঃ এটা শিষ্টাচার ও নির্দেশনামূলক আদেশের শব্দ। আর ওটা দু’টি অর্থের কারণে। দু’টি অর্থের একটি হলো- পার্থিব জীবনে শায়ত্বন তাকে প্ররোচিত করতে পারে ঐ বস্তু নিজের করে নেয়ার জন্য আর তাতে আমানাতের খিয়ানাত হয়ে যাবে, তাই সাক্ষী রাখবে। অপর অর্থটি হলো- ঐ বিষয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া থেকে নিরাপদ থাকা যায় না, ফলে তার উত্তরাধিকাররা ঐ হারানো বস্তুটির দাবী করে এবং ব্যক্তি তাকে ঐ উত্তরাধিকার স্বত্বের মাঝে অনুমোদন দেয়।

‘সুবুল’-এ আছে, এ হাদীসটি হারানো বস্তু কুড়ানোর পর দু’জন ন্যায় ইনসাফকারী ব্যক্তির মাধ্যমে সাক্ষ্য রাখার আবশ্যক হওয়ার অতিরিক্তের উপকারিতা দিচ্ছে। ইমাম আবূ হানীফাহ্ এ মত পোষণ করেছেন এবং এটা ইমাম শাফি‘ঈ-এর দু’ মতের একটি। অতঃপর তারা বলেছে, হারানো বস্তু কুড়ানোর ব্যাপারে এবং তার বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে সাক্ষ্য রাখা আবশ্যক। ইমাম মালিক এবং ইমাম শাফি‘ঈর দু’ মতের একটি হলো- সাক্ষ্য রাখা আবশ্যক নয়। কেননা বিশুদ্ধ হাদীসগুলোতে সাক্ষ্যর আলোচনা নেই। সুতরাং সাক্ষ্য রাখার এ বিষয়টি মুস্থাহাবের দিকে বর্তাবে। পূর্ববর্তীরা বলেন, এ অতিরিক্তাংশ বিশুদ্ধ সাব্যস্ত হওয়ার পর এর প্রতি ‘আমল করা অবশ্যক। সুতরাং সাক্ষ্য রাখা আবশ্যক। হাদীসসমূহে এর আলোচনা না থাকা এ মাস্আলার বিরোধিতা করবে না। সঠিক কথা হলো- সাক্ষ্য রাখা আবশ্যক।

(وَلَا يُغَيِّبْ) অর্থাৎ- তা অন্যত্র চালান দেয়ার মাধ্যমে অদৃশ্য করবে না। (فَهُوَ مَالُ اللّٰهِ) এতে জাওয়াহিরীদের ঐ ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে যে, যে ব্যক্তি হারানো বস্তু কুড়ায় তাহলে হারানো বস্তু ঐ ব্যক্তির মালিকানায় পরিণত হবে এবং সে তার জরিমানা দিবে না। কখনো উত্তর দেয়া হয়ে থাকে যে, এটা জরিমানা আবশ্যক করা হতে যা গত হয়েছে তার সাথে শর্তযুক্ত।

(يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- নিশ্চয় অবহিতকরণের এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর হারানো বস্তু দ্বারা উপকৃত হওয়া বৈধ। (‘আওনুল মা‘বূদ ৩য় খন্ড, হাঃ ১৭০৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুড়িয়ে পাওয়া দ্রব্য-সামগ্রী

৩০৪০-[৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছড়ি, চাবুক, রশি এবং এগুলোর ন্যায় (স্বল্পমূল্য) জিনিস- যদি কোনো ব্যক্তি উঠায়, তখন তা দিয়ে নিজে উপকার লাভ করতে আমাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ)[1]

মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব -এর হাদীস ’সাবধান, হালাল নয়’ ’’সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা’’ অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: رَخَّصَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْعَصَا وَالسَّوْطِ وَالْحَبْلِ وَأَشْبَاهِهِ يَلْتَقِطُهُ الرَّجُلُ يَنْتَفِعُ بِهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
وَذكر حَدِيث الْمِقْدَام بن معدي كرب: «أَلا لَا يحل» فِي «بَاب الِاعْتِصَام»

وعن جابر قال: رخص لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم في العصا والسوط والحبل واشباهه يلتقطه الرجل ينتفع به. رواه ابو داود وذكر حديث المقدام بن معدي كرب: «الا لا يحل» في «باب الاعتصام»

ব্যাখ্যা: (وَأَشْبَاهِه) অর্থাৎ- যাকে অল্প বলে গণ্য করা হয়।

(يَنْتَفِعُ بِه) অর্থাৎ- হারানো বস্তুর ক্ষেত্রে হুকুম হলো- যে ব্যক্তি হারানো বস্তু কুড়ায় সে এক বছর অবহিত না করেই তা দ্বারা উপকৃত হতে পারবে। শারহুস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থকার বলেন, এতে ঐ ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে যে, কম সম্পদের ক্ষেত্রে অবহিত করার প্রয়োজন নেই। আর আল্লাহ সর্বাধিক ভালো জানেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৩য় খন্ড, হাঃ ১৭১৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে