পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
সকল মুসলিম এ বিষয়ে ঐকমত্য যে, সুদ হারাম। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ ’’আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন এবং বেচা-কেনাকে করেছেন হালাল’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ২৭৫)। আর এ বিষয়ে অসংখ্য প্রসিদ্ধ হাদীস রয়েছে যা সুদ হারাম হওয়ার অকাট্ট দলীল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছয়টি বিষয় উল্লেখ করেছেন যাতে সুদ হয়। আর তা হলো- সোনা, রূপা, গম, যব, খেজুর ও লবণ। আহলুয্ যাহিরদের মতে এ ছয়টি বস্তু ছাড়া আর অন্য কোনো বস্তুতে সুদ নেই। তাদের ব্যতীত অন্য সকল ’আলিমদের মতে ছয়টি দ্রব্যের মধ্যেই সুদ সীমাবদ্ধ নয়। বরং যে সকল বস্তুতে উল্লেখিত বস্তুর গুণাবলী পাওয়া যাবে তাতেও সুদ হবে। তবে গুণাবলী কি এ বিষয়ে ’আলিমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফি’ঈ ও ইমাম মালিক-এর মতে, সোনা ও রূপার মুদ্রা ছাড়াও যত ধরনের মুদ্রা রয়েছে তাতে সুদ হারাম। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে ওযনকৃত বস্তু হওয়ার কারণে সোনা-রূপাতে সুদ হারাম। অতএব সকল প্রকার ওযনকৃত দ্রব্যের মধ্যে সুদ হবে।
অন্য চারটি দ্রব্য, অর্থাৎ গম, যব, খেজুর ও লবণের মধ্যে সুদ হওয়ার কারণ ইমাম শাফি’ঈ-এর মতে তা খাদ্যদ্রব্য। অতএব সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্যতেই সুদ হবে। আর ইমাম মালিক-এর মতে তা প্রধান খাদ্য এবং সংরক্ষিত বস্তু। অতএব সংরক্ষিত সকল প্রকার প্রধান খাদ্যশস্যের মধ্যেই সুদ হবে।
আর ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে তা মাকীল অর্থাৎ পাত্র দ্বারা পরিমাপ করা বস্তু। অতএব পাত্র দ্বারা পরিমাপ করা হয় এমন সকল বস্তুতেই সুদ হবে। ’আলিমগণ এ বিষয়েও একমত যে, সুদ হয় এমন বস্তু কম বেশী করে এবং বাকীতেও বেচা-কেনা বৈধ যদি উভয় বস্তুর সুদের কারণ এক না হয় যেমন- সোনা ও গম। আর যদি একজাতীয় বস্তু হয় তাতে কমবেশী করা বৈধ নয় এবং বাকীতে বেচা-কেনাও বৈধ নয়। আর যদি একজাতীয় না হয়ে ভিন্ন জাতীয় হয় কিন্তু সুদ হওয়ার কারণ এক হয় তাহলে কমবেশী করা বৈধ কিন্তু বাকীতে বিক্রয় বৈধ নয়। যেমন সোনা ও রূপা এবং গম ও খেজুর। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৫৮৪)
২৮০৭-[১] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নাত করেছেন, যে ব্যক্তি সুদ খায়, যে সুদ দেয়, যে সুদের কাগজপত্র লিখে, যে দু’জন সুদের সাক্ষী হয় তাদের সকলের ওপর। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেন, (গুনাহের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে) তারা সকলেই সমান। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: لَعَنَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكَلَ الرِّبَا وَمُوَكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ: «هُمْ سَوَاءٌ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: هُمْ سَوَاءٌ ‘‘তারা সকলেই সমান’’ অর্থাৎ সুদগ্রহীতা, সুদদাতা, এর লেখক এবং সাক্ষী- এরা সকলেই পাপের সমান ভাগীদার। ‘আল্লামা নববী বলেনঃ এতে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সুদ আদান প্রদান যেমন হারাম, অনুরূপভাবে সুদের চুক্তি লেখা এবং এর সাক্ষী দেয়া উভয়ই হারাম। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৫৯৯; মিরকাতুল মাফাতীহ)
হাদীসের শিক্ষা: সর্বপ্রকার হারাম কাজে সহযোগিতা করা হারাম। এতে হারাম কার্য সম্পাদনকারীর মতো সহযোগিতাকারীও পাপের সমান অংশীদার।
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮০৮-[২] ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রূপার বিনিময়ে রূপা, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর, লবণের বিনিময়ে লবণ আদান প্রদান করা হলে সমপরিমাণে নগদে হাতে হাতে আদান প্রদান করতে হবে। তবে যদি অন্য কোনো জাতীয় কিছু দিয়ে লেনদেন হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পরিমাণের বিনিময় নির্ধারণ করে সম্মতির ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারো, যদি উভয়ে উপস্থিত থেকে নগদে আদান প্রদান করা হয়। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ وَالْملح بالملح مثلا بِمثل سَوَاء بسَواءٍ يَدًا بِيَدٍ فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هَذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيعُوا كَيْفَ شِئْتُمْ إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (سَوَاءً بِسَوَاءٍ) ‘‘সমান সমান’’ অর্থাৎ একজাতীয় দ্রব্য পরিমাণে সমান সমান হলে তা বিক্রয় বৈধ। যদি কমবেশী হয় তাহলে ঐ বেচা-কেনা সুদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব তা হারাম।
(إِذَا اخْتَلَفَتْ هٰذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيْعُوْا كَيْفَ شِئْتُمْ) ‘‘উল্লেখিত দ্রব্যসমূহের মধ্যে ভিন্ন জাতীয় দ্রব্যের সাথে বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী হলে দূষণীয় নয়। অর্থাৎ তা সুদ নয় বিধায় ঐ বেচা-কেনা বৈধ। অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, গম ও যব একজাতীয় দ্রব্য নয় বরং তা ভিন্ন জাতীয় দ্রব্য। অতএব গমের বিনিময়ে যবের বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী করা বৈধ।
(يَدًا بِيَدٍ) ‘‘হাতে হাতে’’ অর্থাৎ বিনিময় নগদ হতে হবে বাকী চলবে না। অর্থাৎ ভিন্ন জাতীয় দ্রব্যের বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী বৈধ হলেও তার বিনিময় নগদ হতে হবে বাকী চলবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮০৯-[৩] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বর্ণ স্বর্ণের বিনিময়ে, রূপা রূপার বিনিময়ে, গম গমের বিনিময়ে, যব যবের বিনিময়ে, খেজুর খেজুরের বিনিময়ে, লবণ লবণের বিনিময়ে লেনদেন করা হলে, সেক্ষেত্রে সমপরিমাণে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে নগদে আদান প্রদান করতে হবে। আর যে ব্যক্তি একই জাতীয় পণ্যের বিনিময়ে বেশি দেয় ও বেশি দাবী করে বেশি গ্রহণ করবে, তাহলে সে সুদ লেনদেনকারী বলে গণ্য হবে। অতএব এ ব্যাপারে গ্রহীতা ও দাতা উভয়েই সমান অপরাধী। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مِثْلًا بِمِثْلٍ يَدًا بِيَدٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ اسْتَزَادَ فَقَدْ أَرْبَى الْآخِذُ وَالْمُعْطِي فِيهِ سَوَاءٌ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (فَمَنْ زَادَ أَوِ اسْتَزَادَ فَقَدْ أَرْبٰى) ‘‘যে বেশী দিল অথবা বেশী নিল সে সুদের কারবার করল’’ দাতা যদি বেশী দেয় এবং গ্রহীতা বেশী নেয় তাহলে তারা উভয়ে সুদের কারবারে লিপ্ত হলো। এক্ষেত্রে উভয়েই সমান, অর্থাৎ উভয়ের গুনাহ সমান। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১০-[৪] উক্ত রাবী [আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বর্ণকে স্বর্ণের বিনিময়ে সমতা ছাড়া লেনদেন করবে না (যাতে তা ওযনে সমপরিমাণ না হয়), তাই উভয়ের মধ্যে কম-বেশি করবে না। ঠিক অনুরূপভাবে রূপাকে রূপার বিনিময়ে সমতা ছাড়া লেনদেন করো না (যদি তা সমপরিমাণ না হয়), তাই উভয়ের মধ্যে কম-বেশি করবে না। আর এ পণ্যদ্বয়ে বাকির বিনিময় নগদের সাথে করো না। (বুখারী, মুসলিম)[1]
আর এক বর্ণনায় আছে, স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ ও রূপার বিনিময়ে রূপা- উভয় পণ্যদ্বয়ে সমান ওযন ব্যতীত বিক্রি করো না।
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَبِيعُوا الذَّهَبَ بِالذَّهَبِ إِلَّا مِثْلًا بِمِثْلٍ وَلَا تُشِفُّوا بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ وَلَا تَبِيعُوا الْوَرِقَ بِالْوَرِقِ إِلَّا مِثْلًا بِمِثْلٍ وَلَا تُشِفُّوا بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ وَلَا تبِيعُوا مِنْهَا غَائِبا بناجز»
وَفِي رِوَايَةٍ: «لَا تَبِيعُوا الذَّهَبَ بِالذَّهَبِ وَلَا الْوَرق بالورق إِلَّا وزنا بِوَزْن»
ব্যাখ্যা: (وَلَا تُشِفُّوا بَعْضَهَا عَلٰى بَعْضٍ) ‘‘এক অংশের উপর অপর অংশ বেশী করিও না’’ অর্থাৎ সোনার বিনিময়ে সোনা ও রূপার বিনিময়ে রূপা বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী করিও না। ‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ সোনা বলতে সকল প্রকার সোনা উদ্দেশ্য। ‘আল্লামা কারী বলেনঃ শারহুস্ সুন্নাতে উল্লেখ আছে, অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, সোনার গহনা যদি সাধারণ সোনার বিনিময়ে বেচা-কেনা করা হয় তবুও ওযনে সমান সমান হতে হবে। গহনা বানাতে মজুরীর জন্য ওযনে কমবেশী করা বৈধ নয়।
(غَائِبًا بِنَاجِزٍ) ‘‘অনুপস্থিতিকে উপস্থিত বস্তুর সাথে বিনিময় করো না’’ অর্থাৎ দাতা ও গ্রহীতার উভয়ের সোনা বা রূপা উপস্থিত তথা নগদ হতে হবে। একপক্ষের দ্রব্য নগদ, অন্যপক্ষের দ্রব্য বাকী লেনদেন চলবে না। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৫৮৪; মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১১-[৫] মা’মার ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, খাদ্য-সামগ্রীর বিনিময় সমপরিমাণ হতে হবে। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ مَعْمَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: كُنْتُ أسمع رَسُول صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «الطَّعَامُ بِالطَّعَامِ مِثْلاً بمثْلٍ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (الطَّعَامُ بِالطَّعَامِ مِثْلًا بمثْلٍ) ‘‘খাদ্যের বিনিময়ে খাদ্য সমান সমান হতে হবে’’ প্রত্যেক খাদ্য বস্তুকেই طعام বলা হয়। আবার طعام শব্দ দ্বারা গমও বুঝানো হয়ে থাকে। হাদীসে طعام শব্দ দ্বারা যদি গম উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বিষয়টি সুস্পষ্ট। অর্থাৎ গমের সাথে গম বিনিময় করলে উভয়পক্ষের গমই সমান সমান হতে হবে। কমবেশী করা যাবে না। আর যদি طعام শব্দ দ্বারা যে কোনো খাদ্যবস্তু বুঝানো হয়, তাহলে যে কোনো একজাতীয় খাদ্যবস্তুর বিনিময়কালে কমবেশী করা যাবে না। আর যদি ভিন্ন ভিন্ন জাতীয় বস্তু বিনিময় করা হয়, তাহলে কমবেশী করা যাবে তবে তা নগদ হতে হবে। বাকী বিনিময় চলবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১২-[৬] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বর্ণের বিনিময় স্বর্ণের সাথে যদি লেনদেন নগদে না হয়, সেক্ষেত্রে তা সুদী লেনদেন হবে। আর রূপার বিনিময় রূপার সাথে যদি লেনদেন নগদে না হয়, তবে সেটা সুদী লেনদেন হবে। আর গমের বিনিময় গমের সাথে যদি লেনদেন নগদে না হয়, তবে সেক্ষেত্রে সুদী লেনদেন হবে। আর যবের বিনিময় যবের সাথে যদি লেনদেন নগদে না হয়, হবে তা সুদী লেনদেন হবে। আর খেজুরের বিনিময় খেজুরের সাথে যদি লেনদেন নগদে না হয়, তবে তা সুদী লেনদেন হবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ رِبًا إِلَّا هَاءَ وَهَاءَ وَالْوَرِقُ بِالْوَرِقِ رِبًا إِلَّا هَاءَ وَهَاءَ وَالْبُرُّ بالبُرَّ إِلَّا هَاء وهاء وَالشعِير بِالشَّعِيرِ رَبًّا هَاءَ وَهَاءَ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ رِبًا إِلَّا هَاءَ وهاء»
ব্যাখ্যা: (إِلَّا هَاءَ وَهَاءَ) ‘‘দাও এবং নাও’’ অর্থাৎ বিনিময় নগদ হতে হবে। বেচা-কেনার ক্ষেত্রে যে সকল বস্তুতে সুদ কার্যকর তাতে বাকী চলবে না, নগদ হতে হবে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ সোনার বিনিময়ে সোনা অনুরূপ অন্যান্য বেচা-কেনার ক্ষেত্রে উভয়পক্ষের বস্তু উপস্থিত হতে হবে। অর্থাৎ বেচা-কেনার মাজলিস থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার পূর্বেই উভয়ের মধ্যে বিক্রিত বস্তু ও তার মূল্য তথা বিনিময় আদান প্রদান হতে হবে। কেননা বেচা-কেনার জন্য তা আবশ্যক। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৩-[৭] আবূ সা’ঈদ ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার এলাকায় এক ব্যক্তিকে চাকুরী দিলেন। ওই ব্যক্তি সেখান থেকে বেশ ভালো খেজুর নিয়ে এলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, খায়বারের সব খেজুরই কি এমন ভালো হয়? ওই ব্যক্তি বললো, জি না, হে আল্লাহর রসূল! আমরা এক সা’ এরূপ খেজুর দু’ সা’ (খারাপ) খেজুরের বিনিময়ে গ্রহণ করে থাকি। অথবা ভালো দুই সা’ খারাপ তিন সা’র বিনিময়ে গ্রহণ করে থাকি। এ কথা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এভাবে বিনিময় করো না। বরং খারাপ খেজুর (দু’ বা তিন সা’) মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি করে ওই মুদ্রা দিয়ে ভালো খেজুর কিনে নাও। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথাও বললেন, ওযন করা বস্তুরও একই হুকুম। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلًا عَلَى خَيْبَرَ فَجَاءَهُ بِتَمْرٍ جَنِيبٍ فَقَالَ: «أَكُلُّ تَمْرِ خَيْبَرَ هَكَذَا؟» قَالَ: لَا وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هَذَا بِالصَّاعَيْنِ وَالصَّاعَيْنِ بِالثَّلَاثِ فَقَالَ: «لَا تَفْعَلْ بِعِ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ ثُمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيبًا» . وَقَالَ: «فِي الْمِيزَانِ مِثْلَ ذَلِكَ»
ব্যাখ্যা: (إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هٰذَا بِالصَّاعَيْنِ) ‘‘আমরা এর এক সা‘ খেজুর দুই সা‘ খেজুরের বিনিময়ে নিয়ে থাকি’’। অর্থাৎ নিম্নমানের দুই সা‘ খেজুর দিয়ে উন্নতমানের এক সা‘ খেজুর গ্রহণ করে থাকি।
(فَقَالَ : لَا تَفْعَلْ) ‘‘তিনি বললেন, তুমি এরূপ করবে না’’। অর্থাৎ দুই সা‘ খেজুর দিয়ে এক সা‘ খেজুর আনবে না। কেননা এ ধরনের লেনদেন সুদের অন্তর্ভুক্ত।
(بِعِ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ ثُمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيبًا) মিশ্রিত (নিম্নমানের) খেজুর দিরহামের বিনিময়ে বিক্রয় করে ঐ মূল্য দ্বারা উন্নতমানের খেজুর ক্রয় করবে।
(فِى الْمِيزَانِ مِثْلَ ذٰلِكَ) ‘‘ওযনকৃত বস্তুর হুকুমও অনুরূপ’’ অর্থাৎ পাত্র দ্বারা পরিমাপকৃত বস্তু একজাতীয় হলে যেমন কমবেশী করা যায় না, অনুরূপ ওযনের মাধ্যমে পরিমাপকৃত বস্তুতেও একজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে কমবেশী করা যাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৪-[৮] আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন বিলাল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ’বার্নী’ জাতীয় খুরমা নিয়ে আসলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এই জাতীয় খুরমা কোথায় পেলে? বিলাল বললেন, আমার কাছে কিছু খারাপ খুরমা ছিল। আমি এগুলোর দু’ সা’ এ জাতীয় এক সা’ খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করেছি। এটা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আহ! এটাই তো ’সুদী’ লেনদেন। এটাইতো প্রকৃত সুদ। এরূপ করবে না, বরং তুমি এ খারাপ খুরমা পরিমাণে বেশি দিয়ে ভালো খুরমা পরিমাণে কম কিনতে চাইলে পৃথকভাবে মুদ্রার বিনিময়ে খারাপ খুরমা বিক্রি করে তার মূল্য দিয়ে ভালো খুরমা ক্রয় করবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: جَاءَ بِلَالٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِتَمْرٍ بَرْنِيٍّ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مِنْ أَيْنَ هَذَا؟» قَالَ: كَانَ عِنْدَنَا تَمْرٌ رَدِيءٌ فَبِعْتُ مِنْهُ صَاعَيْنِ بِصَاعٍ فَقَالَ: «أَوَّهْ عَيْنُ الرِّبَا عَيْنُ الرِّبَا لَا تَفْعَلْ وَلَكِنْ إِذَا أَرَدْتَ أَنْ تَشْتَرِيَ فَبِعِ التَّمرَ ببَيْعٍ آخر ثمَّ اشْتَرِ بِهِ»
ব্যাখ্যা: (أَوَّهْ عَيْنُ الرِّبَا) ‘‘আহ্ এটা তো প্রকৃত সুদ’’ অর্থাৎ একই জাতীয় দ্রব্যে কমবেশী করে বেচা-কেনা করা তো প্রকৃত সুদ। আর তা হারাম।
(لَا تَفْعَلْ) ‘‘তুমি এরূপ করবে না’’ যেহেতু এ ধরনের বেচা-কেনা করা হারাম, তাই তুমি তা পরিহার করবে।
হাদীসের শিক্ষা:
(১) সুদ হারাম,
(২) সুদের বেচা-কেনা বিশুদ্ধ নয়। অর্থাৎ এ ধরনের বেচা-কেনা বাতিল।
(৩) হালাল পন্থা খুঁজে বের করা এবং অনুসারীদের জন্য হালাল পন্থা জানিয়ে দেয়া ইমামের কর্তব্য। (ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২৩১২)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৫-[৯] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার একজন ক্রীতদাস (কোনো এলাকা হতে মদীনায় এসে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে হিজরত করার বায়’আত করলো (অর্থাৎ- সে সর্বদা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সান্নিধ্যে থাকার উদ্দেশে অঙ্গীকার করলো)। সে যে ক্রীতদাস তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতেন না। অতঃপর (কিছু দিন পর) ক্রীতদাসের মুনীব তাঁকে (খুঁজতে এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে) নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, এ ক্রীতদাসকে আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’টি হাবশী (কৃষ্ণাঙ্গ) ক্রীতদাসের বিনিময়ে তাকে ক্রয় করে নিলেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনদিন কোনো ব্যক্তিকে সে ক্রীতদাস না মুক্ত ব্যক্তি, তা জিজ্ঞেস না করে কোনো বায়’আত গ্রহণ করতেন না। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: جَاءَ عَبْدٌ فَبَايَعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْهِجْرَةِ وَلَمْ يَشْعُرْ أَنَّهُ عَبْدٌ فَجَاءَ سَيِّدُهُ يُرِيدُهُ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «بِعَيْنِه» فَاشْتَرَاهُ بِعَبْدَيْنِ أَسْوَدَيْنِ وَلَمْ يُبَايِعْ أَحَدًا بَعْدَهُ حَتَّى يَسْأَلَهُ أَعَبْدٌ هُوَ أَوْ حُرٌّ. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (فَاشْتَرَاهُ بِعَبْدَيْنِ أَسْوَدَيْنِ) ‘‘অতঃপর তিনি এ গোলামটিকে দু’জন কালো গোলামের বিনিময়ে কিনে নিলেন’’ অর্থাৎ এ গোলামটি ইসলাম গ্রহণ করার কারণে দু’জন অমুসলিম গোলামের বিনিময়ে এ মুসলিম গোলামটিকে কিনে রেখে দিলেন।
হাদীসের শিক্ষাঃ প্রাণীর ক্ষেত্রে সুদ নেই। অর্থাৎ প্রাণী ক্রয়-বিক্রয়ে কমবেশী করা বৈধ। তা মানুষ হোক অথবা পশু হোক। অধিকাংশ ‘আলিম এ মত পোষণ করেন। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে তা বৈধ নয়। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৬০২)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৬-[১০] উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো খুরমার স্তূপের পরিমাণ না জেনে পরিমাপকৃত খুরমার বিনিময়ে লেনদেন করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْهُ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ الصُّبْرَةِ مِنَ التَّمْرِ لَا يُعْلَمُ مَكِيلَتُهَا بِالْكَيْلِ الْمُسَمَّى مِنَ التَّمْرِ. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (نَهٰى رَسُوْلُ اللّٰهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الصُّبْرَةِ مِنَ التَّمْرِ) ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন স্তূপকৃত খেজুর বিক্রয় করতে যার পরিমাণ জানা নেই ঐ খেজুরের বিনিময়ে যার পরিমাণ সুনিশ্চিত।’’ অর্থাৎ সুদ কার্যকর এমন বস্তুর বিনিময় করতে উভয়পক্ষের বস্তু সমান হওয়া জরুরী। যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে উভয়পক্ষের দ্রব্য সমপরিমাণ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়। হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিতে যেহেতু একপক্ষের দ্রব্যের পরিমাণ জানা যায় কিন্তু অন্যপক্ষের দ্রব্যের পরিমাণ অজ্ঞাত, তাই এ ধরনের বেচা-কেনা অবৈধ।
হাদীসের শিক্ষা:
(১) সুদ কার্যকর এমন বস্তু অনুমানের ভিত্তিতে বেচা-কেনা অবৈধ।
(২) একপক্ষের দ্রব্যের পরিমাণ জানা কিন্তু অপরপক্ষের দ্রব্যের পরিমাণ অজ্ঞাত, এমন বেচা-কেনাও হারাম। (শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৫৩০)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৭-[১১] ফাযালাহ্ ইবনু আবূ ’উবায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি খায়বার বিজয়ের দিন বারো দীনার (স্বর্ণ মুদ্রার) বিনিময়ে একটি মালা কিনলাম। এ মালা স্বর্ণ-দানাও ছিল, আবার পুঁতি-মিশ্রিতও ছিল। আমি স্বর্ণ-দানাগুলো পৃথক করে দেখলাম, তা পরিমাণে বারো দীনারের চেয়েও বেশি। আমি এ ক্রয়ের ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলে, জবাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এসব ক্ষেত্রে পৃথক করা ছাড়া ক্রয়-বিক্রয় জায়িয নয়। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرِّبَا
وَعَنْ فَضَالَةَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ قَالَ: اشْتَرَيْتُ يَوْمَ خَيْبَرَ قِلَادَةً بِاثْنَيْ عَشَرَ دِينَارًا فِيهَا ذَهَبٌ وَخَرَزٌ فَفَصَّلْتُهَا فَوَجَدْتُ فِيهَا أَكْثَرَ مِنَ اثْنَيْ عَشَرَ دِينَارًا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «لَا تُبَاعُ حَتَّى تُفصَّلَ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (فِيهَا ذَهَبٌ وَخَرَزٌ) ‘‘তাতে সোনা ও পুঁতি ছিল’’ অর্থাৎ হারেরও অধিক পুঁতি ও সোনার মিশ্রণে নির্মিত ছিল। পুঁতি সোনা থেকে পৃথক করার পর দেখা গেল সোনার ওযন বারো দীনার।
(لَا تُبَاعُ حَتّٰى تُفصَّلَ) ‘‘সোনাকে পুঁতি থেকে আলাদা করার আগে বেচা যাবে না’’ অর্থাৎ যে মালার মধ্যে পুঁতি ও সোনার মিশ্রণ থাকে সে মালা সোনার বিনিময়ে বেচা-কেনা করতে চাইলে বেচার আগে সোনাকে পুঁতি থেকে পৃথক করে সোনার বিনিময়ে সোনা সমপরিমাণের ওযনে বিনিময় করতে হবে। কমবেশী করা যাবে না। আর পুঁতি যে কোনো মূল্যে বেচা যাবে। অনুরূপ রূপা অথবা যাবতীয় দ্রব্য যতে সুদ কার্যকর তা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সমান সমান হওয়া আবশ্যক। তাই অন্য কোনো বস্তুর সাথে মিশিয়ে বিক্রয় করা যাবে না। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৫৯২)