পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে

২৭০০-[৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শিকারের মাংস (গোসত/মাংস) ইহরাম অবস্থায়ও তোমাদের জন্য হালাল। যদি না তোমরা নিজেরা তা শিকার করো অথবা তোমাদের জন্য শিকার করা হয়ে থাকে। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী ও নাসায়ী)[1]

عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَحْمُ الصَّيْدِ لَكُمْ فِي الْإِحْرَامِ حَلَالٌ مَا لَمْ تَصِيدُوهُ أَوْ يُصَادُ لَكُمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ

عن جابر رضي الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لحم الصيد لكم في الاحرام حلال ما لم تصيدوه او يصاد لكم» . رواه ابو داود والترمذي والنساىي

ব্যাখ্যা: (لَحْمُ الصَّيْدِ لَكُمْ فِى الْإِحْرَامِ حَلَالٌ) ‘‘শিকারী প্রাণীর গোশ্‌ত (গোসত/গোশত) তোমাদের জন্য ইহরাম অবস্থায়ও হালাল।’’ অর্থাৎ- শিকারী প্রাণী মুহরিম ব্যক্তির কোন নির্দেশ ইশারা-ইঙ্গিত ও সহযোগিতা ব্যতীত ইহরামবিহীন ব্যক্তি যাবাহ করলে বা শিকার করলে তা মুহরিম ব্যক্তির জন্য খাওয়া বৈধ।

(أَوْ يُصَادُ لَكُمْ) ‘‘অথবা তোমাদের জন্য শিকার না করা হয়।’’ অর্থাৎ- শিকারী প্রাণী যদি মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার না করা হয় তাহলে তা মুহরিম ব্যক্তির জন্য খাওয়া বৈধ।

এ হাদীসটি তাদের পক্ষে দলীল যারা বলেন, শিকারী প্রাণী যদি মুহরিমের উদ্দেশে শিকার না করা হয় তাহলে তা মুহরিমের জন্য খাওয়া বৈধ। পক্ষান্তরে তা যদি মুহরিমের উদ্দেশে শিকার করা হয় তাহলে তা মুহরিমের জন্য খাওয়া বৈধ নয়। ইমাম মালিক, ইমাম শাফি‘ঈ ও জমহূর ‘আলিমদের অভিমত এটিই।

‘আল্লামা শানক্বীত্বী বলেনঃ দলীল অনুযায়ী এ অভিমতটিই উত্তম। আর তা দু’টি কারণে।

(ক) ভিন্নমুখী দলীলের মধ্যে যথাসম্ভব সমন্বয় করা ওয়াজিব। কেননা কোন দলীল পরিত্যাগ করার চাইতে দু’ বিপরীতমুখী দলীলের মধ্যে সমন্বয় করা উত্তম। উপরে বর্ণিত অভিমত ব্যতীত সমন্বয় সম্ভব নয়। অতএব এ অভিমতটিই উত্তম।

(খ) জাবির (রাঃ) বর্ণিত অত্র হাদীস। ইমাম শাওকানী বলেনঃ হাদীস সুস্পষ্টভাবে পার্থক্য করেছে যে, যা মুহরিম স্বয়ং শিকার করে অথবা তার জন্য শিকার করা হয় আর যা মুহরিম স্বয়ং শিকার করেনি অথবা তার জন্য শিকার করা হয়নি- এ দু’ প্রকার প্রাণীর হুকুম ভিন্ন। অতএব যা মুহরিম স্বয়ং শিকার করেনি অথবা তার জন্য শিকার করা হয়নি ঐ শিকারী প্রাণীর গোশ্‌ত (গোসত/গোশত) মুহরিমের জন্য হালাল। আর মুহরিম যা স্বয়ং শিকার করেছে অথবা অন্য কেউ মুহরিমের উদ্দেশে শিকার করেছে, তা মুহরিমের জন্য হালাল নয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে

২৭০১-[৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ টিড্ডি (ফড়িং) সমুদ্রের শিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْجَرَادُ مِنْ صَيْدِ الْبَحْرِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ

وعن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «الجراد من صيد البحر» . رواه ابو داود والترمذي

ব্যাখ্যা: (الْجَرَادُ مِنْ صَيْدِ الْبَحْرِ) ‘‘ফড়িং সামুদ্রিক শিকারী প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত।’’

বলা হয়ে থাকে যে, ফড়িং-এর জন্ম মাছ থেকে। যেমন- মাছের পোকার জন্ম হয় তেমনি ফড়িং-ও মাছ থেকেই জন্মে। অতঃপর পানি থেকে সমুদ্র উপকূলে এসে তা ডাঙ্গায় ছড়িয়ে যায়। এতে ফড়িং-এর প্রথম সৃষ্টির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। ‘আল্লামা আল্ বাজী কা‘বা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ ফড়িং-এর উৎপত্তি মাছের নাসিকা থেকে।

এ হাদীস প্রমাণ করে যে, ফড়িং সামুদ্রিক প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত। অতএব সামুদ্রিক প্রাণী শিকার করলে যেমন মুহরিম ব্যক্তির কোন কাফফারাহ দিতে হয় না, অনুরূপ ফড়িং হত্যা করলেও মুহরিম ব্যক্তিকে কোন কাফফারাহ দিতে হবে না।

এ বিষয়ে ‘আলিমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। ইমাম আবূ হানীফা, ইমাম মালিক ও ইমাম শাফি‘ঈ প্রমুখদের মতানুযায়ী ফড়িং সামুদ্রিক প্রাণী নয় বরং তা স্থলপ্রাণী এবং তা শিকার করলে মুহরিম ব্যক্তিকে কাফফারাহ দিতে হবে। ‘উমার, ‘উসমান ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এবং ‘আত্বা  হতেও এ অভিমত বর্ণিত হয়েছে। আর অধিকাংশ ‘উলামাগণেরও অভিমত এটিই।

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী বলেনঃ তা শিকার করলে মুহরিম ব্যক্তিকে কোন কাফফারাহ দিতে হবে না। কা‘ব আহবার এবং ‘উরওয়াহ্ ইবনুয্ যুবায়র হতেও এ অভিমত পাওয়া যায়- আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) হতেও একটি বর্ণনা এরূপ বর্ণিত হয়েছে।

হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেনঃ অত্র হাদীসের সানাদ য‘ঈফ। যদি হাদীসটি সহীহ হত তাহলে তা দলীলযোগ্য হত।

অতএব বিশুদ্ধ মত হলো ফড়িং স্থলপ্রাণী এবং কোন মুহরিম তা শিকার করলে তাকে কাফফারাহ দিতে হবে। এ হাদীস এটিও প্রমাণ করে যে, ফড়িং খাওয়া বৈধ। একাধিক বিজ্ঞ ‘আলিম বর্ণনা করেছেন যে, এ বিষয়ে সকল ‘আলিম ঐকমত্য পোষণ করেন যে, ফড়িং খাওয়া বৈধ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে

২৭০২-[৭] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ মুহরিম ব্যক্তি হিংস্র প্রাণী হত্যা করতে পারে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَقْتُلُ الْمُحْرِمُ السَّبُعَ الْعَادِيَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن ابي سعيد الخدري عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «يقتل المحرم السبع العادي» . رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: (السَّبُعَ الْعَادِىَ) ‘‘অত্যাচারী হিংস্র প্রাণী’’। অর্থাৎ- যে প্রাণী মানুষকে আক্রমণ করে ক্ষত-বিক্ষত করে। অতএব যে সকল হিংস্র প্রাণীর মধ্যে এ গুণ পাওয়া যাবে তা মুহরিমের জন্য হত্যা করা বৈধ। এজন্য মুহরিমকে কোন ফিদিয়া দিতে হবে না।

ইমাম তিরমিযী বলেনঃ ‘আলিমগণ এ হাদীসের বক্তব্য অনুযায়ী ‘আমল করে থাকেন। সুফিয়ান সাওরী এবং ইমাম শাফি‘ঈ-এর অভিমতও এটিই। ইমাম শাফি‘ঈ বলেনঃ যে সকল হিংস্র প্রাণী মানুষের ওপর অথবা তাদের গৃহপালিত পশুর ওপর আক্রমণই করে সে সকল প্রাণী মুহরিমের জন্য হত্যা করা বৈধ। ইমাম মালিক, আহমাদ এবং জমহূর ‘উলামাগণের অভিমতও এরূপ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে

২৭০৩-[৮] ’আবদুর রহমান ইবনু আবূ ’আম্মার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু ’আব্দুল্লাহ আল আনসারী (রাঃ)-কে যবু’ (অর্থাৎ- ধারালো নখ ও হিংস্র দাঁতবিশিষ্ট হায়েনা, বেজি, কাঠবিড়ালী এবং মরু অঞ্চলের হিংস্র প্রাণী) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, এটা শিকারী প্রাণী কিনা? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তবে যবু’ কি খাওয়া যায়? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (তিরমিযী, নাসায়ী ও শাফি’ঈ; ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ)[1]

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيِ عَمَّارٍ قَالَ: سَأَلت جابرَ بنَ عبدِ اللَّهِ عَنِ الضَّبُعِ أَصَيْدٌ هِيَ؟ فَقَالَ: نَعَمْ فَقُلْتُ: أَيُؤْكَلُ؟ فَقَالَ: نَعَمْ فَقُلْتُ: سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: نَعَمْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حديثٌ حسنٌ صَحِيح

وعن عبد الرحمن بن ابي عمار قال: سالت جابر بن عبد الله عن الضبع اصيد هي؟ فقال: نعم فقلت: ايوكل؟ فقال: نعم فقلت: سمعته من رسول الله صلى الله عليه وسلم؟ قال: نعم. رواه الترمذي والنساىي والشافعي وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح

ব্যাখ্যা: (الضَّبُعُ) ‘‘হায়েনা (গোরখোদা)’’ (أَصَيْدٌ هِىَ) ‘‘তা কি শিকারী পশু’’। অর্থাৎ- মুহরিম তা হত্যা করলে কি ফিদিয়া দিতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তা হত্যা করলে ফিদিয়া দিতে হবে।

আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আছে- (وَِيُجْعَلُ فِيْهِ كَبْشٌ إِذَا صَادَهُ الْمُحْرِمُ) ‘‘মুহরিম তা শিকার করলে তাকে ফিদিয়া হিসেবে একটি মেষ দিতে হবে।

হাদীসটি সুস্পষ্ট দলীল যে, হায়েনা হত্যাকারী মুহরিমকে ফিদিয়া দিতে হবে। এ বিষয়ে চার ইমামের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও আহমাদ-এর মতে তাকে একটি মেষ অথবা ছাগল দিতে হবে। পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফার মতে তার মূল্য দেয়া ওয়াজিব। হিদায়াতে উল্লেখ আছে যে, ইমাম আবূ হানীফা ও আবূ ইউসুফ-এর মতে যে অঞ্চলে শিকারী প্রাণী হত্যা করা হয় সে এলাকায় সেটার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।

অতএব দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি সেটার মূল্য নির্ধারণ করবে। অতঃপর ইচ্ছা করলে সে ঐ মূল্য দ্বারা কোন পশু ক্রয় করবে যদি তা দ্বারা পশু ক্রয় করা যায় অথবা খাদ্য-দ্রব্য ক্রয় করে তা সাদাকা করবে অথবা তিনদিন সওম পালন করবে।

(أَيُؤْكَلُ) ‘‘তা কি খাওয়া যাবে?’’ তিরমিযী’র বর্ণনায় আছে- (قلت: آكلها؟) ‘‘আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি কি তা খাবো?’’ (قال : نعم) ‘‘তিনি বললেনঃ হ্যাঁ’’।

অত্র হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, হায়েনা খাওয়া হালাল। ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ-এর অভিমত এটাই। ইমাম শাফি‘ঈ বলেনঃ লোকেরা তা খেতো এবং কোন প্রকার বাধা ব্যতীত সাফা-মারওয়ার মাঝে তা বেচাকেনা করত ‘আরবদের নিকট তা পছন্দনীয়।

পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালিক-এর মতে তা হারাম। তাদের দলীল সে হাদীস যাতে আছে যে, প্রত্যেক কর্তন দাঁতওয়ালা হিংস্র প্রাণী হারাম এবং খুযায়মাহ্ ইবনু জায বর্ণিত (২৭৩০ নং) হাদীস। ইমাম শাওকানী প্রতিপক্ষের দ্বিতীয় মতের প্রথম হাদীসের জওয়াবে বলেন যে, জাবির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি খাস এবং তাদের উত্থাপিত (كل ذي ناب) হাদীসটি ‘আম্।

অতএব খাস হাদীসটি ‘আম্ হাদীসের উপর প্রাধান্য পাবে। তাদের দ্বিতীয় দলীল খুযায়মাহ্ ইবনু জায বর্ণিত হাদীসটি য‘ঈফ। কেননা তার একজন রাবী ‘আবদুল কারীম ইবনু আবিল মুখারিক্ব। যিনি সর্বসম্মতিক্রমে য‘ঈফ। অতএব উক্ত হাদীসটি দলীলযোগ্য নয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে

২৭০৪-[৯] জারির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যবু’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম (তা শিকারের অন্তর্গত প্রাণী কিনা)। তিনি বললেন, তা শিকার (জাতীয় প্রাণী)। তাই মুহরিম যবু’ শিকার করলে ক্ষতিপূরণে (কাফফারাহ হিসেবে) একটি দুম্বা দিতে হবে। (আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الضَّبُعِ؟ قَالَ: «هُوَ صَيْدٌ وَيُجْعَلُ فِيهِ كَبْشًا إِذَا أَصَابَهُ الْمُحْرِمُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه والدارمي

وعن جابر قال: سالت رسول الله صلى الله عليه وسلم عن الضبع؟ قال: «هو صيد ويجعل فيه كبشا اذا اصابه المحرم» . رواه ابو داود وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: (وَيُجْعَلُ فِيهِ كَبْشًا) ‘‘তাতে একটি মেষ (দুম্বা) দিতে হবে’’। (إِذَا أَصَابَهُ الْمُحْرِمُ) ‘‘যদি মুহরিম ব্যক্তি তা শিকার করে।’’

হাদীসের এ অংশ প্রমাণ করে যে, মুহরিম ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তা‘আলা সে শিকারী প্রাণী হত্যা করতে নিষেধ করেছেন যে শিকারী প্রাণী খাওয়া হালাল। আর মুহরিম তো শুধুমাত্র খাওয়ার উদ্দেশেই তা হত্যা করতে পারে অযথা হত্যা করতে যাবে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুহরিম ব্যক্তির শিকার করা হতে বিরত থাকবে

২৭০৫-[১০] খুযায়মাহ্ ইবনু জাযী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যবু’ (খাওয়ার ব্যাপারে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যবু’ কি কেউ খায়? তারপর আমি নেকড়ে বাঘ খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার মধ্যে কল্যাণ আছে এমন কেউ কি নেকড়ে খায়? (তিরমিযী; তিনি বলেন, হাদীসটির সানাদ দুর্বল)[1]

وَعَن خُزَيمةَ بنَ جَزَيّ قَالَ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَكْلِ الضَّبُعِ. قَالَ: أَوَ يَأْكُلُ الضَّبُعَ أَحَدٌ؟ . وَسَأَلْتُهُ عَنْ أَكْلِ الذِّئْبِ. قَالَ: «أوَ يَأَكلُ الذِّئْبَ أَحَدٌ فِيهِ خَيْرٌ؟» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: لَيْسَ إِسْنَاده بِالْقَوِيّ

وعن خزيمة بن جزي قال: سالت رسول الله صلى الله عليه وسلم عن اكل الضبع. قال: او ياكل الضبع احد؟ . وسالته عن اكل الذىب. قال: «او ياكل الذىب احد فيه خير؟» . رواه الترمذي وقال: ليس اسناده بالقوي

ব্যাখ্যা: (أَوَ يَأْكُلُ الضَّبُعَ أَحَدٌ؟) ‘‘কেউ কি হায়েনা খায়?’’ এখানে প্রশ্নবোধক অব্যয়টি অস্বীকার করার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ইবনু মাজাহ্-এর বর্ণনায় আছে, (ومن يأكل الضبع؟) এমন কোন ব্যক্তি আছে, যে হায়েনা খায়? ‘আল্লামা সিন্দী বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্তব্য এ কথা ইঙ্গিত করে যে, মানুষ স্বভাবগতভাবেই তা অপছন্দ করে থাকে।

(أوَ يَأَكلُ الذِّئْبَ أَحَدٌ فِيهِ خَيْرٌ؟) ‘‘যার মধ্যে কল্যাণ আছে এমন কেউ কি নেকড়ে খায়?’’ এখানে خَيْرٌ শব্দটি أَحَدٌ -এর গুণ বুঝানো হয়েছে, যার অর্থ তাক্বওয়া অর্থাৎ- আল্লাহ ভীতি। যারা হায়েনা খাওয়া হারাম বলে থাকেন তারা এ হাদীসটিকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করে থাকেন। কিন্তু হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণে তা দলীলযোগ্য নয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে